নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রাত্যহিক জীবনে ইসলাম; সালাতুল কসর বা মুসাফিরের নামাজের বিধান

১৩ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ১০:৩৪

ছবিঃ অন্তর্জাল।

প্রাত্যহিক জীবনে ইসলাম; সালাতুল কসর বা মুসাফিরের নামাজের বিধান

যতটুকু দূরত্বের সফরে গেলে নামাজ কসর করতে হয়ঃ

আরবি 'কসর' শব্দটির অর্থ সংক্ষিপ্তকরণ। বস্তুতঃ সফর একটি কষ্টকর সময়। নানাবিদ ব্যস্ততা, তাড়াহুড়োসহ বিবিধ কারণে সফরের সময়গুলোতে সুচারুরূপে স্বাভাবিকভাবে দৈনন্দিন জীবনের পালনীয় সকল কাজের আঞ্জাম দেয়া কিছুটা কঠিন হয়ে থাকে। এই কারণে সফরকালীন সময়ে আমাদের কষ্ট যাতে লাঘব হয় সে জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা সফর অবস্থায় সংক্ষিপ্তভাবে নামাজ আদায়ের নির্দেশ প্রদানের মাধ্যমে আমাদের প্রতি ইহসান করেছেন। দয়া প্রদর্শন করেছেন।

তিন দিন বা তার সমপরিমাণ দূরত্বের অধিক সফর করলে কেউ মুসাফির হিসাবে গণ্য হবে। যেমন, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে-

أَقَلُّ مَسَافَةٍ تَتَغَيَّرُ فِيهَا الْأَحْكَامُ مَسِيرَةُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ، كَذَا فِي التَّبْيِينِ، هُوَ الصَّحِيحُ

সর্বনিম্ন দূরত্ব যার দ্বারা শরীয়তের বিধি-বিধানে পরিবর্তন আসে তথা, মানুষ মুসাফির বলে গণ্য হয়, তা হচ্ছে তিন দিনের দূরত্ব। এটাই বিশুদ্ধ মত। -ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৩৮

তিন দিনের দূরত্বকে ফুকাহায়ে কেরাম ৪৮ মাইল অর্থাৎ ৭৮ কিলোমিটার সমপরিমাণ নির্ধারণ করেছেন। তাই বর্তমানে কেউ ৭৮ কিলোমিটার বা সমপরিমাণ দূরত্বে সফর করলে সে শরয়ী মুসাফির হিসেবে গণ্য হবে।

মুসাফিরের নামাজ কসর অর্থাৎ, অর্ধেক করে পড়তে হয় অর্থাৎ, চার রাকাআতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ দুই রাকাআত আদায় করতে হয়। মুসাফির অবস্থায় দুই রাকাআতবিশিষ্ট নামাজ দুই রাকাআতই পড়তে হবে এবং তিন রাকাআতবিশিষ্ট নামাজে কোনো কসর নেই।

তাই এককথায় বলা যায়, কোনো ব্যক্তি নিজের অবস্থানস্থল, কর্মস্থল, বসবাসের বাড়ি, ঠিকানা বা আবাস কিংবা স্থায়ী নিবাস থেকে ৪৮ মাইল অর্থাৎ ৭৮ কিলোমিটার দূরে সফরের নিয়তে বের হয়ে তার এলাকা পেরিয়ে গেলেই শরিয়তের দৃষ্টিতে সে মুসাফির হিসেবে গণ্য হয় এবং এমতাবস্থায় তার উপরে কসরের বিধান প্রজোয্য হয় অর্থাৎ, সেই ব্যক্তি সফরে থাকাকালীন সময়ে ৪ রাকাআত বিশিষ্ট ফরজ নামাজের ক্ষেত্রে ২ রাকাআত আদায় করবে। -জাওয়াহিরুল ফিক্বহ ১/৪৩৬, আহসানুল ফাতাওয়া ৪/১০৫

মুসাফিরের উপরে সফরের বিধান কার্যকর হয় কখন থেকে?

মুসাফির ব্যক্তি সফরের নিয়তে নিজের ঘর কিংবা আবাস হতে বের হয়ে নিজ এলাকা বা মহল্লা পেরিয়ে গেলেই তিনি মুসাফির হিসেবে গণ্য হয়ে থাকেন এবং এই সময় হতে তার উপরে সফরের বিধান শুরু হয়। শহরের ক্ষেত্রে ওই শহরের করপোরেশনের নির্ধারিত সীমানা থেকে সফরের সীমা নির্ধারিত হবে। অনুরূপ সফর থেকে ফিরে আসার ক্ষেত্রেও নিজ এলাকার সীমানায় প্রবেশের সাথে সাথেই তার সফরের বিধান শেষ হয়ে যাবে। -রদ্দুল মুহতার ২/১২৮

আকাশ পথে সফরের ক্ষেত্রে মুসাফির হওয়ার দূরত্বঃ

আকাশ পথে সফরের ক্ষেত্রেও দূরত্বের হিসাব স্থলভাগে সফরের দূরত্বের পরিমাপে হবে, অর্থাৎ স্থলভাগের মত আকাশ পথে ৭৮ কিলোমিটার পরিমাণ দূরত্বের সফর হলে আকাশপথেও সফরকারী ব্যক্তি মুসাফির বলে গণ্য হবেন এবং বিধান অনুযায়ী ফরজ নামাজ কসর হিসেবে আদায় করবেন। -রদ্দুল মুহতার ১/৭৩৫

পার্বত্য এলাকায় সফরে দূরত্বের হিসাব যেভাবে করতে হবেঃ

উপরোক্ত নিয়মে পার্বত্য এলাকায় সফরের ক্ষেত্রেও সমতলে চলার হিসেবই ধর্তব্য হবে, অর্থাৎ পাহাড়ের উঁচু-নীচু ঢালুসহ দূরত্বের হিসাব হবে। -ফাতহুল ক্বাদীর ২/৩১, আল বাহরুর রায়েক ২/২২৯

মুসাফিরের বিধানঃ

সফরকারীর জন্য শরিয়তের বিধি-বিধানে কিছু শিথিলতা রয়েছে, যথা চার রাকাআতবিশিষ্ট ফরজ নামাজগুলো দুই রাকাআত আদায় করবে এবং সফরে রোজা রাখা কষ্টকর মনে হলে সফর অবস্থায় না রেখে পরবর্তী সময়ে তা কাজা করার অনুমতি রয়েছে। অনুরূপভাবে মোজার উপরে মাসেহ করার সুযোগ রয়েছে। সফর অবস্থায় উপরোল্লিখিত বিধানে সাধারণ অবস্থা থেকে ভিন্নতা রয়েছে।

মুসাফিরের জন্য চার রাকাআত ফরজ নামাজ আদায় করা জায়েজ নেইঃ

মুসাফির ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত সফর অবস্থায় চার রাকাআত নামাজ পূর্ণ করলে গুনাহ হবে। এ ক্ষেত্রে তার জন্য নামাজ পুনরায় পড়া ওয়াজিব। আর যদি ভুলক্রমে চার রাকাআত পূর্ণ করে নেয় এবং নামাজ শেষ করার পূর্বেই যদি তার কসরের কথা স্মরণ হয়ে যায়, এমতাবস্থায় সে দ্বিতীয় রাকাআত আদায় শেষে প্রথম বৈঠক করে থাকলে সিজদা সাহু করে নিলে ফরজ নামাজ আদায় হয়ে যাবে। তাকে পুরো নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে না। আর যদি সে প্রথম বৈঠক না করে থাকে তাহলে তার ফরজ আদায় হবে না, সেই ওয়াক্তের চার রাকাআত নামাজ পুনরায় তাকে আদায় করে নিতে হবে। -বাদায়েউস সানায়ে ১/৯১

ইমামের পেছনে থাকলে মুসাফির ব্যক্তিও চার রাকাআতই পড়বেঃ

চার রাকাআতবিশিষ্ট ফরজ নামাজ আদায় করতে মুসাফির ব্যক্তি মুকিম বা স্থানীয় ইমামের পেছনে ইকতিদা করলে সে ইমামের অনুসরণে পূর্ণ নামাজই আদায় করবে। -আল মাবসূত, সারাখসী ১/২৪৩

মুসাফির ব্যক্তি চার রাকাআতবিশিষ্ট ফরজ নামাজে ইমাম হলেঃ

মুকিম ব্যক্তি মুসাফির ইমামের পেছনে ইকতিদা করলে চার রাকাআতবিশিষ্ট নামাজগুলোতে মুসাফির ইমাম সাহেব দুই রাকাআত পড়ে সালাম ফিরানোর পর মুকিম মুক্তাদি দাঁড়িয়ে সুরা পড়া ছাড়া বাকি দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিবে।

সফর অবস্থায় কাযাকৃত নামাজ পরবর্তীতে কসরই আদায় করতে হবেঃ

সফর অবস্থায় ছুটে যাওয়া নামাজ মুকিম অবস্থায় কাজা করলে 'কসর'ই আদায় করতে হবে, আর মুকিম অবস্থার ছুটে যাওয়া নামাজ সফরকালীন সময়ে কাজা করলে সে ক্ষেত্রে পূর্ণ চার রাকাআত নামাজই আদায় করে নিতে হবে। -হেদায়া ১/৮১

لما في الدر المختار ﻭَاﻟْﻘَﻀَﺎءُ ﻳَﺤْﻜِﻲ) ﺃَﻱْ ﻳُﺸَﺎﺑِﻪُ (اﻷَْﺩَاءَ ﺳَﻔَﺮًا ﻭَﺣَﻀَﺮًا) ﻷَِﻧَّﻪُ ﺑَﻌْﺪَﻣَﺎ ﺗَﻘَﺮَّﺭَ ﻻَ ﻳَﺘَﻐَﻴَّﺮ (ﻗَﻮْﻟُﻪُ ﺳَﻔَﺮًا ﻭَﺣَﻀَﺮًا) ﺃَﻱْ ﻓَﻠَﻮْ ﻓَﺎﺗَﺘْﻪُ ﺻَﻼَﺓُ اﻟﺴَّﻔَﺮِ ﻭَﻗَﻀَﺎﻫَﺎ ﻓِﻲ اﻟْﺤَﻀَﺮِ ﻳَﻘْﻀِﻴﻬَﺎ ﻣَﻘْﺼُﻮﺭَﺓً ﻛَﻤَﺎ ﻟَﻮْ ﺃَﺩَّاﻫَﺎ ﻭَﻛَﺬَا ﻓَﺎﺋِﺘَﺔُ اﻟْﺤَﻀَﺮِ ﺗُﻘْﻀَﻰ ﻓِﻲ اﻟﺴَّﻔَﺮِ ﺗَﺎﻣَّﺔً.

ভাবানুবাদ উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। -ফাতওয়ায়ে শামী2/135

عن الحسن قال : إذا نسىى صلاة في الحظر ، فذكر في السفر ، صلى صلاة الحظر ، وإذا نسى صلاة في السفر ، فذكرها في الحظر صلى صلاة السفر ( مصنف ابن ابي شيبة ، 3/ 526، رقم الحديث ، 4811)

وجاء في الأصل ، 1/ 234 (ط. دار ابن حزم) قلت وكذلك لو أن مسافرا دخل في وقت الظهر و لم يصلها حتى ذهب الوقت قدم الحظر ؟ قال : نعم ، عليه ان يصلى صلاة مسافر، قلت و إنما ينظر ذهاب الوقت ولا ينظر إلى دخوله . قال نعم ،انتهى

و جاء في الهداية : 1/ 167 (ط.هندية ) ومن فاتته صلاة في السفر قضاها في الحظر ركتيه و من فاتته في الحظر قضاها في السفر اربعا،

-বিস্তারিত দেখুন, ফাতাওয়া দারুল উলুম, খণ্ড : ০৪, পৃষ্ঠা : ৪৫২; ফাতাওয়া শামি, খণ্ড : ০২, পৃষ্ঠা : ১৩৫

স্থায়ী ও অস্থায়ী আবাসের বিধানঃ

স্থায়ী আবাসস্থল পরিবর্তন করে অন্যস্থানে মূল আবাস গড়লে স্থায়ী বসবাসের জন্য সেখানে না যাওয়ার ইচ্ছা থাকলে আগের অবস্থানস্থল মৌলিক আবাসন হিসেবে গণ্য হবে না, এমনকি সেখানে তার মালিকানা জায়গা-জমিন থাকলেও নয়, বরং সেখানেও সফরের সীমানা অতিক্রম করে গেলে মুসাফিরই থাকবে।-আল মাবসূত, সারাখসী ১/২৫২

কোনো জায়গায় ১৫ দিন বা ততোধিক দিন অবস্থানের নিয়ত করলে সে সেখানে মুকিম হয়ে যাবে। সেখান থেকে সামানাপত্রসহ প্রস্থানের আগ পর্যন্ত সেখানে পূর্ণ নামাজ পড়বে এবং তার উপরে মুকিমের বিধান জারি থাকবে। -বাদায়েউস সানায়ে ১/১০৪

মহিলাদের মুসাফির হওয়ার মাসআলাঃ

মহিলারা বিবাহের আগ পর্যন্ত তার বাবার বাড়িতে স্থায়ী আবাস হিসেবে মুকিম থাকবে। তবে বিবাহের পর যদি স্বামীর বাড়িতে মৌলিকভাবে থাকে এবং বাবার বাড়িতে মাঝেমধ্যে বেড়াতে আসে, তাহলে স্বামীর বাড়ি তার মৌলিক আবাসন হিসেবে ধর্তব্য হবে এবং বাবার বাড়িতে মুসাফির বলে গণ্য হবে, আর যদি বাবার বাড়িতে মৌলিকভাবে বসবাস করে এবং স্বামীর বাড়িতে মাঝেমধ্যে বেড়াতে যায়, তাহলে বাবার বাড়িই তার মূল অবস্থানস্থল হিসেবে বহাল থাকবে এবং স্বামীর বাড়িতে গেলে উক্ত মহিলা মুসাফির হিসেবে গণ্য হবেন। -আল বাহরুর রায়েক ২/১২৮, রদ্দুল মুহতার ২/১৩১

আর পুরুষগণ তার শ্বশুরবাড়িতে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে উক্ত সময়ে মুসাফির বলেই গণ্য হবেন। হ্যাঁ, কেউ যদি শ্বশুর বাড়িতে স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য আবাস করে নেয়, তাহলে তা ভিন্ন কথা। এমতাবস্থায় সেই ব্যক্তি আর মুসাফির বলে গণ্য হবেন না। এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে-

শরীয়তের বিধান হলো ওয়াতনে আসলী তথা স্থায়ী নিবাসে এক দিনের জন্য গেলেও তাকে তখন পুরো নামাজই আদায় করতে হবে। এর কারণ হচ্ছে, ব্যক্তি নিজের স্থায়ী নিবাসে কখনো মুসাফির বলে গণ্য হন না। প্রশ্ন আসতে পারে যে, স্থায়ী নিবাসের সংজ্ঞা কি? উত্তর হচ্ছে, স্থায়ী নিবাস বলা হয়ে থাকে এমন স্থানকে যেখানে ব্যক্তির বসবাসের জন্য স্থায়ী বাড়ি ঘর ইত্যাদি থাকে এবং স্ত্রী সন্তান ও পরিবার পরিজন নিয়ে যেখানে সবসময়ের জন্য বসবাস করা হয়, অথবা, কার্যোপলক্ষে আপাততঃ অন্যত্র বা বদলি সূত্রে বিভিন্ন স্থানে বসবাস করলেও পরবর্তীতে উক্ত নির্দিষ্ট স্থানেই স্থায়ীভাবে বসবাস করার পাকাপাকি নিয়াত করে রাখা হয়।

বিবাহিত মহিলার জন্য এই ক্ষেত্রে একটি বিষয় বিবেচ্য যে, নিজ পিতা/ শশুরের বাসা, এই দু'টির মধ্যে কোনো স্থানেই যদি স্থায়ীভাবে থাকার নিয়ত না করে থাকেন এবং স্থায়ীভাবেই যদি পিতার/ শ্বশুরের বাসা ত্যাগ করে অন্যত্র বসবাস করে থাকেন আর তার বর্তমান বাসা হতে পিতা/ শ্বশুরের বাসা ৭৮ কিলোমিটার অথবা তার চেয়ে বেশি দুরত্বে অবস্থিত হয়, তাহলে তিনি পিতার/ শশুরের বাসায় গিয়ে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে মুসাফির বলেই গণ্য হবেন। বলাবাহুল্য, এমন পরিস্থিতিতে সেখানে তিনি নামাজ কসর করেই আদায় করবেন।

মুসাফিরের সুন্নত পড়ার বিধানঃ

সুন্নাত নামাযসমূহে কসরের বিধান প্রযোজ্য নয় বিধায় সুন্নাত আদায় করলে সম্পূর্ণই আদায় করতে হবে। মুসাফির ব্যক্তির জন্য তার চলন্ত অবস্থায় বা বিশেষ তাড়াহুড়া থাকলে ফজরের সুন্নাত ছাড়া অন্যান্য সুন্নাতে মুয়াক্কাদা না পড়ার সুযোগ রয়েছে। তবে, সফরের গন্তব্যস্থলে পৌঁছার পরে স্বাভাবিক ও স্থির অবস্থায় সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাজগুলো পড়ে নেয়া উচিত। -এ'লাউস্ সুনান ৭/১৯১, রদ্দুল মুহতার ১/৭৪২

আর বিশেষ ক্ষেত্র ব্যতিত সুন্নাত নামাজ তরক করা তথা পরিত্যাগ করা উচিত নয়, বরং সময় থাকলে সুন্নাত নামাযসমূহ পড়ে নেয়া উচিৎ। সময় সুযোগ না থাকলে অবশ্য সুন্নাত পরিত্যাগ করার রুখসত রয়েছে। -ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৭/৫১৭

তবে সুযোগ থাকলে পড়ে নেয়াটা-ই উত্তম। কেননা, বর্ণিত রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফরের সময়ে সুন্নাত পড়েছেন। -তিরমিযি-১/৭২

সফর অবস্থায় বিতর নামাজের বিধানঃ

আমরা জানি, বিতর নামায ওয়াজিব। আর এ কথাও এই লেখায় আলোচনা করা হয়েছে যে, কসর শুধু ফরজ নামাজের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। সুতরাং, বিতর এবং সুন্নাত নামাজে কসর প্রযোজ্য নয় এবং ওয়াজিব নামাজ আদায়ের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে বিধায় সফর অবস্থায় বিতর পরিত্যাগ করারও সুযোগ নেই বরং সফরের হালতেও বিতর নামাজ যথারীতি আদায় করে নিতে হবে। -ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম-৪/৩৩১০০

নিরাপদ ও ভীতিপূর্ণ উভয় অবস্থাতেই কসর করা বিধেয়ঃ

সফরে নিরাপদ অবস্থায় হোক বা ভীত অবস্থায় উভয় অবস্থায়ই কসর করা যাবে। আয়াতে যে ভয়ের কথা বলা হয়েছে তা অধিকাংশ ক্ষেত্রের দিক বিবেচনা করে বলা হয়েছে। (কারণ হিসেবে নয়) কেননা, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রায় সফরই ভয়মুক্ত ছিল না। একবার ‘আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বললেন, আমরা নিরাপদ হওয়া সত্ত্বেও আপনি আমাদের সালাত কসর করলেন। তখন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাকে বললেন, আপনি যে বিষয়ে আশ্চর্য হয়েছেন আমিও সে বিষয়ে আশ্চর্য হয়েছিলাম। তখন আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন,

«صَدَقَةٌ تَصَدَّقَ اللهُ بِهَا عَلَيْكُمْ، فَاقْبَلُوا صَدَقَتَهُ»

এটি আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে তোমাদের প্রতি একটি সদকা। তোমরা তাঁর সদকাটি গ্রহণ করো। -সহীহ মুসলিম, সালাতুল মুসাফিরীন ওয়াকাসরিহা, হাদীস নং ৬৮৬; তিরমিযী, তাফসীরুল কুরআন, হাদীস নং ৩০৩৪; নাসাঈ, তাকসীরুস সালাহ ফিস সাফরী, হাদীস নং ১৪৩৩; আবু দাউদ, সালাত, হাদীস নং ১১৯৯; ইবন মাজাহ, ইকামাতুস সালাহ ওয়াসসুন্নাতু ফিহা, হাদীস নং ১০৬৫; আহমদ, ১/৩৬; দারেমী, সালাত, হাদীস নং ১৫০৫

পরিশেষেঃ

পরিশেষে সংক্ষিপ্ত কথায় বললে, সফরের সময় তিনটি কথা মনে রাখলে প্রায় পুরো বিষয়টিই সহজে আয়ত্বে রাখা সম্ভব, যথা-

১. নফল, সুন্নাত এবং ওয়াজিব নামাজরে কসর হয় না, কসর শুধু চার রাকাআতযুক্ত ফরজ নামাজেরই বিধেয় এবং এটি ঐচ্ছিক কোনও বিষয় নয়, অবশ্য পালনীয় একটি হুকুম। অর্থাৎ, চার রাকাআতবিশিষ্ট ফরজ নামাজে কসর করতেই হবে।

২. সফরের সময়ে কাযাকৃত নামাজ বাড়িঘরে ফিরে এসে আদায় করলেও মুসাফিরের মত করে কসরই আদায় করতে হবে এবং বাড়িঘরে থাকাবস্থায় কাযাকৃত নামাজ সফরে থাকাবস্থায় আদায় করতে চাইলে পুরোপুরি মুকিমের নামাজই আদায় করতে হবে। অর্থাৎ, যে নামাজ ছুটে গেছে তার কাযা আদায়কালে তা সেভাবেই অনুরূপ আদায় করে নিতে হবে।

৩. সকল প্রকার নফল এবং সুন্নাত নামাজ সফর অবস্থায়ও আদায় করা যাবে, যদি তা আদায়ের অনুকূল সময় এবং সুযোগ বিদ্যমান থাকে। এখানে একটি বিষয় বিশেষভাবে স্মর্তব্য, সফর অবস্থায় মুসাফিরের দোআ আল্লাহ তাআ'লার কাছে বিশেষভাবে কবুল হওয়ার পক্ষে আশা করা যায়, যা সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমানিত। হাদিসে যে তিন ব্যক্তির দোআ আল্লাহ তাআ'লা ফিরিয়ে দেন না বলে জানানো হয়েছে, তাদের একজন মুসাফির। সুতরাং, নামাজ আদায় করার মত অনুকূল পরিবেশ পরিস্থিতি এবং যথেষ্ট সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান থাকা সত্বেও শুধুমাত্র সফরের হালত বলে গুরুত্বপূর্ণ নফল এবং সুন্নাত নামাজ ছেড়ে দেয়া কতটুকু যৌক্তিক নামাজী ব্যক্তি মাত্রেরই ভেবে দেখা উচিত। আমাদের মধ্যে তো অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ এমন রয়েছেন, যারা প্রতি দিনকার পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের আগে পরে থাকা সংশ্লিষ্ট ওয়াক্তের সাথে থাকা সুন্নাত নামাজগুলো দৈনন্দিন জীবনে নিয়মিত আদায়ের পাশাপাশি ইশরাক, আউয়াবীন, তাহাজ্জুদ, সালাতুল হাজত, সালাতুত তাসবীহসহ বিভিন্ন নামাজ আদায়েরও নিয়মিত চেষ্টা করে থাকেন। তো, সফরে থাকাবস্থায়ও এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার যথাসম্ভব চেষ্টা অব্যাহত রাখতে পারা সৌভাগ্যেরই কারণ বলে ধরে নেয়া যায়, ইনশাআল্লাহ। তবে, সর্বাবস্থায় অবস্থার প্রতি লক্ষ্য রেখেই এসব আমলের দিকে মনযোগী হওয়া উচিত। এমন যেন না হয় যে, সফরে পথিমধ্যে বাস দাঁড় করিয়ে মাগরিবের নামাজ আদায় করার সুযোগ দেয়া হলো, আর সেখানেই অবস্থা এবং সময়ের দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে ফরজ সুন্নাত আদায়ের পরে রীতিমত আউয়াবীনও পড়া শুরু করে দেয়া হলো। আর এর ফলাফল, বাসের অন্যান্য যাত্রীদের কষ্টকর প্রতীক্ষা এবং চরম বিরক্তির বহিঃপ্রকাশ। এই কারণে পরিস্থিতির প্রতি সজাগ দৃষ্টি দিয়ে, পারিপার্শ্বিক সকল দিকে লক্ষ্য রেখেই সর্বাবস্থায় সকল আমল সম্পন্ন করা বাঞ্ছনীয়। আল্লাহ তাআ'লা আমাদের তাওফিক দান করুন।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ১০:৫১

জুল ভার্ন বলেছেন: খুব প্রয়োজনীয় একটা পোস্ট।
ধন্যবাদ। +

১৩ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:৪৬

নতুন নকিব বলেছেন:



লাইকসহ প্রথম মন্তব্যে আপনাকে পেয়ে সত্যি আপ্লুত। আল্লাহ তাআ'লা আপনার নেক হায়াত বৃদ্ধি করুন। পরিবার পরিজন সকলকে নিয়ে কুশলে রাখুন।

২| ১৩ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ১১:৫৭

প্রতিদিন বাংলা বলেছেন: শিক্ষণীয়

১৩ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:৪৬

নতুন নকিব বলেছেন:



শুকরিয়া।

৩| ১৩ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:৪১

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: সুন্দর ও শিক্ষনীয়।

১৩ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:৪৭

নতুন নকিব বলেছেন:



স্বাগত। কল্যানের দোআ।

৪| ১৩ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ১:৪৫

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: কসরের সময় বিতর নামাজের ফতোয়া কি ?

১৩ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:৫২

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় ভাই,

কৃতজ্ঞতা জানবেন। আপনার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটির উত্তর এখানে না দিয়ে পোস্ট এডিট করে পোস্টের শেষাংশে সংযোজন করে দিয়েছি। আশা করছি, অনুগ্রহ পূর্বক দেখে নিবেন। আপনার প্রশ্নের কারণে অনেকের জানার সুযোগ হবে হয়তো। অনিঃশেষ কল্যানের দোআ আপনার জন্য।

৫| ১৩ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: ধর্মের নিয়ম কানুন না মেনেই জীবনটা সুন্দর পার করে দিচ্ছি। কোথাও কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

১৩ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:৫৭

নতুন নকিব বলেছেন:



ধর্মের নিয়ম কানুন মানেন না, কথাটা কি আসলেই সঠিক বললেন? আমার যদি স্মৃতিভ্রম না হয়ে থাকে, তাহলে যতটুকু মনে পড়ে, খুব বেশি দিন হয়নি, আপনার অতি আপনজন এবং খুবই কাছের একজন চির বিদায় নিয়ে চলে গেলেন, আপনারা তাকে ধর্মের নিয়ম কানুন মেনেই শেষ বিদায় দিয়েছেন। দেখেন তো, মনে পড়ে কি না।

আপনার নিরন্তর কল্যান প্রত্যাশী।

৬| ১৩ ই মার্চ, ২০২২ বিকাল ৩:১৭

মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: আমি মুসাফির এর নামাজে তৃপ্তি পাইনা। সব রাকাতই পড়তে হয় আমাকে। না হলে সেটিসফেকশন পাইনা।

১৩ ই মার্চ, ২০২২ বিকাল ৪:৩৩

নতুন নকিব বলেছেন:



আসলে কসর করতে হবে। এটাই শরিয়তের হুকুম।

কৃতজ্ঞতা জানবেন।

৭| ১৩ ই মার্চ, ২০২২ বিকাল ৩:৩৯

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আচ্ছা বাবার বাড়ী, শ্বশুর বাড়ী গেলে কী কসর পড়তে হয়? সেখানে তো আমরা মুসাফির নই। এবং কোন কষ্টও নেই। আমি পুরো নামাজই পড়ি।

সুন্দর পোস্ট জাজাকাল্লাহ খাইরান

১৪ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:৪৭

নতুন নকিব বলেছেন:



আচ্ছা বাবার বাড়ী, শ্বশুর বাড়ী গেলে কী কসর পড়তে হয়? সেখানে তো আমরা মুসাফির নই। এবং কোন কষ্টও নেই। আমি পুরো নামাজই পড়ি।

-পুরো নামাজ আদায় করতে পারবেন কেবল তখনই যখন আপনি মুকিম হিসেবে গণ্য হবেন। আর আপনি যদি মুসাফির হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে কসর নামাজ পড়তে হবে। পুরো নামাজ পড়তে পারবেন না।

আপনার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পোস্ট এডিট করে মহিলাদের কসর নামাজ সম্মন্ধে আরও কিছু দরকারি তথ্য যুক্ত করে দিয়েছি। আশা করি, দেখে নিলে আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন এবং ইনশাআল্লাহ উপকৃত হবেন।

জাজাকুমুল্লাহ।

৮| ১৩ ই মার্চ, ২০২২ রাত ১১:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: যাই হোক, নবিজি বেশ কিছু ভবিষ্যৎ বানী করেছিলেন। সে গুলো অনেক গুলো মিলে গেছে। যদি সম্ভব হয়- এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত লিখবেন। আমার জানার ইচ্ছা আছে।

১৪ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ১০:৩১

নতুন নকিব বলেছেন:



এখন আবার যাই হোক, বলছেন কেন, প্রিয় খান সাহেব? কথায় কথায় আপনার এই যে ধর্মকে, বিশেষতঃ ইসলাম ধর্মকে খোঁচা দিয়ে নিজেকে আধুনিক হিসেবে জাহির করার বদ অভ্যাস, এগুলো আপনার কাছে উপভোগ্য হলেও অনেকের কাছেই দৃষ্টিকটু এবং আপত্তিকরও বটে। যতটুকু জানি, বিয়ে শাদিও তো করেছেন এই ধর্মকে মেনে 'কবুল' বলেই। তাই নয় কি?

আরে, শুধুই কি বিয়ে? আজ অবদি তো ব্যবহারও করে চলেছেন ধর্মের নিয়মে রাখা নাম পরিচয়ও। তাই না? না কি, ভুল কিছু বললাম? ভুল বলে থাকলে দয়া করে বলেন। শুধরে নিব অবশ্যই।

কথা হচ্ছে, এখানে কেউ আপনাকে ধর্ম মেনে চলতে বাধ্য করছে না। আপনাকে খোঁচাচ্ছেও না। বেহুদা আপনি কেন খোঁচাতে যাচ্ছেন? খোঁচালে আপনার লাভ কী? আমেরিকায় অবস্থানকারী জনৈক ব্লগার আপনাকে আমেরিকা গমনের ভিসা মিসা ইত্যাদি ম্যানেজ করে দিবে, সেই আশায় আপনি হয়তো এইসব করে বেড়াচ্ছেন। বিশ্বাস করুন, এইসব করে লাভ নেই। যার আশায় এবং ভরসায় আপনি এসব করে বেড়াচ্ছেন, তার নিজেরই আখের গোছাতে ব্যস্ত তিনি। নিজেকে সামলাতেই তার হয়তো নাভিশ্বাস ছুটে যাচ্ছে। আপনাকে সে দেখবে, আমার মনে হচ্ছে- সেই আশায় গুড়ে বালি ছাড়া আর কিছু নেই। অনর্থকই মরিচিকার পেছনে ছুটে হয়রান হচ্ছেন মনে হচ্ছে।

সুতরাং, আপনি কেন অনবরত ধর্মের পেছনে, আরও ক্লিয়ার করে বললে, ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে উল্টাপাল্টা কথাবার্তা ছড়িয়ে দিতে অব্যাহতভাবে লেগে থাকাকে নিজের অপরিহার্য্য দায়িত্ব মনে করছেন? আপনাকে বিনীতভাবে বলি, সত্যিকারার্থে ধর্ম যদি আপনার এতই অপছন্দের বিষয় হয়ে থাকে, ধর্ম যদি আপনার কোনও কাজেই না লাগে, আপনার ব্ক্তব্য অনুযায়ী ধর্ম ছাড়াই যদি আপনি বেশ আরামে থেকে থাকেন, দয়া করে তাহলে ধর্মের নিয়মে রাখা এইসব নামধাম, পরিচয় ইত্যাদি এফিডেভিট করে পাল্টে নিলেই পারেন। সেটা করেন না কেন? আপনাকে বাধা দেয় কে?

বাবার পরিচয় ব্যবহার করে, বাবার রেখে যাওয়া ধন-সম্পদ ভোগ করে, বাবার কষ্টে উপার্জিত অর্থে নির্মিত বাড়ি-ঘরে বসবাস করা স্বত্ত্বেও অনেকে বাবাকেই আবার কথায় কথায় গালি দিয়ে থাকেন। আমার ধারণা, এরা সাধারণ কেউ নন, হয়তো মহামানব(!) শ্রেণির লোক হয়ে থাকবেন। কারণ, গ্রামে যেই পাতে খায় সেই পাতে হাগে বলে একটা প্রবাদ প্রচলিত রয়েছে। আমার ধারণা, এই কাজটা যেমন তেমন লোকের দ্বারা সংঘটিত হওয়া সম্ভব নয়। এর জন্য এই টাইপের বাপকে গালি দেয়ার মত মহামানব(!) টাইপের লোকেরই প্রয়োজন।

কুশল জানবেন।

৯| ১৪ ই মার্চ, ২০২২ রাত ৩:৫৮

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:

খুবই উপকারী একটি পোষ্ট ।
প্রিয়তে তুলে রাখলাম ।
শুভেচ্ছা রইল

১৪ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ১০:৫৩

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনাকে পেয়ে আনন্দিত। পোস্ট প্রিয়তে নেয়ায় কৃতজ্ঞতা।

সুস্থতা এবং নেক হায়াত দারাজির দোআ সবসময়।

১০| ১৪ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:২২

মলাসইলমুইনা বলেছেন: নতুন নকিব,

চমৎকার লেখা । দেশের বাইরে এসে কসরের নামাজটা অনেকই পড়তে হয় । আমারও মাঝে মাঝেই মনে হতো আরামেইতো গাড়ি ড্রাইভ করে যাচ্ছি বা ৭/৮ ঘন্টা ড্রাইভ করেই ৪০০/৫০০ মাইল দূরে যাচ্ছিতো আত্মীয় স্বজনের বাসায় ।থাকছিও আরাম করেই তাহলে কসরের সংক্ষিপ্ত নামাজ কেন পড়বো ? নামাজ পুরোটাই পড়া দরকার । কিন্তু আমাদের ইসলামিক সেন্টারের ইমাম সাহেব একদিন আমার এই কথা শুনে আমাকে বললেন এটা বান্দার প্রতি আল্লাহর রহমত যে আমাদের জন্য দ্বীন কঠিন না করে সহজ করা হয়েছে। তাই কসরের নামাজটা আল্লাহর রহমত স্বীকার করে সংক্ষেপে পড়াই ভালো অতিরিক্ত কিছু না করে। সেদিন থেকেই কসরের নামাজ কেন সংক্ষেপে পড়তে হবে সেটা নিয়ে মনে আর কোনো দ্বিধা দ্বন্দ্ব নেই ।কিছু সহীহ হাদিসেও দেখেছি আমি যেখানে ইবনে আব্বাস (রাঃ) সফরে কসরের নামাজের পর কিছু লোককে সুন্নত নামাজ পড়তে দেখে বলেছেন তাহলে তিনি কসরে ফরজ নামাজই পুরোটা পড়তে পছন্দ করতেন সুন্নত না পড়ে। আপনিও কিছু প্রশ্নের উত্তরে দেখলাম সেটা বলেছেন । চমৎকার লেখা অনেকের জন্যই খুব দরকার হবে । চমৎকার লেখার জন্য ধন্যবাদ নিন ।

১৪ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ১০:৫৭

নতুন নকিব বলেছেন:



আসলে অনেকেই কসর নামাজ পড়াকে ঐচ্ছিক বিষয় মনে করে থাকেন। এটা না জানার কারণে হয়ে থাকে। প্রকৃতপক্ষে মুসাফির অবস্থায় কসর যে পড়তেই হবে, বিষয়টি সকলের একান্তভাবেই জানা দরকার।

আপনার নতুন বই বেরিয়েছে দেখলাম। খুবই আনন্দের সংবাদ। পাঠকপ্রিয়তা প্রাপ্তির দোআ থাকলো। আল্লাহ তাআ'লা আপনাকে কল্যান দান করুন। সর্বাবস্থায় স্বাচ্ছন্দ্যে রাখুন।

১১| ১৪ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:৫২

বিটপি বলেছেন: মুসাফির থাকা অবস্থায় যোহর ও আসর একসাথে এবং মাগরিব ও এশা একসাথে পড়া যায় - এরকম কোন বিধান আছে?

১৪ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ১০:৫২

নতুন নকিব বলেছেন:



ইসলামী শরীয়তের বিধান মতে কেবল মাত্র হজ্বের সময় আরাফা ও মুযদালিফায় দুই নামাজকে একত্রে আদায় করা জায়েজ। এ ছাড়া বাকি সময় মুকিম বা মুসাফির যা-ই হোক, কোন অবস্থায়ই এক নামাযকে অন্য নামাযের সময়ে একইসাথে পড়া জায়েজ নয়। তবে আকৃতিগতভাবে দুই নামাজকে একত্রিত করা যাবে, আর তা হচ্ছে, যোহরকে তার শেষ সময় পর্যন্ত দেরী করে আদায় করা এবং তারপরপরই আসরকে তার প্রথম ওয়াক্তে আদায় করে নেয়া। -আদ-দুররুল মুখতার ওয়া হাশিয়া ইবন আবেদীন, ১/৩৮১

সুতরাং, আপনার প্রশ্নোল্লেখিত যোহর ও আসর এবং মাগরিব ও এশা একসাথে আদায় করা যাবে না। এটা হানাফি মাযহাব এর আলেমগণের ফায়সালা। তিরমিজি শরীফের ১৮৮ নং হাদীসে বর্ণিত হয়েছেঃ

حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ، يَحْيَى بْنُ خَلَفٍ الْبَصْرِيُّ حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ حَنَشٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ جَمَعَ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ مِنْ غَيْرِ عُذْرٍ فَقَدْ أَتَى بَابًا مِنْ أَبْوَابِ الْكَبَائِرِ " .

ইবনু আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হতে বর্ণিত আছে, নাবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ কোন অজুহাত ছাড়াই যে ব্যক্তি দুই ওয়াক্তের নামায একত্রে আদায় করে সে কাবীরা গুনাহের স্তরসমূহের মধ্যে একটি স্তরে পৌঁছে যায়।

বুখারী, মুসলিম, সুনান গ্রন্থকারগণ, মালেক এবং আহমাদসহ অন্যান্যগণ আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন,

سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه و سلم أَىُّ الْعَمَلِ أَفْضَلُ ؟ قَالَ : « الصَّلاَةُ لِوَقْتِهَا » .

“আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম, কোন কাজটি সর্বোত্তম? রাসূলে আকরাম বললেন, সময়মত সালাত আদায় করা”।

বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত, ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত হাদীস,

«أن رسول الله صلى الله عليه وسلم جمع في حجة الوداع المغرب والعشاء بالمزدلفة»

“নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজ্জের দিন মাগরিব ও ইশাকে মুযদালিফায় জমা করে আদায় করেছেন।”

ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছেঃ

فى الفتاوى الهندية- ولا يجمع بين الصلاتين في وقت واحد لا في السفر ولا في الحضر بعذر ما عدا عرفة والمزدلفة كذا في المحيط(الفتاوى الهندية -كتاب الصلاة، الفصل الثاني في بيان فضيلة الأوقات -1/52)

সারমর্মঃ একই ওয়াক্তে দুই নামাজকে একত্রে পড়া যাবে না। সফর অবস্থাতেও নয়, মুকিম অবস্থাতেও নয়। তবে আরাফা আর মুযদালিফায় একত্রে পড়া যাবে। তবে একটি সূরত করা যায়, সেটি হল-এক নামাযের শেষ সময় আর অন্য নামাযের শুরু সময়ে নামায পড়া। প্রয়োজনের সময় এটি বৈধ পদ্ধতি। যেমন, ৩টা বেজে ৩০ মিনিট হল জোহর নামাযের শেষ সময়। আর সাড়ে তিনটা থেকে আসর শুরু হয়ে যায়। তাহলে সাড়ে তিনটার আগ মুহুর্তে জোহর নামায সমাপ্ত করে সাড়ে তিনটার পরপরই আসর নামায পড়ে নিলে তা জায়েজ হবে। একে বলা হয় জময়ে’ সূরী।

ইমাম তিরমিজি রহঃ বলেন

وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنْ لاَ يَجْمَعَ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ إِلاَّ فِي السَّفَرِ أَوْ بِعَرَفَةَ . وَرَخَّصَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنَ التَّابِعِينَ فِي الْجَمْعِ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ لِلْمَرِيضِ وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ يَجْمَعُ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ فِي الْمَطَرِ وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَلَمْ يَرَ الشَّافِعِيُّ لِلْمَرِيضِ أَنْ يَجْمَعَ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ .

বিশেষজ্ঞদের মতে সফর ও আরাফাতের ময়দান ছাড়া দুই ওয়াক্তের নামায একত্রে আদায় করা যাবে না। কিছু তাবিঈ রুগ্ন ব্যক্তিকে দুই ওয়াক্তের নামায একত্র করার অনুমতি দিয়েছেন। আহমাদ ও ইসহাক এ মত গ্রহণ করেছেন। কিছু বিশেষজ্ঞ বৃষ্টির কারণে দুই নামায একত্রে আদায় করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন। শাফিঈ, আহমাদ এবং ইসহাকও অনুরূপ কথা বলেছেন। কিন্তু শাফিঈ রুগ্ন ব্যক্তিকে দুই নামায একত্রে আদায়ের অনুমতি দেননি।

তবে অনেক ইসলামী স্কলার, যেমন- মালেকী, শাফেয়ী, হাম্বলী মাযহাবের ইমামগণ এই মত পোষণ করেছেন যে, সফরের কারণে যোহর এবং আসর অনুরূপভাবে মাগরিব ও ইশার সালাতকে একত্রে আদায় করা জায়েয। -আশ-শারহুল কাবীর, ১/৩৬৮; মুগনিল মুহতাজ, ১/৫২৯, কাশশাফুল কিনা‘, ২/৫

সুতরাং, তাদের মতানুসারীগণের জন্য উক্ত মতানুযায়ী আমল করতে কোনো সমস্যা নেই।

শুকরিয়া।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.