![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
ফ্যাসিবাদ উৎখাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন যেসব প্রবাসী বাংলাদেশী ছবি: অন্তর্জাল হতে সংগৃহিত।
ফ্যাসিবাদের জগদ্দল পাথরে চাপা পড়ে ছিল প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। ৬ জানুয়ারি ২০০৯ হতে ৫ আগস্ট ২০২৪। ১৫ বছর ৭ মাস ১ দিন। ১,৩৭,৬৮৮ ঘন্টা বা, ৮২,৬১,২৮০ মিনিট অথবা, ৪৯,৫৬,৭৬,৮০০ সেকেন্ড। একটানা। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নাম বিক্রি করে চলতো সকল অন্যায় অপরাধ। ছাত্রলীগ নামের নৃশংস হায়েনারা ধর্ষন করতো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে। ধর্ষন করলেও তাদের বিচার হতো না। খুন খারাবি রাহাজানি অন্যায় অনিয়ম করতো ছাত্রলীগ আর মামলা হতো ছাত্রদল আর শিবিরসহ অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের নামে। উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর অপসংস্কৃতিতে আচ্ছন্ন ছিল গোটা দেশ। খুন খারাবিও হতো একই চেতনার নামে। ভয়াবহ গুমের সংস্কৃতি চালু হয়েছিল রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায়। দেশবাসীর মুখ বন্ধ করার জন্য বিবিধ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দোহাই দিয়ে। ভিন্নমত দমনে ডিজিটাল নিরাপত্তার মত নিকৃষ্ট আইন চালু করা হয়েছিল। মামলার পরে মামলা ছিল নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। কথায় কথায় খুন, কথায় কথায় মামলা। কথায় কথায় হামলা। তুলে নেওয়ার ঘটনা ছিল ডাল ভাতের মত সস্তা।
এমন দুরবস্থায় দেশে অবস্থান করে কথা বলার উপায় ছিল না। কথা বললেই হাসিনার ডিজিটাল আইনের খড়গ নেমে আসতো তার উপরে। হামলা মামলার যাতাকলে পিষ্ট করা হতো। এ অবস্থায় অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বৈরাচার হটানোর যুদ্ধে নিজেদের উৎসর্গ করেছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজনের নাম করা যেতে পারে- লক্ষ লক্ষ জনতার প্রিয় মুখ ফ্রান্স প্রবাসী ড. পিনাকি ভট্টাচার্য্য- যার ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ২২ লক্ষ, আমেরিকা প্রবাসী খ্যাতনামা সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন- যার ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৩১.৫ লক্ষ, নিপীড়িত আমেরিকা প্রবাসী আবু সালেহ মোহাম্মদ নায়েব আলী- ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৯ লক্ষের বেশি, আমেরিকা প্রবাসী নির্যাতিত সাংবাদিক কনক সরওয়ার- ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৮ লক্ষ, মালয়েশিয়া প্রবাসী বিএনপি নেতা ড. ফয়জুল হক- ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষের কাছাকাছি, কলিজার ভাই-বোন খ্যাত ফ্রান্স প্রবাসী সুস্ময় শরীফ- ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা প্রায় ২.৫ লক্ষের বেশি, কানাডা ভিত্তিক নাগরিক টিভির জনপ্রিয় উপস্থাপক নাজমুস সাকিব- ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা প্রায় ৯.৬৯ লক্ষ।
এ ছাড়া, জনপ্রিয় উপস্থাপক সাইফুর সাগরের ফেইস দ্য পিপল, সৈয়দ মাসুকের ইউকে কসবা টিভি, হাসিনা আকতারের টেবিল টক ইউকেসহ বেশ কিছু প্রবাসী মিডিয়া চমকপ্রদ এবং ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। দেশে যখন মিডিয়ার উপরে স্বৈরাচারের নিয়ন্ত্রণের খড়গ তখন প্রবাসীদের এসব অনলাইন মিডিয়া এদেশবাসীর বাক স্বাধীনতাকে তুলে ধরতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করেছে। সর্বশেষ, ছাত্র জনতার আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করতে অনলাইন এক্টিভিস্টদের ভূমিকা যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা অনুধাবন করেই হাসিনার সরকার বারবার ইন্টারনেট বন্ধ করার মত দেশের জন্য মারাত্মক আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিতেও পিছপা হয়নি।
উপরের অনলাইন একটিভিস্টদের একেকজনের বিরুদ্ধে মামলার পরে মামলা রুজু করা হয়েছে। একের পর এক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। সাইবার সন্ত্রাসীসহ এদের ভয়ঙ্কর সব নাম দিয়ে মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারনা চালানো হয়েছে। এদের ধরিয়ে আনার জন্য রাষ্ট্রীয় নানাবিধ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এমনকি, এদেরকে ধরতে না পেরে দেশে থাকা এদের অনেকের পরিবার পরিজনকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকের দ্বারা তুলে নিয়ে গিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি এবং নির্যাতন করা হয়েছে। তাদেরকে অন্যায় চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে। এমনকি, গুম, খুনসহ বিভিন্নভাবে হুমকি পর্যন্তু দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু তাবেদার স্বৈরাচারের কোনো চাপের কাছেই নতি স্বীকার করেননি এসব বীরেরা। তারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জনমত গঠন, জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাাতিক অন্যান্য ফোরামসহ বিশ্ববাসীর সামনে বাংলাদেশের ভয়ঙ্কর ফ্যাসিবাদের বাস্তব চিত্র তুলে ধরার প্রচেষ্টা অব্যাহতভাবে চালিয়ে গেছেন। এবং অবশেষে বিজয় হয়েছে বীর বাঙালী জনতার। পালিয়ে গেছে স্বৈরাচার। আজ সময় এসেছে প্রবাসী বাংলাদেশীসহ স্বৈরাচার হটাও আন্দোলনে দেশে বিদেশে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন প্রত্যেকের অবদানকে স্বীকৃতি প্রদানের। প্রত্যেককে প্রাণঢালা অভিনন্দন। সাহসী বীরদের সদ্য স্বৈরাচার মুক্ত প্রিয় স্বদেশে স্বাগত।
©somewhere in net ltd.