নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

রমজান: রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও নাজাতের পয়গাম

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:৫১

রমজান: রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও নাজাতের পয়গাম

ছবিঃ অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

রমজান মাস মুমিন জীবনে এক অনন্য উপহার। এটি শুধু একটি মাস নয়, এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ এক উপহার, রহমতের বারিধারা, বরকতের অফুরান ভাণ্ডার, গুনাহ থেকে মাগফিরাতের সুবর্ণ সুযোগ এবং জাহান্নাম থেকে নাজাতের পথ। রমজান আসে আমাদের জীবনে নতুন বার্তা নিয়ে, নতুন উদ্দীপনা আর আত্মশুদ্ধির অঙ্গীকার নিয়ে। এটি এমন এক মাস, যেখানে প্রতিটি মুহূর্ত ইবাদতের, প্রতিটি নিঃশ্বাস তাওবার, আর প্রতিটি প্রার্থনা কবুলের আশায় পরিপূর্ণ।

রহমতের বারিধারা

রমজানের প্রথম দশক রহমতের বার্তা নিয়ে আসে। এই দশকে আল্লাহ তাআলা তাঁর অসীম রহমতের দরজা উন্মুক্ত করে দেন। রমজানের রহমত হলো সেই সুযোগ, যখন আল্লাহ বান্দাকে তাঁর নৈকট্য লাভের পথ দেখান। এই মাসে প্রতিটি ইবাদত, প্রতিটি দান-সদকা, প্রতিটি ভালো কাজের সওয়াব বহুগুণে বৃদ্ধি করা হয়। রমজানের রহমত আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আশীর্বাদ বয়ে আনে, আমাদের হৃদয়কে নরম করে, আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:

«إِذَا دَخَلَ رَمَضَانُ فُتِّحَتْ أَبْوَابُ الرَّحْمَةِ، وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ جَهَنَّمَ، وَسُلْسِلَتِ الشَّيَاطِينُ»

"যখন রমজান মাস আসে, তখন রহমতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানদের শৃঙ্খলিত করা হয়।" -সহিহ বুখারি, হাদিস নং ১৮৯৯

এই মাসে আল্লাহর রহমতের ছায়ায় আমরা আমাদের গুনাহ থেকে তাওবা করে পবিত্র হওয়ার সুযোগ পাই।

বরকতের অফুরান ভাণ্ডার

রমজানের দ্বিতীয় দশক বরকতের বার্তা নিয়ে আসে। এই মাসে সময়, সম্পদ, স্বাস্থ্য সবকিছুতেই আল্লাহর বরকত নাজিল হয়। রমজানের বরকত হলো সেই আলো, যা আমাদের জীবনের অন্ধকার দূর করে। এই মাসে অল্পতেই তৃপ্তি আসে, সামান্য আমলে বিশাল সওয়াব মেলে। রমজানের বরকত আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে অর্থবহ করে তোলে, আমাদের কাজে-কর্মে সফলতা আনে। এই মাসে প্রতিটি ইবাদতের সওয়াব বহুগুণে বৃদ্ধি করা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন:

«شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِنَ الْهُدَىٰ وَالْفُرْقَانِ»

"রমজান মাস, যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে, যা মানুষের জন্য হিদায়াত এবং সত্যপথের সুস্পষ্ট নিদর্শন ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী।" -সুরা আল-বাকারা, আয়াত ১৮৫

এই মাসে কুরআন তিলাওয়াত, তাহাজ্জুদ, দান-সদকা এবং অন্যান্য ইবাদতের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর বরকত লাভ করি।

মাগফিরাতের সুবর্ণ সুযোগ

রমজানের তৃতীয় দশক মাগফিরাতের বার্তা নিয়ে আসে। এই দশকে আল্লাহ তাআলা বান্দার গুনাহ মাফ করে দেন, তাদেরকে পবিত্র করেন। রমজানের মাগফিরাত হলো সেই ক্ষমা, যা আমাদের অতীতের সব ভুল-ত্রুটিকে মুছে দেয়। এই মাসে তাওবার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে ফিরে আসি, তাঁর ক্ষমা প্রার্থনা করি। রমজানের মাগফিরাত আমাদের আত্মাকে হালকা করে, আমাদের হৃদয়কে প্রশান্তিতে ভরে দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:

«مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ»

"যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে রমজান মাসের সিয়াম পালন করে, তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।" -সহিহ বুখারি, হাদিস নং ১৯০১

এই মাসে আমরা আমাদের অতীতের ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং আল্লাহর দরবারে আত্মসমর্পণ করি।

নাজাতের পয়গাম

রমজানের শেষ দশক নাজাতের বার্তা নিয়ে আসে। এই দশকে আল্লাহ তাআলা বান্দাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির পথ দেখান। রমজানের নাজাত হলো সেই মুক্তি, যা আমাদেরকে চিরস্থায়ী শান্তির দিকে নিয়ে যায়। এই মাসে লাইলাতুল কদরের মতো মহিমান্বিত রাত রয়েছে, যা হাজার মাসের ইবাদত থেকে উত্তম। এই রাতেই আল্লাহ তাআলা বান্দার ভাগ্য নির্ধারণ করেন, তাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। আল্লাহ তাআলা বলেন:

«لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ»

"লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।" -সুরা আল-কদর, আয়াত ৩

এই রাতে আল্লাহ তাআলা বান্দাদের জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন এবং তাদের জন্য জান্নাতের পথ সুগম করেন।

আসুন, রমজানে খুঁজে নিই মুক্তির পথ

রমজান মাস আমাদের জীবনে রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও নাজাতের এক অপার সম্ভাবনা নিয়ে আসে। এই মাসে আমরা আমাদের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করি, আল্লাহর নৈকট্য লাভ করি এবং গুনাহ থেকে মুক্তির পথ খুঁজে পাই। আসুন, আমরা এই মহিমান্বিত মাসের প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগাই, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করি এবং তাঁর রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও নাজাত লাভের চেষ্টা করি।

«اللَّهُمَّ أَهْلِلْهُ عَلَيْنَا بِالأَمْنِ وَالإِيمَانِ، وَالسَّلامَةِ وَالإِسْلامِ، رَبِّي وَرَبُّكَ اللَّهُ»

"হে আল্লাহ! আপনি এই মাসকে আমাদের জন্য নিরাপত্তা, ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সাথে উপস্থাপন করুন। আমার রব এবং আপনার রব হলেন আল্লাহ।"

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে রমজানের প্রকৃত বার্তা বুঝে তা বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: গরীবের জন্য সারা বছরই সমান।
রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও নাজাত গরীবদের জন্য না। চ্যাটাং চ্যাটাং কথা বলা যায়। কিন্তু বাস্তব বড় কঠিন। মুখের কথায় চিড়া ভিজে না।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৩

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ আপনাকে। ধর্মীয় (অবশ্যই শুধুমাত্র ইসলাম) পোস্টে অহেতুক এবং অযৌক্তিক আপত্তি তোলার আপনার অভ্যাসে ইদানিং বেশ ভালোই বরকত লক্ষ্য করা যাচ্ছে!

২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:১৮

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: সবাই একসাথে রোজা রাখার যে কী আনন্দ আলহামদুলিল্লাহ। দিন শেষে সবাই একসাথে ইফতার । রহমত মাগফেরাত নাজাত হয়ে আমাদের বুকে ঝুলে থাকুক প্রতিটি রমজান মাস।

জাজাকাল্লাহ খইর।

অট: #মানুষের তো ইফতার খাইতে মজা লাগে। রোজা না রেখেও কেউ কেউ ইফতার করে এগুলা নির্লজ্জ বেহায়া, আবার চ্যাটাং চ্যাটাং কথা ছাড়ে। গরীবের জন্য তুই কী করেছিস, তুই সমাজের জন্য কী করতাছস । নিজের কথা ভাব আগে। ইসলামিক পোস্ট দেখলেই জ্বালাপোড়া শুরু হয়। আল্লাহ এই জ্বালাপোড়া আরও বাড়িয়ে দিক।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:০৯

নতুন নকিব বলেছেন:


সবাই একসাথে রোজা রাখার যে কী আনন্দ আলহামদুলিল্লাহ। দিন শেষে সবাই একসাথে ইফতার ।

-ছোটবেলায় পুরো রমজান যখন শীতের সিজনে পড়তো আমার কাছে তখন আনন্দটা বেশি অনুভূত হতো। অদ্ভূত একটা ভালোলাগার ঘোরে কেটে যেত তখনকার রমজানের দিনগুলো। ভোর রাতে শীতে জবুথবু হয়ে সাহরি খেতে ওঠার সেই দৃশ্য আজও মনে দাগ কাটে। একইরকমভাবে সারা দিনের ক্লান্তি শেষে ইফতারি সামনে নিয়ে একসাথে সবাই মিলে অপেক্ষার প্রহর গুনে গুনে সময় পার করার ভেতরেও ছিল অন্যরকম আনন্দের অনুভূতি।

আবার বর্ষার দিনে যখন রমজান হতো তখন কোনো কোনো দিন নিকষ কালো মেঘে ঢাকা আকাশের দিকে তাকিয়ে শেষ বিকেলে অনুমান করা কঠিন হয়ে যেতো, বেলা কতটুকু বাকি আছে। গ্রামের বাড়িতে তখন সবার ঘরে রেডিও কিংবা ঘড়িও থাকতো না। প্রচন্ড বর্ষন মুখর এমন গোঁধুলিবেলায় ইফতার করতে গিয়েও কালেভদ্রে হিমশিম খেতে হতো। স্মৃতিপটে সেসব দৃশ্য আজও জ্বলজ্বল করে। আহ! কি অসাধারণ ছিল সেই দিনগুলো!

রহমত মাগফেরাত নাজাত হয়ে আমাদের বুকে ঝুলে থাকুক প্রতিটি রমজান মাস।

-আমিন। জাজাকুমুল্লাহ।

স্বৈরাচারের মাকে হারিয়ে শিষ্য চ্যালা চামুন্ডাদের অনেকেই যেমন আজ অকুল পাথারে বেকারার, বেকুল দিশেহারা; গুরু হারা হয়েও কারও কারও ক্ষেত্রে তেমন কিছু ঘটতেই পারে।

৩| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৫২

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সুন্দর পোস্ট। স্বাগতম মাহে রমজান।+++

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:১১

নতুন নকিব বলেছেন:



জাজাকুমুল্লাহ। প্রেরণামূলক মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা। শুভকামনা জানবেন।

৪| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:০৯

সাইফুলসাইফসাই বলেছেন: রমজান মাসে প্রায় সবাই জাগে
ফুলে ফুলে ভরে যায় বাগে!

৫| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৭

নজসু বলেছেন:




রমজান আসছে।
ভাবতেই মনটা খুশি খুশি লাগছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.