![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
হূরের প্রতি ওদের এত আগ্রহের হেতু কী? ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।
অবাক হতে হয় যখন দেখি ইসলাম নিয়ে যারা ঘোরতর বিদ্বেষ পোষণ করে, যাদের কথাবার্তায় ইসলাম বিরুদ্ধ বিষ উগরে পড়ে, তারাও হঠাৎ করে “হূর” নিয়ে বড় চিন্তিত হয়ে ওঠেন। এমনকি ইসলামকে ‘মধ্যযুগের ধর্ম’, ‘মানবাধিকারের পরিপন্থী’, ‘আধুনিক পৃথিবীর জন্য হুমকি’ বলেও যারা নিয়ম করে ফেসবুকে পোস্ট ঝাড়েন, কিবোর্ডে রীতিমত ঝড় তোলেন, তারাও যখন জান্নাতের হূর প্রসঙ্গে এসে যেন প্রেমে মগ্ন হয়ে পড়েন, তখন প্রশ্ন না তুলে উপায় কী—হূরের প্রতি ওদের এত আগ্রহের হেতু আসলে কী?
হূর কী? হূর হচ্ছে, Hoor al-Ayn, often referred to as "houri" or "maidens of Paradise," are described in Islamic texts as beautiful, pure, and virtuous companions for the righteous in the afterlife. অর্থাৎ, হূরুল আইন বা হূর — ইসলামি পরিভাষায় জান্নাতের অপার্থিব নারীসঙ্গিনী, যাঁদের কথা কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। হূরদেরকে বর্ণনা করা হয়েছে অপার সৌন্দর্য, পবিত্রতা ও চিরকালীন সতীত্বের প্রতীক হিসেবে।
হূর সম্পর্কে আল-কুরআন ও সহীহ হাদীসে বিস্তৃত আলোচনা এসেছে। হূর হলো জান্নাতের এক অপার্থিব পুরস্কার, যা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর প্রিয় বিশ্বাসী বান্দাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন। এটি কেবল শারীরিক সৌন্দর্য বা দেহগত আকর্ষণের প্রতীক নয়; বরং এটি জান্নাতের পরিপূর্ণ সুখ, প্রশান্তি, নির্মল ভালোবাসা এবং পবিত্র সম্পর্কের প্রতিচ্ছবি। হূর হচ্ছে এমন এক সত্তা, যার সৌন্দর্য, পবিত্রতা ও প্রজ্ঞা—সবকিছুই দুনিয়ার তুলনায় অকল্পনীয়। সূরা আদ-দোখান (৪৪:৫৪)-তে বলা হয়েছে, “وَزَوَّجْنَاهُم بِحُورٍ عِينٍ”—“আমি তাদেরকে হূর ‘ঈনের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করব।” সূরা আত-তূর (৫২:২০) তে এসেছে, “مُتَّكِـِٔينَ عَلَىٰ سُرُرٍ مَّصْفُوفَةٍ ۖ وَزَوَّجْنَـٰهُم بِحُورٍ عِينٍ”—“তারা থাকবে সারি সারি বিছানায় হেলান দিয়ে। আর আমি তাদের হূর ‘ঈনের সাথে মিলিত করব।” সূরা আর-রাহমান (৫৫:৭২)-এ বলা হয়েছে, “حُورٌ مَّقْصُورَٰتٌ فِى ٱلْخِيَامِ”—“তারা হবে তাঁবুতে আবদ্ধ, লজ্জাশীলা ও সংরক্ষিত হূর।” সূরা আল-ওয়াকিয়া (৫৬:২২–২৪)-এ ইরশাদ হয়েছে, “وَحُورٌ عِينٌ، كَأَمْثَـٰلِ ٱللُّؤْلُؤِ ٱلْمَكْنُونِ، جَزَآءًۭ بِمَا كَانُوا۟ يَعْمَلُونَ”—“তারা পাবে হূর ‘ঈন, যারা হবে সুরক্ষিত মুক্তার ন্যায়—এটি তাদের কর্মের পুরস্কারস্বরূপ।”
সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে: “وَأَزْوَاجُهُمُ الْحُورُ الْعِينُ”—“তাদের স্ত্রী হবে হূর ‘ঈন।” রাসূল ﷺ বলেন, “জান্নাতি কোনো নারী পৃথিবীর দিকে উঁকি দিলে তার আলো আকাশ ও পৃথিবীকে উদ্ভাসিত করে দেবে, তার সুগন্ধ চারিদিককে মৌময় করে তুলবে। এমনকি তার মাথার ওড়ন দুনিয়া ও দুনিয়ার সব কিছু থেকেও উত্তম।” (সহীহ বুখারী ২৭৯৬)
কুরআন ও হাদীসের সুস্পষ্ট এসব বর্ণনা উপেক্ষা করেও যাদের ইসলাম নিয়ে তীব্র আপত্তি, তারা হঠাৎ করে হূর প্রসঙ্গে এসে যেন ক্ষুধার্ত হয়ে ওঠেন। একজন ইসলাম-বিদ্বেষী যদি সত্যিই ইসলামকে "কল্পকাহিনী" মনে করেন, তবে সেই ধর্মের জান্নাত ও হূরের ধারণা তাকে এত আন্দোলিত এবং আলোড়িত করে কেন? তিনি তো বিশ্বাসই করেন না, তাহলে ইসলামের অন্যসব বিষয় বাদ দিয়ে শুধুমাত্র হূরের প্রতি তার এত ঈর্ষা কেন? হূরের পেছনে তারা কেন এত লাগতে যান? হূরের আলোচনায় তাদের এত ইফোর্ট দেওয়ার কারণ কী? তার মানে কি এই যে, তারা উপরে উপরে ইসলাম ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ পোষনের ভাব দেখালেও মনে মনে হুরের প্রতি ভালোবাসা চেপে রেখেছেন ঠিকই?
আসলে হূর শুধু পুরুষের জন্য নয়, এটি জান্নাতের এক পূর্ণাঙ্গ পরিপূর্ণতা, একটি প্রতিদান। নেককার নারী জান্নাতে হুরের চেয়েও উচ্চ মর্যাদায় বিভূষিত হবেন। হূর হলো জান্নাতের নির্মলতা ও চিরস্থায়ী স্নিগ্ধতার উপমা। তাই যখন কেউ হূর নিয়ে ব্যঙ্গ করে, আসলে সে জান্নাতের ধারণাকেই ব্যঙ্গ করে; ঈমানদারদের প্রাপ্তিকে ঈর্ষা করে।
এদের কেউ কেউ হূরের ছবি বানিয়ে মিম বানায়, কেউ আবার হাদীসের অনুবাদ বিকৃত করে পোস্ট দেয়। একদিকে বলে “আমরা বিজ্ঞান মানি”—অন্যদিকে হূর না পাওয়ার হতাশায় ভোগে! হায়রে, ঈমান নেই, তবুও হূরের প্রতি দুর্ণিবার আকর্ষণ এমন যে, হূর যেন না পেয়ে অন্তর হাহাকার করে ওঠে।
আসলে সত্যটা হলো, ঈমান ও সৎকর্মই হূরপ্রাপ্তির একমাত্র পথ। রাসূল ﷺ বলেছেন, “যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও অন্যায় কাজ ত্যাগ করে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রোজা রাখে—তার জন্য জান্নাতে একটি বিশেষ দরজা খোলা হবে।” (সহীহ বুখারী, মুসলিম)
তাই বলি, হূরের প্রেমে গোপনে আকুল হয়ে লাভ নেই, আর্তনাদ করেও কোনো ফায়দা হবে না। সত্যিই যদি হূর পেতে চান বিশ্বাসের পথ ধরুন, নচেৎ হিংসার আগুনেই শুধু পুড়তে পারবেন। কাজের কাজ তাতে কিছুই হবে না। কারণ, জান্নাতের হূর তো আর ফেসবুক লাইভে এসে বলবে না—“তোমাকে ভালোবাসি, হে প্রিয়(!) ইসলাম বিদ্বেষী ভাই!”
হূর কেবলমাত্র তাঁদের জন্যই, যারা তাকওয়া ও ঈমান নিয়ে এই দুনিয়ায় জীবন কাটিয়েছে। হিংসা করে লাভ নেই, চাইলে এখনো সময় আছে। ঈমানের পথে আসুন, সৎকর্ম করুন—তবেই মিলবে অপার্থিব সেই প্রেমের পুরস্কার।
২| ২০ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৩
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
সোবাহান আল্লাহ!
এক জন পূণ্যবান মুমিন তার পূন্যের পুরস্কারস্বরূপ বেহেশতে পাবেন ৭২ জন হুর। যারা হবে দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ সুন্দরী নারীর চেয়েও শ্রেষ্ঠতর।
বেহেশতের পবিত্র রমণীদেরকে মহা পবিত্র কিতাব আল কোরআনের ভাষায় বলা হয়েছে- ‘হুর’। এই শব্দটি কোরআন মজিদের চারটি সুরায় উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রথমত
সুরা দোখানের ৫৪ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আমি তাদের আনতলোচনা স্ত্রী দেব।’
দ্বিতীয়ত
সুরা তুরের ২০ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তারা সারিবদ্ধ সিংহাসনে হেলান দিয়ে বসবে। আমি তাদের আনতলোচনা হুরদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করে দেব।’
তৃতীয়ত,
সুরা আর রাহমানের ৭২ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘(জান্নাতিদের জন্য রয়েছে) তাঁবুতে অবস্থানকারিণী হুরগণ।’ চতুর্থত, সুরা ওয়াকেয়ার ২২ থেকে ৩৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তথায় (বেহেশতে ) আনতনয়না হুরগণ, যারা আবরণে রক্ষিত মোতির মতো। তারা যা কিছু করত তার পুরস্কারস্বরূপ। তারা তথায় (বেহেশতে) অবান্তর ও কোনো পাপবাক্য শুনবে না, শুনবে সালাম আর সালাম (শান্তি, শান্তি)। যারা ডান দিকের দল, কত ভাগ্যবান ডান দিকের দল। তারা থাকবে এমন উদ্যানে, যেখানে আছে কাঁটাবিহীন কুলবৃক্ষ এবং কাঁদি কাঁদি কলা এবং দীর্ঘ ছায়ায় আর সদা প্রবাহিত পানি ও প্রচুর ফলমূল, যা শেষ হওয়ার নয় এবং নিষিদ্ধও নয়। আর থাকবে সমুন্নত শয্যায়। আমি জান্নাতি হুরদের বিশেষরূপে সৃষ্টি করেছি। তাদের করেছি চিরকুমারী, কামিনী, সমবয়স্কা।’
কেমন হবে হুরের দেহ
মহানবী হুজুর পাক (সা.) বলেছেন, বেহেশতের রমণীদেরক চার রঙে সৃষ্টি করা হয়েছে।
যথা—সাদা, হলদে, সবুজ ও লাল।
তাদের দেহ জাফরান, মৃগনাভি, আম্বর ও কাফুর দ্বারা সৃষ্টি। তাদের চুল লবঙ্গ দ্বারা সৃষ্টি। তাদের পা থেকে হাঁটু পর্যন্ত সুগন্ধি জাফরানের দ্বারা সৃষ্টি। হাঁটু থেকে নাভি পর্যন্ত মৃগনাভির দ্বারা তৈরি, নাভি থেকে ঘাড় পর্যন্ত আম্বরের তৈরি, ঘাড় থেকে মাথা পর্যন্ত কাফুরের তৈরি।
যদি এক জন রমণী পৃথিবীতে সামান্য থুতু নিক্ষেপ করত, তাহলে সমগ্র পৃথিবী সুঘ্রাণে মুখরিত হয়ে যেত।
তাদের বুকে মহান আল্লাহর নাম ও স্বামীর নাম লেখা থাকবে। প্রত্যেকের হাতে ১০টি করে স্বর্ণের কাঁকন থাকবে। প্রত্যেক আঙুলে থাকবে মুক্তার আংটি এবং উভয় চরণে থাকবে জহরতের নূপুর।
সোবহান আল্লাহ। কতই না আকর্ষণীয় রমণীগণ।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৩:০২
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: জ্ঞানপাপী না ওরা মূর্খপাপী উহারা ইচ্ছা করেই ইসলাম নিয়ে বিষোদগার করে; উহাদের উদ্দেশ্য হলো ইসলামের বিপক্ষে বলে পাশ্চাত্যের আনুকূল্য পাওয়া। অথচ উহারা কোন দিন পবিত্র আল কোরআনের একটি লাইনও পড়ে দেখেনি তারপরও না জেনেই পার্থিব মোহে দিনরাত সাতদিন শুধু মিথ্যাই বলে যাচ্ছে।