নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ! যা চেয়েছিলাম, তার চেয়েও বেশি দয়া করেছেন আমার পরম প্রিয় রব। যা পাইনি, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র আক্ষেপ নেই—কারণ জানি, তিনি দেন শুধু কল্যাণই। সিজদাবনত শুকরিয়া।\n\nপ্রত্যাশার একটি ঘর এখনও কি ফাঁকা পড়ে আছে কি না, জানি না। তবে এটুকু জানি—

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

কথা যেভাবে দোয়া ও সাওয়াব লাভের কারণ হয়

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৩৫

কথা যেভাবে দোয়া ও সাওয়াব লাভের কারণ হয়

অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে আমরা অসংখ্য কথা উচ্চারণ করি—কখনো সাধারণ, কখনো অসাধারণ, কখনো ভালো বা মন্দ। কিন্তু যদি আমরা দৈনন্দিন এই কথাগুলোতে সামান্য কয়েকটি শব্দ যোগ করে দেই, তাহলে সেগুলো শুধু কথা থেকে যায় না; বরং দোয়া ও ইবাদতে পরিণত হয়। এতে কথার সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় এবং আমাদের সওয়াবের খাতায় নেকি জমা হয়, ইনশা আল্লাহ।

এই সাধারণ অভ্যাসগুলো প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ অনুসরণ করে আমাদের জীবনকে আরও বরকতময় করে তুলতে পারে। নিম্নে সময়, পরিস্থিতি ও অবস্থা অনুসারে কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরা হলো, যেখানে প্রতিটি দোয়া বা তাসবিহের বাংলা উচ্চারণের পাশাপাশি আরবি লিপি যোগ করা হয়েছে। অরিজিনাল তালিকার সাথে কয়েকটি অতিরিক্ত ছোট দোয়া/তাসবিহ যোগ করা হয়েছে, যা দৈনন্দিন জীবনে প্রযোজ্য এবং হাদিস বা কুরআন থেকে সংগৃহীত। প্রতিটির রেফারেন্সও উল্লেখ করা হয়েছে।

১. কাজ শুরু করার সময়: বিসমিল্লাহ (بِسْمِ اللَّهِ)

কোনো কাজ শুরু করার মুহূর্তে ‘বিসমিল্লাহ’ (আল্লাহর নামে শুরু করছি) বলা সুন্নাহ। এতে কাজে বরকত আসে এবং শয়তানের অংশগ্রহণ রোধ হয়। খাওয়া, পান করা, লেখা বা যেকোনো কাজের শুরুতে এটি উচ্চারণ করলে সময়টি ইবাদতে পরিণত হয়। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৩৭৬)

২. খাওয়া-দাওয়া শেষে: আলহামদুলিল্লাহ (الْحَمْدُ لِلَّهِ)

খাওয়া বা পান করা শেষ হলে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ (সব প্রশংসা আল্লাহর) বলে শুকরিয়া আদায় করা উচিত। শুভ সংবাদ শোনার সময়ও এটি উত্তম। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭৩৪)

৩. সাক্ষাতের সময়: আসসালামু আলাইকুম (السَّلَامُ عَلَيْكُمْ)

কারও সঙ্গে সাক্ষাত হলে ‘হাই’ বা ‘হ্যালো’র পরিবর্তে ‘আসসালামু আলাইকুম’ (আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক) বলা উচিত। পরিচিত-অপরিচিত সকলকে সালাম দেওয়া কুরআন ও হাদিসে নির্দেশিত। অমুসলিমের সালামের জবাবে শুধু ‘ওয়া আলাইকুম’ বলুন। (সুরা আন-নুর, আয়াত: ৬১)

৪. কুশল জিজ্ঞাসায়: আলহামদুলিল্লাহ (الْحَمْدُ لِلَّهِ)

কেউ ‘কেমন আছেন’ জিজ্ঞাসা করলে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করুন। এটি জিকির, সদকা ও উত্তম দোয়া। সুখ-দুঃখে সর্বাবস্থায় এটি কৃতজ্ঞতার প্রকাশ। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩৮০৫)

৫. অসুস্থতা বা অস্বস্তিতে: আলহামদুলিল্লাহি আলা কুল্লি হাল (الْحَمْدُ لِلَّهِ عَلَى كُلِّ حَالٍ)

শারীরিক বা মানসিক অসুস্থতায় ‘ভালো লাগছে না’র পরিবর্তে ‘আলহামদুলিল্লাহি আলা কুল্লি হাল’ (যেকোনো অবস্থাতেই আল্লাহর প্রশংসা) বলুন। রাসুল (সা.) অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে এটি উচ্চারণ করতেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩৮০৪)

৬. আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব দেখলে: আল্লাহু আকবার (اللهُ أَكْبَرُ)

আল্লাহর মহত্ত্বের নিদর্শন দেখলে বা শুনলে ‘সুপার’র পরিবর্তে ‘আল্লাহু আকবার’ (আল্লাহ মহান) বলুন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬২১৮)

৭. বিস্ময় প্রকাশে: সুবহানআল্লাহ (سُبْحَانَ اللَّهِ)

আশ্চর্যজনক কিছু দেখলে ‘ওয়াও’র পরিবর্তে ‘সুবহানআল্লাহ’ (আল্লাহ পবিত্র-মহান) বলুন। এটি জিকির ও সদকা, যা সওয়াব বৃদ্ধি করে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬২১৮)

৮. পছন্দনীয় কিছু দেখলে: মাশা আল্লাহ (مَا شَاءَ اللَّهُ)

কোনো কিছু পছন্দ হলে ‘জোশ’র পরিবর্তে ‘মাশা আল্লাহ’ (আল্লাহ যেমন চেয়েছেন) বলুন। এটি বদনজর থেকে রক্ষা করে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৩৫০৮)

৯. ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায়: ইনশা আল্লাহ (إِنْ شَاءَ اللَّهُ)

ভবিষ্যতের কোনো ইচ্ছা প্রকাশ করলে ‘ইনশা আল্লাহ’ (আল্লাহ ইচ্ছা করলে) যোগ করুন। (সুরা কাহাফ, আয়াত: ২৩-২৪)

১০. হাঁচির সময়: আলহামদুলিল্লাহ (الْحَمْدُ لِلَّهِ) ও ইয়ারহামুকাল্লাহ (يَرْحَمُكَ اللَّهُ)

হাঁচি দিলে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলুন; শুনলে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ (আল্লাহ আপনার ওপর রহম করুন) বলুন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬২২৪)

১১. অপ্রীতিকর কিছু দেখলে: নাউযুবিল্লাহ (أَعُوذُ بِاللَّهِ)

বাজে কথা বা গুনাহ দেখলে ‘শিট’র পরিবর্তে ‘নাউযুবিল্লাহ’ (আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই) বলুন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩৬২)

১২. বিপদ বা অশুভ সংবাদে: ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ)

বিপদ বা অশুভ সংবাদে ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ (আমরা আল্লাহর এবং তাঁর কাছেই ফিরব) বলুন। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৬; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২১২৬)

১৩. ভুল বা গুনাহে: আস্তাগফিরুল্লাহ (أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ)

ভুল বা গুনাহ হলে ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ (আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই) বলুন। রাসুল (সা.) প্রতিদিন ৭০ বারের বেশি ইস্তিগফার করতেন। (সুরা মুহাম্মদ, আয়াত: ১৯; সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩০৭)

১৪. ওপরে ওঠা বা নামার সময়: আল্লাহু আকবার (اللهُ أَكْبَرُ) ও সুবহানআল্লাহ (سُبْحَانَ اللَّهِ)

ওপরে উঠলে ‘আল্লাহু আকবার’, নিচে নামলে ‘সুবহানআল্লাহ’ বলুন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৯৯৩)

১৫. অনিশ্চিত বিষয়ে: আল্লাহু আলাম (اللَّهُ أَعْلَمُ)

নিশ্চিত না জেনে কথা বললে শেষে ‘আল্লাহু আলাম’ (আল্লাহই ভালো জানেন) যোগ করুন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৫৭০)

১৬. সমস্যার সম্মুখীন হলে: তাওয়াক্কালতু ‘আলাল্লাহ্‌ (تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ)

সমস্যায় ‘তাওয়াক্কালতু ‘আলাল্লাহ্‌ (আল্লাহর ওপর ভরসা) বলুন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২৪০৬)

১৭. আনন্দের মুহূর্তে: ফা তাবারাকাল্লাহ (فَتَبَارَكَ اللَّهُ)

আনন্দদায়ক ঘটনায় ‘ফা তাবারাকাল্লাহ’ (আল্লাহর বরকত) বলুন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩৩৭৫)

১৮. ভয়ের মুহূর্তে: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (لَا إِلَٰهَ إِلَّا اللَّهُ)

ভয় পেলে চিৎকারের পরিবর্তে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ (আল্লাহ ব্যতীত কোনো মাবুদ নেই) বলুন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩৪৬)

১৯. কৃতজ্ঞতা প্রকাশে: জাযাকাল্লাহু খাইর (جَزَاكَ اللَّهُ خَيْرًا)

উপকার পেলে ‘থ্যাংকস’র পরিবর্তে ‘জাজাকাল্লাহু খাইর’ (পুরুষের জন্য) বা ‘জাজাকিল্লাহু খাইরান’ (নারীর জন্য) বলুন। এটি উপকারীর জন্য দোয়া। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩৩৬)

২০. সফলতার জন্য: ওয়ামা তাওফিকি ইল্লা বিল্লাহ (وَمَا تَوْفِيقِي إِلَّا بِاللَّهِ)

কাজে আল্লাহর ওপর নির্ভর করে ‘ওয়ামা তাওফিকি ইল্লা বিল্লাহ’ (আমার সফলতা কেবল আল্লাহর মাধ্যমে) বলুন। (সুরা হুদ, আয়াত: ৮৮)

২১. শুভকামনায়: বারাকাল্লাহু ফিক (بَارَكَ اللَّهُ فِيكَ)

ভালো কিছু দেখলে ‘মাশা আল্লাহ’র সাথে ‘বারাকাল্লাহু ফিক’ (পুরুষের জন্য) বা ‘বারাকাল্লাহু ফিকি’ (নারীর জন্য) বলুন। এটি বদনজর থেকে রক্ষা করে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২৩২)

২২. বিজয়ের সময়: আল্লাহু আকবার (اللهُ أَكْبَرُ)

বিজয় লাভে বা আশায় ‘আল্লাহু আকবার’ বলুন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬১০)

২৩. বিদায়ের সময়: ফি আমানিল্লাহ (فِي أَمَانِ اللَّهِ)

বিদায় নেওয়ায় ‘বাই’র পরিবর্তে ‘ফি আমানিল্লাহ’ (আল্লাহ নিরাপত্তা দিন) বলুন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩৪৪০)

২৪. ঘুমানোর আগে: আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহয়া (اللَّهُمَّ بِاسْـمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا)

ঘুমাতে যাওয়ার আগে এটি বললে রাত্রির সময়টি সুরক্ষিত হয়। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩২৪)

২৫. জাগ্রত হওয়ার পর: আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আহয়ানা বা’দা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশুর (الْحَمْدُ للهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ)

জাগ্রত হয়ে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করুন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩১১)

২৬. টয়লেটে প্রবেশের সময়: বিসমিল্লাহ, আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিনাল খুবছি ওয়াল খাবাইছ (بِسْمِ الله اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبْثِ وَالْخَبَائِثِ)

এটি বলে প্রবেশ করলে অশুভ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৪২)

২৭. টয়লেট থেকে বের হওয়ার সময়: গুফরানাকা (غُفْرَانَكَ)

বের হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৩০; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩০০)

২৮. বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময়: বিসমিল্লাহ, তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ (بِسْمِ اللَّهِ تَوَكَّلْـتُ عَلَى اللَّهِ، وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُـوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ)

এটি বললে পথচলা নিরাপদ হয়। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৫০৯৫; সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩৪২৬)

২৯. উপকারী জ্ঞান চাইতে: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফিয়ান, ওয়া রিজকান তাইয়িবান, ওয়া আমালান মুতাকাব্বালান (اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ عِلْماً نَافِعاً، وَرِزْقاً طَيِّباً، وَعَمَلاً مُتَقَبَّلاً)

দৈনন্দিন জ্ঞানার্জনে এটি বলুন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৯২৫)

৩০. জান্নাত চাইতে: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল জান্নাতা ওয়া আউজু বিকা মিনান নার (اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْجَنَّةَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ النَّارِ)

প্রতিদিনের দোয়ায় যোগ করুন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৭৯২)

৩১. নিরাপত্তার জন্য কুরআনের শ্রেষ্ঠ আয়াত: আয়াতুল কুরসি (أَيَةُ الْكُرْسِيِّ) -

আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল কাইয়্যুম... (সম্পূর্ণ আয়াত) সকাল-সন্ধ্যায় পড়লে রক্ষা পাওয়া যায়। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:

مَنْ قَرَأَ آيَةَ الْكُرْسِيِّ دُبُرَ كُلِّ صَلاَةٍ مَكْتُوبَةٍ لَمْ يَمْنَعْهُ مِنْ دُخُولِ الْجَنَّةِ إِلاَّ أَنْ يَمُوتَ

“যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে, তার আর জান্নাতে প্রবেশে কোনো বাধা থাকবে না, শুধু মৃত্যু ছাড়া।” সুনান আন-নাসায়ী, হাদীস: ২২৭ (সহীহুল জামে, ৬৪৬৪, সহীহ আলবানী)

আরেকটি হাদীসে এসেছে—

مَنْ قَرَأَ آيَةَ الْكُرْسِيِّ فِي دُبُرِ الصَّلَاةِ، أَوْ حِينَ يُصْبِحُ أُجِيرَ مِنْهُ حَتَّى يُمْسِيَ، وَمَنْ قَرَأَهَا حِينَ يُمْسِي أُجِيرَ مِنْهُ حَتَّى يُصْبِحَ

“যে ব্যক্তি সকালে আয়াতুল কুরসি পড়বে, সন্ধ্যা পর্যন্ত সে রক্ষা পাবে; আর যে সন্ধ্যায় পড়বে, সকাল পর্যন্ত সে রক্ষা পাবে।” আল-মুস্তাদরাক, হাদীস: ২০৬, সহীহ বলেছেন আল-হাকিম ও শাইখ আলবানী (সিলসিলাহ সহীহাহ, ৫৮৫৮)

আবূ হুরাইরা رضي الله عنه-এর হাদীসে এসেছে, শয়তান তাকে আয়াতুল কুরসি শেখায় এবং বলে:

“যখন তুমি রাতে ঘুমাতে যাবে তখন আয়াতুল কুরসি পড়বে, তাতে আল্লাহ তোমার জন্য রক্ষক পাঠাবেন এবং শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না ফজর পর্যন্ত।”

রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন: "صدقك وهو كذوب"
“সে (শয়তান) তোমাকে সত্য বলেছে যদিও সে চির মিথ্যাবাদী।” সহীহ আল-বুখারী, হাদীস: ২৩১১

৩২. নামাজের পরে এবং ঘুমানোর আগে ৩ তাসবিহ পাঠ:

সুবহানআল্লাহ (سُبْحَانَ اللَّهِ) ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ (الْحَمْدُ لِلَّهِ) ৩৩ বার, আল্লাহু আকবার (اللهُ أَكْبَرُ) ৩৩ বার, নামাজ শেষে এটি বললে সওয়াব হয় এবং ঘুমানোর আগেও প্রযোজ্য।

১. নামাজের পর

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:

"مَنْ سَبَّحَ اللَّهَ دُبُرَ كُلِّ صَلاَةٍ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، وَحَمِدَ اللَّهَ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، وَكَبَّرَ اللَّهَ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، فَتِلْكَ تِسْعٌ وَتِسْعُونَ، ثُمَّ قَالَ تَمَامَ الْمِائَةِ: لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، غُفِرَتْ خَطَايَاهُ وَإِنْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ الْبَحْرِ"

অর্থ:
“যে ব্যক্তি প্রতিটি ফরয নামাজের পর ৩৩ বার সুবহানআল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৩ বার আল্লাহু আকবার বলবে, এবং শেষে একশ পূর্ণ করতে বলবে— লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকালাহু, লাহুল মুল্কু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাইইন কদীর — তার সব গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমান হয়।” সহীহ মুসলিম, হাদীস: ৫৯৭

২. ঘুমানোর আগে

আলী رضي الله عنه ও ফাতিমা رضي الله عنها-কে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছিলেন:

"إِذَا أَخَذْتُمَا مَضَاجِعَكُمَا أَوْ أَوَيْتُمَا إِلَى فِرَاشِكُمَا فَسَبِّحَا ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، وَاحْمَدَا ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، وَكَبِّرَا أَرْبَعًا وَثَلاَثِينَ، فَهُوَ خَيْرٌ لَكُمَا مِنْ خَادِمٍ"

অর্থ:
“যখন তোমরা বিছানায় যাবে, তখন ৩৩ বার সুবহানআল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়বে। এটি তোমাদের জন্য খেদমতকারীর চেয়েও উত্তম।” সহীহ আল-বুখারী, হাদীস: ৬৩১৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস: ২৭২৭

৩৩. সুখের জন্য সাইয়্যিদুল ইসতিগফার দোয়া পাঠ:

আল্লাহুম্মা ইন্নি আবদুকা ইবনু আবদিকা ইবনু আমাতিকা... (اللَّهُمَّ إِنِّي عَبْدُكَ ابْنُ عَبْدِكَ ابْنُ أَمَتِكَ)
এটি বললে সুখ ও শান্তি আসে। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, "যে বান্দা এই দো‘আ পাঠ করবে, আল্লাহ তার দুঃখ দূর করবেন এবং দুশ্চিন্তা দূর করবেন, আর তার স্থলে স্বস্তি দান করবেন।” মুসনাদ আহমদ (হাদীস নং ৩৭১২), ইবনু হিব্বান (আল-সাহিহ, হাদীস নং ৯৬৯), আল-মুস্তাদরাক আলা আস-সাহিহাইন (হাকিম, ১/৫১০), শাইখ আলবানী (رحمه الله) একে সহীহ বলেছেন (সিলসিলাহ সহীহাহ, হাদীস নং ১৯৯)

৩৪. দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যানের জন্য:

আল্লাহুম্মা আতিনা ফিদ-দুনয়া হাসানাতান ওয়া ফিল-আখিরাতি হাসানাতান ওয়া কিনা আজাবান-নার (اللَّهُمَّ آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ)
প্রিয় নবীর সবচেয়ে বেশি বলা দোয়া। (সুন্নাহ.কম, রিয়াদুস সালিহিন ১৬)

৩৫. প্রতিদিনের তাসবিহ: সুবহানআল্লাহ (سُبْحَانَ اللَّهِ) ১০০ বার

প্রতিদিন ১০০ বার বললে সওয়াবের সংখ্যা বাড়ে এবং অতিরিক্তের জন্যও মাল্টিপল রিওয়ার্ড।

১. সুবহানআল্লাহ ১০০ বার

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:

"مَنْ قَالَ سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ مِائَةَ مَرَّةٍ، حُطَّتْ خَطَايَاهُ وَإِنْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ الْبَحْرِ"

অর্থ:
“যে ব্যক্তি প্রতিদিন ১০০ বার সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি বলবে, তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার মতো বেশি হয়।” সহীহ আল-বুখারী, হাদীস: ৬৪০৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস: ২৬৯১

২. অতিরিক্ত বললে আরও সওয়াব

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:

"مَنْ قَالَ فِي يَوْمٍ مِائَةَ مَرَّةٍ سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ، لَمْ يَأْتِ أَحَدٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِأَفْضَلَ مِمَّا جَاءَ بِهِ، إِلَّا أَحَدٌ قَالَ مِثْلَ مَا قَالَ أَوْ زَادَ عَلَيْهِ"

অর্থ:
“যে ব্যক্তি এক দিনে ১০০ বার সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি বলবে, কিয়ামতের দিন তার চেয়ে বেশি সওয়াব নিয়ে কেউ আসবে না— কেবল সে ছাড়া, যে একই পরিমাণ পড়েছে বা এর চেয়ে বেশি পড়েছে।” সহীহ মুসলিম, হাদীস: ২৬৯২

৩৬. ক্ষমার জন্য দোয়া:

রাব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আনতা খাইরুর রাহিমিন (رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ)
ক্ষমা ও রহম চাইতে। (সুরা আল-মুমিনুন, আয়াত: ১১৮; ইসলামকিউএ, অ্যানসার ৩১৭৭)

৩৭. ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য সকাল-সন্ধ্যার জিকির:

আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফিয়াহ (اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ)
সকাল-সন্ধ্যায় বললে ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। (ইসলামকিউএ, অ্যানসার ১২৬৫৮৭)

৩৮. তাওহিদের সাক্ষ্য:

আস্তাগফিরুল্লাহ ওয়া আতুবু ইলাইহি (أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ)
প্রশংসা ও সাক্ষ্য দিয়ে ক্ষমা চাইতে। (সুন্নাহ.কম, হিসন আল-মুসলিম)

৩৯. ঋণ থেকে মুক্তি পেতে:

ঋণ থেকে মুক্তি পেতে হাদিসে একাধিক দোয়া বর্ণিত হয়েছে। এক হাদিসে এসেছে-

اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلاَلِكَ عَنْ حَرَامِكَ، وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكِ عَمَّنْ سِوَاكَ

আল্লা-হুম্মাকফিনী বিহালা-লিকা ‘আন হারা-মিকা ওয়া আগনিনী বিফাদ্বলিকা ‘আম্মান সিওয়া-ক।

‘হে আল্লাহ! হারামের পরিবর্তে আপনার হালাল রুজি আমার জন্য যথেষ্ট করুন। আর আপনাকে ছাড়া আমাকে কারো মুখাপেক্ষী করবেন না এবং স্বীয় অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে স্বচ্ছলতা দান করুন।’ -তিরমিজি শরীফ, হাদিস নং ৩৫৬৩।

অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে-

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ، وَالْبُخْلِ وَالْجُبْنِ، وَضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ

আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘উযু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি, ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিনাল-‘আজযি ওয়াল-কাসালি, ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিনাল-বুখলি ওয়াল-জুবনি, ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিন দ্বালা‘য়িদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজা-ল।

‘হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুঃশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমন-পীড়ন থেকে। - সহিহ বুখারি, হাদিস নং ২৮৯৩।

ইসলামে অপ্রয়োজনীয় কথা এড়িয়ে চুপ থাকা উত্তম। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, সে উত্তম কথা বলুক অথবা চুপ থাকুক।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১০২)

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৮

আবেদি১২৩ বলেছেন: মনে হয় copy paste , তবুও বলবো ভালো পোস্ট হয়েছে।

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৩০

নতুন নকিব বলেছেন:



কেন কপি পেস্ট মনে হলো?

২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২৬

নতুন বলেছেন: ফিলিস্তিন, আফগানস্থান, ইরাক, সিরিয়া এবং বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারতের দরিদ্রদের জন্য এইসব দোয়া প্রযোজ্য না। B-)

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৩১

নতুন নকিব বলেছেন:



ভালো বলেছেন।

৩| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪০

নতুন বলেছেন: আপনার এই পোস্ট সহ আমাদের দেশী আলোম ওলামাদের কিভাবে দোয়া করলে আ্ল্লাহ কবুল করবেন সেই ওয়াজগুলি ফিলিস্তিনিদের কাছে পৌছে দেওয়া উচিত।

কারন গত ৭৫ বছর ধরে ফিলিস্তিনিরা দোয়া করতেছে কিন্তু কবুল হচ্ছেনা।

কারন এই মহাবিশ্বের সৃস্টিকর্তা ফিলিস্তিনে শিশু হত্যা দেখছে কিন্তু কিছুই করছেনা।

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৩

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনি যেহেতু কাছাকাছি আছেন, ফিলিস্তিনিদের কাছে দোয়াগুলো পৌঁছে দিতে চেষ্টা করতে পারেন।

৪| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪০

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: প্রাত্যহিক জীবনের আমল।

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৪

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, ঠিক বলেছেন।

৫| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৯

জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:



chatGPT (আ: ) থেকে আসল দোয়া শিখুন।

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৫

নতুন নকিব বলেছেন:



"আলাইহিস সালাম" অর্থ বুঝেন?

৬| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৪

গোবিন্দলগোবেচারা বলেছেন: @ গুলু রাজাকার- হতাশ হবেন না, ভাদ্র মাস গিয়েছে তো কি হয়েছে, ভাদ্র মাস আবার আসবে

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৯

নতুন নকিব বলেছেন:



হাসিনার লজ্জাজনক পলায়নের পর থেকে উহা বেশি বেসামাল। মনে হচ্ছে, উহার স্বাভাবিক জ্ঞান লোপ পেয়েছে।

৭| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৭

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: @ গোবিন্দলগোবেচারা,
গুলু রাজাকার কে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.