নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ! যা চেয়েছিলাম, তার চেয়েও বেশি দয়া করেছেন আমার পরম প্রিয় রব। যা পাইনি, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র আক্ষেপ নেই—কারণ জানি, তিনি দেন শুধু কল্যাণই। সিজদাবনত শুকরিয়া।\n\nপ্রত্যাশার একটি ঘর এখনও কি ফাঁকা পড়ে আছে কি না, জানি না। তবে এটুকু জানি—

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাসিনার ক্ষমতা স্থায়ী করতেই বিডিআর হত্যাযজ্ঞ

০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫৪

হাসিনার ক্ষমতা স্থায়ী করতেই বিডিআর হত্যাযজ্ঞ

কমিশন প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান, ছবি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

২০০৯ সালের পিলখানায় সংঘটিত বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন প্রায় ১১ মাসের অনুসন্ধান শেষে যে প্রতিবেদন ৩০ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে, তা দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসে ব্যাপক আলোচনা ও নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। প্রতিবেদনে হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য, পরিকল্পনা, দায়ী ব্যক্তিবর্গ এবং বহিরাগত সম্পৃক্ততা বিষয়ে বহু অপ্রকাশিত তথ্য উঠে এসেছে। এসব তথ্য ইঙ্গিত করছে যে এই হত্যাযজ্ঞ ছিল মূলত রাজনৈতিক ক্ষমতা স্থায়ী করার লক্ষ্যে পরিচালিত একটি সুপরিকল্পিত অপারেশন।

ছবি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

আওয়ামী লীগের দলগত সম্পৃক্ততা এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য

তদন্ত কমিশনের ভাষ্যে পিলখানার হত্যাযজ্ঞ কোনো স্বতঃস্ফূর্ত বিদ্রোহ ছিল না। এটি ছিল পরিকল্পিত, সমন্বিত এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় পরিচালিত একটি অপারেশন, যার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল রাষ্ট্রীয় শক্তির কেন্দ্র সেনাবাহিনীকে দুর্বল করে রাজনৈতিক ক্ষমতা দীর্ঘমেয়াদে স্থায়ী করা।

তদন্তে উঠে এসেছে যে তৎকালীন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার রাজনৈতিক অনুমোদন বা সম্মতি ছাড়া এমন একটি অপারেশন পরিচালনা করা সম্ভব ছিল না। কমিশন জানিয়েছে যে অপারেশনের সরাসরি সমন্বয়কারী ছিলেন তৎকালীন সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি মসজিদ, প্রশিক্ষণ মাঠ এবং বিভিন্ন গোপন বৈঠকে পরিকল্পনার বিভিন্ন ধাপ বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নেন।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগের বেশ কিছু প্রভাবশালী নেতা যেমন শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মির্জা আজম, জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন এই পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে তদন্তে উঠে আসে। সামরিক ও গোয়েন্দা মহলের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা যেমন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমেদ, সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং সাবেক ডিজিএফআই মহাপরিচালক মোল্লা ফজলে আকবরও এতে সম্পৃক্ত ছিলেন।

তদন্ত কমিশনের মতে, এসব সম্পৃক্ততা থেকে স্পষ্ট হয় যে হত্যাযজ্ঞের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে দেয়া, তাদের নেতৃত্বহীন করা এবং সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার ক্ষমতা দীর্ঘমেয়াদে সুরক্ষিত করা।

ভারতের সম্পৃক্ততা এবং রাজনৈতিক লাভ

প্রতিবেদনে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা উঠে এসেছে। তদন্তে জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের সময় ৯২১ জন ভারতীয় বাংলাদেশে প্রবেশ করে, যাদের মধ্যে ৬৭ জনের কোনো পরিচয় বা গন্তব্য সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তারা কোথায় গেল, কেন এসেছিল কিংবা কার নির্দেশে এসেছিল সে বিষয়ে এখনও রহস্য রয়ে গেছে।

কমিশনের মতে, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ধাক্কায় সৃষ্ট অস্থিতিশীলতা থেকে ভারত কৌশলগত সুবিধা পেয়েছিল এবং ঘটনাটিতে ভারতের সরাসরি বা পরোক্ষ সম্পৃক্ততার যথেষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এই ৬৭ জনের সন্ধান ও তদন্ত চালানোর জন্য কমিশন সরকারকে সুপারিশ করেছে।

হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনার বিস্তার

কমিশনের মতে, হত্যাকাণ্ডের প্রধান লক্ষ্য ছিল
১. সেনাবাহিনীকে দুর্বল করা
২. রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা
৩. রাজনৈতিক ক্ষমতাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য সুদৃঢ় করা

তদন্তে জানা যায় যে দীর্ঘ সময় ধরে গোপন সমন্বয়, পরিকল্পনা ও বৈঠক হয়েছে। যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের কিছু অংশ পরিকল্পনার বাহ্যিক স্তরে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে।

ঘটনার দিন পিলখানায় প্রথমে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল প্রবেশ করে এবং বের হওয়ার সময় তাদের সংখ্যা প্রায় ২০০ হয়ে যায়। কমিশনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এই অতিরিক্ত সংখ্যা ছিল হত্যাকারী দলের সদস্য যারা বিশৃঙ্খলার সুযোগে পালিয়ে যায়।

তদন্তে নতুন উদ্ঘাটন

সেনাবাহিনীকে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করতে না দেওয়ার কারণে নিহতের সংখ্যা বহুগুণ বেড়ে যায়। তৎকালীন সেনাপ্রধানের সদর দপ্তর ত্যাগকে কমিশন বড় ধরনের কৌশলগত ব্যর্থতা হিসেবে উল্লেখ করেছে। তাদের এই অবস্থান হত্যাকারীদের আরও উৎসাহিত করে।

বিডিআর সদস্যদের কিছু অভ্যন্তরীণ ক্ষোভকে ষড়যন্ত্রকারীরা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ব্যবহার করেছিল। লুটপাট, নির্যাতন, পরিবারের ওপর বর্বর হামলা সবকিছুর বিস্তারিত প্রমাণ কমিশন সংগ্রহ করেছে।

১৬ বছর আগের ঘটনার বহু আলামত ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করা হয়েছিল। তবুও দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ, প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ এবং আগের তদন্ত নথির সমন্বয়ে কমিশন ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ কাঠামো দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছে।

সুপারিশসমূহ

কমিশন সরকারের কাছে চারটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করেছে
১. সামরিক ও আনসার-বিডিআর কাঠামোয় জরুরি প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক সংস্কার
২. ৬৭ ভারতীয় নাগরিকের পরিচয় ও উদ্দেশ্যের অনুসন্ধান
৩. ভুক্তভোগী পরিবারকে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা
৪. জাতীয় নিরাপত্তা কাঠামোকে আধুনিক পদ্ধতিতে শক্তিশালী করা

প্রধান উপদেষ্টার মন্তব্য

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জাতি দীর্ঘদিন অন্ধকারে ছিল। তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন সেই অন্ধকার দূর করেছে। তিনি এই প্রতিবেদনকে জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমানের নেতৃত্বাধীন এ কমিশনের সদস্যরা হলেন মেজর জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. সাইদুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব মুন্সী আলাউদ্দিন আল আজাদ, অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি এম আকবর আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. শরীফুল ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ খান চন্দন।

সমাপনী মূল্যায়ন

জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের চূড়ান্ত মূল্যায়নে বলা হয়েছে, পিলখানার বিডিআর হত্যাকাণ্ড ছিল একটি দীর্ঘমেয়াদি, বহুমাত্রিক এবং রাজনৈতিকভাবে চালিত ষড়যন্ত্র, যার কেন্দ্রে ছিল ক্ষমতাকে স্থায়ী করার লক্ষ্য। এতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব, সামরিক বাহিনীর কিছু অংশ এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সম্পৃক্ততা স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। তদন্ত কমিশনের মতে, রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা ধ্বংস, সেনাবাহিনীকে দুর্বল করা এবং শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ক্ষমতাকে দীর্ঘমেয়াদে নিরাপদ করা ছিল এই হত্যাযজ্ঞের মূল উদ্দেশ্য।

এই প্রতিবেদন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, সামরিক ইতিহাস এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষণে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। তাতে আওয়ামীলীগের উচ্ছিষ্টভোগী কিছু লোক যতই অন্ধ সেজে প্রলয় বন্ধ করার ভান করুক না কেন। আওয়ামী ল্যাসপেন্সার, উজবুক, মিথ্যুক, অসৎ, পাচারকারী এবং ফ্যাসিস্টের দোসরদের জন্য এই পোস্ট আদর্শ নহে।

মিডিয়ায় বিডিআর হত্যাকান্ড নিয়ে বহু সংবাদ, প্রতিবেদন ইত্যাদি রয়েছে। নমুনা হিসেবে দু'টির লিঙ্ক দিচ্ছি-

February 2009

বিডিআর হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে জড়িত

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: গত সতের বছর দেশে যত অন্যায় হয়েছে, যত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, যত খুন, ধর্ষন হয়েছে- সব দোষ শেখ হাসিনার কাঁধে দিয়ে দেন।
এই কাজ আপনারা ভালো পারবেন। কারো গাঢে দোষ চাপিয়ে দিতে আপনারা ভালো পারেন।

০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৫

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ। আপনি আওয়ামীলীগের পক্ষে ব্লগে প্রচারণা চালানোর জন্য তাদের থেকে নিয়মিত ভাতা পান?

২| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:২২

কলাবাগান১ বলেছেন: অন্যকে (মেশিন) দিয়ে লিখিয়ে নেয় কিন্তু নিজের নামে চালায়ে দেয় এই সব কুযুক্তিধারীরা...কাল এই সরকার চেন্জ হলে আবার কনক্লুশান চেন্জ হয়ে যাবে...রাজাকার রা ঘুমালেও ভারতীর ষড়যন্ত্র দেখে

০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৬

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার পক্ষে সত্য অনুধাবন করা কঠিন হবে। কারণ, আপনি আওয়ামীলীগের রঙিন চশমা পড়ে আছেন। ধন্যবাদ।

০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৭

নতুন নকিব বলেছেন:



আওয়ামীলীগের দোষ যদি কেউ তুলে ধরেছে, তাকেই আপনারা রাজাকার তকমা দিয়েছেন। এটাই আপনাদেরকে ডুবিয়েছে।

০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৮

নতুন নকিব বলেছেন:



কোনটা মেশিনের লেখা আর কোনটা নিজের লেখা সেটা বুঝতে হলে আরও কিছুকাল অধ্যাপনা চালিয়ে যেতে হবে।

৩| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৮

কলাবাগান১ বলেছেন: আর আপনারা রাজাকার/আলবদরদের চোখ না দেখতে পারার মত কালো চশমা পড়ে আছেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.