| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নতুন নকিব
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট
পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:
وَجَعَلۡنَا مِنَ الۡمَآءِ کُلَّ شَیۡءٍ حَیٍّ
"আমি প্রত্যেক জীবন্ত বস্তুকে পানি দিয়ে সৃষ্টি করেছি"। -সূরা আম্বিয়া: আয়াত ৩০
এই আয়াত পানির গভীর তাৎপর্যকে উন্মোচিত করে। পানি শুধু শারীরিক জীবনধারণের উপাদান নয়, বরং আধ্যাত্মিক বিশুদ্ধতা এবং পরিবেশের ভারসাম্যের প্রতীক। ইসলামে পানিকে আল্লাহর মহান নেয়ামত হিসেবে গণ্য করা হয়। এটি সম্প্রদায়ের সম্পদ এবং সকল মানুষের অধিকার। অপচয় বা দূষণকে ইসলাম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। কারণ এটি আল্লাহর নেয়ামতের প্রতি অকৃতজ্ঞতা এবং সৃষ্টির প্রতি অবিচার।
অথচ ২০২৫ সালে বিশ্ব এক গভীর পানি সংকটের মুখোমুখি। ডব্লিউএইচও এবং ইউনিসেফের সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুসারে, বিশ্বের প্রায় ২.২ বিলিয়ন মানুষ নিরাপদ পানীয় জল থেকে বঞ্চিত। এর মধ্যে বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ জনগোষ্ঠী নিরাপদ পানির অভাবে ভুগছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হিমবাহ গলে যাচ্ছে দ্রুতগতিতে। ফলে পানিচক্র অস্থির হয়ে উঠেছে।
চার বিলিয়ন মানুষ বছরের অন্তত এক মাস তীব্র পানির অভাব অনুভব করছে। বিশ্বব্যাংকের রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রতি বছর ৩২৪ বিলিয়ন ঘনমিটার মিঠা পানি নষ্ট হচ্ছে। এটি ২৮০ মিলিয়ন মানুষের বার্ষিক চাহিদা পূরণ করতে পারে। এই সংকট শুধু শারীরিক নয়, বরং সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত ভারসাম্যকে বিপন্ন করছে।
এই গভীর সংকটের প্রেক্ষাপটে ইসলামের শিক্ষা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং দূরদর্শী। প্রায় পনেরশ বছর আগে, যখন বিশ্বের জনসংখ্যা সীমিত ছিল এবং পানির ব্যবহারও কম ছিল, তখনই রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পানির অপচয় রোধে সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাঁর জীবন ছিল সংযম এবং মিতাচারের আদর্শ। তিনি নিজে অতি সামান্য পানি দিয়ে ওযু করতেন এবং অনুসারীদেরও তাই শিক্ষা দিতেন।
একটি সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত সা'দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহুকে ওযু করতে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, "এটা কী অপচয়?" সা'দ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, "ওযুতেও কি অপচয় হয়?" নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তর দিলেন, "হ্যাঁ, যদিও তুমি প্রবাহিত নদীর তীরে থাকো।"
আরবি মূল: لا تسرف في الماء ولو كنت على نهر جارٍ
উচ্চারণ: লা তুসরিফ ফিল মায়ি ওয়া লাও কুনতা আলা নাহরিন জারিন।
বাংলা অনুবাদ: "পানিতে অপচয় করো না, যদিও তুমি প্রবাহিত নদীর তীরে থাকো।" -মুসনাদ আহমাদ, হাদিস নং ৭০৬৫ (সহিহ); সুনান ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৪২৫।
এই হাদিসের গভীরতা অপরিসীম। এটি শুধু ওযুর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পানির সংযমের নির্দেশ দেয়। প্রচুর উৎস থাকলেও অপচয় অনুচিত। কারণ পানি আল্লাহর আমানত। এর অপচয় মানে ভবিষ্যত প্রজন্মের অধিকার কেড়ে নেওয়া। ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গিতে মানুষ পৃথিবীর খলিফা। সৃষ্টির প্রতি দায়িত্বশীল। এই হাদিস আধুনিক টেকসই উন্নয়নের সাথে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি পরিবেশ সংরক্ষণের একটি আধ্যাত্মিক ভিত্তি প্রদান করে।
আজকের বিশ্বে এই শিক্ষা অনুসরণ করা অপরিহার্য। প্রতিটি ফোঁটা পানি সংরক্ষণ করা মানে একটি জীবন রক্ষা করা। ইসলামের এই চিরন্তন বার্তা অন্তরে ধারণ করে আমরা পানির অপচয় রোধ করতে পারি। এতে ধর্মীয় দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পরিবেশ এবং মানবতার কল্যাণ সাধিত হবে। আল্লাহ তাআ'লা আমাদের সকলকে এই গভীর শিক্ষা অনুসরণ করার তৌফিক দান করুন।
সকল ছবি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫৪
নতুন নকিব বলেছেন:
কুরআন নাযিল হয়েছে প্রায় দেড় হাজার বছর আগে। কিন্তু ইহা সংরক্ষিত ছিল বহুকাল পূর্ব থেকে লওহে মাহফুজে। সুতরাং, কোন কিছু দেখলেই দাঁত কেলিয়ে হো হো করে হেসে ওঠার আগে কিছুটা অন্ততঃ মাথা খাটাতে হয়। সামান্য হলেও স্টাডি করে নিতে হয়।
আপনার মত জ্ঞানী ব্যক্তিকে ইহা আমার বলে দিতে হচ্ছে, ইহা অবাক করার মত বিষয় বৈকি।
ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪৩
অগ্নিবাবা বলেছেন: মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কোরানে পানির মহাত্ম্য বর্ননা করার আগে পানি কি ইহা কেহই জানতো না।