নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নায়করাজ

নায়করাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাদের সিদ্দিকীর আসল চেহারা

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৩১



বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস২৪



ঢাকা, ১৯ ফেব্রুয়ারি: ‘৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধে কাদের সিদ্দিকীর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বীরউত্তম খেতাব পান। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে শুরু থেকেই একের পর এক বিতর্কে জড়ান কাদের সিদ্দিকী। টাঙ্গাইলে একাধিক জমি দখল আর চাঁদাবাজির সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে অসংখ্য ঘটনা আছে। এমনকী ঢাকাতেও কাদের সিদ্দিকী সরকারি জমি জবর দখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাঁর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থাতো মহাবিতর্কিত ঠিকাদারি সংস্থা। একাধিক সেতুর কাজ না করে বিল উত্তোলন, নিম্নমানের কাজ করার অভিযোগে একাধিকবার জরিমানাও গুনতে হয়েছে কাদের সিদ্দিকীর প্রতিষ্ঠানকে। আর তাঁর দুই গুণধর ভাই আজাদ সিদ্দিকী ও মুরাদ সিদ্দিকীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে টাঙ্গাইলবাসী যে অতিষ্ঠ একথা কে না জানে।







জাতিকে সবক দেওয়া কাদের সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলাও হয়েছিল। সেটি বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেই। কাদের সিদ্দিকীর অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে দেশের একাধিক প্রথম সারির সংবাদপত্রে বিভিন্ন প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। বিশেষত, প্রথম আলো কাদের সিদ্দিকী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যার যুৎসই কোন জবাব কাদের সিদ্দিকী দিতে পারেননি।







যুদ্ধাপরাধের মামলায় বিচারাধীন কারাগারে থাকা জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাশেম আলীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা কাদের সিদ্দিকীর কিসের এত সখ্যতা এনিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন রয়েছে। মীর কাশেমের মালিকানাধীন দিগন্ত টেলিভিশনে নিয়মিত ‘টক শো’ উপস্থাপনা করেন কাদের সিদ্দিকী। ‘৭১-এ চট্টগ্রামের রাউজানে নূতন চন্দ্র সিংহকে গুলি করে হত্যাকারী বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে (সাকা) যুদ্ধাপরাধী হিসেবে মানতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে বিতর্কিত কাদের সিদ্দিকীর। তাই যদি না হবে তাহলে ফজলুল কাদের চৌধুরী শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন বলে সাকা চৌধুরীর বিচার করা হচ্ছে এই অভিমত দিয়ে কাদের সিদ্দিকী কেন বিষয়টিকে হালকা করে দেখানোর চেষ্টা করছেন এই প্রশ্নও বিভিন্ন মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে। ‘৭১ এ বীরোচিত ভূমিকা রেখে যতখানি নন্দিত ছিলেন কাদের সিদ্দিকী এখন কৌশলে জামায়াত-শিবিরের পক্ষে অবস্থান নিয়ে ততখানি নিন্দিতই হচ্ছেন বলে মনে করেন বিভিন্ন মহল।





বিভিন্ন সময় কাদের সিদ্দিকী ও তাঁর বিতর্কিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশিত কিছু খবর নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো।



প্রথম আলো, ২৪ জুলাই ২০০৮



অসমাপ্ত দুবলাকুঁড়ি সেতু কাদের সিদ্দিকীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এবার ১৮ লাখ টাকা জরিমানা





এবার টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সোনার বাংলা প্রকৌশলিক সংস্থা প্রাইভেট লিমিটেডকে ১৮ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল-ভুয়াপুর সড়কের দুবলাকুঁড়ি সেতুর নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ না করায় প্রতিষ্ঠানটিকে এই অর্থ জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশ বাতিল এবং নতুন করে দরপত্র আহ্বানের উদ্যোগ নিয়েছে টাঙ্গাইল সওজ কর্তৃপক্ষ।

এর আগে জামালপুর ও নেত্রকোনায় দুটি সেতুর নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ না করায় সোনার বাংলা প্রকৌশলিক সংস্থাকে মোট এক কোটি ২৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা জরিমানা করে ওই দুই জেলার সওজ কর্তৃপক্ষ।

টাঙ্গাইল সওজ সূত্র জানায়, ঘাটাইল-ভুয়াপুর সড়কের দুবলাকুঁড়িতে ঝিনাই নদীর ওপর ৮৭ দশমিক ৮৪ মিটার দীর্ঘ আরসিসি সেতু নির্মাণের জন্য সোনার বাংলা প্রকৌশলিক সংস্থাকে ১৯৯৬ সালের ১৪ মার্চ কার্যাদেশ দেওয়া হয়। তখন এর ব্যয় ধরা হয় এক কোটি ৮৪ লাখ টাকা। পরে ব্যয় বাড়িয়ে দুই কোটি ৫৬ লাখ টাকা করা হয়। দুই বছরের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু ১২ বছরেও সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সওজ বলেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি এরই মধ্যে দুই কোটি ১৭ লাখ টাকা বিল তুলে নিয়েছে। সেতুর একটি স্প্যানের নির্মাণকাজ বাকি রয়েছে। কিন্তু বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও তা নির্মাণ করা হয়নি। এ জন্য ১০ জুলাই প্রতিষ্ঠানটিকে ১৮ লাখ টাকা জরিমানা এবং তাদের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়।

সোনার বাংলা প্রকৌশলিক সংস্থাকে ১৮ লাখ টাকা জরিমানা ও কার্যাদেশ বাতিল করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সওজের টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, সেতুটির বাকি কাজ শেষ করার জন্য আবার দরপত্র আহ্বান করা হবে। এ জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন জানায়, সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় ঘাটাইলের মনোহরা, চেংধা, লোকের পাড়া, শিমলা, আথাই শিমুল, মাফেশ্বর, বকশিয়া, গৌরীশ্বর, পারাগ্রাম, শাটশৈলা, পাটিতাকান্দি ও চরদুনটিয়া গ্রামের মানুষকে অনেক পথ ঘুরে উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

কাদের সিদ্দিকীর এই সেতুসহ সারা দেশে পড়ে থাকা পৌনে তিন হাজার সেতু নিয়ে গত ১৮ মে প্রথম আলোয় একটি বিশেষ সংখ্যা বের হয়। এরপর প্রধান উপদেষ্টা সেতু নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

এর আগে সোনার বাংলা প্রকৌশলিক সংস্থাকে নেত্রকোনা-শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি-দুর্গাপুর সড়কের সোমেশ্বরী নদীর ওপর শুকনাকুঁড়ি সেতুর কাজ শেষ না করায় ৪৭ লাখ টাকা এবং জামালপুরের বকশীগঞ্জ-সানন্দবাড়ী-চররাজীবপুর সড়কে জিঞ্জিরাম নদীর ওপর সেতুর কাজ শেষ না করায় ৭৮ লাখ ৭৬ হাজার টাকা জরিমানা করে সওজ। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির কার্যাদেশও বাতিল করা হয়।#





প্রথম আলো, ১৯ জুলাই ২০০৮

কাদের সিদ্দিকীর সেতু কেলেঙ্কারি সোয়া কোটি টাকা জরিমানা নেত্রকোনা ও জামালপুরের দুটি সেতুর কার্যাদেশ বাতিল





কাদের সিদ্দিকীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সোনার বাংলা প্রকৌশলিক সংস্থা প্রাইভেট লিমিটেডকে এক কোটি ২৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। নেত্রকোনা ও জামালপুরের দুটি সেতুর কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে না পারায় এই জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির কার্যাদেশও বাতিল করা হয়েছে।

সওজের ময়মনসিংহ অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নুরুল হুদা মোল্লা প্রথম আলোকে জানান, দীর্ঘ ১০ বছরেও নেত্রকোনা-শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি-দুর্গাপুর সড়কের সোমেশ্বরী নদীর শুকনাকুঁড়ি সেতুর কাজ শেষ করেনি কাদের সিদ্দিকীর প্রতিষ্ঠান। এ জন্য তাঁর প্রতিষ্ঠানকে ৪৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া জামালপুরের বকশীগঞ্জ-সানন্দবাড়ী-চররাজীবপুর সড়কে জিঞ্জিরাম নদীর ওপর নির্মিতব্য সেতুর কাজ শেষ না করায় ওই প্রতিষ্ঠানকে ৭৮ লাখ ৭৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

সওজের একটি সূত্র জানায়, ১৬ জুন সওজ নেত্রকোনার নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যাদেশ বাতিল করেন। এরপর ৩ জুলাই সওজ ময়মনসিংহের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে এই আদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সওজের নেত্রকোনা কার্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, সোয়া তিন কোটি টাকা ব্যয়ে ২২৪ মিটার দীর্ঘ শুকনাকুঁড়ি সেতুর কাজ শুরু হয় ১৯৯৮ সালে। ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও শেষ হয় ২০০৬ সালের মার্চে। তবে কাজের বরাদ্দ করা ১১ কোটি ৭৯ লাখ টাকার পুরোটাই কাদের সিদ্দিকী তুলে নেন। এদিকে সেতুর মূল কাজ শেষ হওয়ার আগেই ২০০৬ সালের ৪ জানুয়ারি সেতুর ওপর ঢালাই পাটাতন নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এ জন্য ব্যয় ধরা হয় তিন কোটি ৩৭ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। কাজ শেষ করার কথা ছিল ২০০৭ সালের ৩ এপ্রিল। কিন্তু পাটাতন নির্মাণের কাজ সামান্য করেই কাদের সিদ্দিকী ৯১ লাখ টাকা তুলে নিয়ে আবার কাজ বন্ধ করে দেন।

সওজ নেত্রকোনার প্রকৌশলী এ কে এম জুলফিকার ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কাজ শেষ করার জন্য কাদের সিদ্দিকীকে শতাধিক চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। তিনি নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না করায় এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগে পড়ে। এ কারণে তাঁর প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এলাকাবাসী জানায়, সেতুটি নির্মিত না হওয়ায় দুর্গাপুরের লোকজন বর্ষায় সরাসরি নেত্রকোনা বা ময়মনসিংহে যাতায়াত করতে পারে না। সেতুর নির্মাণস্থলে গিয়ে বাস-টেম্পো থেকে নেমে নৌকায় করে অন্য পাড়ে যেতে হয়। তারপর আবার গাড়িতে উঠতে হয়। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় মালামাল পরিবহনে। সরাসরি যোগাযোগ না থাকায় এখানকার ব্যবসায়ীদের পরিবহন খরচ অনেক বেশি। ফলে বেড়ে যায় সব পণ্যের দাম। এতে দুর্ভোগের পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছে উপজেলাবাসী।

জামালপুরের বকশীগঞ্জ-সানন্দবাড়ী-চররাজীবপুর সড়কে জিঞ্জিরাম নদীতে ২৯৮ দশমিক ৮৮ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০০০ সালের ৯ মে। নির্মাণব্যয় ধরা হয় সাত কোটি ৮৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তিন বছরের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ করার কথা ছিল। জেলা সওজ জানায়, গত বছর জরুরি অবস্থা জারির পর ১৮ জানুয়ারি কাদের সিদ্দিকীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সেতুর কাজ ৩০ জুনের মধ্যে শেষ করার অঙ্গীকার করেন। কিন্তু কাজ কিছুই হয়নি। তবে কাদের সিদ্দিকী এই সেতুর জন্য বরাদ্দ করা সাত কোটি ৬১ লাখ আট হাজার টাকা তুলে নেন।

জামালপুর সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী নজিবুল হক বলেন, সওজ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গত ১১ জুন জিঞ্জিরাম সেতুর দরপত্র চুক্তি বাতিল এবং দরপত্রের শর্ত ভঙ্গের কারণে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সোনার বাংলা প্রকৌশলিক সংস্থাকে ৭৮ লাখ ৭৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তিনি আরও জানান, গত ২৬ জুনের মধ্যে জরিমানার টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি তা দেয়নি। এ কারণে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

আরও দুই সেতু বাকি: সওজের তত্ত্বাবধানে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার ধলেশ্বরী নদীর ওপর একটি সেতুর কাজ চলছে। ৬৮ দশমিক ৯০ মিটার দীর্ঘ এই সেতুর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল এক কোটি আট লাখ টাকা। ২০০৪ সালের আগস্টে কার্যাদেশ পায় কাদের সিদ্দিকীর প্রতিষ্ঠান। ২০০৫ সালে এই সেতুর কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিছু কাজ করে ৭৫ লাখ ১২ হাজার টাকা তুলে নেন কাদের সিদ্দিকী।

২০০৫ সালে সেতুর দৈর্ঘ্য ৩৩ মিটার বাড়ানো হয়। বর্ধিত এই কাজের ব্যয় ধরা হয় ৩১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। নতুন বরাদ্দেরও ১৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা তুলে নেন কাদের সিদ্দিকী। এ কাজ এক বছরের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। ২০০৬ সালের নভেম্বরে এ নিয়ে প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে কাজের গতি কিছুটা বাড়ে। ২০০৭ সালের গোড়ার দিকে সেতুটির দৈর্ঘ্য আরও ৩৩ মিটার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। তবে দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। কাজও শেষ হয়নি।

এ ছাড়া টাঙ্গাইলের ঘাটাইল-ভূঞাপুর সড়কের দুবলাকুঁড়িতে ঝিনাই নদীর ওপর ৮৭ দশমিক ৮৪ মিটার দীর্ঘ এই সেতুর নির্মাণব্যয় প্রথমে এক কোটি ৮৪ লাখ টাকা ধরা হয়। নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯৯৬ সালে। পরে ব্যয় বাড়িয়ে দুই কোটি ৫৬ লাখ টাকা করা হয়। কাজ শেষ করার কথা ছিল দুই বছরে। কিন্তু ইতিমধ্যে ১২ বছর পার হতে চলেছে। গত বছরের জুলাই মাসে কাদের সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘অনেক বিল বাকি থাকায় সময়মতো কাজ করতে পারিনি। শিগগিরই কাজ আবার শুরু করব।’ কিন্তু সওজ জানিয়েছে, কাদের সিদ্দিকী দুই কোটি ১৭ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন। বাকি টাকা অগ্রিম না দিলে কাজ করবেন না বলে জানিয়েছেন।

সেতুটি না হওয়ায় ঘাটাইলের মনোহরা, চেংধা, লোকেরপাড়া, শিমলা, আথাইল শিমুল, মাকেশ্বর, বকশিয়া, গৌরীশ্বর, পাড়াগ্রাম, চাটশেলা, পাটিতাকান্দি ও চর ছুনটিয়া গ্রামের মানুষকে অনেক পথ ঘুরে উপজেলা সদরে আসতে হয়। কাদের সিদ্দিকীর চার সেতুসহ সারা দেশে পড়ে থাকা পৌনে তিন হাজার সেতু নিয়ে এ বছরের ১৮ মে প্রথম আলোর একটি বিশেষ সংখ্যা বের হয়। এরপর প্রধান উপদেষ্টা সেতু নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।#



প্রথম আলো, ১৩ নভেম্বর ২০০৮

কাদের সিদ্দিকীর ভাই আজাদ সিদ্দিকী টাঙ্গাইলে গ্রেপ্তার: স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ





কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী এবং আওয়ামী লীগের নেতা আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর ছোট ভাই শামীম আল মুনসুর আজাদ সিদ্দিকী গ্রেপ্তার হয়েছেন। নির্যাতনের অভিযোগে আজাদ সিদ্দিকীর স্ত্রী ফাতেমা-তুজ-জহুরা ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেছিলেন। এ মামলায় টাঙ্গাইল সদর থানার পুলিশ গতকাল বুধবার বিকেলে আজাদ সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তার করে।

মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফিজুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, নির্যাতনের অভিযোগ এনে আজাদ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রী ৮ নভেম্বর মামলা দায়ের করেন। টাঙ্গাইল সদর থানারভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ জানান, মোহাম্মদপুর থানার বার্তা পেয়ে আজাদ সিদ্দিকীকে জেলা সদর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

দেশে জরুরি অবস্থা জারির পর ২০০৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আজাদ সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তার করে। দীর্ঘ কারাভোগের পর গত সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে তিনি মুক্তি লাভ করেন। আজাদ সিদ্দিকী আগামী সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মাঠে নেমেছিলেন।#





প্রথম আলো, ১৩ মার্চ ২০০৯

কাদের সিদ্দিকী, মুরাদ সিদ্দিকী ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা





জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। টাঙ্গাইল জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক দেওয়ান সফিউদ্দিন আহমেদ বাদী হয়ে গত সোমবার সখীপুর থানায় এ মামলা করেন। মামলায় কাদের সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে ৮৮ লাখ ৫৪ হাজার ৮৮৮ টাকার তথ্য গোপন ও অসংগতিপূর্ণ আয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। একই রকম অভিযোগ এবং সম্পদের তথ্য গোপন করায় কাদের সিদ্দিকীর ভাই মুরাদ সিদ্দিকী এবং মুরাদের স্ত্রী নীহার সিদ্দিকীর বিরুদ্ধেও টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি মামলা করেছে দুদক।



টাঙ্গাইল দুদকের উপপরিচালক মাহমুদ হাসান মামলা দুটির পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করার জন্য দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালকের (অনুসন্ধান ও তদন্ত) কাছে গত বুধবার একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। কাদের সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে, ২০০৭ সালের ২১ মে তিনি দুদকে এক কোটি ৩১ লাখ ৫৮ হাজার ৬২১ টাকা ২০ পয়সার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, দলীয় নেতা-কর্মীদের চাঁদা, অনুদান ও সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থার আয় থেকে ২৫ লাখ ৬৬ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। কিন্তু এর পক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ বা তথ্যভিত্তিক দালিলিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া তিনি ৬২ লাখ ৮৮ হাজার ৮৮৮ টাকার সম্পদের ব্যাপারে মিথ্যা ও ভুল তথ্য দিয়েছেন।

মামলার ব্যাপারে দুদকের সহকারী পরিচালক দেওয়ান সফিউদ্দিন বলেন, কাদের সিদ্দিকীর আয়ের সঙ্গে তাঁর দেওয়া হিসাবের মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু কাদের সিদ্দিকীর ব্যক্তিগত সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, মামলার ঘটনা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণেদিত ও হয়রানিমূলক। মুরাদ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল সদর থানায় দায়ের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ২০০৭ সালের ১৪ মে মুরাদ সিদ্দিকীকে সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দেওয়ার জন্য দুদক নোটিশ পাঠায়। তিনি ওই বছরের ২৭ মে দুদকে ৬৬ লাখ ৬৭ হাজার ৪৯১ টাকার সম্পদের হিসাব দাখিল করেন। মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, মুরাদ সিদ্দিকী ২০০৬-০৭ অর্থবছরে আয়কর নথিতে ৩৫ লাখ ১৬ হাজার ৫১৫ টাকার সম্পদ উল্লেখ করেছেন। দুদকে দেওয়া সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে ২০০৬-০৭ অর্থবছরের আয়কর বিবরণীর সঙ্গে ৩১ লাখ ৫০ হাজার ৯৭৬ টাকার জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদের হিসাব পাওয়া যায়।



এ ছাড়া আমেরিকান লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে এক লাখ ৩৬ হাজার ১৬৫ টাকার প্রিমিয়ামের কথা সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেননি। মুরাদ সিদ্দিকীর স্ত্রী নীহার সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে মামলায় বলা হয়েছে, ২০০৬-০৭ অর্থবছরে তিনি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৫৮ টাকার সম্পদের কথা উল্লেখ করে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন। কিন্তু দুদক যাচাইকালে তাঁর নামে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকার স্থাবর এবং ২১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৮৪ টাকার অস্থাবর সম্পদ পেয়েছে। আয়কর নথিতে প্রদত্ত সম্পদকে বৈধ হিসেবে ধরে পাঁচ লাখ ২৪ হাজার ৬২৬ টাকার জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ পেয়েছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।#





প্রথম আলো, ২৬ অক্টোবর ২০০৮

চার বছর ধরে ঝুলছে টঙ্গী তৃতীয় সেতুর কাজ: কাজ পেয়েছে কাদের সিদ্দিকীর সোনার বাংলা





গাজীপুরের জয়দেবপুর-টঙ্গী-বনানী সড়কের তুরাগ নদীর ওপর টঙ্গী তৃতীয় সেতু নির্মাণের কাজ আড়াই বছর ধরে বন্ধ আছে। কাজ আবার শুরু করার জন্য ২৯ বার তাগাদাপত্র দেওয়া হয়েছে কাদের সিদ্দিকীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সোনার বাংলা প্রকৌশলিক সংস্থা লিমিটেডকে। চার বছর আগে শুরু হওয়া এ সেতুর যেটুকু কাজ হয়েছে, তা এখন পানির নিচে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর−সওজ সূত্র জানায়, এ কাজের জন্য ৯৬ লাখ ৬১ হাজার ১৭২ টাকা বিল তুলে নিয়েছে সোনার বাংলা। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, যে কাজ করা হয়েছে, তার জন্য এখনো ৪০ লাখ টাকা বিল পাবে তারা।



সূত্র জানায়, সওজ এই সেতুর জন্য দরপত্র আহ্বান করেছিল ২০০৪ সালের ৩ মে। সোনার বাংলাকে ২০০৫ সালের ২৪ জানুয়ারি কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হয়। ১০৫ দশমিক ২০ মিটার এই সেতুর নির্মাণ খরচ ধরা হয় নয় কোটি দুই লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৪ টাকা। দেড় বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। নির্ধারিত সময় পার হয়েছে ২০০৬ সালের জুলাই মাসে। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দুই দফায় এক কোটি ২৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৯৫ টাকা বিল দাবি করেছে এবং ৯৬ লাখ ৬১ হাজার ১৭২ টাকা তুলে নিয়েছে।



সোনার বাংলার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনায়েত করিম বলেন, ঢাকা শহরের চারদিকে নৌপথ চালু করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ সেতুর নির্মাণকাজ সাময়িকভাবে স্থগিত করে। গাজীপুর সড়ক বিভাগের নির্দেশে ২০০৬ সালের ৩ মে পর্যন্ত কাজ স্থগিত রাখতে হয়।



এনায়েত করিম বলেন, সেতুর উচ্চতাসংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের পর ২০০৬ সালের ৪ মে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী নতুনভাবে কাজ শুরু করার অনুরোধ জানান। এরপর তাঁরা কাজ শুরু করেন। কিনতু পাইলিংয়ের কাজে সমস্যা হওয়ায় সেতুর নকশা সংশোধন করে ২০০৭ সালের ১৩ আগস্ট তা পাস করা হয়। তিনি দাবি করেন, তাঁরা যতটুকু কাজ করেছেন, এর মধ্যে ৪০ লাখ টাকার বিল এখনো বাকি আছে।



গাজীপুর সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আখতার হোসেন খান বলেন, এই সেতুর কাজ শেষ করার জন্য সোনার বাংলাকে মোট ২৯টি চিঠি দিয়ে তাগাদা দেওয়া হয়। কিনতু প্রতিষ্ঠানটি কাজ করছে না। ফলে তাদের ৯০ লাখ ২৮ হাজার ৩৫৭ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

সোনার বাংলা সওজের এই জরিমানার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নিষ্পত্তিকরণ মামলা (আরবিট্রেশন) করেছে।#







প্রথম আলো, ২৫ অক্টোবর ২০০৮

টাঙ্গাইল অচল করে রেখেছেন কাদের সিদ্দিকী





টাঙ্গাইলে সেতু, সড়ক আর হাসপাতাল ভবন নির্মাণের মতো নয়টি জর”রি উন্নয়নকাজ বছরের পর বছর ফেলে রেখেছে সোনার বাংলা প্রকৌশলিক সংস্থা লিমিটেড। এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী। এতে তাঁর নিজ জেলা যোগাযোগের দিক থেকে কার্যত অচল হয়ে আছে। কাজ শেষ করার নির্ধারিত সময়ের পর ক্ষেত্রবিশেষে এক থেকে ১১ বছর পার হলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোনো অনুরোধ বা চাপ তিনি বিবেচনায় নেননি। কিনতু সাড়ে ২৩ কোটি টাকার এসব উন্নয়নকাজ আংশিকভাবে সম্পন্ন করে তিনি প্রায় ১৩ কোটি টাকা বিল তুলে নিয়েছেন।



নথিপত্রে দেখা গেছে, ঘাটাইলের দুবলাকুঁড়ি সেতুর কাজটি সোনার বাংলা পেয়েছে ১৯৯৫ সালে বিএনপি সরকারের সময়ে। প্রতিষ্ঠানটি বাকি কাজগুলো পেয়েছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে। স্থানীয় ঠিকাদার, রাজনীতিবিদসহ সংশ্লিষ্ট অনেকে এই ঠিকাদারি কাজপ্রাপ্তির সঙ্গে রাজনীতির যোগ আছে বলে অভিযোগ করেন। তাঁরা মনে করেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে টাঙ্গাইলের আটটির মধ্যে পাঁচটি আসনে বিএনপির জয়ের পেছনে কাদের সিদ্দিকী কৌশলে অবদান রাখেন। সেই সূত্রে তিনি একক ঠিকাদার হিসেবে এক জেলায় এসব বড় কাজ পেয়েছেন। আর তাঁর কাজগুলো উদ্বোধন করেছেন বিএনপির তৎকালীন স্থানীয় সাংসদেরা।



এ তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে গত নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, টাঙ্গাইল-২, ৩, ৪, ৫ ও ৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী যথাক্রমে আবদুস সালাম পিন্টু (সাবেক উপমন্ত্রী ও পরে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামি), লুৎফর রহমান খান আজাদ (সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও আইটিসিএল কেলেঙ্কারির হোতা), শাজাহান সিরাজ (সাবেক মন্ত্রী, বর্তমানে পলাতক), মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান ও অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের হারিয়ে জয়লাভ করেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা এসব আসনে যথাক্রমে দুই হাজার ২৭৪, পাঁচ হাজার ৬৯৫, পাঁচ হাজার ১৪১, ১৩ হাজার ৮৬ ও এক হাজার ৮৭৮ ভোটে পরাজিত হন। আর এ আসনগুলোতে কাদের সিদ্দিকী ও তাঁর দলের প্রার্থীরা পান যথাক্রমে তিন হাজার ৫১৯, ছয় হাজার ৯৬৪, ১৩ হাজার ৭৪৭, ৬৮ হাজার ১৬৭ ও এক হাজার ৩৯৯ ভোট। ওই নির্বাচনের দুই বছর আগে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে এসে গড়া তাঁর দলের এই ভোটগুলো স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের ভোট হিসেবে পরিগণিত। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে টাঙ্গাইলের পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয়লাভ করেছিলেন।



নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন, গত নির্বাচনে টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি নিশ্চিত করার প্রতিদান হিসেবে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে এ কাজগুলো পান কাদের সিদ্দিকী।



তবে কাদের সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, কাজের সঙ্গে রাজনীতি এক করা ঠিক নয়। রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে কেউ কেউ তাঁর বির”দ্ধে এ অপপ্রচার করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। ঠিকাদারি কাজগুলো সম্পর্কে তিনি বলেন, ?আমার জানামতে, টাঙ্গাইলে কোনো কাজ ফেলে রাখা হয়নি। তা ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে আমি কোনো ঠিকাদারি কাজ করি না।?



সোনার বাংলা প্রকৌশলিক সংস্থা লিমিটেডকে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিষ্ঠান দাবি করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ?এর বৈঠকে আমি সভাপতিত্ব করি। সোনার বাংলা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিষ্ঠান বলে এর বির”দ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।?



জানা গেছে, সোনার বাংলার পরিচালনা পরিষদের সদস্য চারজন। তাঁরা হলেন কাদের সিদ্দিকী (চেয়ারম্যান), তাঁর স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকী, কাদেরিয়া বাহিনীর সাবেক প্রশাসক এনায়েত করিম ও কাদের সিদ্দিকীর ব্যক্তিগত সহকারী ফরিদ আহমেদ।



কাদের সিদ্দিকীর হাতে অচল টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার সঙ্গে সখীপুর, ভুক্তা হয়ে সদর উপজেলা ও ধলাপাড়া হয়ে ময়মনসিংহ, ঘাটাইলের সঙ্গে ভূয়াপুর এবং নাগরপুর উপজেলার সঙ্গে মানিকগঞ্জ হয়ে ঢাকার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে সোনার বাংলা প্রকৌশলিক সংস্থা লিমিটেডের করা অসমাপ্ত চারটি সেতু ও একটি সড়কের জন্য। আবার জেলার মির্জাপুর উপজেলার সঙ্গে সখীপুর, সদরের সঙ্গে একই উপজেলার বর”হা ও মাকোরকোল, বাসাইলের সঙ্গে একই উপজেলার সুন্না জেসির সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন একটি সড়ক ও দুটি সেতুর কাজ শেষ না করায়। বাসাইল উপজেলাবাসীকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার পাশাপাশি চিকিৎসাসেবা নিয়েও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কারণ, বাসাইল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিন তলা ভবনের নির্মাণকাজটি দেড় বছর ধরে ফেলে রেখেছে সোনার বাংলা। এ কাজগুলো শেষ না করার ব্যাপারে সোনার বাংলার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনায়েত করিম বলেন, ?আমরা নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করার চেষ্টা করি। কিনতু এলজিইডি (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ) এবং সওজ (সড়ক ও জনপথ) নির্ধারিত সময়ে বিল দেয় না, তাই কাজগুলো শেষ করতে দেরি হয়। আবার নকশা পরিবর্তনও দেরির একটি কারণ।? তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ?সারা দেশে আমাদের মতো আরও অনেকেই কাজ ফেলে রাখে, কিনতু সেগুলো নিয়ে কেউ কোনো কথা বলে না।?



বাস্তবে দেখা যায়, এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি প্রাপ্ত কোনো কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করে না। তারা বারবার আবেদন করে প্রতিটি কাজের সময় বাড়ায় এবং শেষে রড-সিমেন্টের দাম বেড়েছে অজুহাত তুলে বর্তমান দরে আগের কাজের বিল আদায় করে। উদাহরণ−নেত্রকোনার শুকনাকুঁড়ি, জামালপুরের জিঞ্জিরাম ও মানিকগঞ্জের ঘিওর সেতু।



হাঁটুভাঙ্গা-সখীপুর রাস্তা বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের একজন নেতা প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচ বছর ধরে হরতাল, মানববন্ধন, জনসভাসহ নানা কর্মসূচির পর সরকার গোড়াই-সখীপুর (হাঁটুভাঙ্গা-সখীপুর) সড়কের কাইতলা থেকে নলুয়া পর্যন্ত রাস্তার জন্য দুই কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। কিনতু যখন কাদের সিদ্দিকী কাজ পেয়েছেন বলে শুনেছেন, তখন তাঁরা রাস্তার আশা ছেড়ে দিয়েছেন।



বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অসমাপ্ত কাজের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান গতকাল শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় স্বাস্থ্যসচিবকে বিষয়টি জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।



আতঙ্কিত ঠিকাদার ও প্রকৌশলীরা: টাঙ্গাইলের ঠিকাদারেরা এসব কাজের দরপত্র-প্রক্রিয়ার বিষয়ে কিছু অভিযোগ তুললেও নাম প্রকাশ করতে রাজি নন। তাঁদের ক্ষোভ, কাদের সিদ্দিকী কাজ শেষ করেন না জেনেও তাঁকে বারবার সওজ ও স্থানীয় এলজিইডি কেন কাজ দেয়?



এ ব্যাপারে প্রথম আলোর প্রশ্নের জবাবে অভিন্ন বক্তব্য দেন টাঙ্গাইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী খুরশিদ হাসান এবং সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা−?এই কাজগুলো দেওয়ার সময় আমরা এখানে ছিলাম না।? টাঙ্গাইলে এলজিইডি ও সওজের যেসব ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আসেন, তাঁরাও কাদের সিদ্দিকীকে নিয়ে আতঙ্কে থাকেন।



চুক্তি মানেন না কাদের সিদ্দিকী: জেলার সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোনো কাজেরই চুক্তিপত্র মানেননি কাদের সিদ্দিকী। তাঁর প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া কোনো কাজই চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে শেষ করার নজির নেই। এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে প্রতিনিয়ত চিঠি চালাচালি করতে হয়। চুক্তি না মানায় এবং সময়মতো কাজ শেষ না করায় এলজিইডি ও সওজ চারটি সেতুর জন্য তাঁর প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ২০ লাখ টাকা জরিমানাও করেছে। এলজিইডি নাগরপুরের ভুগলহাট সেতু যথাসময়ে না করায় নয় লাখ, কাউজানি সেতুর জন্য চার লাখ ৫৭ হাজার ৬৭৯ ও শালগ্রামপুর সেতুর জন্য ছয় লাখ ৭০ টাকা জরিমানা করে। অসমাপ্ত কাজের ওপর ১০ শতাংশ হারে এ জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি তিনটি সেতুর কার্যাদেশও বাতিল করা হয়েছে।



এলজিইডি সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠানটির জমা রাখা নিরাপত্তার টাকা (সিকিউরিটি মানি) থেকে জরিমানার টাকা কেটে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে। অসমাপ্ত সেতুগুলোর ব্যাপারে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী খুরশিদ হাসান বলেন, ?মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে দ্র”ত অন্য ঠিকাদার দিয়ে কাজগুলো শেষ করার জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি।?



এদিকে ঘাটাইলের দুবলাকুঁড়ি সেতুর জন্য সওজ গত ১০ জুলাই কাদের সিদ্দিকীর প্রতিষ্ঠান সোনার বাংলাকে ১৮ লাখ ৩৯ হাজার ৪৩৫ টাকা জরিমানা করেছে। ১৫ দিনের মধ্যে জরিমানার ওই টাকা জমা দেওয়ার তাগিদ দিয়ে বলা হয়, নির্ধারিত সময়ে টাকা না দিলে অন্য যেকোনো সরকারি পাওনা থেকে তা কেটে নেওয়া হবে, কিনতু সওজ সে রকম উদ্যোগ নেয়নি।



কাদের সিদ্দিকীর প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ?একতরফা জরিমানা করায় আমরা আদালতে মামলা করেছি। এ ছাড়া নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ায় আমরা ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আবেদন করেছি সওজের কাছে।?



জানা গেছে, এলজিইডির কাজের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার টাকা থেকে সরাসরি জরিমানা আদায়ের বিধান আছে, কিনতু সওজের ক্ষেত্রে সে রকম বিধান নেই। ফলে ঠিকাদারেরা এসব ক্ষেত্রে মামলা করেন এবং দীর্ঘ সময় ধরে এ প্রক্রিয়া চলতে থাকে। ফলে কাজ পড়ে থাকে আর জনদুর্ভোগও চলতে থাকে।#







প্রথম আলো, ২৫ অক্টোবর ২০০৮



সময় বাড়িয়ে বরাদ্দ বাড়ানোর বাণিজ্য







কাদের সিদ্দিকীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সোনার বাংলা প্রতিটি কাজ ঝুলিয়ে রেখে প্রথমে সময় বাড়িয়ে নেয়। এরপর ওই সময়ের বাজারদর অনুযায়ী বিল দাবি করে।

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে দুবলাকুঁড়ি সেতুর কাজ শেষের নির্ধারিত সময়ের পর ১১ বছর পার হলেও এখনো তা শেষ হয়নি। কাজ শুরুর সময় সেতুর ব্যয় ধরা হয়েছিল এক কোটি ৮৪ লাখ তিন হাজার ৫৪৬ টাকা। সময় আর বরাদ্দ বাড়িয়ে এখন তার ব্যয় দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ৫৬ লাখ ৯১ হাজার ৮৭০ টাকা। ইতিমধ্যে তিনি দুই কোটি ১৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা করা কাজের বিল হিসেবে তুলে নিয়ে গেছেন।

টাঙ্গাইলের বাইরে নেত্রকোনা, জামালপুর ও মানিকগঞ্জেও একটি করে সেতু অসমাপ্ত রেখেছেন কাদের সিদ্দিকী। এ কাজগুলোর সময়ও বারবার বাড়ানো হয়েছে।

এর মধ্যে নেত্রকোনার শুকনাকুঁড়ি সেতুর প্রাক্কলিত মূল্য ছিল তিন কোটি ১৩ লাখ ৩৩ হাজার ৮৭২ টাকা। কিনতু সময় আর বরাদ্দ বাড়িয়ে এর সংশোধিত মূল্য নিয়ে ঠেকানো হয় আট কোটি ২৭ লাখ ২৯ হাজার ৮৭১ টাকায়, যার পুরোটাই তুলে নিয়েছেন কাদের সিদ্দিকী। সেতুর মূল কাজ শেষ হওয়ার আগেই ২০০৬ সালের ৪ জানুয়ারি ওই সেতুর ওপর ঢালাই ও পাটাতন নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয় তাঁকে। এ জন্য ব্যয় ধরা হয় তিন কোটি ৩৭ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। কাজ শেষ করার কথা ছিল ২০০৭ সালের ৩ এপ্রিল। কিনতু পাটাতন নির্মাণের কাজ সামান্য করে ৯১ লাখ টাকা তুলে নিয়ে আবার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

মানিকগঞ্জের ঘিওর সেতুর কার্যাদেশ মূল্য ছিল এক কোটি আট লাখ ১২ হাজার ২২ টাকা। এর মধ্যে ১৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। পরে সেতুর বর্ধিত অংশের জন্য আরও ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৮৫০ টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হয়। জামালপুরের জিঞ্জিরামপুর সেতুর জন্য বরাদ্দ করা সাত কোটি ৮৭ লাখ ৬০ হাজার টাকার মধ্যে সাত কোটি ৬১ লাখ ১২ হাজার টাকা তুলে নিলেও কাজ শেষ করেনি সোনার বাংলা। শুকনাকুঁড়ি ও জিঞ্জিরামপুর সেতুর কাজ শেষ না করায় গেল জুলাই মাসে সোনার বাংলাকে এক কোটি ২৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছে সওজ। এর বিরুদ্ধে মামলা করে বসে আছে প্রতিষ্ঠানটি।

টাঙ্গাইলে দুটি রাস্তা, দুটি সেতু ও হাসপাতালের কাজের সময়ও কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছে।#









(ঢাকাটাইমস/ এআর/ ১৩.৪৫ঘ.)



সংবাদ সূত্র : Click This Link

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৪০

যাযাবরমন বলেছেন: প্রায় সবই সত্য।
এখন কথা হইলো আজাদ সিদ্দিকী ও মুরাদ সিদ্দিকী কি শুধু কাদের সিদ্দিকীর ভাই? লতিফ সিদ্দিকীর না?
এত সরকারি কাজ কাদের সিদ্দিকী কিভাবে পেয়েছে?

শেষে : জামায়াত নিষিদ্ধ হোক Click This Link

২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৪১

এ.িট.এম. েমাসেলহ্ উিদ্দন জােবদ বলেছেন:
হায়রে রাজনীতি!!! আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বললেই সবাই খারাপ হয়ে যায়!!! আজ যদি কাদের সিদ্দিকী আওয়ামী লীগে থাকতো, তাইলে উপরোক্ত সবকিছু "মিথ্যাচার" হিসেবে তীব্র প্রতিবাদ আসত আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে !!!

৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৪৬

এম আর সুমন বলেছেন: কতগুলা দুস্কুতকারী দালালদের লেখাটি আমি পড়েছি। আজ তিনি আওয়ামী লীগের সমালোচনা করেন বলে এসব ফালতু কথা আসছে। এদেশে রাজনীতি করতে গেলে তার সমালোচনা হবেই। তার বেশিরভাগ যে সত্য তা নয়। বড় দলের বিরুদ্ধে দাড়ালে যে সমালোচনা হয় তার বেশিরভাগই মিথ্যা এবং দলিয় স্বার্থে হয়। উনি আওয়ামী লীগ যখন ছেড়েছিলেন তখন তো আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। স্বার্থ থাকলে অন্যদের মতো আওয়ামী লীগের পা চেটে অনেক টাকা কামাইতে পারতেন।
আজ এই বিতর্কিত দলটি একজন মহান মুক্তিযোদ্ধাকে অসম্মান করতে পেছপা হচ্ছে না। আর এই লেখাটি যেখানে প্রকাশিত হয়েছে সেই ঢাকা টাইমস কার পত্রিকা তা আমরা জানি। কোনো খুনি কাউকে সমালোচনা করবে শুধু এই কারনে যে তিনি মুক্তিযোদ্ধা? এই কারনে যে তিনি রাজাকারের বিচার চান? এই কারনে যে তিনি এক লক্ষ অস্র জামা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর হাতে? শুধু এই কারনে যে তিনি ক্ষমতাসীনদের রক্তচক্ষুকে ভয় পান না?
কেবল এই কারনে যে তিনি ইসলামকে মনে প্রানে বিশ্বাস করেন? কেবল এই কারনে যে তিনি কাদেরীয়া বাহিনীর ১৮০০০ সৈন্যের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন? কেবল এই কারনে যে তিনি বুক পেতে সত্যিকারের যুদ্ধ করেছেন? কেবল এই কারনে যে তিনি বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু মেনে নিতে না পেরে একাই অস্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন। আর তখন এই এইচ টি ইমামরা খন্দকার মোশতাকের সরকারে ছিল। তিনি সুবিধাবাদি হলে তখনও তো খন্দকার মোশতাকের বিরুদ্ধে অস্র না ধরে আপোষ করতে পারতেন। আফসোস, আজ এতই স্বার্থে নিমজ্জিত আমরা যে নু্নতম কৃতজ্ঞতাও ভুলে যাই।
এই পোষ্টটি একজন মহান মুক্তিযোদ্ধাকে খাটো করার জন্য আওয়ামী ঘৃন্য চক্রান্তের ফসল। একজন আওয়ামী ভ্রষ্ট রাজাকারের মালিকানাধীন পত্রিকা ঢাকা টাইমস থেকে নেয়া। এই পোষ্টটি সরিয়ে ফেলার অনুরোধ করছি। যদি সেটা না করেন, যদি এই মুক্তিযোদ্ধার অসম্মান হতে দেন তবে শাহবাগ আন্দোলনের কানাকড়িও মুল্য থাকবে না।

৪| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৫৬

মাহমুদ_০০৭ বলেছেন:
আপনার কথা বুঝেছি। তার মানে আপনারা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে এখন রাজাকার বানাবেন।

ছিঃ ছিঃছিঃ ছিঃছিঃ ছিঃছিঃ ছিঃ !!!!!!!!!!!!!!!!!!!

৫| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৫৯

লালবািত বলেছেন: সেরা মুক্তিযুদ্ধা কাদের সিদ্দিকী এমন হলে পাতিরা দেশকে কেমন খাচ্ছে? কাদের সিদ্দিকী আওয়ামী লীগ করলে হয়তো নেত্রী নিজেই তার দোষ নিজ আচলে ঢেকে দিতেন। যেমন আবুল কে ..........

৬| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:০৩

প্রবাসী১২ বলেছেন: মুক্তিযুদ্ধ কি একটি ষ্টিকার? মন চাইলেই কারো উপর হতে যা তুলে নেয়া যায়? আবার মন চাইলেই কোন রাজাকারের গায়ে যা লাগিয়ে দেয়া যায়?

৭| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:১১

আমি বীরবল বলেছেন: সত্য কথা বললেই পুটকীতে আগুন জ্বলে X((

৮| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৪১

নিঃসংগ যোদ্ধা বলেছেন: অন্যের আসল চেহারা তুলে ধরতে গিয়ে আপনার কুতসিত মানষিকতাই প্রকাশ করে দিলেন।

৯| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৫৫

মুরাদপােভল বলেছেন: হায়রে রাজনীতি!!! আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বললেই সবাই খারাপ হয়ে যায়!!! আজ যদি কাদের সিদ্দিকী আওয়ামী লীগে থাকতো, তাইলে উপরোক্ত সবকিছু "মিথ্যাচার" হিসেবে তীব্র প্রতিবাদ আসত আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে !!!

১০| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:০৫

সম্রাট আকবর বলেছেন: ভাই আপনিতো অনেক জানেন। তা ভাই এত জ্ঞান এত দিন লুকিয়ে রেখেছিলেন কেন? আপনার কাদের সিদ্দিকীয় জ্ঞান সুযোগ সুবিধা মত প্রকাশ করায় আপনাকে সশ্রদ্ধ লাত্থি। ছাগুর বাচ্চা কোথাকার।

১১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:০৭

মদন বলেছেন: একে একে মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার বনে যাচ্ছে আর এক সময়ের রাজাকার রা এখন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যাচ্ছে। পুরাই ডিজিটাল =p~

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.