![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অমিতোষ পাল
দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে প্লট দিয়েছিল রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। মুজাহিদকে উত্তরায় আর মতিউর রহমান নিজামীকে বনানীতে প্লট দেওয়া হয়। দুজনেরই প্লটের আয়তন পাঁচ কাঠা।
রাজউকের নথি ঘেঁটে দেখা যায়, বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের মেয়াদে ২০০৫ সালের ২৫ অক্টোবর রাজউকের ১৬২তম বোর্ড সভায় তাঁদের নামে প্লট বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ২০০৬ সালের ১৬ মার্চ দুজনকেই বরাদ্দপত্র বুঝিয়ে দেয় রাজউক।
রাজউক জানিয়েছে, ভূমি বরাদ্দ বিধিমালার ১৯৬৯ (সংশোধিত) ১৩/ক ধারাবলে তাঁদের প্লট দেওয়া হয়। এ ধারায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশিষ্ট ব্যক্তি, যাঁর রাজধানীতে থাকার জায়গা নেই, তাঁকেই প্লট বরাদ্দ দেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও এ ধারায় রাজউকের প্লট পাওয়ার যোগ্য।
জানা গেছে, প্লট পাওয়ার সময় মতিউর রহমান নিজামী চারদলীয় জোট সরকারের শিল্পমন্ত্রী ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। রাজউকের তৎকালীন চেয়ারম্যান ইকবাল উদ্দিন বোর্ড সভায় তাঁর প্লট পাওয়ার যুক্তি হিসেবে মন্ত্রিত্বের বিষয়টি উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ইকবাল উদ্দিনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে ওই সময় প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালন করা রাজউকের বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী এমদাদুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, সরকারের উপরমহল থেকে তাঁদের প্লট দিতে বলা হয়েছিল। আমাদের প্রতিবাদ করার কোনো সুযোগ ছিল না।
রাজউকের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল হুদা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'যে ধারায় তাঁদের প্লট দেওয়া হয়েছে, তাতে ধারাটির অপব্যবহার হয়েছে। কিন্তু এখন আমরা স্বপ্রণোদিত হয়ে সেই প্লট বাতিলও করতে পারছি না। সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা এলে বাতিল করতে পারব। এর আগেও এভাবে বরাদ্দ দেওয়া প্লট বাতিলের নজির আছে এবং সেটা সরকারই করেছে। এবারও সরকার সিদ্ধান্ত দিলে আমরা বাতিল করতে প্রস্তুত।'
রাজউক চেয়ারম্যান জানান, দেশের গুণী ও বিশিষ্ট ব্যক্তি যাঁদের ঢাকায় বাসস্থান নেই তাঁদের জন্য এই ধারাটি করা হয়েছিল। এই ধারা অনুসরণ করে সরকারি নির্দেশে রাজউক দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিকে প্লট দিয়ে থাকে। আবার এটা বাতিল করতেও সরকারের নির্দেশনা দরকার।
জানা গেছে, ২০০৫ সালের মাঝামাঝি নিজামী ও মুজাহিদ প্লট পাওয়ার জন্য রাজউকে আবেদন করেন। আবেদনে তাঁরা উল্লেখ করেন, ঢাকায় বসবাসের মতো কোনো জমি তাঁদের নেই। নিজস্ব অর্থে থাকার মতো একটি ঘর তৈরির মতো আর্থিক অবস্থাও তাঁদের নেই। দেশের জন্য কাজ করতে গিয়ে তাঁদের এমন আর্থিক দৈন্যদশার সৃষ্টি হয়েছে। মাথা গোঁজার একটু ঠাঁই নির্মাণের জন্য তাঁদের প্লট বরাদ্দ দেওয়া হোক। এর মধ্যে নিজামী উল্লেখ করেন, ৪০ বছর ধরে ঢাকায় বসবাস করলেও তাঁর থাকার জায়গা নেই।
এর পরই অতি দ্রুততায় রাজউক ওই আবেদনপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। মন্ত্রণালয়ও তড়িঘড়ি সম্মতি দিলে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে দেওয়া হয় উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের ১০ নম্বর রোডের ৫ নম্বর প্লটটি। মতিউর রহমান নিজামীকে দেওয়া হয় বনানীর জে ব্লকের ১৮ নম্বর রোডের ৬০ নম্বর প্লট।
গতকাল মতিউর রহমান নিজামীর প্লটে গিয়ে দেখা যায়, বনানী লেকের পাড়ে অবস্থিত ওই প্লটে আলিসান সাততলা একটি ভবন গড়ে উঠেছে। ঘিয়েরঙা বাড়িটির নাম দেওয়া হয়েছে 'মিশন নাহার'। সাততলায় রয়েছে একটি চিলেকোঠা।
স্থানীয়রা জানান, প্লটটি মিশন ডেভেলপারকে বাড়ি তৈরির জন্য দেন নিজামী। বিনিময়ে অর্ধেক ফ্লোর স্পেস পান তিনি। প্রতিটি তলায় রয়েছে ১৮১০ বর্গফুটের দুটি করে ফ্ল্যাট। নিচতলা গাড়ি পার্কিংয়ের গ্যারেজের জন্য খালি রাখা হয়েছে। ভবনের সঙ্গে লাগোয়া রয়েছে কয়েকটি ফুলের গাছ। এর পাশেই একটি টুলেট টাঙানো।
ভবনের ম্যানেজার আবদুল হালিম কালের কণ্ঠকে বলেন, নিজামী সাহেবের পরিবার ছয়তলায় থাকেন। তাঁর ছেলে হাইকোর্টের আইনজীবী, তিনিই বর্তমানে আছেন। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি সুযোগ দেননি। কালের কণ্ঠর পরিচয় পাওয়ার পর কথা বলতেও তিনি অস্বীকৃতি জানান। স্থানীয়রা জানান, এখানে প্রতিটি ফ্ল্যাটের বর্তমান বাজারমূল্য কম করে হলেও দুই কোটি টাকা।
অন্যদিকে উত্তরায় মুজাহিদের বরাদ্দ পাওয়া প্লটে গিয়ে দেখা যায়, সেখানেও ছয়তলা ভবন হয়েছে। নাম দেওয়া হয়েছে 'মিশন তামান্না'। এ ক্ষেত্রেও ফ্লোর স্পেস ভাগাভাগির শর্তে একই ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন মুজাহিদ। ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান মিশন ডেভেলপারের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, নিচতলায় গাড়ি পার্কিংসহ অন্য পাঁচটি ফ্লোরে রয়েছে দুটি করে মোট ১০টি ফ্ল্যাট। প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন ১৪৬২ বর্গফুট। এর মধ্যে পাঁচটি ফ্ল্যাট পেয়েছেন মুজাহিদ সাহেব আর পাঁচটি মিশন ডেভেলপার।
ভবনের এক নিরাপত্তাকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জেলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত মুজাহিদ ওই ভবনের তৃতীয় তলায় থাকতেন। বর্তমানে তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা আছেন। তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও অনুমতি মেলেনি। জানা গেছে, প্রতিটি ফ্ল্যাটের মূল্য হবে অন্তত এক কোটি টাকা।
সংবাদ সূত্র : Click This Link
২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৪৬
মোমের মানুষ বলেছেন: উত্তরা ১১ ং সেক্টরে ঐ রোড দিয়ে গেলে প্রায় বাড়িটা চোখে পড়ে
৩| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৫৯
বিপদেআছি বলেছেন: হা্য়রে !!!
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:১৩
ডাব্বা বলেছেন: মনটা খারাপ হয়ে গেল আবারো।