![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যেমনটি দেখেছিলাম সাভারে রানা প্লাজায় উদ্ধার-কাজ চলাকালে, সবাই একসাথে একজোট হয়ে কাজ করছে, যেন কোন ক্লান্তি নেই। কে কাকে পানি, জুস, গ্লাভস, কাটিং মেশিন এগিয়ে দিচ্ছে, কে কাকে বাতাস করছে, কে শাহবাগী গনজাগরন মঞ্চের, আর কে হেফাজতে ইসলামের, কে ডাক্তার, কে শ্রমিক ?- সবারই যেন একটাই লক্ষ্য- আর তা হল রানা প্লাজার অন্ধকার কূপ থেকে মানবতা কে তুলে নিয়ে আসা। তাতে নিজের জীবন এর ঝুকিঁ থাকুক না কেন ! আমি যেন স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। এতদিন যে বইয়ে পড়েছি, এই তাহলে আমাদের বাঙ্গালীদের একাত্তর। এই সাত দিন যেন সেই নয় মাস। যুদ্ধ তো শেষ হল, এবার নতুন করে দেশটা কে সাজানোর পালা। আমি আমাদের Doridro-Charity Foundation এর পক্ষ্য থেকে ভলান্টিয়ার হিসাবে গতকাল গিয়েছিলাম এপোলো হাসপাতালে। সেখানে আমার জানামতে ১৩ জন রোগী ছিল সাভার থেকে আর সাথে তাদের আত্মীয়-স্বজন। আমি ভেবেছিলাম, আমিই গিয়েছি সবার আগে। গিয়ে দেখি আমার আগে নাকি আরো ১০-১২ জন ভলান্টিয়ার উপস্থিত। ছাত্র ফেডারেশন তাদের চিকিৎসা এবং মেডিসিন হাসপাতাল থেকে মওকুফ করিয়ে রোগীর আত্মীয়-স্বজন কোথায় থাকবে, কি খাবে- সেই চিন্তায় মশগুল। জাগো ফাউন্ডেশন নাকি তাদেরকে মঙ্গলবার পর্যন্ত খাবার দিবে। তখন আমি তাদেরকে আশ্বস্ত করলাম, তারা এপোলোর পিছনে যে কটেজে থাকবে, তার ভাড়া আমরা Doridro-Charity Foundation থেকে দিব।(১৫ জন) আজ গিয়েছিলাম পংগু হাসপাতালে ৪০ লিটার পানি নিয়ে। সেখানে এখন পর্যন্ত ১০৩ জন সাভার ভিক্টিম ভর্তি হয়েছেন। সেখানে গিয়ে আমার ভিরমি খাওয়ার অবস্থা। আমি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমি যে ঘন্টা চারেক ছিলাম, কমপক্ষে ৭ টা সংগঠনের সাথে দেখা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একদল এসেছে, কি আনে নাই তারা ! বালতি, মগ, লুংগী, শাড়ী, শার্ট, মেক্সী, সাবান, পেস্ট, ব্রাশ, শ্যাম্পু- যেন নতুন সংসার সাজিয়ে দেবে। খাবার তো আমি সাভার থেকে দেখেই অভ্যস্ত হয়ে গেছি, সেটা আর নাই বা বললাম নতুন করে। কেউ কেউ নগদ টাকা দিয়ে যাচ্ছে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা এক আপু-কে দেখলাম- রোগীর কানে কানে গিয়ে কথা বলছে। কাছে গিয়ে জানতে পারলাম, উনি রোগীদের ডাটাবেইস তৈরী করছে। সংসারে উপার্জনক্ষম আর কেউ আছে কিনা ? কয় ভাই-বোন ? উনারা নাকি সবার শেষে উপার্জনক্ষম করিয়েই ছাড়বে। আর যারা একেবারে কিছুই করতে পারবে না শারীরিক অক্ষমতার কারনে(কারো কারো হাত-পা কেটে ফেলতে হয়েছে), তাদেরকে নাকি বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াবে। তো আমি আর কি করব ? জীবনে ডাক্তার হতে না পারার দুঃখটা মোচড় দিয়ে উঠল। আর ওখানকার চিকিৎসক দের আন্তরিকতার কথা নাই বা বললাম আজকে।
©somewhere in net ltd.