![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সরল মনের মানুষ, লেখালেখি করতে ভাল লাগে, শখের বসে লেখি। সময় কাটাই। মানুষের সাথে বন্ধুতা করতে চাই।
আমার অল্পতেই সুখ!
গতকাল সিলেট থেকে সড়ক পথে ঢাকা ফিরছিলাম। সাথে ছিল সহকর্মী আদনান ভাই এবং আমাদের গাড়ি চালক শফিক। আমাদের অফিসিয়াল সফরটা আমার ব্যক্তিগত ভাবনা থেকে ১০০% সফল এবং কার্যকর। সকালে হোটেল "রোজ ভিউ"-র সৌজন্য নাস্তাটা তৃপ্তি নিয়ে খেয়ে বের হয়েছিলাম। দুইটা মিটিং করে শহর থেকে বের হলাম ১২:৪৮মিনিটে। আমার আর আদনান ভাইয়ের পেট পরিপূর্ণ ছিলো বিধায় দুপুরের খাবার নিয়ে তাড়া ছিলো না। পরিকল্পনা ছিলো হবিগঞ্জ পাড় হয়ে রাস্তায় কোথাও খেয়ে নিবো। আমাদের গাড়ি চালক এই পথ সম্পর্কে সম্পূ্ণ ওয়াকিবহাল। কোথায় কি খাবার পাওয়া যায় সে আমাদের জানিয়ে দিল। আমি আর আদনান ভাই সিদ্ধান্ত নিলাম ট্রাক ড্রাইভাররা যেখানে খায়, সেখানে খাবো।
হবিগঞ্জের মাধবপুরের পরে ঠিক বি বাড়িয়ার জেলার সরাইলের আগে একটা ছোটো কালভার্ট ব্রিজ আছে, ঠিক তার পাশে ট্রাক ড্রাইভারদের জন্য বসেছে বেশ কয়েকটি ছোটো ছোটো খাবারের হোটেল, আসলে ঠিক হোটেল না খাবারের দোকান টাইপ । আমরা একটা খাবারের দোকানে বসলাম এবং খবারের অর্ডার দিলাম। একটা কথা বলে রাখি, রাস্তার পাশে এইসব দোকান গুলোতে কাঠের লাকড়ি দিয়ে রান্না হয় বলে খাবারের স্বাদটা একটু অন্যরকম হয় এবং গরুর মাংসের স্বাদ আসলেই লোভনীয়।
তবে মনে রাখবেন খাবারের আগেই দাম জেনে নিবেন, তানাহলে গলা কাটা দাম দিতে হবে। যেমনটা আমরা দিলাম। টমি মিয়ার ক্যাফেতে ৩ জন পেট ভরে খেয়ে (কয়েক রকম ভর্তা, গরুর মাংস, ডাল) যেখানে বিল দিলাম ৪৫২টাকা সেখানে এই রাস্তার পাশের দোকানে গরুর মাংস আর ছোট মাছ ভুনা দিয়ে খেয়ে বিল দিলাম ৫৪০টাকা। সিলেটের পাঁচ ভাইয়ের হোটেলে (৪রকমের ভর্তা, গরুর মাংস আর ডাল) খেয়ে বিল দিলাম ৩২০টাকা। এখন বলুন দামটা কি একটু গলা কাটা টাইপ হয়ে গেলো না?? তবে রান্না ভাল ছিলো।
আমরা খেয়ে হাত ধোয়ার সময় এক বৃদ্ধ, বয়স আনুমানিক ৭০ হবে, স্বাস্থ্যহীন, অনেক দুর্বল এবং রোগা ধরনের শারীরিক গঠন নিয়ে আমার দিকে সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়ে দিল। আমি তার মলিন এবং শুকনো মুখটা দেখে দশটা বের করে দিলাম। পরক্ষনেই মনে হলো, বৃদ্ধ লোকটি মনে হয় ভাত খায়নি, ভাত খাওয়ালে কেমন হয়। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। সাথে সাথে বৃদ্ধ লোকটি খাবারের জন্য বললাম। লোকটি অবাক দৃষ্টি নিয়ে আমার দিকে তাকালো। আমি অভয় দিয়ে তাকে বললাম কি খাবেন। বৃদ্ধ লোকটি মুখে কিছু বললেন না, সোজা টেবিলে গিয়ে বসলেন। আমি দোকানের মালিককে জিজ্ঞেস করলাম, "গরুর মাংস দিয়ে খেলে কত বিল আসবে?"দোকান মালিক বললো -"৮০টাকা।" আমি বিল দিয়ে বের হবো, জানতে পারলাম, বৃদ্ধ লোকটি দাত নেই বলে গরুর মাংস খেতে পারেন না। পরে দোকানদারকে মুরগীর মাংস দিতে বললাম। দোকানদান আরো ২০টাকা চাইল, দিয়ে দিলাম।
আমার তাড়া ছিল, তাই অপেক্ষা করতে পারি নাই। লোকটা কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থেকে খাওয়া শুরু করলো। আমি ওনার কাছে দোয়া চেয়ে বিদায় নিলাম। আমি মনের দিক থেকে যে সুখটা পেলাম, সেটা আমি অনেকদিন অনুভব করিনি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানালাম।
বন্ধুরা আমি ইচ্ছে করলে তার ছবি তুলে এখানে আপলোড করতে পারতাম। কিন্তু আমি সেটা করতে পারি নাই। আমি কাউকে দেখানোর জন্য করি নাই। মন থেকে করেছি।
এখন ঘটনা লিখছি বলে অনেকে বলতে পারেন, তাহলে লিখলাম কেন? আমার উত্তর সহজ, ভাল কাজ শেয়ার করলে অন্যকে অণুপ্রাণীত করে, উদ্বুদ্ধ করে। মনের সুপ্ত সুন্দর বাসনাটা জাগ্রত হয়। আমি জানি আমার মত আরো অনেকে আছে সুযোগ পেলেই এই ভাল কাজটি করেন। আর যারা ইচ্ছে পোষন করেন কিন্তু করার সুযোগ পান না, তারা হয়তো লেখাটি পড়ে করতে অণুপ্রাণীত হবেন, অসহায় বৃদ্ধদের সাহায্য করবেন।
আমি কাজটি প্রায়ই করে থাকি। ভবিষ্যতেও করবো ইনশা আল্লাহ। আমার জন্য দোয়া করবেন, যেন আল্লাহ আমাকে আরো বেশি করে করার সুযোগ দেন। এই অল্পতেই আমি অনেক সুখ পাই।
২| ২৩ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১২:১৪
সদালাপী। বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ২৩ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১২:৪০
ভাঙ্গা হৃদয় বলেছেন: দুনিয়াটা চলছে শুধুমাত্র এই ধরনের লোকদের জন্য। ভাল থাকবেন।
৪| ২৩ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৩
বোকামন বলেছেন:
আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা নিবেন।
আল্লাহ আপনার সহায় হোন।
আস সালামু আলাইকুম
৫| ২৪ শে মে, ২০১৩ রাত ১:০৩
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এই পোস্টে হাসির ইমো দেওয়া যায়।
৬| ০৫ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৯:৫৪
সদালাপী। বলেছেন: সবাইকে ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১২:০৫
কালোপরী বলেছেন: