![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সরল মনের মানুষ, লেখালেখি করতে ভাল লাগে, শখের বসে লেখি। সময় কাটাই। মানুষের সাথে বন্ধুতা করতে চাই।
আমার স্ট্যাটাস পড়ে অনেকে ভাবতে পারেন আমি হয়তো বা ছাগু, কুত্তার বাচ্চা, নরপশুদের পছন্দ করি বা সমর্থক। তাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি আমার মন এখনো এতো পঁচে যায়নি ৩০ লক্ষ শহীদের হত্যাকারী ২লক্ষেরও বেশী মা-বোনের ইজ্জত লুন্ঠুনকারীদের স্বপক্ষে কলম ধরবো। আমি যা বলি সেটাও চরম হতাশা আর বিক্ষুদ্ধ মনের বহিঃপ্রকাশ। কি চেয়েছিলো আমাদের বীর সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা আর আমরা কি করছি? রাজাকাররা মন্ত্রী হয়, গাড়ীতে জাতীয় পতাকা নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে বলে যারা চিৎকার করেন, তাদেরকে বলবো এই সুযোগ কে করে দিয়েছে?? আপনি?? আমি?? জনগণ? না আওয়ামী লীগের ব্যর্থতায় ভরা অপরাজনীতি?? একটু ঠান্ডা মাথায় ভাবুন?? যে দলের সমর্থক হোন আমার কিচ্ছু যায় আসে না, কিন্তু সত্য ভাবনা ভাবা উচিত। অন্ধ দলীয় সমর্থক না হয়ে সমালোচক হোন দলের জন্য উপকার হবে, দেশের জন্যতো হবেই।
১৯৭০ এর নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয় লাভ করে। ২টি আসন ছাড়া বাকী সব আসনে শেখ মুজিবুর রহমানের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জয়ী হয়, কি অকৃত্রিম ছিলো মানুষের ভালোবাসা।
১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদশ আওয়ামী লীগ নিরুঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। বাংলাদেশের মানুষের ভালবাসা তখনো অব্যাহত ছিলো অকৃত্রিম মমতা আর শ্রদ্ধায়।
এর পরই শুরু হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অন্ধকার যুগ। কারা দায়ী?? তখন কি বিএনপি ছিলো?? জামাত কি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলো?? না এরা কেউ ছিলো না। ঘরের শত্রু বিভীষনরা ছিলো?
এতো বিপুল সমর্থন, ভালবাসা, শ্রদ্ধা, সম্মান পাওয়ার পরও কি দরকার ছিলো ১৯৭৪ সালের ২৫শে জানু্যারী জরুরি অবস্থা জারি করে সকল বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার? কি দরকার ছিলো ৪টি বাদে সকল সংবাদপত্র নিষিদ্ধ করার? মুজিবকে আজীবন রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা র কি খুব প্রয়োজন ছিলো? বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানতো ততোদিনে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ের মণি কোঠায় স্থান করে নিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ কি নিজেই নিজের নামের অপমৃর্ত্যু ঘটায়নি?? আজকের আওয়ামী লীগ কি সত্যি শেখ মুজিবুর রহমানের আওয়ামী লীগ? প্রশ্ন জাগাটি কি প্রাসঙ্গিক না?? নতুন প্রজন্ম যখন ইতিহাস পড়বে এই সত্যটিতো পড়বে, মনে প্রশ্ন জাগ্রত হলে কি উত্তর দিবেন আজকের আওয়ামী লীগ। যদি বাকশাল ভালোর জন্য করা হয়ে থাকে তাহলে কেন বিসর্জন দেয়া হলো? আমি বলবো বাকশাল থেকে সরে আসার একটাই কারণ তাহলো মানুষের মনে যে নেগেটিভ ভাবনার উদয় হয়েছিলো সেটাকে চিরতরে মুছে দেবার জন্য। ইতিহাস ভালো জিনিস আবার খারাপও। িতিহাস থেকে কোন কিছু মুছা সহজ না।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট প্রত্যূষে একদল তরুণ সেনা কর্মকর্তা ট্যাঙ্ক দিয়ে রাষ্ট্রপতির ধানমণ্ডিস্থ বাসভবন ঘিরে ফেলে এবং শেখ মুজিব, তাঁর পরিবার এবং তাঁর ব্যক্তিগত কর্মচারীদের হত্যা করে।
মুজিবের মৃত্যু বাংলাদেশকে বহু বছরের রাজনৈতিক সংঘাতের দিকে টেনে নেয়। সেনাঅভ্যুত্থানের নেতারা অল্পদিনের মধ্যেই উচ্ছেদ হয়ে যান এবং অভ্যুত্থান, পাল্টা অভ্যুত্থান আর রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে দেশ অচল হয়ে পড়ে। ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর আরেকটি সেনা অভ্যুত্থানের ফলশ্রতিতে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতা আসীন হওয়ার পর শৃঙ্খলা অনেকাংশে ফিরে আসে।
জিয়ার অভ্যুত্থান নিয়ে অনেক বিতর্ক, সমালোচনা এবং সন্দেহের বেড়াজালে আবর্তিত। সেনা ছাউনি তে থেকে দেশ পরিচালনা, বিভিন্ন নাম ঘুরে শেষে বাংলাদেশ জাতীয়াতাবাদী দল (বিএনপি) নামের দল গঠন, পরবর্তীতে বিতর্কিত নির্বাচনে রাষ্ট্টপতি নির্বাচিত হয়ে দেশ পরিচালনায় সুনাম অর্জন করেন। ফলে একটা দিকভ্রান্ত মানুষ জিয়ার দক্ষ শাসন প্রক্রিয়ায় আস্থা খুঁজে পায়। অতি অল্প সময়ে তার প্রতিষ্ঠা করা দল মানুষের কাছে আওয়ামী লীগের বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয়তা পেতে থাকে। অতপর জিয়াকেও একদল বিপদগামী সেনা কর্মকর্তাদের রোষানলে পরে জীবন দিতে হয়। রাজাকারসহ ইসলাম পন্থীদের পুনর্বাসনে জিয়ার ভূমিকা অনবদ্য। বিভিন্ন দল ও মতের মানুষদের নিয়েই ছিলো তার পথ চলা। তবে উনি দক্ষ এবং কৌশলীভাবে এই ভিন্নমতের মানুষ নিয়ে দেশ চালিয়েছিলেন মানুষের প্রত্যাশার চেয়ে সুন্দরভাবে। যার ফলে আজো মানুষ জিয়ার নাম নেয় ভালবাসায়, শ্রদ্ধায় আর সম্মানে। তারদল দুইবার ক্ষমতায় এসেছে শুধু তারই জনপ্রিয়তার জোয়রে। পক্ষান্তরে দিকভ্রান্থ পথিকের মত পথ চলে আওয়ামী লীগ হয়ে যায় ছন্নছাড়া একটা দল। জিয়াউর রহমান জননেত্রী শেখ হাসিনাকে স্বদেশে প্রর্ত্যাবর্তনের সুযোগ দিয়ে ছন্নছারা আওয়ামী লীগকে সঠিক পথের দিশা দেয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জননেত্রীর দক্ষ নেতৃত্বে সংগঠিত করতে থাকে। শুরু হয় গণতন্ত্র ফিরে পাবার আন্দোলন। সেই আন্দোলনে শেখ হাসিনা জনগণের সমর্থন আদায়ে সক্ষম হতে থাকে ।
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বিএনপি হয়ে যায় অভিবাবক শূন্য। আলোর পথ হয়ে যায় অন্ধকার। আর এই সুযোগটি কাজে লাগায় চতুর স্বৈরাচার এরশাদ সরকার। জাতির উপর জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসে স্বৈরশাষন। গণতন্ত্র আবার পথ হারায়। বাংলাদেশ হয়ে যায় সীমাহীন দূর্নীতি আর সন্ত্রাসের স্বর্গ রাজ্য। শুরু হয় আন্দলোন। প্রথমে আওয়ামী লীগ আর বিএনপি নিজ নিজ অবস্থান থেকে আনন্দোলন শুরু করলেও পরে একতাবদ্ধ হয়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ঝাপিয়ে পরে। শুরু চূড়ান্ত আন্দোলন। যোগ দেয় দেশের ছাত্র সমাজ। দিশেহারা এরশাদ ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়। শুরু হয় নতুন যুগের গণতন্ত্র। তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনে বিএনপি সরকার গঠন করে, এইখানে নিঃশর্ত সমর্থন পায় বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর। রাজাকারদের সমর্থনে সরকার গঠন করে মানুষের প্রত্যাশাকে ভুলুন্ঠিত করে। অপশাষন আর সন্ত্রাসের কবলে পরে দেয়। মানুষ মুক্তির পথ খোঁজে। ১৯৯৬ সালে জামাত আর আওয়ামী লীগের যুগপৎ আন্দোলনে সংবিধানে নির্বাচন কালীন সরকার হিসেবে সংযোগ হয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, যার অধীনে নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২৫বছর পর ক্ষমতায় আসে। মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে একবার সুযোগ চেয়ে ক্ষমতায় এসেই শুরু করে ভুল পথে যাত্রা। সন্ত্রাস আর দূর্নীতি বিএনপিকে ছাড়িয়ে আরো একধাপ এগিয়ে যায়। আবার ২০০১ সালে মানুষ বিএনপিকে বেছে নেয়। কিন্তু দূর্ভাগা জাতির জন্য কোন সুভাগ্য বয়ে আনে না। তারেকের সীমাহীন স্বেচ্চাচারিতার ফলে দেশ এক রকম দ্বৈত শাষন প্রতিষ্ঠা হয়। হাওয়া ভবন মানুষের শান্তি আর সুখের অন্তরায় হয়ে দাড়ায়। পূর্ববর্তী সব সরকার ছাপিয়ে বীর দর্পে এগিয়ে চলে বিএনপির দুঃশাষন। মানুষ মুক্তির পথ খোঁজে। ২০০৯ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আবার ক্ষমতায় আসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। প্রথম দিকে ভালোভাবে শুরু করলেও শেয়ার কেলেংকারী পরবর্তীতে পদ্মা সেতুর দূর্নীতির কাহিনী মানুষকে আবার আশাহত করে। প্রকাশ্যে কুপিয়ে মানুষ হত্যার দৃশ্য দেখে মানুষ হতবাক হয়ে যায়। দিন যায় দূর্নীতি আর সন্ত্রাস মহীরুহের মত ডালপালা ছড়াতে থাকে। ছাত্রলীগের বেপড়োয়া কর্মকান্ডের কারণে মানুষ অতিষ্ঠ দিন গুনছে পরিবর্তনের। চার সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয় পরিবর্তনের আগমন ধ্বনি শোনায়।
রাজাকারের বিচারের উদ্যোগ তরুন মনে আশার সঞ্চার করতে পারলেও কাদের মোল্লার রায়ের ধরন তরুন সমাজকে ব্যথিত করে। রাস্তায় নেমে আসে লক্ষ লক্ষ মানুষ। আইন পরিবর্তন হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের ধুরুন্ধপনা শেষ হয় না। ইসলাম নিয়ে অরুচিকর লেখা এবং নবীকে অপমান এই সময়ে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হয়ে যায়। হেফাজতের আবির্ভাব, আন্দোলন আর নির্যাতন সাধারন মানুষ ভালো ভাবে নেইনি।
আওয়ামী লীগের ব্যর্থতা আর বিএনপির জামাত প্রীতির কারনেই আজকে রাজাকাররা এতো সুসংগঠিত। ইসলামকে ব্যবহার করে আজ তারা একটা ভোট ব্যাংক তৈরী করেছে। তাদের সুসংগঠিত রাজনীতি অনেক তরুন প্রজন্মকে দিকভ্রান্ত করেছে।
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষনের দিন রেসকোর্স ময়দানে যে জনতার স্রোত ছিল, সেইসব জনতা ব্যক্তিগত কোন স্বার্থের কারণে সমবেত হননি। তাদের স্বপ্নছিলো একটি স্বাধীন সার্ভৌম বাংলাদেশ। সুশাষন, গণতন্ত্র, উন্নয়ন, বাকস্বাধীনতা, ধর্মনিরপেক্ষতা, দারিদ্র মুক্ত সুজলা সুফলা শস্যে শ্যামলা একটা সোনার বাংলাদেশের। সেই সময়ে বাংলাদেশের মানুষ শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য রোজা রেখেছে, তাঁর মুক্তি চেয়ে মসজিদ, মন্দিরে, প্যাগোটায় মানুষ প্রার্থণা করেছে। সেই সব মানুষ গুলো কেন আজ মুখ ফিরিয়ে নিলো একবারও কি আওয়ামী লীগ ভেবে দেখেছে? আজ তারা নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস পড়তে বলেন? আমাদের ইতিহাস কি নিরপেক্ষ? যখন যেই দল ক্ষমতায় এসেছেন, তখন সেই দল তাদের মতাদর্শীদের দিয়ে ইতিহাস লিখিয়ে নিয়েছেন। কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা আজ বের করা অনেক কঠিন। কেননা যে জাসদ এক সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্য একটা বিষফোড়া ছিলো সে আজ আওয়ামী লীগের মন্ত্রী সভায়। ইতিহাস কি করে সঠিক হবে?? যারা বঙ্গবন্ধুর চামড়া দিয়ে ফুটবল খেলার কথা বলে হুমকি ধমকি দিত তারা আজ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পরম মিত্র। ডানে তাকালে বাম, বামে তাকালেও বামদের আধিপত্য দেখা যায়। যে সুরঞ্জিত বাবু বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে সংসদ সদস্য হয়ে স্বাক্ষর করেননি তিনি আজ সংবিধান সংশোধন কমিটির কো-চেয়ারম্যান। ইতিহাসতো সঠিক ভাবে লেখা হচ্ছে না, হবেও না। আমাদের যারা ইতিহাসবিধ বা যারা লেখালেখি করেন তারা কেউ দলীয় চিন্তা ভাবনার বাইরে আসতে পারেন না। তারা সংকীর্ণতাকে পরিহার করতে পারেন না। কি করে পারবেন বলুন? যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নির্বাচিত হয় দলীয় আনুগত্যের মাপকাঠিতে তখন নিরপেক্ষ লেখাতো ভাবেন না। একজন সর্বোচ্চ শিক্ষিত লোক শুধুমাত্র একটি পদ ও পদবীর লোভে নির্লজ্জ দলবাজীতে লিপ্ত হতে দেখে আমরা নিরপেক্ষ ইতিহাস পাবার প্রত্যাশাকে নির্বাসিত করেছি। নতুন প্রজন্ম বারবার দলীয় দৃষ্টিভঙ্গীর ইতিহাস পড়ে বিভ্রান্ত হচ্ছে। এর মাশুল একদিন এই জাতীকে দিতে হবে।
অনেকেই জামায়াতে ইসলামীর উত্থানের জন্য জিয়াউর রহমানকে দোষারুপ করেন, আমিও করি, এবং করবো, তাই বলে বারবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ভুল করবে আর আমি তাকেই ভোট দিবো সেইরকম ভাবাটা বুঝি ঠিক না। ৪২বছর অনেক সময়। অনেক মানুষ ৪২বছর আয়ুও পায় না। তার আগেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়ে চলে যায়। বার বার সুশাসন দিতে ব্যর্থ হবেন আমি স্বাধীনতার পক্ষের বলে মাফ করে দিবো, বারবার শেয়ার মার্কেট ধ্বংস করে দিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পথের ভিখারী বানাবেন, তারা মাফ করে দিবে? যারা শেয়ার কেলেংকারীর হোতা তারাই যখন প্রধানমন্ত্রী ডানে বামে বসে থাকেন তখন আমরা আমার নতুন কেলেংকারীর আশংকায় শঙ্কিত হই, আমার ধারনা সবাই হয়।
ব্যর্থতার সুড়ঙ্গ পথেই ১৯৭১ সালের পতিত রাজাকার, আলবদর, আলশামসরা বাংলার মাটিতে ঘাটি বাঁধে। ক্ষমতার পালাবদলে কে কার চেয়ে বেশি শক্তি প্রদর্শন করতে পারে সেই প্রতিযোগিতার সুযোগে বিএনপির ঘাড়ে চাপে রাজাকার, আর মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দাবীদার আওয়ামী লীগের বগলে আশ্রয় নেয় ১৯৯০সালের পতিত স্বৈরাচার। এই দুইটি দল চারিত্রিকগত ভাবে এক ও অভিন্ন। আজকে আওয়ামী লীগ যখন প্রত্যাশা পূরনে সম্পর্ণ ব্যর্থ তখনি আবার স্বাধীনতাকে রাজনৈতি ইস্যু হিসেবে ব্যবহার করছে। ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫, ১৯৯৬ থেকে ২০০০১ কখনোই আওয়ামী লীগ রাজাকারদের বিরুদ্ধে একটা কেসও ফাইল করেনি। শ্রদ্ধেয় শহীদ জননী জাহানারা ইমাম বিএনপির শাষনামলে ঘাদানি প্রতিষ্ঠা করলেও আওয়ামী লীগের শাষনাললে অনেকটা নীরব থাকে। আজ যখন রাজনৈতিক ভাবে বিএনপিকে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হচ্ছে তখনি বাংলাদেশীদের আবেগের জায়গায় হাত দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ঠিক একিভাবে বিএনপি যখন আওয়ামী লীগকে আদর্শ আর নীতি দিয়ে মোকাবেলা করতে পারছে না, তখনি স্পর্শকাতর ধর্মকে ব্যবহার করছে। দুজনের উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন, ক্ষমতা এবং ক্ষমতা। তবে সম্মিলিত ভাবে চিহ্নিত রাজাকারদের বিরুদ্ধে বিচারের ব্যবস্থা করা আমাদের দাবী, দেশের আপামর জনতার দাবী। এই দাবী নিয়ে রাজনীতি চলে না। কোন দাবী যখন গণদাবী হয় তখন সেটা নিয়ে রাজনীতি করা মানে দাবীর প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করা।
রাজাকারের বিচারের দাবীতে শাহবাঘের গণজাগরণ মঞ্চে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ ঘরনার লোকজন একা যায়নি। আমি দেখিছি যে লোক জীবনেও আওয়ামী লীগ করেনি বা সমর্থনও দেয়নি, সেই লোকও শাহবাঘের আন্দোলনে স্বতস্ফুর্ত ভাবে অংশ গ্রহণ করেছে। মা-বোন-ভাই যারা রাজনীতির মারপ্যাচ বুঝে না তারা ছুটে গেছে রাজাকারের বিচারের দাবীতে, সুতরাং এইটা জাতীয় দাবী এইটা নিয়ে রাজনীতি করলে সাধারন মানুষ কষ্ট পায়, যার প্রভাব পরে জাতীয় নির্বাচনে, আর সুযোগ নেয় রাজাকারের গোষ্ঠী, নির্বাচনের বৈতরনী পাড় পেতে রাজাকারদের আশ্রয় দেয় বিএনপি আর স্বৈরাচারকে আশ্রয় দেয় আওয়ামী লীগ। কেউ কি স্বচ্ছ??
দীর্ঘ ২০ দশকের রাজনীতিতে ১০বছর বিএনপি, ১০বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন। বিএনপি রাজাকারের সমর্থক ধরে নিলাম মানুষকে কিছুই দেয়ার ইচ্ছা নেই, কি দিছে সেটাও খোঁজে পাওয়া যাবে না, তবে একটা হাওয়া ভবন দিছে সেটা প্রতীয়মান। আওয়ামী লীগ কি দিছে সেটাও খোঁজে পাওয়া যাবে না। হাওয়া ভবন না দিলেও যে শান্তি দেয় নাই সেটা প্রমানীত। দুই দুইবার শেয়ার কেলেংকারী, পদ্মা সেতু কেলেংকারী, হল মার্স কেলেংকারী, হাজারী, ওসমান, তাহের, গোলোন্দাজ, মায়ার তেলেসমাতী দেখেছে মানুষ। ফাঁসির আসামীকে রাষ্টপতির বিশেষ ক্ষমতায় দুই দলই ক্ষমা করেছে রাজনৈতিক বিবেচনায়। এই রকম হীন কাজ রাজাকারের সমর্থক দলের কাছ থেকে প্রত্যাশিত, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দলের কাছে কি কাম?? স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কি এটা ছিলো?? ৩০লক্ষ শহীদ কি এটার জন্য জীবন দিয়েছিলো। এক মন্ত্রীকে বাঁচানোর জন্য পুরো জাতিকে ভুক্তোভোগী করা কি স্বাধীনতার চেতনা ছিলো? প্রকাশ্যে দিবালোকে বিশ্বজিতকে কুপিয়ে মারা কি স্বাধীনতার স্বপক্ষের চেতনা।
বিএনপি তার কুকর্মের ফল ভোগ করছে। ২৯টি আসন নিয়ে রাজনৈতিক ভাবে দেউলীয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌছে গিয়েছিলো, কিন্তু আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস, দূর্ণীতি, অপশাষন, বিভিন্ন কেলেংকারী, মন্ত্রী নেতাদের অশালীন বাক্য বিনিময়, ছাত্র লীগের বেপড়োয়া কৃর্তি কলাপ দেউলিয়া বিএনিকে রাজনৈতিক ভাবে সম্পদশালী করেছে, মানুষ বিএনপির অপশাষন ভুলে গেছে, পুরনো ক্ষতে তাদের চিন্তা নেই নতুন ক্ষত নিবারণে বিকল্প খোঁজে নিবে আর এই ক্ষেত্রে রাজাকার সাথে থাকলেও সাধারন মানউষ ভোট দিতে ভাববে না।
মুর্খ, গরীব, শ্রমিক, খেটে খাওয়া মানুষের বিশ্লেষন অতি নগন্য। এরা পেটের ক্ষুধা নিয়ে কে রাজাকার আর কে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল ভাববার অবকাশ পায় না। এরা জ্বলন্ত উনুন থেকে আগুনের চুলায় ঝাপ দিতেও চিন্তা করে না, ভাবে ঐখানেই বুঝি শান্তি।
আমি জানি বাংলাদেশের মাটিতে রাজাকারের বিচার হবে, জামাতও রাজনীতি করবে, এরশাদের দলও রাজনীতি করবে। এই দুইটি দল নিয়ে টানা হেচড়াও চলবে। কেউ মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে বিক্রি করবে, কেউ ধর্মকে ব্যবহার করবে। সাধারন মানুষের চিন্তা ভাবনা এদের মনে দাগ কাটবে না। এরা পালাবদল করে ক্ষমতার স্বাদ নিবে, ধনীরা আরো সম্পদশালী হবে, সন্ত্রাসী আরো বীরদর্পে সন্ত্রাসী কাজ করবে, আরো অনেক ফাঁসির আসামী রাষ্টপতির বিশেষ ক্ষমতায় মুক্তি পাবে। রাজনৈতিক বিবেচনায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী মামলা থেকে মুক্তি পেয়ে আবার দিবালোকে মানুষ খুন করবে। টেন্ডারবাজী নিয়ে বন্দুক যুদ্ধ হবে, নিরীহ বাবা-মার সন্তান লাশ হয়ে রাস্তায় পরে থাকবে। বিশ্বজিতের মত আরো কত বিশ্বজিত চাপাতির কোপ খাবে। পরিবর্তনের লক্ষ্যন ক্ষীণ।
অনেকে হয়তো আমাকে নিরাশাবাদীদের দলের ফালানোর চেষ্টা করবেন, আশাবাদী হতে পারলে কী যে খুশী হতাম, বুঝাতে পারবো না। স্বাধীন দেশে জন্মেছি, এই দেশটাকে অনেক ভালবাসি, কিন্তু যখন এইসব দেখি তখন আশাহত হই, বিমর্ষ হই, মন বিক্ষুদ্ধ হয়। স্বপ্ন ভেঙ্গেচুরে চুরমার হয়ে যায়। এর থেকে মুক্তির কি কোন পথ নেই?? আছে, আমাদের ঘুরে দাড়াতে হবে। আবেগ বা ধর্মের রাজনীতি প্রতিহত করতে হবে। বাস্তবতা নিয়ে ভাবতে হবে।
আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে, ক্ষুদ্র ভাবনায় ক্ষুদ্র চিন্তায় কিছু জিনিস এসেছে, এই গুলো করতে পারলে কিছুটা পরিবর্তন শুরু হবে বলে বিশ্বাস:
১। মার্কা নয় (নৌকা/ধানের শীষ) মানুষ দেখে, চরিত্র দেখে, অভ্যাস দেখে, বংশ দেখে, শিক্ষা এবং উপার্জনের উৎস দেখে ভোট দিতে হবে, এবং গরীব মানুষকে ভোটদানে উৎসাহিত করতে হবে। এতে যদি কোন দল সংখ্যা গড়িষ্ঠতা না পায় কিচ্ছু যায় আসে না, কোয়ালিশন সরকার হবে, দলীয় প্রভাব কমবে বলেই বিশ্বাস।
২। শিক্ষক এবং ছাত্রদের রাজনীতি থেকে দূরে পাঠাতে হবে।
৩। একটি সর্বলীয় কমিটি করে সঠিক ইতিহাস রচনা করতে হবে।
৪। সর্বজন বিদিত, সৎ ও প্রজ্ঞাবান নেতাদের মন্ত্রী পরিষদে স্থান দিতে হবে।
৫। আদালত, আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, নির্বাচন কমিশন, দুদক, সেনা বাহিনী, বিজিবি, বিশ্ববিদ্যালয়সহ শায়াত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান গুলোতে সর্বোদলীয় কমিটি করে, নিরপেক্ষ লোকদের বসাতে হবে। রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত কাউকেই নিয়োগ দেয়া যাবে না।
৬। স্থানীয় নির্বাচনেও ভালো মানুষ নির্বাচন করতে হবে। একটা শিক্ষাগত যোগ্যতা পরিমাপক হিসেবে চালু করতে হবে।
৭। সংবিধান থেকে ফ্লর ক্রসিং আইন উঠিয়ে দিতে হবে, বাক স্বাধীনতা দিতে হবে।
৮। এক ব্যক্তি একাধারে একটি দলের ১০বছরের বেশী একনাগারে প্রধান থাকতে পারবে না। এই দশ বছরের মধ্যে একবার বিনাপ্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হতে পারবেব।
৯। এক ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধান মন্ত্রী বা অন্য যে কোন মন্ত্রী এবং রাষ্টপতি হতে পারবে না।
১০। সকল প্রকার টেন্ডার অনলাইন ভিত্তিক করতে হবে এবং সকল দলের এমি দের নিয়ে সর্বদলীয় কমিটির মাধ্যমে টেন্ডার যাচাই-বাচাই করে কাজ দিতে হবে। এবং যারা টেন্ডারে অংশ গ্রহণ করবে সবার তথ্য কাজ দেয়ার পর অনলাইনে প্রকাশ করতে হবে।
১১। দুই দলের মধ্যকার দূরত্ব কমাতে হবে। সংসদে এবং সংসদের বাইরে খোলামেলা আলোচনায় বসতে হবে। ব্যক্তিগত আক্রমণ এবং কুৎসা বন্ধ করতে হবে, এবং কেউ করলে তার পদ ও পদবী বাতিল করতে হবে।
১২। দলের কোন পর্যায়ে এক লোক ১০বছরের বেশি নেতৃত্বে থাকতে পারবে না। এবং নেতা হবার জন্য একটা নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারন করতে হবে।
১৩। শেখ মুজিবুর রহমান এবং জি্যাউর রহমান উভয়কেই প্রাপ্ত সম্মান দিতে হবে।
১৪। দলীয় কর্মকান্ডের সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তিকে প্রধান বিচারক, জুডিশিয়াল বিচারক, হাইকোর্টের বিচারক নিয়োগ থেকে বিরত থাকতে হবে।
১৫। আইণ শৃঙ্খলা বাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে আরো বেশী সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, মেধার বিবেচনায় নির্বাচন করতে হবে। পরীক্ষা অনলাইনে নিতে হবে, কোন মৌখিক পরীক্ষা থাকবে না।
১৬। ধর্ম এবং স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে হবে। রাজনীতি হবে দলের আদর্শ এবং নীতির ভিত্তিতে, দলের মেনিফেস্টো অনুযায়ী। ধর্ম, স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধ সার্বজনীন, সার্বজনীন বিষয় নিয়ে নির্বাচন করা যাবে না।
১৭। একটি সর্বগ্রহনযোগ্য নির্বাচনকালীন সরকার পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই ক্ষেত্রে পারস্পারিক বিশ্বাস এবং আস্থা অর্জন জরুরী।
১৭। সর্বোপরী অবৈধ অস্রধারীদের দেখামাত্র গুলি করে মারা বিধান রাখতে হবে।
জানিনা সবাই আমার সাথে একমত হবেন কিনা, তবে আমার মনে হয় এই গুলো করতে পারলে পরিবর্তন শুরু হবে।
রাজাকারের বিচার হউক, সকলে মিলে রাজাকারের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াই সম্পূর্ণ দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে থেকে। তাহলেই মানুষ একত্রিত হবে। যেই সব রাজাকারেরা নির্বাচনে বৈতরী পাড় হয় তারা জনতার ভোটে পাড় হয়েছে এটা মাথায় রাখতে হবে। আমরা যে যাই বলি জনতার রায়কেতো উপেক্ষা করতে পারি না। উপেক্ষা করলে যে সংবিধান লঙ্খনের শামিল হয়ে যাবে। যেটা রাষ্টদ্রোহিতার পর্যায়ে পড়বে।
সকলকে ধন্যবাদ।
২| ২৮ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:১৪
যোগী বলেছেন:
রাজনৈতিক দলগুলাই বা কি করবে, রাজাকারদের হাতে আছে একটা মোক্ষম অস্ত্র, আর সেটা হল ধর্ম। যেটা আমাদের দেশের অশিক্ষিত মানুষদের ভয় দেখানোর জন্য বা কন্ট্রল করার জন্য খুবই ইফেক্টিভ।
৩| ২৮ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৫
ছাসা ডোনার বলেছেন: খুব সুন্দর লেখা।এই অশিক্ষিত রাজনীতির চেলারা পড়ে শিক্ষা নে। তোদের অনেক কিছুই জানা দরকার।আসলে ভাই যত দিন না পার্টির মধ্যে বাকস্বাধীনতা না থাকবে, ঐ সব পার্টির লোকজনের কাছ থেকে আমাদের দেশের জন গন ভালো কোন কিছু আশা করতে পারবে না। যেকোন দলের নেতা-নেত্রীরা যখন নিজের দলের লোকজনের বিচার করবে তখনই হবে আমাদের স্বপনের স্বাধীনতা। লেখার জন্য ধন্যবাদ।
৪| ৩০ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ১:০৬
সদালাপী। বলেছেন: যারা পড়েছেন এবং মন্তব্য করেছেন সবাইকে ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:০৬
মুদ্দাকির বলেছেন: ভালো ++