![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম। জাপানে গবেষনায় আছি। জাপানে আমার চাকরী গবেষনা সবই জাপানী উন্নত প্রযুক্তি উন্নয়নশীল দেশের সাধারণ মানুষের কাছে সুলভে কিভাবে পৌঁছে দেয়া যায় তাই নিয়ে। এ কাজ করতে করতে দেখেছি আমার দেশের অনেক অনেক ক্ষেত্রে অনেক কাজ বাকী রয়ে গেছে এবং আমার দেশের এই গরীব মানুষগুলির ট্যাক্সের পয়সায় আমি পড়াশোনা করে এ পর্যায়ে এসেছি। তাই, আমি জানি এই দেশের প্রতি, এই মানুষগুলির প্রতি “আমার অনেক ঋণ আছে”। তারই একটা ধাপ এই ব্লগে লেখা।
"খুনের মামলা তামাদি হয়না" - আমাদের বিচারবিভাগের প্রচলিত এই নিয়মটির প্রতি নতুন করে শ্রদ্ধা জন্মালো।
কারন, জানতে পারলাম "Statute of Limitation" আইনের মাত্রায় জাপানে ২০০৫ সালে এই সময়কাল ১৫ থেকে ২৫ বছর এ উন্নীত হয়েছে মাত্র।
---এই বিশেষ ছাড়ের যুক্তি কি ছিল বা আছে?
---যুক্তিঃ "১৫ বছর পর একজন ভিকটিমের পরিবার এই প্রবল শোক ভুলে যায় এবং সম্যক প্রমানাদিও বিলুপ্ত হয়ে যায়।"
এই আইনের প্রনেতারা কেউ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের শহীদ আজাদের মা'র কথা শুনেনি, যিনি ফাঁসীর আগে ছেলেকে দেখতে গিয়ে ছেলের মুখে শুনেছিলেন " মা, ওরা অনেক মারে,-, কিন্তু মারের কষ্টের চেয়েও বড় কষ্ট অনেক দিন ভাত খাইনা"।
মা পরদিন সেই ভাত নিয়ে গিয়েও ছেলেকে খাওয়াতে পারেননি - ছেলের ফাঁসী হয়ে গেছে , ৩০ শে অগাস্ট, ১৯৭১।
১৯৮৫ সাল পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন শহীদ আজাদের মা। ১৪ বছর পর ঠিক ৩০ আগস্টেই মারা যান তিনি।
পুরো ১৪ বছর ভাত মুখে তুলেন নি। কেবল একবেলা রুটি খেয়ে থেকেছেন। কারণ তার একমাত্র ছেলে আজাদ ভাত চেয়েও খেতে পারেনি সেদিন ।
১৪বছর তিনি কোন বিছানায় শোন নি।
শানের মেঝেতে শুয়েছেন- শীত গ্রীষ্ম কোন কিছুতেই তিনি পাল্টান নি তার এই পাষাণ শয্যা। কারণ তার ছেলে রমনা থানার ড্রাম ফ্যাক্টরি সংলগ্ন এম.পি হোস্টেলের মিলিটারি টর্চার সেলে বিছানা পায় নি।
* * আমাদের ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে সকল গুনাহর মাফ আল্লাহ পাক করবেন যদি তিনি ইচ্ছা করেন,কিন্তু খুনের কোন মাফ নেই – এই মাফ করার অধিকার শুধু খুনের শিকার হওয়া ব্যাক্তির।
- যা হোক, খোদ জাপানে'র ঘটনাগুলো তো জাপানের আইনপ্রণেতারা জানেন!
** ২৪ বছরের মেয়েকে মিচীকে উপর্যুপোরী ছুড়িকাঘাত করে বরফ চাপা দিয়ে খুনী ফেরার হয়ে গেছে।
১৫ বছর পাড় হলো- মা তাঁর মেয়ের ছবি, জামা, পছন্দের খাবার নিয়ে বসে আছেন- আর ওদিকে পত্রিকায় খবর আসে " ১৫ বছর পার হয়ে যাওয়া উক্ত খুনের মামলার আসামী এখন আইনের বাইরে"।
** একজন স্কুল শিক্ষিকা হঠাৎ গুম হয়ে যান ১৯৭৮ সালে- ২৬ বছর পর যখন স্কুলের ৭০ বছর বয়সী গার্ডকে শহরের কর্তৃপক্ষ বাধ্য করলেন তার বাড়ী ছাড়তে শহরের রাস্তা বাড়ানোর জন্য তখন সে স্বীকার করলো শিক্ষিকাকে সে খুন করে তার বাড়ীর লিভিং রুমের নীচের গর্তে পুতে রেখেছিল।
জাপান টিভি তার সন্মান (!) হানীর ভয়ে তার মুখ অস্পষ্ট করে ডমুমেন্টারী দেখালো আইনের বাইরে মুক্ত জীবনে গার্ড শিনিয়া ওয়াদা তার শখের কুকুর নিয়ে আহ্লাদিত জীবন যাপন করছে- রীতিমত চাকরী শেষে রিটায়ারমেন্ট সুবিধা ও পেনশনভোগী শান্তিময় জীবন!
শিক্ষিকার ছোট ভাই ক্ষোভে দুঃখে ফেটে পড়লেন। কিন্তু তাতে জাপান সরকারের আর কিছুই করার নেই।
২০০৪ পর্যন্ত এমন অসংখ্য মামলা তামাদি হয়ে গেছে জাপানে সম্রাট মেইজী’র ১৯ শতকে ফ্রান্স ও পরবর্তীতে জার্মানীর অনূসরনে আরোপিত এই আইনে।
"উন্নত দেশের উন্নত আইন বলে কথা!"
২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৩১
নুরএমডিচৌধূরী বলেছেন: ভাল লিখেছেন
৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৩২
আহসানের ব্লগ বলেছেন: মানে কী? :O
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:২১
কলাবাগান১ বলেছেন: "পুরো ১৪ বছর ভাত মুখে তুলেন নি। কেবল একবেলা রুটি খেয়ে থেকেছেন। কারণ তার একমাত্র ছেলে আজাদ ভাত চেয়েও খেতে পারেনি সেদিন ।
১৪বছর তিনি কোন বিছানায় শোন নি। "
এত ত্যাগের পর অর্জিত স্বাধীনতা, কিন্তু আমরা তার মর্যাদা টা রাখতে পারছি না