নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক

Never lose hope...., Never Stop Expedition....

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক

ঘুরে বেড়ানো আমার একটা ভয়ংকর মাত্রার নেশা। আর আমার এই নেশার যোগানদাতা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সব দুঃসাহসিক অভিযাত্রিকেরা। ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ডের বিয়ার গ্রাইলস তাদের লিডার। এই মানুষটার জন্যই আমার মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে। ঘোরার নেশা আমাকে গ্রাস করে বসেছে। একা পথচলা আমার খুব পছন্দ। একা চলায় কষ্ট আছে সত্য, কিন্তু তা আনন্দের কাছে চাপা পড়ে যায়।The one who follows the crowd will usually get no further than the crowd. The one who walks alone is likely to find himself in places no one has ever been.

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

রণাঙ্গনের প্রচারপত্রঃ বাংলাদেশের জনগণের উদ্দেশ্যে

২৭ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৮



ক্ষমতা, টাকা পয়সা নিজস্ব স্বার্থ, অন্যান্য লোভ বিসর্জন দিয়ে সংগ্রামে অংশ গ্রহণ করুন। নিজেদের উপর, মুক্তিযোদ্ধাদের উপর বিশ্বাস রাখুন। যার যা আছে, দেহে, মনে, বুদ্ধিতে, শক্তিতে, সম্পদে, তাই নিয়েই ঝাঁপিয়ে পড়ুন এই যুদ্ধে। অনেক অনেক দুঃখ কষ্ট সহ্য করেছি, আরও অনেক করতে হবে। আরও কঠোর পরীক্ষা আছে আমাদের সামনে। কিন্তু শোক নয়, ভয় নয়, দলাদলি নয়, বিভ্রান্তি নয়, অলসতা নয়-এগিয়ে আসুন, শত্রুদের উপর আঘাত করুন, বাংলাদেশ স্বাধীন করুন।

-লেঃ কর্ণেল খালেদ মোসাররফ, কে-ফোর্স কমান্ডার





বাংলাদেশের জনগণের উদ্দেশ্যে



জনগণই মুক্তিযোদ্ধাদের চলার, বাঁচার, অগ্রসর হওয়ার, জয়ী হওয়ার একমাত্র অবলম্বন। সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালী আজ যে মুক্তিযুদ্ধে লিপ্ত তা সম্পূর্ণভাবে জনগণেরই যুদ্ধ। জনতার প্রতিটি অংশ, সমস্ত শক্তি এতে একত্রিত। গণবাহিনীর চরিত্র অনুযায়ী প্রত্যেক বাঙ্গালী আজ যুদ্ধরত-কেউ সশস্ত্র, কেউ নিরস্ত্র। প্রত্যেকের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া সম্ভব নয়, প্রয়োজনও নাই। তবে কেউই অতিরিক্ত নয়, প্রত্যেকের নিজস্ব ভূমিকা আছে এই যুদ্ধে, এবং সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে। কেউ যেন হুকুমের অপেক্ষায় বসে না থাকে। কেউ যেন না ভাবে যে হাতিয়ার ছাড়া বা সামরিক ট্রেনিং ছাড়া এই যুদ্ধে অংশ নেওয়া সম্ভব নয়



আমরা জানি, সব বাঙ্গালীই এই যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করার জন্য ইচ্ছুক। এই যুদ্ধকে অনেকভাবেই এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। এই নির্দ্দেশাবলী বিশেষ করে বাংলাদেশের সেই সংগ্রামরত নিরস্ত্র জনগণের উদ্দেশ্যে লিখিত তারা যাতে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে অংশ গ্রহণ করতে পারেন স্বাধীনতার এই যুদ্ধে।



মুক্তিযোদ্ধা ও আপনিঃ

* যে যেখানে আছেন সেই এলাকার গেরিলা ইউনিট বা মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

* মুক্তিযোদ্ধাদের থাকা, খাওয়া, লুকিয়ে রাখার ব্যবস্থা করে দিন।

* বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে দিন।

* মুক্তিযোদ্ধাদের কোন খবর (কোথায় আছে, ওদের সাথে কি অস্ত্র, কয়জন আছে ইত্যাদি যেন শত্রুদের হাতে না যায়।

* শত্রুদের সমস্ত খবর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে এনে দিন।

* সম্ভব হলে, শত্রুদের ভুল নির্দ্দেশ দিন, কিংবা মুক্তিযোদ্ধাদের ফাঁদে শত্রুদের এনে দিন।

* দালাল এবং বিশ্বাসঘাতকদের খতম করুন।

* লোকজনদের মনোবল দৃঢ় করতে প্রচার কাজ চালান।

* আজে বাজে কথাবার্ত্তা বলবেন না।

* প্রতি পদক্ষেপে শত্রুদের সাথে অসহযোগিতা করুন।

এই সংগ্রামের বিভিন্ন দিক আছেঃ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং মিলিটারী। এই তিন ফ্রন্টেই আমাদের শত্রুদের প্রতিহত করতে হবে।



আমরা যদি ওদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জ্জনের পথ বন্ধ করে দেই, এবং ওদের বাজার নষ্ট করে দেই, তবে বাংলাদেশের প্রয়োজনীয়তা ওদের কাছে শেষ হয়ে যাবে, আর বাংলাদেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হবে। তাই-

* ওদের জিনিষপত্র কিনবেন না

* ওদের কোন জিনিষ ব্যবহার করবেন না

* কর খাজনা দেবেন না

ওদের তহবিল যেন কোন ভাবেই বৃদ্ধি না হয়। আমাদের পাট, চা ইত্যাদি বা অন্যান্য উৎপাদিত জিনিষ যা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জ্জন করে সেগুলি যেন শত্রুদের হাতে না যায়। ওরা বৈদেশিক মুদ্রা পেলে অটল হয়ে বসে থাকতে পারবে এবং আরও অস্ত্রশস্ত্র কিনে আমাদেরই বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে। তাই-

* কলকারখানা বন্ধ করে দিন; অচল করে দিন।

* পাট এবং চায়ের মিল-গোডাউনে আগুন দিন।

* উৎপাদিত জিনিষ রপ্তানী করা অসম্ভব করে দিন।

* যে সব বৃহৎ শিল্পগুলি দ্বারা বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জ্জন করা সম্ভব সেইগুলি নষ্ট করে দিন। (কিন্তু যেসব ছোট-খাট কুটিরশিল্প বা যেগুলি আমাদের নিত্য-প্রয়োজনীয় জিনিষ উৎপাদন করে সেগুলির ক্ষতি করবেন না।)

* যাদের কাছে প্রয়োজনের অধিক জিনিষপত্র, খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদি আছে সেগুলি, যাদের কিছুই নেই তাদের কাছে বিতরণ করে দিন। বন্যায় কিংবা পাক-সেনাদের অত্যাচারে অনেকেই আজ সব কিছু হারিয়েছে। আপনাদের দায়িত্ব যারা ক্ষুধার্ত্ত তাদের খাবার ব্যবস্থা করে দেওয়া, যারা অসুস্থ তাদের সেবা করা, যারা আশ্রয়হীন তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়া এইসব বাড়তি জিনিষপত্র বিলি করে দেওয়াতে মুক্তিযুদ্ধে বিরাট অবদান হিসাবে ধরা হবে।

* প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র লুকিয়ে রেখে, জমিয়ে রেখে, দাম বাড়িয়ে, কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করবেন না।



মিলিটারীঃ

শত্রুদের যাতায়াত ব্যবস্থা, যোগাযোগ ব্যবস্থা নষ্ট করে দিন। রাস্তাঘাট কেটে দিন।

* যারা গাড়ী চালান (বিশেষ করে যেগুলি শত্রুসেনা বা তাদের রসদ বহন করতে পারে) সেইগুলি সহজেই নষ্ট করে দিতে পারেন, (পেট্রোলে চিনি ঢেলে দিন, পার্টস উধাও করে দিন, মেসিন বিকল করে দিন।)

* যারা ষ্টিমার লঞ্চ চালান তারা এইসব ডুবিয়ে দিতে পারেন।

* কুড়াল দিয়ে কেটে ফেলুন।

* ওগুলো নিয়ে এমন জায়গায় রেখে দিন যেন শত্রুরা না পেতে পারে।

* যারা বিদ্যুত, গ্যাস, টেলিফোন, টেলিগ্রাফে কাজ করেন, তারা কয়েকটা প্রয়োজনীয় জিনিষ নষ্ট করে দিয়ে সমস্তটা অকেজো করে দিতে পারেন।

এইভাবে ওদের চলাচল ব্যবস্থা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে দিয়ে, একে অন্যের থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারলে, ওরা কোণঠাসা হয়ে যাবে ; বিশেষ কতগুলি জায়গায় তারা বন্ধ হয়ে যাবে ; ওদের শক্তি বৃদ্ধির পথ, পালাবার পথ, খাদ্য ও যুদ্ধের রসদ যোগাবার পথ বন্ধ হয়ে যাবে। শত্রুদের যাতায়াত ব্যাহত হলে ওরা আমাদের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে অত্যাচার করতে পারবে না। ওরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে পড়বে এইসব মেরামতের কাজে ওদের ব্যস্ত রাখতে পারলে, বিরক্ত করতে পারলে, ওদের মধ্যে অসন্তোষ বৃদ্ধি পাবে, এবং আমরা আরও সুসংগঠিত করে ওদের আরও ক্ষতি করতে পারব।



ক্ষমতা, টাকা পয়সা নিজস্ব স্বার্থ, অন্যান্য লোভ বিসর্জন দিয়ে সংগ্রামে অংশ গ্রহণ করুন। নিজেদের উপর, মুক্তিযোদ্ধাদের উপর বিশ্বাস রাখুন। যার যা আছে, দেহে, মনে, বুদ্ধিতে, শক্তিতে, সম্পদে, তাই নিয়েই ঝাঁপিয়ে পড়ুন এই যুদ্ধে। অনেক অনেক দুঃখ কষ্ট সহ্য করেছি, আরও অনেক করতে হবে। আরও কঠোর পরীক্ষা আছে আমাদের সামনে। কিন্তু শোক নয়, ভয় নয়, দলাদলি নয়, বিভ্রান্তি নয়, অলসতা নয়-এগিয়ে আসুন, শত্রুদের উপর আঘাত করুন, বাংলাদেশ স্বাধীন করুন।

-লেঃ কর্ণেল খালেদ মোসাররফ



১৯৭১: একটি সত্য গল্প 1971: A True Story

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৫

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: সুন্দর তথ্যবহুল পোষ্ট
অনেক ভাললাগা

২৭ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৩৭

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক বলেছেন: ধন্যবাদ পরিবেশ বন্ধু

২| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:১৭

ফুরব বলেছেন: দুঃভাগ্য আমাদের এই সব মেধাবী লোকদের আমরা ক্ষমতার হানা হানিতে হারিয়েছি।। বাঙ্গালী মেধার দিক থেকে আজ নিঃস্ব এক জাতিতে পরিনত হয়েছে। বিপরিতে আবুলদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাইতেছে।।

২৮ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:২২

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক বলেছেন: Oh the man! Oh the time!

৩| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪২

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: মহিমান্বিত নয়মাসের এক গুরুত্বপূর্ণ স্মারক।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:৩৯

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক বলেছেন: একমত হলাম......

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.