নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Be Brave,Be Original,Be Anon

নিয়াজ ইরফান

Be Brave,Be Original,Be Anon

নিয়াজ ইরফান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি গর্বিত,আমি মধ্যবিত্ত

১৬ ই মে, ২০১৭ রাত ১১:২৫

আর বাকি দশ জনের মতো টাকা খরচ করার পাত্র নয় আমি । পকেটে যে কয়টা টাকা থাকে তা দিয়েই হিসেব করে চলতে হয় । একটা টাকা এদিক-ওদিক হলেই কষ্ট লাগে । তাই বলে অনেকে কিপ্টুস বলে । তবে তাতে আমার কিছু যায় আসে না ।

অন্য দশটা ছেলের মতো পোশাক-পরিচ্ছদে ফিটফাট করেও থাকতে পারি না । বলতে দ্বিধা নেই,আমার কয়েক জোড়া শার্ট আর দুইটা প্যান্ট আছে মাত্র । এগুলো পরিধান করেই তিনটা বছর কাটিয়ে দিয়েছি ইতিমধ্যে । এগুলোও পেতাম না,যদি না ঈদ আসত । প্রতি ঈদে খুব শখ করেই দুটো শার্ট-প্যান্ট কিনি । তা নিয়েই সারা বছর চলি ।
বাদ বাকি বন্ধুরা যখন বিভিন্ন সময় এটা-ওটা কিনে,তখন আমারও ইচ্ছে হয় কেনার । ইচ্ছে হয় ওদের মতন পরিপাটি করে চলার । কিন্তু তা কখনো হয়ে উঠে না । ইচ্ছে কখনো পূরণ হয় না । নিজের পকেটে যখন হাত রাখি,তখন বুঝতে পারি এসব আমার জন্যে না ।
আমার বাবার যে টাকা নেই এমন না । আমি বললে কিনে দিবেন না এমনও না । তবুও বাবার কাছে চাইতে লজ্জা হয় এই ভেবে যে,এত বড় হয়েছি তাও নিজের যোগ্যতা দিয়ে কোন টাকা কামাইতে পারি না । আল্লাহ দুটো হাত দেওয়া সত্ত্বেও সে হাত দিয়ে কোন কামাই আসে না । আর এ নিয়ে তাই দিন দুপুরে মায়ের বকুনি খেতে হয় । মাঝেমাঝে আপুরাও এসে তাতে যোগদান করে । আমি কান পেতে শুনি । আর কিছু সময় বিরক্ত হয়ে লেপ মুড়িয়ে শুয়ে পড়ি । ওদের বকুনি তারপরও হয়তো চলতে থাকে । কিন্তু আমি শুনতে পাই না । আমি হতাশায় জর্জরিত হয়ে ঘুমায় । ঘুম থেকে উঠে দেখি পরিস্থিতি শান্ত । ভাবি এই বুঝি,ভূমিকম্প শেষ হলো ।

মায়ের বকুনিতে বিরক্ত হয়ে একবার খুব শখ করেই টিউশনি করিয়েছিলাম । ভেবেছিলাম,টিউশনি করিয়ে যে কয়টা টাকা আসে তা দিয়ে আমার প্রতি মাসের হাত খরচটা হয়ে যাবে । টিউশনি করার আগে টিউশন ফি ঠিক করে নিইনি । যার দরুণ প্রতিদিন দুই ঘন্টা করে পড়িয়েও মাস শেষে ৮০০ টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল । সে টাকা বন্ধুদের থেকে নেওয়া ধার শোধ করার আগেই শেষ হয়েছে । গাধার মতো খেঁটেও যখন এত কম টাকা পেয়েছিলাম,তখন রাগে-ক্ষোভে টিউশনি ছেড়ে দিয়েছিলাম । কথায় আছে দাত থাকতে দাতের মর্যাদা কেউ বুঝে না । আমারও ক্ষেত্রেও তাই । টিউশনি ছাড়ার পর বুঝতে পারলাম,ঐ ৮০০ টাকাও কোন অংশে কম ছিল না । পরে এসে কেবল আফসোস্ আর হা-হুতাশ করা ছাড়া আর কিছুই ছিল না করার ।

বন্ধুদের কাছে আমি মানুষ হিসেবে কেমন আজও বোধগম্য না আমার । সারাক্ষণ দুষ্টুমি করতে গিয়ে মুখ দিয়ে যখন যা আসে তাই বলি । আমার জন্যে তাই তাদের ঘৃণা জন্মানোটায় স্বাভাবিক । তাও হয়তো কেউ কিছু বলে না । আমিও থেমে থাকি না । বন্ধুদের কাছে পেলেই দুষ্টুমি,আর সুযোগ পেলেই বলি ট্রিট দে । তারা দেয়,আমি ইচ্ছে মতো খায় । এটা যদিও অভাবের খাওয়া না । সবার সাথে খেতে ভালো লাগে বলেই এমন করি । ছোট বোনটাকে বলে রাখি মাসের অমুখ তারিখে মোবাইলে টাকা দিস । মাঝে মাঝে মেয়ে বন্ধুরাও বাদ যায় না ।

মানুষ বলে,সেই বেশি হাসে যার মনে অনেক কষ্ট । আমি একথা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি । সবসময় হাসি-খুশি থাকি বলে সবাই ভাবে আমি খুব সুখী মানুষ । তবে সে ধারণা ভুল । সুখের মাঝেও যে দুঃখ লুকিয়ে থাকে । তাও আমি হাসি । কারণ হাসতেই আমার ভালো লাগে । এখন অনেকেই হয়তো ভাবছে,আমি খুব অসুখী একজন মানুষ । কিন্তু সে ধারণা ভুল । আমি মোটেও অসুখী নয় । আমি সুখী মানুষ । তবে এ এক ভিন্ন রকমের সুখী ।

এই সুখ দিনশেষে বাবা-মা'য়ের আদুরে ডাকের,এই সুখ বড় ভাই-বোন গুলোর পরম স্নেহের,এই সুখ ছোট বোনের ভাইয়া ডাকের,এই সুখ ভাইঝির সাথে জমিয়ে খেলার,এই সুখ প্রেমিকার ভালবাসার,এই সুখ বন্ধুত্বের ।

অনেকেই বলতে পারেন,এসব এখানে বলে বা লিখে কি হবে ? আমার মনেও একি প্রশ্ন ! তাও লিখে রাখলাম,লিখার জায়গা আছে বলে । অন্তত দুয়েকজনে তো বুঝুক আমাকে ।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মে, ২০১৭ রাত ১১:৩২

চাঁদগাজী বলেছেন:


বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত পরিবারের সংখ্যা কি পরিমাণ?

১৭ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৩

নিয়াজ ইরফান বলেছেন: সেটা তো জরিপ করে দেখতে হবে ।

২| ১৬ ই মে, ২০১৭ রাত ১১:৫৬

আলোকিত চিন্তা বলেছেন: প্রকৃত সুখ কীসে?

১৭ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৪

নিয়াজ ইরফান বলেছেন: ভালবাসায় ।

৩| ১৭ ই মে, ২০১৭ রাত ১২:৫১

জল্লু ঘোড়া বলেছেন: কি কমু বুজতাছি না।

১৭ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৪

নিয়াজ ইরফান বলেছেন: হুম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.