নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি লেখার জন্য বাঁচতে চাই শত বছর

নিগার তানিয়া

আমি সর্বপ্রথমে একজন মা, তারপর একজন প্রেমিকা আর একজন লেখক

নিগার তানিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাহাড়ি মেয়ে ও বাঙ্গালি যুবকের ধারাবাহিক প্রেমের গল্প

২১ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:০৬

#পিয়াসী_মন (তৃতীয় পর্ব)
----------তানিয়া নিগার
আজ সকাল থেকে পিয়াসীর মন বেশ ফুরফুরে। বোন মহিয়সীকে নিয়ে হর্টিকালচারাল পার্ক ঘুরতে বের হয়েছে ।জায়গাটা অনেক পছন্দের তার।মহিয়সীও বেশ হাসিখুশি একটি মেয়ে। দিদিকে সে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসে। সারাক্ষণ দিদির কাছে এটা ওটা প্রশ্ন করে কিন্তু দিদি একটুও বিরক্ত হয় না।
ওরা পার্কের যখন ঝুলন্ত ব্রীজের ঠিক মাঝখানে তখন মহিয়সী বোনকে বললো, চলো দিদি আইসক্রিম খাই। পিয়াসী মাথা নেড়ে সায় দিয়ে বললো, চল। দুজনে ঘুরে হাঁটতে যাবে ঠিক তখনই ব্রীজটা প্রচণ্ড ভাবে দুলে উঠলো ।মহিয়সী টাল সামলাতে না পেরে পিয়াসীর গায়ের উপর এসে পড়ল॥আর পিয়াসী আচমকা এ ধাক্কায় হতবিহ্বল হয়ে পড়তে পড়তে ব্রীজের রশি ধরে নিজেকে নিচে পড়া থেকে বাঁচালো। ঘটনার আকস্মিকতায় যখন দুজনেই বিভোর তখন হঠাত্ অট্টহাসির শব্দে সম্বিত ফিরে এলো তাদের।দেখলো, ব্রীজের একপাশে কতগুলো চাকমা ছেলে ওদের দিকে তাকিয়ে হাসছে আর একে অপরকে বলছে, দেখ, মালদুটো একদম সলিড। নদীর পানিতে পড়লে তো এদের সাথে সাঁতার কাটা যেত।আরেকজন বললো, এত জোরে ঝাঁকি দিলাম তারপরও শালীরা পড়ল না , চল আমরাই গিয়ে নিয়ে আসি।এসব বলে ছেলেগুলো ওদের দিকে এগুতে শুরু করলো। মহিয়সী ভয় পেয়ে পিয়াসীকে জড়িয়ে ধরল।পিয়াসী এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখল সাহায্য করার মতো কাউকে পায় কিনা।এখন সকাল এগারোটার মত বাজে হয়তো। এ সময় পার্কে লোকজন খুব একটা থাকে না। ওরই ভুল।কেন এসময় মহিয়সীকে নিয়ে এখানে এলো? নিজেকে মনে মনে ধিক্কার দিলো পিয়াসী। আকাশের দিকে তাকিয়ে ভগবানের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলো। ছেলেগুলো প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছে।একটা ছেলে মহিয়সীকে হাত বাড়িয়ে ধরতে চাইলো।পিয়াসী ঝটকা মেরে মহিয়সীকে অন্য পাশে সরিয়ে নিয়ে এলো। মুখে কিছু না বলে কটমট করে ছেলেগুলোর দিকে তাকালো।ছেলেগুলো উচ্চস্বরে হেসে উঠলো। এ নির্জন পার্কে এই হাসির শব্দ প্রতিধ্বনিত হয়ে পিয়াসীর কানে ভীষণ ভয়ঙ্কর মনে হলো। দেখলো,এবার সবগুলো ছেলে ওদের দিকে একসাথে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।একজন বললো, এসো মজা করি।মহিয়সী ওর বুকের মধ্যে লুকিয়ে ভয়ে কাঁপছে।পিয়াসীর মনে হঠাত্ এক বুদ্ধি এলো। সন্তর্পণে চুলে লাগানো ওর অতি প্রিয় কাটাটি খুলে নিলো। ছেলেগুলোর সামনে কাটাটা ছুরির মত করে ধরে বললো, এক বা যদি সামনে আসিস তবে এটা ঢুকিয়ে দেবো।দূর হ হারামজাদারা।একা মেয়ে দেখলেই ফূর্তি করতে মন চায়।আয় , এবার ফূর্তি কর। এই কাটা যখন জায়গামতো ঢোকাবো, বাপ বাপ করে কুল পাবিনা।ওর কথা শুনে ছেলেগুলো অনেকটাই কুঁকড়ে গেলো। পিয়াসী দেখলো, তার চিত্কারে আশেপাশের কিছু লোকজনও ছুটে আসছে।ওর সাহস আরো বেড়ে গেলো। এরই মধ্যে মহিয়সীও একটু সহজ হয়েছে।অবস্থা বেগতিক দেখে ছেলেগুলো ওদের কাছে হাতজোড় করে মাফ চাইলো। পিয়াসী বললো, মাফ করতে পারি তবে এক শর্ত।কথা দিতে হবে আর কখনও কোন মেয়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করতে পারবে না। ছেলেগুলো মাথা নেড়ে সায় দিলো। আশেপাশের লোকগুলো এসে পিয়াসীকে জিজ্ঞেস করলো, ছেলেগুলো আপনাদের বিরক্ত করছে তাইনা।ওদের ব্যবস্থা আমরা করছি আপনারা যেতে পারেন। ওরা আমাদের কাছে ওদের ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছে, আপনারা দয়া করে আর কিছু বলবেন না, পিয়াসী সবিনয়ে উত্তর দিল। ছেলেগুলো চলে গেল। সহজ সরল পিয়াসীর অজানা রয়ে গেল এদেরই একটা ছেলের বুকে অপমানে ওর প্রতি ভয়ঙ্কর অন্তরজ্বালা, আক্রোশ আর প্রতিশোধের আগুন জ্বলে উঠেছে। এর ফল কতটা অশুভ হবে পিয়াসীর জন্য।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.