নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি লেখার জন্য বাঁচতে চাই শত বছর

নিগার তানিয়া

আমি সর্বপ্রথমে একজন মা, তারপর একজন প্রেমিকা আর একজন লেখক

নিগার তানিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

বেসামাল শিক্ষাব্যবস্থার বলি আমরা সবাই

২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:০০

#বাংলাদেশের_শিক্ষাব্যবস্থা
ছেলের বয়স যখন তিন তখনই স্কুলে দিলাম। আমার আবার ওর সাথে স্কুলে যেতে হতো নিয়ম করে। ও সন্ধ্যায় পড়তে বসতো। আমাকেও নিয়ম করে ওর সাথে বসতে হতো। মনে হতো এ যেন এক জীবনে দ্বিতীয়বার শিক্ষাযাত্রা। ছেলে এখন চতুর্থ শ্রেণীতে , বলতে পারা যায় আমিও শিক্ষাযাত্রার দ্বিতীয় পর্বে এসে চতুর্থ শ্রেণীতে অধ্যয়নরতা। কেজি শ্রেণীর পর থেকে ছেলের সাথে আর স্কুলে যেতে হয়নি বটে কিন্তু ওর সাথে পড়তে বা ওকে পড়াতে বসতে হয়েছে সবসময়ই।
এবার আসা যাক মেয়ের বিষয়ে।ও এ বছর নার্সারি শ্রেণীতে ভর্তি হলো। শুরু হলো তৃতীয়বারের মতো আমার স্কুলযাত্রা।সময় মতো স্কুলে যাওয়া , স্কুল থেকে ফেরা। প্রাইভেট টিউটর কি পড়াচ্ছেন খোঁজ নেওয়া, এক সাথে স্যারের বাসায় যাওয়া ,আসা। অতঃপর এক সাথে দ্বিতীয় পর্ব ও তৃতীয় পর্বের অধ্যয়নে ওদের সাহায্য এবং একটা রকম নিজের অধ্যয়ন সম্পন্ন করা। ওদের পরীক্ষা হলে মনে হয় আমিই পরীক্ষা দিচ্ছি। রেজাল্টের সময় দুই দিন আগে থেকে আমারও নাওয়া খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। কি অদ্ভুত এই জীবনযাত্রা। একই পথে হেঁটে চলা বারবার। যদিও এখানে একঘেয়েমি নেই আছে ওদের সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নেশা। যা আনন্দ ও শঙ্কার মিশ্রণে তৈরি। আছে প্রশ্ন, ওদের মানুষ করতে পারবো তো?
আমাদের সময় কি অভিভাবকগণ কি পড়াশোনা নিয়ে এতটা সতর্ক ছিলেন? যতটা মনে পড়ে , তাঁরা পড়াশোনার সমস্ত দায়িত্ব নিশ্চিন্তে লজিং টিচারের উপর ন্যস্ত করতেন।বাবা মাদের বিনা ভ্রুক্ষেপেই আমাদের রেজাল্ট ভাল হতো।আর এখন আমাদের বাচ্চাদের পড়াশোনায় একটু খেয়াল না করলেই ফলাফল ১০০% থেকে ৮০%এ নেমে আসে। যা রেঙ্কিং এর হিসেবে অমার্জনীয়। বর্তমানের চতুর্থ শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকের সমতুল্য পড়া আমরা সপ্তম শ্রেণীতেও পড়েছি কিনা সন্দেহ।আর সৃজনশীল পদ্ধতির গুণের কথা নাই বা বললাম।ছোট ছোট কোমলমতি বাচ্চাগুলো বইয়ের হাজারো অক্ষরের সাগরে দিন রাত খাবি খাচ্ছে বলা যায়। সাথে আছে বৈয়াকরণিক হওয়ার নিশ্ছিদ্র প্রচেষ্টা। আর একটাই উদ্দেশ্যে ,মাথায় জায়গা হোক না হোক ঠেসে ঠেসে অক্ষরগুলো ঢুকাতেই হবে। আমরা বাবা মায়েরাও কম কিসে কম্পিউটারের যুগে বাচ্চাদের রোবট বানানোয় ব্যস্ত। না বানিয়েই বা উপায় কি সামনে যে ওদের পাবলিক পরীক্ষায় বসাতে হবে।
মা হিসেবে অনেক সময় অসহায় বোধ করি , বাচ্চাদের শৈশব বয়সের প্রকৃত আনন্দ কাকে বলে , তা ওদের বোঝাতে পারিনি উশৃঙ্খল এই শিক্ষাব্যবস্থার কারণে।উপায়হীন আমিও বাচ্চাদের সাথে বন্দী হয়ে গেছি।ওদের অন্তরের হাহাকার প্রতিধ্বনিত হয় আমার মনেও কিন্তু কিছুই করার নেই ।হায়রে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.