নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিঝুম আখতার

সময় এর মুল্যায়ন করা সবার জন্য জরুরী।শুধুমাত্র পশুদের পক্ষেই আত্মতৃপ্ত জীবনযাপন সম্ভব। মানুষের কাজ লড়াই করে বাঁচা.....................।

নিঝুম আখতার › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিএনপির মরা গাঙে আবার জোয়ার এসেছে।

২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:১৩

সিটি নির্বাচন শেষ হয়েছে কিন্তু তার রেস এখনও রয়ে গেছে।যারা ক্ষমতাসীন দলের সুখ-দুঃখের অংশীদার তাদের এখনও বিশ্লেষন শেষ হয়নি। সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে অংশ নেয়া এবং জয়ী হওয়াতে বি.এন.পি’র নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে প্রান ফিরে এসেছে।আর সরকার দলীয় প্রার্থীর পরাজয়ের মাধ্যমে সরকারেরও লাভ হয়েছে। সরকারের ভুল গুলি কোথায় তা তারা বুঝতে চেষ্টা করছে। রাজনীতিতে বাস্তবসত্য হলো ক্ষমতায় থাকলে ব্যর্থতা চোখে পড়ে না। ক্ষমতা হারানোর পর ব্যর্থতাগুলি একে একে সামনে আসে। সরকার দলীয় প্রার্থীর জয়ী হবার অধিক আত্মবিশ্বাস আর বিরোধীদলীয় প্রার্থীর রাজনীতির ময়দানে ঘুরে দাড়ানোর চ্যালেন্সই তাদের জয়ী হবার প্রধান কারন। হেফাজতের মাধ্যমে সরকার পতনের নগ্ন খেলায় পরাজিত হবার পর বি.এন.পি – জামাত রাজনীতিতে হতাশায় ভুগছিল। সিটি নির্বাচনে জয়ের ফলে সে হতাশা এখন অনেকটা প্রশমিত হয়েছে।তবে সরকারও পরোক্ষভাবে লাভবান কারন সরকার প্রমান করতে পেরেছে দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ, প্রভাবমুক্ত,অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।তাই বিরোধীদল জাতীয় নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নামক বিতর্কিত ও পরিত্যক্ত ব্যবস্থাটি পুনঃপ্রবর্তনের জেদ বজায় রেখে দেশে আর অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা চালাবেন না। প্রোটেস্ট ভোটে নির্বাচনে জেতা এবং গণসমর্থন নিয়ে আন্দোলন সফল করা এক কথা নয়। রাজনীতিতে নির্বাচন হলো জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের পদ্ধতি। নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনীতিবিদদের সফলতা ব্যর্থতা প্রমানিত হয়। রাজনীতিবিদের ভুল ত্রুটি ধরা পরে। দীর্ঘদিন নির্বাচন না হলে উন্নয়ন কর্মকান্ডও স্থবির হয়ে পড়ে। যেমন আমার দোহার পৌরসভায় তের বছর কোন নির্বাচন হয় না।২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত হবার পর একবারই নির্বাচন হয়েছে। বর্তমান চেয়ারম্যান পৌর বি.এন.পি’র সভাপতি আরদুর রহিম মিয়া। তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী নাজমুল হুদার সাথে দ্বন্দ্বের কারনে পৌরসভা বাতিলের বিরুদ্ধে রিট করে পার করে দেয় দশ বছর কিছুদিন আগে দোহার পৌরসভার নির্বাচনী তফশীল ঘোষনা হয় ২৫ শে মে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা ছিল প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রতিক নিয়ে মাঠে ভোটযুদ্ধে অবতীর্নও হয় কিন্তু অদৃশ্য এক রিটের কারনে তিন মাসের জন্য নির্বাচন আবার স্থগিত হয়ে যায়। দোহরের নির্বাচন মুখী জনগনের ধারনা মন্ত্রী পরিবারের দুর্নীতি, ব্যর্থতা, স্বজনপ্রীতি, নেতিবাচক কর্মকান্ড আড়াল করতে বর্তমান মেয়রের সাথে যোগসাজসে নির্বাচন স্থগিত হয়। আরো উল্লেখ্য যে বর্তমান মেয়র এর প্রার্থীতা বাতিল হয় ঘোষিত তফশীল অনুযায়ী। দোহারের আপামর সচেতন জন সাধারনের ধারনা দোহার পৌর নির্বাচন হলে সরকারের ভুলত্রুটি ধরা পড়ত আর আগামী জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে সেটা সংশোধনের সুযোগ পাওয়া যেত। প্রতিটি সরকারই ক্ষমতায় থাকতে ভুল করে কিন্তু ক্ষমতার মোহে সংশোধনের সময় পায় না। সরকার তাদের গত সাড়ে চার বছরের ভুলত্রুটিগুলোর কিছুই সংশোধন করার চেষ্টা করেনি। ১৫ তারিখের নির্বাচনের পর বিভিন্ন সংবাদ পত্রের সম্পাদকীয়, সংবাদ বিশ্লেষন, কলাম লেখক সকলেই হেফাজত ইস্যুকে সামনে এনেছে এবং ভোটের রাজনীতিতে হেফজত যে একটা ফ্যাক্টর সেটাই বুঝানোর চেষ্টা করছে। আর সরকার দলীয় প্রার্থীর পরাজয়ের জন্য যে হেফাজত দায়ী সেটা প্রমানের মাধ্যমে সরকারের অন্যান্য ভুলত্রুটি গুলি আড়াল করার চেষ্টা চলছে বলে আমার ধারনা। তবে একটা ব্যাপারে আমার সন্দেহ যে হেফাজতীরা সাধারন ধর্মপ্রান মুসলমানদের ধর্মীয়ভাবে দুর্বল করার কৌশল অবলম্বন করে বি.এন.পি প্রার্থীর পক্ষে প্রচারনা চালিয়ে থাকতে পারে। এ রকম একটি অভিজ্ঞতা আমার আছে, আমি যখন কলেজে তখন কলেজ সংসদ নির্বাচনের সময় ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থীর পক্ষে সাবেক ভিপি ছোট কোরআন শরীফ নিয়ে প্রচারনায় নামে যিনি এক সময় দোহার থানায় আমার আত্মীয় বাড়িতে লজিং থেকে জয়পাড়া কলেজে পড়াশোনা করত এবং বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকান্ডের জন্য দোহার ছাড়তে বাধ্য হয় পরবর্তীতে নিজ এলাকার কলেজে ভর্তি হয়ে দল ক্ষমতায় থাকতে ৩৫ বছর বয়সে কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি হয়েছিল।



হেফাজতীরা নাকি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের সময় প্রত্যেক বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসা করেছে, আপনারা ইসলাম চান, না নাস্তিকদের চান? মানুষ বলেছে, ইসলাম চাই। অমনি কোরান শরীফ বের করে হেফাজতীরা বলেছে, তাহলে এই পবিত্র কোরানে হাত রেখে বলুন, নাস্তিক আওয়ামী লীগকে ভোট দেবেন না। আওয়ামীলীগের মধ্যে হেফাজতের প্রতি সহানুভূতিশীলদের কারনে সরকার শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চ ভেঙ্গে দিয়েছে।গণজাগরণ মঞ্চ ভেঙ্গে দিয়ে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে গড়ে ওঠা নিজের শক্তি স্তম্ভকেই ভেঙ্গে দিয়েছে। আওয়ামী এই তরুণ প্রজন্ম ক্ষুব্ধ হয়েছে আওয়ামী লীগের ওপর। তাদের আস্থা ও বিশ্বাস নষ্ট হয়েছে। তারা অবশ্যই এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সমর্থনদানে এগিয়ে আসেনি। আওয়ামী লীগকে সমর্থনদানে এগিয়ে আসেনি হিন্দু, বৌদ্ধ সংখ্যালঘু শ্রেণীর অধিকাংশ ভোটদাতাও। কক্সবাজার ও রামুতে সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের সময় আওয়ামী লীগের একজন এমপিও দুর্গতদের পাশে গিয়ে দাঁড়াননি। বহু সংখ্যালঘু ভোটার এবার ভোট দিতে যায়নি। বেশিরভাগ যায়নি হেফাজত ও জামায়াতের হুমকির মুখে পড়ে। অনেকেই যায়নি আওয়ামী লীগের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়ে এবং অসন্তোষের জন্য। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই তরুন প্রজন্ম আর হিন্দু বৌদ্ধ সংখ্যালঘু ভোটেই বিশাল বিজয় এসেছিল। তাছাড়া রাষ্ট্রীয় কিছু বড় বড় দুর্নীতির কারনে নিরপেক্ষ ভোটাররা এই নির্বাচনে সরকার দলীয় প্রার্থীদের ভোটদানে বিরত থাকে।সরকার পরিচালনায় কোথায় কোথায় ভুল আওয়ামী লীগকে এখন এই ভুলগুলো শোধরাতে হবে। ভুলের মাধ্যমেই মানুষ শিক্ষাগ্রহন করে কিন্তু সেই ভুল গুলিকে স্বীকার করে, মেনে নিয়ে সংশোধনের চেষ্টা করতে হবে।মানুষের উপর বিশ্বাস রেখে কাজ করতে গেলে ঠকার সম্ভাবনা নেই। সমস্ত প্রাণীর মধ্যে মানুষই হচ্ছে সবচাইতে পরিবর্তশীল। কিন্তু পরিবর্তনের প্রক্রিয়াটি সূচনা করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়ায় এবং ভেবে চিন্তে এগোতে হয়। অতীত মনে রেখেই এগোতে হয়। কিন্তু বাঙ্গালী অতীত বিস্মৃতি প্রিয়।



বাঙালী খুব সহজেই অতীত ভুলে যায়। কিন্তু সেই সহজতা ঠিক কতটুকু সহজ, ঘটনা কত পুরাতন হলে পরে বাঙালীর স্মৃতি ভান্ডার থেকে তা মুছে যায়, সে বিষয়ে কোন নির্দিষ্ট সীমারেখা নির্ণীত হয়নি। যার স্মরণশক্তি একেবারেই দুর্বল, সে হয়তো গতকালের কথাও স্মৃতিতে ধরে রাখতে পারে না, আবার প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী হলে কুড়ি বছর, চল্লিশ বছর আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলীও দিন, তারিখ, সময়সহ হুবহু বর্ণনা করে বলতে পারে। স্মৃতিতে ধরে রাখার এই সহজ প্রক্রিয়াটি যে কোন মানুষের জন্যই প্রযোজ্য, কিন্তু তা মেনে নিয়েও সহজেই অতীত ভুলে যাওয়ার অপবাদ শুধু বাঙালী জাতিকে বয়ে বেড়াতে হয়, এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। বাংলাদেশের জনগণের স্মৃতিশক্তি দুর্বল, দুর্বলতার বড় কারণই হচ্ছে অপুষ্টি, অশিক্ষা, দারিদ্র্য! শারীরিক দুর্বলতা মস্তিষ্কের স্মৃতিকোষগুলোকে নিষ্ক্রিয় করে দিচ্ছে। তাই সাধারণ জনগণ ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের শোক ভুলে গেছে, ছোট্ট রাসেলকে ভুলে গেছে, খুনী মোশতাক, ডালিম, ফারুকদের কথা ভুলে গেছে, জিয়াউর রহমানের খাল কেটে কুমির আনার কথা ভুলে গেছে, জিয়াউর রহমান সাহেবের মৃত্যুর পর ভাঙ্গা স্যুটকেস, ছেঁড়া গেঞ্জির আবিষ্কারক ফজলে লোহানীকে ভুলে গেছে, নয় বছরের স্বৈরশাসন ভুলে গেছে, ’৯০-এর গণঅভ্যুত্থান ভুলে গেছে, নূর হোসেন বা ডা. মিলনকে ভুলে গেছে, ছাত্র মিছিলে ট্রাক তুলে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মেরে ফেলার কথা ভুলে গেছে, ’৯১ থেকে ’৯৫ শাসনকাল ভুলে গেছে, মাগুরা নির্বাচনের কথা ভুলে গেছে, ’৯৬ থেকে ২০০১ সালের তুলনামূলক সবচেয়ে ভাল শাসনকালের কথা ভুলে গেছে, জাতির পিতা হত্যার বিচার শুরুর প্রাক্কালে একের পর এক বিচারপতিদের বিব্রত হওয়ার ইতিহাস ভুলে গেছে, ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী নির্লজ্জ সংখ্যালঘু নিধন পর্ব ভুলে গেছে, ২০০১ থেকে ২০০৫ সালের বিভীষিকাময় শাসনকালের কথা ভুলে গেছে, হাওয়া ভবন ভুলে গেছে, খাম্বা নীতি ভুলে গেছে, তারেক জিয়াকে ভুলে গেছে, পাঙ্কু বাবরকে ভুলে গেছে, মামুনকে ভুলে গেছে, ফালুকে ভুলে গেছে, হারিছ চৌধুরীকে ভুলে গেছে, অসহায় তরুণ ইঞ্জিনিয়ার পার্থ সাহার ওপর বিএনপি সরকারের পুলিশের নারকীয় অত্যাচারের কাহিনী ভুলে গেছে, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার কথা ভুলে গেছে, আহসানউল্লাহ মাস্টার, শাহ কিবরিয়াকে হত্যার কথা ভুলে গেছে, ঝালকাঠির দুই বিচারক হত্যার কথা ভুলে গেছে! বিশ্বজিৎকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে মারার কথা ভুলে গেছে, পঙ্গু লিমনকে ভুলে গেছে, জয়নাল আবেদীন ফারুককে ভুলে গেছে, রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেপ্তারের কথা ভুলে গেছে।



বাঙালী খুব দ্রুত সবকিছু ভুলে যায়, ভালটাও ভুলে যায়, মন্দটাও ভুলে যায়। অনেক আগের কথাও ভুলে যায়, অতি সাম্প্রতিক ঘটনাও ভুলে যায়। এভাবেই বাঙালী ভুলে গেছে সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে সাড়া জাগানো ব্লগার আন্দোলনের কথা, গণজাগরণ মঞ্চের কথা। ভুলে গেছে যুদ্ধাপরাধী বিচারের কথা, ভুলে গেছে বাচ্চু রাজাকার, কাদের মোল্লা, সাঈদী সাহেবের বিচারের রায় ঘোষণার কথা! ভুলে গেছে আস্তিক-নাস্তিক ঝড়ে বাংলাদেশের অতি নিরীহ হিন্দুদের ঘর-বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়ার কথা, মন্দিরে ঢুকে পুরোহিত হত্যার কথা, ভুলে গেছে চট্টগ্রামের রামুতে বৌদ্ধ বিহার জ্বালিয়ে দেয়ার কথা, গ্রামকে গ্রাম বৌদ্ধ জনসাধারণের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার কথা! বাঙালী সব ভুলে যায়, খুব দ্রুততার সাথে ভুলে যায়, আর এই জন্যই বাঙালী ভুলে গেছে অতি সাম্প্রতিককালের সকল অঘটন ঘটানোর মূল হোতা দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, উত্তরা ষড়যন্ত্রের মহানায়ক মাহমুদুর রহমানের কথা! যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবিতে যখনই ব্লগাররা আন্দোলন শুরু করল, তৈরি করল শাহবাগ মঞ্চ, সৃষ্টি করল মহাগণজাগরণের, সেই মুহূর্তেই মাহমুদুর রহমান তার খেলা শুরু করে দিল। আমার দেশ পত্রিকার সারা পৃষ্ঠা জুড়ে চরম উস্কানিমূলক খবর ছাপিয়ে, ব্লগারদের নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে, অন্যের ব্লগ হ্যাক করে সেখানে নিজেদের দালাল লেখক দিয়ে নোংরা, ইসলাম বিদ্বেষী, মহানবী (স.) বিদ্বেষী কতগুলো লেখা ছাপিয়ে ব্লগারদের নামে চালিয়ে দিয়েছিল। যাদের কম্পিউটার সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা নেই, কম্পিউটার দেখতে কী রকম, সেটাও জানে না, তারাও বলতে লাগলো, ব্লগারদের ফাঁসি চাই। বাঙালী বিস্মৃতিপরায়ণ জাতি বলেই অনায়াসে ভুলে যেতে পারল, মাহমুদুর রহমান পবিত্র কাবা শরীফের গিলাফ পরিবর্তন নিয়েও চরম মিথ্যাচার করেছিল। বাঙালী সবই ভুলে যায়, ইচ্ছেয় হোক আর অনিচ্ছাতেই হোক, সব অতীত ভুলে যেতে পারে।



এই যে ভুলে যাওয়া এটার মাধ্যমে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক এটা কারও কাম্য নয়। তাই রাষ্ট্রনায়কোচিত প্রজ্ঞা দিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা এখন সময়ের দাবি। যারা সাহস করে সত্য বলে চলেছেন এরা কেউই জীবনে ব্যর্থ নয়। সাময়িক ভাবে হয়তো তারা রাষ্ট্রযন্ত্রের রোষানলে পড়তে পারেন তবে ইতিহাস থেকে হারিয়ে যাবেন না। তারপরও থাকে ক্ষমতার মোহ ক্ষমতার মোহ সব কিছুকেই হার মানিয়ে দেয়। ক্ষমতার নেশার মতো নেশা আর নেই। মধ্যরাতের বিহারের নেশাকেও তা ছাড়িয়ে যায়। এমনকি আহারের নেশাকেও। কামিনী কাঞ্চন ত্যাগী সন্ন্যাসীও ক্ষমতার নেশায় মত্ত।কিন্তু প্রত্যাশার আলো হারিয়ে যাওয়ার পরিণাম কারও জন্য ভালো হবে না। মানুষের মাঝে লুকিয়ে আছে সন্দেহ-অবিশ্বাস। সত্যকে এখন সত্য বলতে সবাই নারাজ। আমরা নৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক অবক্ষয়ের নির্মমতার শিকার হচ্ছি প্রতিনিয়ত। ২০০১ সালের পর হিন্দু-মুসলিমের দূরত্ব বেড়েছে। পারস্পরিক অবিশ্বাস চূড়ান্ত পর্যায়ে। হামলা, লুটপাটের শিকার হয় নিরীহ হিন্দুরা। ধর্ষণের শিকার হয় অনেক নিরীহ হিন্দু নারী। সবার ধারণা ছিল, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে। হানাহানি দূর হবে। হামলার শিকার হবে না কোনো হিন্দু পরিবার। কিন্তু এবার কি দেখলাম? নিরীহ হিন্দুরা আবার সন্ত্রাসের শিকার হলো।প্রকাশ্যে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের হাতে খুন হলো সাধারন হিন্দু ছেলে বিশ্বজিৎ।ইসলাম শান্তির ধর্ম। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ধর্ম সমর্থন করে না। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মদিনা সনদে বলেছেন, ‘সকল সম্প্রদায় স্বাধীনভাবে নিজেদের ধর্ম পালন করিবে, কেহ তাহাতে হস্তক্ষেপ করিবে না।’ কিন্তু ধর্মের নামে এখন আমরা কি দেখছি ?



এই যে ক্রমাগত রাজনৈতিক নেতারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে জনগণের কাছ থেকে এটা কেন হচ্ছে ? কারণ আমাদের একটি বিরাট জনগোষ্ঠী উন্নয়নের অংশীদার হতে পারছে না। এরা উন্নয়নের ফল তো পাচ্ছেই না, আবার সম্পদের বিতরণ ব্যবস্থারও (ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেল) ন্যূনতম বিচার পাচ্ছে না। বরং প্রতিনিয়ত রাজনৈতিক নেতাদের হাতিয়ারে পরিনত হয়ে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বিভিন্ন রকম অপরাধে জড়িত হচ্ছে। এদের ব্যবহার করে নেতাদের পকেট ভারী করছে, জনগনের ভোটে নির্বাচিত হয়ে জনগনের সম্পদ দখল করে নিজেরা সম্পদশালী হচ্ছে। নির্বাচনের মাধ্যমে হয়তো ক্ষমতার হাত বদল হচ্ছে, বি.এন.পি’র স্রোতহীন আন্দোলনে নতুন করে জোয়ারের পানি প্রবেশ করছে তাতে কি রাজনৈতিক হানাহানি কমবে ? মানুষ মরা কি বন্ধ হবে ? অর্থ বিনষ্ট কি বন্ধ হবে ? সামনের জাতীয় নির্বাচন কি সংকট থেকে বেরিয়ে আসবে ? অশান্তি, অস্থির, ভয়াল পরিবেশে যেখানে মানুষের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই, সেখান থেকে কি দেশ শান্তির পথে ফিরে আসবে ? নাকি এই নতুন জোয়ারের টানে বি.এন.পি জামাত জোট আরো সহিংস্ আন্দোলনের পথে হাটবে ? কারো চোখ দিয়ে পানি ঝরলে সেটা প্রত্যক্ষ করতে পারে সকলেই কিন্তু যখন কারো হূদয় থেকে রক্ত ঝরে তা কেউ কি দেখতে পায় ?

************************

২০/০৬/২০১৩

আল – খোবার, সৌদি আরব।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.