নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নির্বাসন এ একা

হাত, পা, মাথা থাকলেই মানুষ হওয়া যায় নাহ্রদয় ধ্বক ধ্বক করলেই বেচে থাকা হয় না

নির্বাসন এ একা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফিরে আসা - শাহবাগ চত্বরের টানে

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৯

ফিরে আসা - শাহবাগ চত্বরের টানে

প্রস্তুত ফাঁসির মঞ্চ



- যাযাবর জীবন



হঠাৎ করে, খুব বেশী হঠাৎ করেই অনেক দিন যাবত চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী জীবন কাটালাম। কোনো প্রস্তুতি ছিল না, ছিল না আগে থেকে কোনো সন্দেশা, তবুও কেমন যেন একটা ঘোরের মধ্যে কেটে গেল কতগুলো দিন। কোথা দিয়ে দিন এসেছে, কখন রাত নেমেছে কিছুই টের পাই নি। সব কেমন যেন ধোঁয় ধোঁয়া। শুধু একটু একটু মনে পড়ে হাসপাতালের সাদা চাদর, ফিনাইলের গন্ধ, নার্সদের আনাগোনা আর গম্ভীর চেহারার ভারিক্কী কিছু ডাক্তারের চিন্তিত মুখ। ইদানীং আর কিছু মনেও থাকে না আর সে দিনগুলোর কথা আর মনে করতেও চাই না। ফেরার কথা ছিল না তবুও অন্যভুবন থেকে কেন জানি এবারের জন্য ফেরত পাঠানো হল। অনেক অনেক দিন পরে ঘরে ফিরে টিভির সামনে বসলাম।



ও মা !!! এ কি দেখছি? শাহবাগের এ কি অবস্থা? স্লোগানে স্লোগানে আকাশ বাতাস মুখরিত, ফাঁসি মঞ্চ তৈরি। তবে কি ৪২ বছর পর আমাদের স্বপ্ন সত্যি হতে যাচ্ছে? আমি কি স্বপ্ন দেখছি না তো? গত কয়েকদিনের খবরের কাগজ যোগার করলাম, গোগ্রাসে গিললাম আমার অনুপস্থিতিকালের ঘটনাবলি গুলো। আমার দেশের সোনার ছেলেমেয়েরা এ কি করেছে? আমি গর্বিত, অহংবোধে আমার বুক ফুলে উঠেছে। আমার প্রজন্ম পারে নি কিন্তু আমার পরবর্তী প্রজন্ম দেশের ঋণ শোধের যে প্রত্যয় যে প্রতিজ্ঞা নিয়ে আজ শাহবাগে একত্রিত হয়েছে তা দেখে যেন রক্তে দামামা বেজে উঠছে।

আমি অসহায়ের মত টিভির পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকি, হসপিটালের চার দেয়াল থেকে মুক্তি পেলেও বাড়ির চার দেয়াল থেকে বের হওয়ার কোনো উপায় নেই এখন আর আমার, তবু খুব খুব ইচ্ছে করে একবারের জন্য হলেও এ প্রজন্মের সন্তানদের সাথে সুর মেলাতে - “রাজাকারের ফাঁসি চাই” - কলুষিত এ মানুষগুলোর একমাত্র বিচার ফাঁসির রায় কার্যকর করা। আমার মুক্তিযোদ্ধা চাচাকে যখন তারা ধরে নিয়ে গিয়ে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মেরেছিল তখন শুধুই চোখের জলের বান ডেকেছিল আর হৃদয়ে এ হায়েনাদের প্রতি তীব্র এক ঘৃণা বাসা বেঁধে রয়েছিস। সেদিন আমি অসহায় ছিলাম, আমার বাবা, মা, দাদি, দাদা, ফুপু আর চাচারা অসহায়ের মত কেঁদেছিল। তারপর থেকে নদীতে কত জল গড়িয়েছে, দেশের রাজনীতি কত খেলা দেখিয়েছে - আর এই রাজাকার আল বদরগুলো আমার দেশের জাতীয় পতাকা বাহী গাড়িতে করে ঘুরে বেড়িয়েছে। কোথাও কোনো প্রতিকার ছিল না, শুধুমাত্র আমার মতন কিছু মানুষের মনে এক বুক ঘৃণা ছাড়া। সেই ঘৃণা সেই আগুন যেন আজকের নতুন যুব সমাজের প্রতিটি ছেলে মেয়ে, আমাদের আজকের সন্তানদের চোখে মুখে - ওই শাহবাগ চত্বরে। আমিও তোমাদের সুরে সুর মিলিয়ে বলি এদের ফাঁসিতে ঝোলাও, বাংলা মায়ের বুক থেকে এ সব কুলাঙ্গারদের নিশ্চিহ্ন করে দাও। এখন বুঝতে পারছি অন্যভুবন থেকে ফেরত পাঠানোর কারণ - হয়তো আজকের এই বহ্নিশিখা দর্শন কিংবা তোমাদের দেখে আবার নতুন করে বাঁচার ইচ্ছা, কিংবা হয়তোবা চলে যাব আবার সেই ভুবনে ঐ রাজাকারদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলন্ত দেখতে দেখতে - এই শাহবাগ চত্বরে।







শাহবাগ চত্বর

দামামার আগুন

ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ ওই দামাল সন্তানদের চোখে মুখে

আগুনের ফুলকি চোখে মুখে

নতুন স্লোগানের অভাব হয়নি আমাদের কোনোদিনও

উগরে দিতে মনের সকল ঘৃণার আগুন;

আজ আমরা সমবেত শাহবাগ চত্বরে

ছেলে, মেয়ে, আবাল, বৃদ্ধ বণিতা সকলে মিলে

মুখরিত স্লোগানে স্লোগানে -

“রাজাকারের ফাঁসি চাই

এর কোনো অন্যথা নাই”।



ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত

প্রস্তুত তোদের ফাঁসিতে ঝোলাব বলে

ঘরে ফিরব সেদিন

যেদিন ফাঁসির দড়িতে ঝুলন্ত ঐ রাজাকারের দল

নয়ত; শাহবাগ চত্বর আমাদের বসতবাড়ি।





মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.