নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অট্টহাসি হাসতে হাসতে হারিয়ে যাওয়ার নেশা, লিখতে চাওয়া-ই আমার মনের একটিমাত্র পেশা

নির্বিবাদী নূর

নির্বিবাদী নূর › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিদায় সাইমন্ডস! বিদায়!

১৫ ই মে, ২০২২ বিকাল ৫:২০

এন্ড্রু সাইমন্ডস কে নিয়ে কখনোই কোনো মাতামাতি করিনাই কোনোকালে। একটা সময়ে অস্ট্রেলিয়া দলটাকে অপছন্দ করতাম, অপছন্দের অন্যতম কারণ ছিলো তারা অতিরিক্ত ভালো খেলতে পারতো। বাচ্চাকালে সাপ কন্টিনেন্টের প্রতিটা ক্রিকেটখেলুড়ে দেশকেই আমার ভাল্লাগতো। লাসিথ মালিঙ্গার ঝাঁকড়া দোলানো বোলিং শৈলী, শচীনের আগলানো মিডল অর্ডার, ইনজামামের আয়েশী রানিং বিটুইন দ্যা উইকেট কিংবা টাইগার স্পিনার মোহাম্মদ রফিকের বোলিং স্টাইল। অথচ এই সকলেই একটা দেশের সাথে খেলতে নামলে মনে হতো মাঠে নামার আগেই হেরে গেছে; সেটিই অস্ট্রেলিয়া। সেই অস্ট্রেলিয়ার সোনালী যুগের সোনালী তারকা এন্ড্রু সাইমন্ডস। অথচ তিনি অবসর নেয়ার পর একই সাথে অস্ট্রেলিয়া টিম এবং এন্ড্রু সাইমন্ডস, দু'জনকে মনের অজান্তেই ভালোবাসতে শুরু করি।

সাইমন্ডস এমন একটা খেলোয়াড় ছিলেন যাকে আমি সবসময়ই বলে থাকি ক্রিকেটের ভেল্কিবাজ। বলার কারণটাও যথার্থ, একই সাথে তিনি স্লো ব্যাটিং করতে পারতেন আবার মূহুর্তেই হয়ে উঠতে পারতেন বিধ্বংসী হার্ডহিটার। আবার বোলিংয়ের ক্ষেত্রেও ফাস্ট বোলিং কিংবা স্পিন দুটোতেই সমান মুন্সিয়ানা। এবারে আসা যাক ফিল্ডিংয়ের দিকে, কিংবদন্তী ফিল্ডার জন্টি রোডসের পরে সবচাইতে পটেনশিয়াল ফিল্ডার আমার চোখে সাইমন্ডস। কোকরানো চুলে সুঠাম দেহের যে ক্ষিপ্রতা তিনি দেখাতেন, তাতে মনে হতো যেন মাঠে দৌড়াচ্ছে কোনো বুনো প্যানথার। সেই সাইমন্ডস-ই কিনা হারিয়ে গেলো কোনো এক ব্যস্ত রাস্তার প্রতিধ্বনিতে।

কিছুদিন আগেই হুট করে সকলের মস্তিষ্ককে একপ্রকার থামিয়ে দিয়ে বিদায় নিলেন শেন ওয়ার্ন। এবার তারই পথে হাটলেন তারই সতীর্থ সাইমন্ডস। কোনো এক জায়গায় তাদের মধ্যে ভীষণ মিল, কারণ শুধু মাঠ নয়; মাঠের বাইরেও এ দু'জন ছিলেন ব্যাপকভাবে আলোচিত এবং সমালোচিত। তাই হয়তো এই দু'জন আলোচিত ক্যাঙ্গারু প্রতিনিধি অভিমানের বেনামী চিঠি বানিয়ে হারিয়ে গেলেন অনন্ত অসীমে। আর ক্রিকেটবিশ্বের সকল জ্বলজ্বলে চোখকে বানিয়ে দিলেন অশ্রুসিক্ত।

ক্রিকেটীয় জীবনে ওয়ার্ন যেভাবে সফলতা পেয়েছেন, সাইমন্ডস যেভাবে কিছুই করতে পারেননি; বরং তার হেয়ালীপনার কারণে শেষ দিকে তো বাদই পড়ে গেলেন দল থেকে। অথচ যে পরিমাণ গুণ কিংবা প্রতিভা অথবা প্রচেষ্টা সাইমন্ডসের মধ্যে ছিলো, তিনি হতে পারতেন কিংবদন্তীদের কাতারে অন্যতম একজন প্রতিনিধি। ক্রিকেট ছাড়ার পরে হয়তো এমন আক্ষেপে নিজেও পুড়েছেন শত সহস্রবার।

আজ সাইমন্ডস চলে গেলেন অপ্রত্যাশিতভাবে। আলোচনা-সমালোচনা ছাপিয়ে আর সকল ক্রিকেটবোদ্ধার মতন আমারও চোখের কোণ খচখচিয়ে উঠলো। ঘুম ভেঙ্গে উঠে স্ক্রল করা নিউজ দেখে বারংবার মনে হচ্ছিলো, ঘুমটা যদি আরেকটু আগে/পরে ভাঙ্গতো তাহলে হয়তো লাইভ কোনো অনুষ্ঠানে পুরোনো শ্যাম্পেইনের বোতল হাতে হাস্যোজ্বল সাইমন্ডস’কে দেখতে পেতাম চিরচেনা আয়েশী ভঙ্গিতে। এটা হয়নি, সাইমন্ডস হারিয়ে গেছে। আর আমার মস্তিষ্কে বারবার প্রতিধ্বনির হাতুড়ি পেটাচ্ছে ওয়াল্ট হুইটম্যানের ‘ও ক্যাপ্টেন, ও মাই ক্যাপ্টেন!!’

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.