![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভার্সিটি যাচ্ছিলাম । বাসার পাশে খোলা মাঠটার পাশে এসে হঠাত দাড়িয়ে গেলাম । মাঠের এক কোণায় ছোট একটা নীল ফুল । এখন ঠিক মত ফুটে উঠেনি । তবুও কি একটা মোহনীয় ভাব এর মাঝে । হেঁটে গেলাম ফুলটার কাছে । ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে গোড়ায় একটু পানি ঢেলে উঠে আসলাম । ফুলটা বাসায় নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে হচ্ছে । কিন্তু আফসোস বাবা বাসার ভিতর কোন প্রকার গাছপালা পছন্দ করেন না ।
সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার পথে আবার অনেকটুকু সময় নীল রঙের ফুলটার দিকে তাকিয়ে থাকলাম । কি জানি একটা নেশা ধরানো ভাব আছে নীল রঙের ভেতর । ঠিক করলাম ফুলটাকে প্রতিদিন পানি দেব , যত্ন নিব.।।পুরোপুরি ফুটে উঠলে বাবাকে বলে কয়ে যদি আনা যায় ফুলটাকে বাসায় । ব্যাপারটা কঠিন হবে অনেক । কিন্তু একবারও ভেবে দেখলাম না যদি না নিতে পারি বাসায় তাহলে কি এখানেই ফেলে রাখব নাকি।
একটা মাস পার হয়ে গেল দেখতে দেখতে । আমি এখন সেই অদ্ভুত নীল ফুলটার দিকে তাকিয়ে থাকি । আমার রুমের বারান্দা থেকে রাতের বেলাতেও কেমন জানি অদ্ভুত একটা আলোতে দেখা যায় ফুলটাকে । কোনদিন তো প্রকৃতি প্রেমী ছিলাম না ? কি মায়া এই নীলের মাঝে? এরি মাঝে একদিন শুনলাম আমরা নাকি বাসা পাল্টাচ্ছি !! ভেবেই আফসোস হল , ফুলটাকে বাসায় আনার আর চেষ্টা করা হয়নি । বাসা পাল্টালে আর হয়ত কোনদিন দেখবও না । ভাবলাম কাল ভার্সিটি থেকে ফেরার পথে শেষ একবার দেখব নীল ফুলটাকে । হয়ত বাসায় নিয়ে বাবার সাথে ঝগড়া করে রেখেও দিতে পারি ।
কিন্তু সন্ধ্যায় ফেরার পথে দেখলাম কে যেন সযত্নে ফুলটাকে তুলে নিয়ে গিয়েছে ।বোঝা যাচ্ছে যে নিয়েছে সে অনেক যত্ন করবে ফুলটাকে। অনেকটুকু মাটি সহ তুলে নিয়ে গেছে । একটু মন খারাপ হল , শেষ চেষ্টা টা করতে পারলাম না ।ভালই হল হয়ত বাসায় একটা ঝগড়া শুরু করতে হল না । বাসার সামনে আসতেই পাশের ফ্ল্যাটের টুটুলদের বারান্দায় চোখ পড়ল । অবাক হয়ে দেখলাম ওদের বারান্দায় শোভা পাচ্ছে "আমার" নীল ফুলটা । ছোট্ট টুটুল মনে হয় মাঠে খেলার সময় তুলে নিয়ে গিয়ে নিজের বারান্দায় টবে লাগিয়েছে । বাসায় ফিরেই টুটুলদের দরজায় নক করলাম । ওর মা এসে খুলে দিল । "আন্টি টুটুলের সাথে একটু কথা বলা যাবে।" ওর মা আমাকে ওর রুমে নিয়ে গেল ।
"টুটুল তোমার বারান্দার নীল ফুলটার সাথে একটা ছবি তুলব । দেবে?"
" কেন? " বড় বড় চোখ করে জিজ্ঞেস করল টুটুল।
একবার মনে হল বলি কারণ ফুলটা আমার । আমি প্রতিদিন যত্ন করে ওকে বাচিয়ে রেখেছি তাই। কিন্তু বললাম না ।
"তোমার ফুলটা অনেক সুন্দর । তোমার বারান্দায় অনেক সুন্দর মানিয়েছে । দাও না একটা ছবি তুলতে। "
"আচ্ছা। "
একটা ছবি তুলে রাখলাম । একটা ছবি ...... তবুও কেমন জানি একটা মায়া ।
অদ্ভুত একটা হাসি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় শুনলাম ছোট্ট টুটুল বলছে , " মা , ভাইয়া টা কি পাগল ?! "
"চুপ, টুটুল এভাবে বলে না । "
২| ৩১ শে মে, ২০১৭ সকাল ১০:২৮
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: বেশ সুন্দর লিখেছেন। ব্যতিক্রমি গল্পই মনে হল। ধন্যবাদ।
০৩ রা জুন, ২০১৭ সকাল ১০:৩৯
নিভার্ড_পেরেরা বলেছেন: ধন্যবাদ । আপনার লেখা "আবেগ বড় বিষ্ময়!" পড়েছি । খুবই ভালো লেগেছে ।
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে মে, ২০১৭ রাত ১২:৫৭
অয়োমল_মুবিন বলেছেন: জীবনটা এমনই, বাস্তবতাটাকে মেনে নিতে হয়। হয়তো তুমি ফুলটি নিয়ে বাবার সাথে ঝগড়া করে ঘরে সাজিয়ে রাখতে। কিন্তু দেখো তোমার পানি দিয়ে যত্নোকরে রাখার আগে একটা গাছ এই ফুলটিকে জন্ম্য দিয়েছিলো, আগলে রেখে এতো বড়ো করেছিলো- তুমি ছিড়ে আনবে যে, তাদেরও তো একটা আহ্লাদি আধিকার আছে বা হতে পারে টুটুলকে দেখে সেইফুলটিও তার অপার্থীব রূপ আরো বিলিইয়ে দিয়েছিলো যেই রূপে মুগ্ধ টুটুল তোমার মতো আর ফুলটি ফেলে যেতে পারেনি।।।
প্রত্যাশা করি টুটুল যেনো ফুলটিকে তোমার থেকেও যত্নে রাখতে পারে..... ভাই