নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্তরালের পথিক

অন্তরালের পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাণিজ্য মেলায় একদিন

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:১৭

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্কুরবার আগারগাঁও ও তৎসংলগ্ন এলাকার আশে-পাশে যাওয়া একটি সগীরা গুণাহ বিধায় শনিবার বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার দিন ধার্য করিলাম। শনিবার যথাসময়ে বাসা হইতে নির্গত হইয়া বাংলা বিহার ও উড়িষ্যার সর্বশেষ স্বাধীন নবাব জনাব সিএনজি ড্রাইভারকে অত্যন্ত তাজিমের সহিত শুধাইলাম, ভাইজান, বাণিজ্য মেলায় যাবেন? নবাব সাহেব এমনভাবে আমার দিকে তাকইলেন তাতে বাণিজ্য মেলায় যাওয়া এবং তাহার তরে উহার সার্ভিস চাওয়া যে একটি মারাত্নক অপরাধ তা আমি নগদে বুঝিলাম।

অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা আর সাধনার পর অবশেষে বাণিজ্য মেলায় তশরিফ রাখিয়া এক জায়গায় বেসম্ভব ভীড় দেখিয়া উহাই টিকেট কাউন্টার বলিয়া মালুম হইল। মাইকে বারবার বলা হচ্ছিল সামনে অনেক টিকেট কাউন্টার খালি আছে তাই সামনে আউগাইয়া দেখিলাম যে আসলেই ২০-২৫ টা টিকেট কাউন্টার খালি পড়িয়া আছে, লোকজন না থাকায় কাউন্টারে বসিয়া থাকা ক্যাশিয়ারবৃন্দ মাছি নিধন কার্যক্রমে আত্ননিয়োগ করিয়াছেন। উহাদের নিকট হইতে টিকেট খরিদ করিয়া ভাবনায় পড়িলাম এতগুলা টিকেট কাউন্টার খালি থাকা সত্বেও জনগণ একদম সামনের একটা টিকেট কাউন্টারেই কেন ভীড় জমাইল? বাঙালী মাইনষের কথায় কান দিলেও মাইকের কথায় যে একদমই কান দেয় না তা বুঝিলাম।

ইরানের পতাকা সম্বলিত এবং নামাঙ্কিত একখানা প্যাভিলিয়ন দেখিয়া প্রিন্স অব পারসিয়ার দেশের বাড়ির জিনিসপত্র একবার দেখিয়া আসা উচিৎ সাব্যস্ত করিলাম। কিন্ত ভেতরে প্রবেশ করিবাপূর্বক বিক্রিত দ্রব্য সামগ্রী দেখিয়া বাণিজ্য মেলার ইরানের প্যাভিলিয়নে আছি নাকি গাউছিয়া মাকের্টে আছি সন্দেহ লাগিল।তাই প্যাভিলিয়নের এক মাথা দিয়ে প্রবেশ করিয়া আরেক মাথা দিয়া বাহির হইয়াই আরেকখানা অফারের মুখোমুখি হইলাম। এই বান্দা একটা আইটেম কিনলে দশটা আইটেম ফাও দিতে চায়। বলিলাম, জনাব, দুই হাতে দশটা জিনিস ক্যামনে নিমু, তার চেয়ে আমি যেটা কিনুম ঐ একটাই দ্যান আর দশটা ফাও আইটেমের দাম কমায়া রাখেন। আবেদন না মন্জুর হইল।

হুতাশে নিটল টাটার স্টলে ঢুকিয়া পড়ায় সেখানে অপেক্ষমান সেলস্ এক্সিকিউটিভ অত্যন্ত উৎসাহের সহিত আমার কাছে পাশে দাঁড় করানো অতিকায় একখানা ট্রাকের গুণগান বর্ণনা করিল। চেসিস, ট্রান্সমিশন, সাসপেনসন ইত্যাদি ভাল বুঝিতে না পারিয়া বড় অসহায় লাগিল, তাই বুঝদার ভাব করিয়া হর্ণের বাটনখানায় চাপ দিলাম। কিন্ত কোনই আওয়াজ না হওয়ায় দুই নম্বর মাল বলিয়া বোধ হইল।

এই যুগের স্মার্ট লোকজনের স্মার্ট কার্যকলাপ আমি কখনই ভালভাবে বুঝিতে পারি নাই। তাই জায়গায় জায়গায় লোকজনের একযোগে সেলফি তুলিবার মর্তবা বুঝিতেও ব্যর্থ হইলাম। সম্ভবত বাণিজ্য মেলায় আসিয়া সেলফি তোলা এবং ফেসবুক চেকইনের মাধ্যমে উহা জনসাধারণকে অবহিত করা ফরজে কেফায়া।

ম্যালা স্টলে পদধুলি দিবার পর অবশেষে বাসায় ফিরিবার যুদ্ধে শামিল হইলাম। প্রায় শখানেক সিএনজি ড্রাইভারের কাছে ধর্ণা দিয়াও যখন কাউকে রাজি করাইতে পারিলাম না তখন দুঃখে কান্দিয়া উহাদিগকে বলিতে ইচ্ছা হইছিল, ভাইরে, আমি তো ভাড়া দিয়া যামু, ফাও নিয়া যাইতে তো বলি নাই, যাবি না ক্যারে? টাকায় বাঘের চোখ মিলিলেও সিএনজি অটোরিক্সা মিলিবে এমন কোন কথা নাই। অনেক সাধনার পর জনৈক সিএনজি ড্রাইভার বিশেষ করুণার বশবর্তী হইয়া বাসায় পৌছাইয়া দিতে রাজি হওয়ায় শান্তিপূর্ণভাবে বাসায় পৌছাইতে সমর্থ হইলাম।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৫

মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: রসিক ট্রাভেলার B-)) :D

২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:০৮

জুন বলেছেন: বেশ মজা করে অভিজ্ঞতার বর্ননা দিয়েছেন । আপনার বানিজ্য মেলার বর্ননা একশ ভাগ সত্য। গত বৃহস্পতিবার এবছর প্রথম মেলায় গেলাম । আর গাউছিয়া মার্কেট ভেবেই দুটো থ্রী পীস কিনলাম । চাদনী চকে যাবার পথের ভয়ংকর যানজট আর ভীড় এড়ানোই ছিল এর কারন :)

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৪২

অন্তরালের পথিক বলেছেন: খুব-ই ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ;) B-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.