![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে, অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর পুছবে-
পৃথিবীতে যত রঙবেরঙের 'দিবস' রয়েছে, তার বেশিরভাগেরই উদ্ভব পাশ্চাত্যে; ইহুদী ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের মাধ্যমে! যেহেতু এ দিবসগুলো তাদের তৈরি, তাই এক্ষেত্রে আমাদের কিছু নাক সিটকানো ব্যাপার রয়েছে! বিশেষত, একটা ব্যাপার লক্ষ করে দেখবেন, পৃথিবীতে যে কয়েকটি ধর্মবিরোধ জাতীয় ব্যাপার রয়েছে, তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ্য হচ্ছে, ইহুদি-খ্রিস্টানদের সাথে মুসলিমদের বিরোধ ও হিন্দুদের সাথে মুসলিমদের বিরোধ! যেহেতু, পৃথিবীর বৃহত্তম দুটো ধর্ম হচ্ছে খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম, তাই এদের মধ্যেকার দ্বন্দ্বটিই অধিক প্রকাশিত হয়ে পড়ে! লক্ষ করলে দেখবেন, ইহুদি-খ্রিস্টানদের একটা বড় অংশ যেমন মুসলিমদের অপছন্দ করে; তেমনি মুসলিমদের সিংহভাগই ইহুদি-খ্রিস্টান সভ্যতাকে তথাকথিত 'দাজ্জাল' বলে চিহ্নিত করে!
এ সকল সমস্যার প্যাঁচগোছে পড়ে পৃথিবী এখন মহাফ্যাসাদে!
যা হোক, এবারে চলুন প্রসঙ্গে আসি!
অন্য অনেক বিষয়ের মতো কালে কালে ধর্মীয় বিদ্বেষের শিকার হয়েছে বিভিন্ন 'দিবস'ও! এর মধ্যে সবচেয়ে হাস্যকর বিবাদ-বিরোধটি রয়েছে এপ্রিলের ১ তারিখ, অর্থাৎ 'এপ্রিল ফুল ডে' নিয়ে!
স্বার্থান্বেষী মুসলিম নেতাগণ এ দিবসটিকে ঘিরে এক চরম বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিয়েছেন পৃথিবীব্যাপী সব মুসলিম ও খ্রিস্টানদের মধ্যে! তারা যুগে যুগে প্রচার করেছেন এক আজব আষাঢ়ে গল্প, যেখানে বলা হয়— এ দিনে মুসলমানদের বোকা বানিয়ে মসজিদে ঢুকিয়ে খ্রিস্টানরা তাদের পুড়িয়ে মেরেছিল এবং মুসলমানদের বোকা বানানোর দিন হিসেবেই খ্রিস্টানরা এ দিনটিকে 'এপ্রিল ফুল ডে' হিসেবে পালন করে!
সত্যি কথা বলতে, মুসলিম নেতাদের কর্তৃক মুসলমান জনগোষ্ঠীকে লক্ষ করে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হিপোক্রেসি হচ্ছে এ গল্পটি!
চলুন, এ পর্যায়ে জেনে নিই 'এপ্রিল ফুল ডে' নামক দিনটির প্রকৃত ইতিহাস:
এই দিনটি মূলত প্রতিবেশীদের উপর কৌতুক করার জন্য একটি বিশেষ দিন হিসেবে পৃথিবীব্যাপী স্বীকৃত!
ইরানে পার্সি ক্যালেন্ডার অনুসারে, নববর্ষের ১৩তম দিনে আনন্দ-মজা করা হয়। এই দিনটি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে ১ এপ্রিল ও ২ এপ্রিল সদৃশ।
ঐতিহাসিকদের মতে, ১৫৬৪ সালে ফ্রান্সে নতুন ক্যালেন্ডার চালু করাকে কেন্দ্র করে এপ্রিল ফুল ডে'র সূচনা হয়। ঐ ক্যালেন্ডারে ১ এপ্রিলের পরিবর্তে ১ জানুয়ারিকে নতুন বছরের প্রথম দিন হিসেবে গণনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়! এতে কিছু মানুষ তার বিরোধিতা করে এবং ১ এপ্রিলকেই নববর্ষের প্রথম দিন হিসেবে গণনা জারি রাখে! এই যারা পুরোনো ক্যালেণ্ডার অনুযায়ী ১ এপ্রিলকেই নববর্ষের ১ম দিন ধরে দিন গণনা করে আসছিল, তাদেরকে প্রতি বছর ১ এপ্রিলে 'বোকা' উপাধি দেয়া হতো।
এছাড়া আরো একটি ব্যাপার হলো, ফ্রান্সে 'পয়সন দ্য আভ্রিল' (Poisson d'avril) নামক একটি উৎসব পালিত হয়! এ উৎসবের সাথে মাছের একটি সম্পর্ক আছে। এপ্রিলের শুরুর দিকে ডিম ফুটে মাছের বাচ্চা বের হয়। সে সময় শিশু মাছগুলোকে সহজে বোকা বানিয়ে ধরা যায়। সেজন্য তারা ১ এপ্রিলে 'পয়সন দ্য আভ্রিল' বা 'এপ্রিলের মাছ' উদযাপন করে। এ দিনে শিশুরা একজন অন্যজনের পিঠে তার অজান্তেই কাগজের মাছ ঝুলিয়ে দেয়। যখন অন্যরা সেটা দেখে, তখন সবাই বোকা বানানো শিশুটিকে লক্ষ করে 'পয়সন দ্য আভ্রিল' বা 'এপ্রিলের মাছ' বলে চিৎকার করে আনন্দে ফেটে পড়ে!
এভাবেই দিনটির উদ্ভব— একে অপরকে বোকা বানিয়ে মজা ও আনন্দ উদযাপনের উপলক্ষ হিসেবে!
কবি চসারের 'ক্যান্টারবারি টেইলস' (১৩৯২) বইয়ের 'নানস প্রিস্টস টেইল'-এও এই দিনটির কথা খুঁজে পাওয়া যায়!
সুতরাং চলুন,
বোকা হই, বোকা বানাই!
আনন্দে ভরে তুলি বোকামিভরা একটি দিন— মজার 'বোকা দিবস'!....
তথ্যসূত্র:
1. Bonner, John; Curtis, George William; Alden, Henry Mills; Samuel Stillman Conant; John Foord; Montgomery Schuyler; John Kendrick Bangs; Richard Harding Davis; Carl Schurz; George Brinton McClellan Harvey; Henry Loomis Nelson; Norman Hapgood (১৯০৮)। Harper's Weekly । Harper's Magazine Company। পৃ: ৬।
2. "April Fools' Day" । Encyclopædia Britannica। সংগৃহীত ৪ এপ্রিল ২০১৩।
3. Brand, John (১৭২৫)। Brand's Popular Antiquities of Great Britain । Volume I (R&T, 1905 সংস্করণ)। London: Reeves and Turner। পৃ: 12।
4. Santino, Jack (১৯৭২)। All around the year: holidays and celebrations in American life ।
University of Illinois Press । পৃ: ৯৭।
আইএসবিএন 978-0-252-06516-3 ।
5. The Canterbury Tales , " The Nun's Priest's Tale " - "Chaucer in the Twenty-First Century ",
University of Maine at Machias , 21 September 2007
6. Carol Poster, Richard J. Utz, Disputatio: an international transdisciplinary journal of the late middle ages , ২য় ভলিয়ম, পৃষ্ঠা ১৬-১৭ (১৯৯৭)।
৭. ব্রিটানিকা বিশ্বকোষ
২| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৩০
আবু তালেব শেখ বলেছেন: বাচ্চাদের লাহান আলোচনা। মাথামুন্ডু ,উদ্দেশ্য, উপকারিতা ,কিছুই বুজে আসেনা
০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৪
ওয়াহেদ সবুজ বলেছেন: লেখাটি পড়েছেন, ধন্য হয়েছি।
৩| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:০৯
ক্স বলেছেন: যত যাই আবোল তাবোল বোঝান, এরকম ফালতু দিবস পালনে আমার বিন্দুমাত্র কোন উৎসাহ নেই।
০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৮
ওয়াহেদ সবুজ বলেছেন: আপনার উৎসাহ-নিরুৎসাহে যদিও আমার কোনো হাত নেই, তথাপি ধন্যবাদ!
৪| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:৩৩
গরল বলেছেন: ছোটো বেলায় এই দিনটিতে স্কুলে খুব মজা করতাম, একটা নির্ভেজাল ও মার্জিত বিনোদন ছিল এপ্রিল ফুল। তবে এর পেছনের ইতিহাসটা জানা ছিল না এবং খ্রিস্টান কতৃক মুসলমানদের পুড়িয়ে মারার গল্পটাও নতুন শুনলাম। ইনফরমেশন এর সোর্স উল্লেখ করাটা জরুরী কারণ আজকাল আজগুবী অনেক ইনফো ফেসবুকের মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং মানুষ তা বিস্বাসও করে। তারপরেও ধন্যবাদ ইনফরমেশনটা শেয়ার করার জন্য।
০৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৩
ওয়াহেদ সবুজ বলেছেন: স্বাগত!
ভালো থাকবেন!
৫| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:১৭
কামভাখত কামরূখ বলেছেন: ধর্ম সাথে সাইকোলজিক্যালই আত্নার সাথে একটা যোগ সূত্র করেছেন সৃষ্টিকর্তা সাথে বিকেকের আদালত দিয়েছেন যেখানে মানুষ নিজস্ব স্বকীয়তায় তাকে খুঁজে নিতে পারে । আর মজার ব্যাপার হল একি বস্তু জনে জনে বিভিন্ন কারো কাছে যিশু কারো ঈশ্বর কারো ভগবান আর আপনি কাকে খুঁজে নিবেন সে দায়িত্ব আপনার । ভালো জিনিসের নকল বেশি ভালো জিনিস পেতে কষ্ট বেশি আসল ঈশ্বর পেতে সাধনা বেশি এবং সর্বোপরি যে দামী তার কথাও দামী । সৃষ্টিকর্তা সে এক আজব দর্শন এ সবাই বুঝে না, পায় না, পাবার যোগ্যতাও রাখে না।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৯
সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: আপনি কোন রেফারেন্স দেননি। তারপরও আপনার কথা যদি মেনেই নিই তবুও ওদের সংস্কৃতি আমাদের দেশে পালন করার কী যৌক্তিকতা থাকতে পারে? আপনি কাউকে বোকা বানিয়ে নিজে আনন্দ পেলেও যাকে বোকা বানানো হচ্ছে সে কি আপনার মতই আনন্দে হাবুডুবু খাবে নাকি একটু হলেও মনক্ষুণ্ণ হবে?