নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমাকে একটুকরো কাগজ দিবে? আর সাথে কয়েক ফোঁটা কালি? তাহলে আর কিছু চাইনা। এতেই আমি পুরো পৃথীবিকে আকঁবো।

ওবাইদুল্লাহ আহমাদ হুসাইন

পড়ালেখা আমার কাজ। পড়বো আর লিখবো এভাবে আমার বসুন্ধরাকে সাজাবো।

ওবাইদুল্লাহ আহমাদ হুসাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনঘড়ি

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ২:১০

বুক রিভিউ
নামঃ জীবনঘড়ি
লেখকঃ সাব্বির জাদিদ
প্রকাশনাঃ ঐতিহ্য

বই শুরুর আগে লেখক বই সম্পর্কে সংক্ষেপে একটু ধারণা দিয়েছেন। লেখকের ভাষার বলি, পরিবার হলো একটি ঘর। আর সন্তানেরা হলো সেই ঘরের একেকটি জানালা। যে জানালা দিয়ে পিতা মাথা পুরো বিশ্ব দেখতে চায়। এতটুকু পড়ে-ই পুরো বইটি পড়ার আগ্রহ জন্মে আমার। সন্তান যেমনি হোক সুস্থ কি'বা অসুস্থ, বোবা কি'বা বধির, অন্ধ বা লুড়া তবুও বাবামায়ের স্বপ্ন, পৃথিবীর সেরা সম্পদ। সন্তান জন্মের পূর্বেই বাবা-মা তাদের সন্তানের জন্য রাজমহল গড়ার প্রস্তুতি শুরু করে। সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে থাকে। কিন্তু জীবন সায়াহ্নে কখনো তা স্বাদে কি'বা বিস্বাদে পরিনত হয়।

তেমনি কাজল,টুলু, ছটকু আর ঝুম্পার বাবামায়ের ছোট্ট একটি পরিবারকে লেখক উপস্থাপন করেছেন জীবনঘড়িতে। বইটির বড় একটি অংশ জুড়ে রয়েছে বাবা ও মেয়ের পবিত্র সম্পর্কের কথা। পরিবারের একমাত্র সৌন্দর্য হলো মেয়ে। ক্লান্তশ্রান্ত বাবার পরমসুখের জায়গা। ব্যাস্ত মায়ের কষ্ট উপশম কারী। ছোট ভাই ছটকুর আশ্রয় স্থল। ঝুম্পা ছোট থেকে খুব যত্নে তার এই অবস্থানটি আগলে রেখেছে পরিবারে। পরিবারের যার যেমন চাওয়া ঝুম্পা ঠিক তেমনি। এখন সে দশম শ্রেণির পরীক্ষার্থী। কয়েকদিন বাদেই তার পরীক্ষা। পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে একটি কোচিং এর সাহায্য নেয়। কামাল কোচিং সেন্টার। কিন্তু সেই কোচিং তার জীবনের কাল হলে দাড়ায়। মানুষ রুপি অমানুষের অমানুষিকতার কাছে হেরে যায় ঝুম্পা। ঝুম্পার সাজানো জীবনের ছন্দপতন হয়ে যায়। শুধু মেয়ে হয়েছে বলে সামাজিক পারিবারিক সমস্ত কেলেংকারীর দায়ভার চলে আসে ঝুম্পার ঘারে। যে মেয়েটি এতোদিন ছিলো পরিবারের সবার চোখের মণি সে আজ সকলের বোজা হয়ে গেছে। বাবা-মা ভাই বোন পরিবার সমাজ সবাই তাকে গালমন্দ করতে লাগলো। পাড়াপ্রতিবেশির গালমন্দ সইতে না পেরে রাতের অন্ধকারে ঝুম্পা ঘর ছাড়তে বাদ্ধ হয়।

বড়ছেলে কাজল ছোট থেকেই বাবামায়ের অবাধ্য সন্তান। কিছদিন হলো সীমান্তে বিজিবির গুলিতে মারা পড়ে। মেঝো ছেলে এইসএসসি পর্যন্ত ভালো থাকলেও কর্ম জীবনে এসে বেকে যায়। বড়লোক বাবার একমাত্র কন্যাকে জীবনসঙ্গী বানিয়ে এখন সে ঘর জামাই। এখন ছটকুই একমাত্র সম্বল। সে ভালো ক্যালিগ্রাফি করতে পারে। পড়ালেখাতেও ভালো। টিউশনি করে নিজের পড়ালেখা করে আর অসহায় বাবা-মা কে দেখাশোনা করে। এভাবেই চলছিলো। হটাৎ  আট বছর পর ঝুম্পা ছটকুকে চিঠি লেখে। ভাই বোনের মধুর সম্পর্কগুলো এমনভাবে ফুটে উঠেছে চিঠিতে যে, পড়তে পড়তে মনের অজান্তেই চোখ ভিজে যায়।

বইটি শেষ হয়েছে অনেক পরিবারের সাথে বাস্তবতার মিল রেখে। বাবামায়ের অনেক সন্তান কিন্তু শেষ সময়ে কেউ পাশে নেই। যে যার মতো ছড়িয়ে পড়ে কিন্তু বুড়ো-বুড়ি আপন জায়গায় পড়ে থাকে। সন্তানদের বিরহে কাদতে কাদতে বাবা অন্ধ হয়ে যায়। ছেলে-মেয়ের সুখের দিন দেখার আশায় বুক বেধে থাকে কিন্তু আস্তে আস্তে সে আশা নিরাশায় পরিনত হয়ে যায়। এখন বাবার চার সন্তানে সুতো ছেড়া ঘুড়ি। কোথায় কোথায় উড়ে গেছে। বাবার হাতে রয়েগেছে নাটাই। ঘুড়ি ছাড়া নাটাই হাতে তিনি আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন বাবা। যদি একটা ঘুড়িরও দেখা মেলে আকাশে!  কিন্তু ঘুড়ি দেখা যায়না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.