নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনি ছেলেবেলায় এক বোষ্টুমি তার আগমনী গান হঠাৎ থামিয়ে বলেছিল শুক্লা দ্বাদশীর দিন অন্তরাটুকু শুনিয়ে যাবে তারপর কত চন্দ্রভূক অমাবস্যা চলে গেলো কিন্তু সেই বোষ্টুমী আর এলো না পঁচিশ বছর প্রতিক্ষায় আছি। কেউ কথা রাখেনি- সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
এদেশ নাকি স্বাধীন হয়েছে নতুনভাবে, এদেশের মানুষ নাকি স্বাধীনতার আস্বাদ পাচ্ছে। রিসেন্টলিই কিছু পোস্ট ভাইরাল হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, কক্সবাজারে রাতে সমুদ্র সৈকতে একা ঘোরাফেরা করা কিছু মেয়েকে বেশ্যা, পতিতা বলে আখ্যায়িত করে তাদের হেনস্তা করা হচ্ছে। কেউ কেউ দেখলাম লাঠিসোটা নিয়ে পুরোদস্তুর মারামারি পর্যায়ে চলে গিয়েছেন। বাহ! খুব স্বাধীনতা!
এ বিষয়ে আমি কয়েকটা কথা বলব।
প্রথমত, অবশ্যই মেয়েগুলোরই দোষ ছিল। ওদের এতো সাহস হয় কি করে একা একা সমুদ্র সৈকতে ঘোরাফেরা করে? দেশ হইল মুসলিমপ্রধান দেশ, সেখানে ওরা ধর্ম না মেনে রাতবিরাতে ঘোরাঘুরি করবে তাও একা একা! অশ্লীলতার চরম মাত্রা যারে কয়! ওরা অন্য ধর্মের হইলেও ওদের উচিত ছিল ইসলাম ধর্ম অনুসরণ করা। ধর্মকর্ম মানব না এতো বড় সাহস হয় ক্যামনে? আসতাগফিরুল্লাহ! প্যান্ট টি শার্ট পড়ে সৈকতে ঘোরাফেরা করে সৈকতের পরিবেশ নষ্ট করার অধিকার ওদের কে দিয়েছে? ওদের অবশ্যই উচিত ছিল হেজাব নেকাব পড়ে স্বামীর সহিত ঘোরাফেরা করা। ( যদিও এর পূর্বে হাজবেন্ডের সাথে ঘুরতে গিয়ে মেয়েকে রেপ করার কাহিনীও এদেশে ঘটেছে)। ওইখানেও মেয়েটিরও কোন দোষ ছিল এ নিয়ে আমি নিশ্চিত।
দ্বিতীয়ত, মেয়েগুলো নিশ্চিত বেশ্যা অথবা পতিতা ছিল। ভালো মেয়েরা তো সন্ধ্যার পর বাসার বাইরে বের হয়না। ওরা সৈকতে খদ্দের ধরার জন্য বসে ছিল। এইসব মেয়েলোকের জন্য ভালো ছেলেগুলো নষ্ট হয়ে যায়। তাই ওদেরকে শক্ত হাতে দমন না করলে এদেশের হাজারও সোনার ছেলেরা বিপথগামী হয়ে যাবে, তাতে ছেলেদের কোন দোষ নেই। সব দোষ ওই সৈকতে বসে থাকা বেশ্যা, পতিতা মেয়েগুলোর। তার উপর এতো টাইট ফিট প্যান্ট শার্ট পড়লে ছেলেদের নজর তো পড়বেই। ছেলেদের আর দোষ কি! সব দোষ ওই মেয়েদেরই।
তৃতীয়ত, সবচেয়ে বড় দোষ ওরা মেয়ে হয়ে জন্মাইল কেন?? ছেলে হয়ে জন্মাইলে তো এই বেশ্যা, পতিতার ট্যাগ নিয়া লাগতো না। সৈকতে একা বসে থাকার জন্য খদ্দের জোটানোর অভিযোগ আসতো না। এইযে মেয়ে হয়ে ওরা পাপটা করছে, এই পাপস্খলনের উপায় কি??
এ পৃথিবীতে বরাবরই সব দোষ মেয়েদের, সব পাপের একমাত্র পাপী মেয়েরাই। যুগে যুগে মেয়েদেরই তাদের সতীত্বের অগ্নীপরীক্ষা দিয়ে হয়, নিজের চরিত্র পরিষ্কার রাখার দায়ভার বয়ে বেড়াতে হয়। এদেশে সেই মাত্রাটা চরম। এদেশের মানুষ বরাবরই অন্যের বিষয়ে নাক গলাইতে পছন্দ করে, অন্যের জীবন নিয়ে গসিপ করা বা বানানো, কে কোন ধর্ম বিশ্বাস করে বা আদৌও সে ধর্মে বিশ্বাসী কিনা না জেনেই তাকে ধর্মের জ্ঞান দেয়া এবং জোরপূর্বক নিজের ধর্মে অন্যকে বিশ্বাস করানোর চেষ্টা করাকে তাদের নিজ স্বাধীকার চর্চা হিসেবেই ভাবে। ধর্ম একটি বিশ্বাস, আপনার ধর্ম আপনার বিশ্বাস, আপনি ডিফাইন করে দিতে পারেন না আপনার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটি কোন ধর্মে বিশ্বাস করবে বা সে কোন ধর্ম পালন করবে। আপনি শুধুমাত্র মেয়ে বলেই তাকে নষ্টা, পতিতা, বেশ্যা হিসেবে আখ্যায়িত করতে পারেন না। আপনি নিজ ধর্ম নিয়ে থাকুক, নিজের পছন্দমতো পোশাক পরিধান করুন, অন্যকে তার নিজের মতোন ধর্ম পালন করতে দিন, তার নিজের মতোন পোশাক পরতে দিন। মেয়েদেরকে মানুষ ভাবতে শিখুন। কক্সবাজারের ওই মেয়েগুলো যদি পতিতাও হয় ধরে নিলাম, তাও সে মানুষ। সে মেয়েগুলো পতিতা, বেশ্যা, তাই তারা অচ্ছুৎ, তাদের সৈকতে বসা পাপ, কিন্তু রাতের আধাঁরে ওই মেয়েগুলোকে যারা হোটেলে নিয়ে যায় তারা পাপী হয়না? তাদের চরিত্রহনন হয়না?? কখনও দেখলাম না হোটেলের রেটে ওই ছেলেগুলোর মুখ দেখাইতে, সব মুখ দেখায় এই নষ্টা মেয়েলোকদের। কেন??
সে মেয়ে তার আগে সে একজন মানুষ এইটুকু ভাবতে আপনাদের এতো কষ্ট হয় কেন বলেন তো?? মেয়ে ভাবার আগে মানুষ হিসেবে ভাববেন এইটুকু কি খুব বেশি চাওয়া???
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫৮
কৃষ্ণপক্ষের বোষ্টমী বলেছেন: আমি ক্ষুদ্র মানুষ, এতো কিছু বুঝিনা। আমি চাই মেয়েদেরকে মানুষ হিসেবে অধিকার দেয়া হোক, এই মা বোন মেয়ে এর বাইরেও তার একটি পরিচয় আছে, সে একজন মানুষ। আমার আপনার মতোই মানুষ। আমরা কেন সেটা ভাবতে পারিনা কে জানে!
২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:৩২
রিফাত হোসেন বলেছেন: ভাইরাল ভিডিওটি তৃতীয় লিঙ্গের ছিল। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া সমর্থনযোগ্য নয়, যেখানে stability হচ্ছে। মেয়ে হোক ছেলে হোক আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া সঠিক নয়। আর ছেলেটি সম্ভবত স্থানীয়। দেশি-বিদেশী যেই হোক, আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না। স্বাভাবিক প্রতিবাদ করলে ভাল হয়। এখানে ধর্মকে টেনে এনে partiality করে তথ্য পরিবেশনও কাম্য নয়। ধর্ম যেখানে সঠিক বার্তা দেয় যেটা গ্রহণ করতে আপত্তি কেন হবে? ধর্মের কোন বার্তা যদি ক্ষতির কারণ হয় তাহলে তা আলোচনা সাপেক্ষে সমাধানে আসতে হবে।
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫৬
কৃষ্ণপক্ষের বোষ্টমী বলেছেন: আপনি কোন ভিডিও দেখেছেন আমি জানিনা। তবে বেশিরভাগই মেয়ে ছিল, যাদের কান ধরে উঠবস করানো হয়েছে, লাঠি দিয়ে প্রহার করতে উদ্যত হয়েছে। আমরা বাঙালিরা মনে করি, আমাদের ধর্মে যা পাপ তা অন্য ধর্মেও পাপ এবং অন্যকে তা মানতে বাধ্য করি। যেমন পোশাকের ব্যাপারটা। আপনার ধর্ম আমার বিশ্বাস, আপনার ধর্ম আপনার বিশ্বাস। আমি আপনাকে আমার বিশ্বাসে বিশ্বাসী হওয়ার জন্য জোর করতে পারি না। আমার ধর্ম নিয়ে মূল বক্তব্য সেটাই ছিল। কক্সবাজারে কোন মেয়ে প্যান্ট শার্ট পড়ে ঘুরে বেড়াবে আর কোন মেয়ে হেজাব নেকাব পড়ে ঘুরে বেড়াবে এটা তার নিজস্ব ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। আপনি আমি কেউ ই না তাকে পোশাকের জন্য কান ধরে উঠবস করানোর কিংবা হেজাব নেকাব পড়তে বাধ্য করার। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আইন হাতে তুলে নেয়া যাবে না। মেয়েটি পতিতা হলেও যাবে না। যারা এই অন্যায় কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের সমাজ ব্যবস্থাই মেয়েদেরকে পতিতা বানাচ্ছে। অনেক মেয়েকে জোর করে পতিতা বানানো হচ্ছে অথবা বা তারা নিরুপায় হয়ে এই পথে আসছে। আমরা এদের ফিরে আসার কোন পথ খোলা রাখিনি। তবে বিত্তশালী পতিতাদের কথা আলাদা। তারা দেহ ব্যবসা নিজের ইচ্ছাতেই করে থাকে।
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৩
কৃষ্ণপক্ষের বোষ্টমী বলেছেন: কখনও রাতের অন্ধকারে পতিতাদের কাছে যারা আসে তাদেরকে শাস্তি পেতে দেখেছেন? পতিতাদের নাম পতিতা কারণ তারা দেহব্যবসা করে। কিন্তু কাদের কাছে এরা নিজের দেহ বিক্রি করে? তাদের কোন আলাদা নাম নেই, তাদের কোন কলংক নেই। তারা দিনের আলোর মতোন শুদ্ধ থাকে, আর রাতে এসে নিজের জৈবিক ক্ষুধা মেটায়।
৪| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬
নতুন বলেছেন: যারা এমন ভাবে নারীকে হেনস্তা করতে চেস্টা করবে তাদের আইন সৃংখলা বাহিনির হাতে তুলে দিতে হবে।
এদের কঠোর ভাবে দমন করতে হবে।
বিশ্বের পর্যটন শহরে মানুষ নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে। নিরাপদ বোধ করে।
এলাকার মানুষকেও সচেতন করতে হবে, যাতে তারা এমন মনমানুসিকতার মানুষদের প্রতিরোধ করে।
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৬
কৃষ্ণপক্ষের বোষ্টমী বলেছেন: আজ পর্যন্ত এসব ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখলাম না। ব্যাপারটা হতাশাজনক!
৫| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: এরা জামাত শিবিরের লোক। যারা মাজার মন্দির ভাংছে তাদের লোক, হতে পারে পতিত সরকারের এজেন্টও।
১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭
কৃষ্ণপক্ষের বোষ্টমী বলেছেন: কেউ বলবে জামাত শিবির, কেউ বলবে আওয়ামী লীগ, যে যাই বলুক। এসব বন্ধ হোক। মেয়েরা মানুষ হিসেবে সম্মান পাক, আমার আপনার মতোন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ২:১৯
অনুপম বলছি বলেছেন: বাংলাদেশের ছেলেরা কি জানেনা, ওই মেয়ে গর্ভ না থাকলে আমরা ছেলেরাও জন্মাতে পারতাম না!!!