নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবীও একদিন হয়ে যাবে শেষ আমাদের প্রেম তবু হবে নাতো ক্ষয়

ইন্দ্রনীলা

ইন্দ্রনীলা › বিস্তারিত পোস্টঃ

নীলা

৩০ শে জুলাই, ২০২১ ভোর ৪:৪০


- তুই তোর আর তোর স্বামীর মাঝে একটা বালিশ রেখে ঘুমাবি।
- আচ্ছা
- তোর গায়ে যেন কোনোভাবেই তার হাত না লাগে
- আচ্ছা
- তুই আরেক দিকে ফিরে শুবি।
- ঠিক আছে।
- ঠিক আছে না?
- হ্যাঁ ঠিক আছে।
- সব ঠিক আছে তো বিয়ে করলি কেনো ঐ বদমাসটাকে? চাপা আক্রোশে ফেটে পড়ে অর্ণব।
- আরে তুই তো তখন ছিলি না। আমি কি করে বিয়ে ঠেকাবো?
- কি করে ঠেকাবি মানে কি? সাধু সাজবি না।
- মানে কি?
- হ্যাঁ একদম সাধু সাজবিনা।
চুপ করে থাকে নীলা।
- তোরে বিয়ে করতে বললো আর তুই নাচতে নাচতে রাজী হয়ে গেলি?

নীলা চুপ থাকে। কারণ সে জানে এসবের হাজারও সদুত্তরে কোনো লাভ নেই অর্নব কোনোকিছুই বুঝবে না, কোনো কিছুই মানবে না। নীলা এও জানে অর্নবের বুকের বয়ে চলা ঝড়। তার নিজের বুকেও কি কম বাজে? কিন্তু কি করবে সে? কি বা করার ছিলো?

- বারোটা বছর। বারোটা বছর কেমনে কাটছে আমার জানি? খবর রাখিস কিছু?

অর্নবের চোখে পানি ছলছল করছে। নীলা মাথা নীচু করে বসে থাকলেও দেখতে পায় ঠিক ঠিক। ওমন বিশালদেহী এত বড় ছেলেটার চোখে জল। কিছুতেই সহ্য করতে পারে না নীলা। ইচ্ছে করছে ওকে বুকে জড়িয়ে ধরতে। এতদিনের ওর জমানো সব দুঃখগুলোকে শুষে নিয়ে নিতে। পারছে না সে। নীলা আজ অন্যের ঘরনী। ওর ছেলের বয়সও নয় পেরিয়েছে। এই তো কাছেই উল্টোদিকে ফিরে বসে আছে অর্নব। কিন্তু ওকে ছোঁয়া আজ তার নিষেধ। নীলার বুক ফেটে যায়। অনেক কষ্টেও আজ কান্না ঠেকিয়ে রেখেছে সে। ইচ্ছে করছে অর্ণবের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ওর সারাজীবনের কান্না কেঁদে নিতে। অর্নব হাউমাউ কাঁদতে থাকে। নীলার ভীষন কষ্ট হচ্ছে। ভয়ও। ভোর হয়ে আসছে। কখন কে জেগে ওঠে। দেখে ফেলে ওদেরকে।

মনে পড়ে আজ থেকে ১২ বছর আগের কথা। সেদিনও ভোর হয়ে আসছিলো। একটু পরেই আজান দেবে। সেদিনও অর্ণব হাউমাউ করে কাঁদছিলো। ঐ তো অদূরে নীচু ট্যাংকটার উপরে বসেছিলো নীলা। অর্ণব ওর পায়ের কাছে বসেছিলো। অর্ণবের মত ওমন অতো বড় একটা ছেলে এমন করে কাঁদতে পারে বিশ্বাসই হচ্ছিলো না নীলার। দুহাতে জড়িয়েছিলো সে অর্ণবকে সেদিন। সেই দুঃখটা দুঃস্বপ্নের মত বাঁজে নীলার বুকের গভীরে আজও। দুঃস্বপ্নও দেখে সে। সেই সূচীশুভ্র শরতের ঝকঝকে আকাশ আর মিষ্টি খোলা হাওয়ায় এই পৃথিবীর বুকে সকলের অজ্ঞাতে কান্নারত দুটো মানব মানবীর নীরব সাক্ষী হয়ে আছে এই ছাঁদ।

অর্ণবের উপর সমন জারী হয়েছিলো। তাকে এ বাড়ি ছেড়ে যেতে হবে দূর দেশে। নীলাকে ভুলে যেতে হবে একেবারে। কতইবা বয়স তখন তার ২২। সেই বয়সেও অর্ণব পৃথিবীর সব কিছু ছেড়ে নীলাকে নিয়ে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলো। কিন্তু নীলা রাজী হয়নি। কিসের ভয়ে কোন কারণে জানেনা নীলা। শুধু এটাই জানতো অর্ণব হারিয়ে যাচ্ছে। কোনোভাবেই বড় চাচী মেনে নেবেননা তাদের এই সম্পর্ককে। অর্নবের সাথে কত স্মৃতি। প্রথম প্রেম, প্রথম চুম্বন। ঐ তো ঐ ছাদের সিড়িঘরেই হঠfৎ জাপটে ধরে চুমু খেয়েছিলো অর্ণব। তার কান্ড দেখে তো রীতিমত থ নীলা। এরপর দুইদিন সে আছন্নের মধ্যেই ছিলো। কি হলো বুঝতেই পারছিলোনা যেন। তখন কত হবে নীলা ক্লাস টেন আর অর্নব কলেজ ফার্স্ট ইয়ার।

এরপর দুজনের লুকিয়ে বেড়াতে যাওয়া। একই বাড়িতে থেকেও ফোনে লুকোচুরি। সকলের চোখ ফাকি দিয়ে চুমু খাওয়া। সে এক প্রলয়ঙ্কারী পাগল পাগল ভালোবাসা। অর্ণব টাকা জমিয়ে কত কিছুই কিনে আনত যে। সেসব ভেবেও কান্না পায় নীলার। সব শেষ হয়ে গেলো। দীর্ঘশ্বাস পড়ে নীলার। অর্ণব শান্ত হয়ে বসে আছে। কাছেই কিন্তু ওর দিকে পিঠে ফিরিয়ে। ছোট চেকের শার্টের উপর দিয়ে ওর পিঠে ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করে নীলার। কিন্তু শ্বাসত নিয়মের বেড়াজালে আটকে যায় ওর আঙ্গুলগুলো। নাহ এটা অন্যায়।

ভোর হয়ে আসছে। হঠfৎ উঠে দাঁড়ায় অর্ণব। নীলার সামনে এসে দাঁড়ায়। এক ঝটকায় টেনে উঠায় ওকে। তারপর সেই প্রথম দিনটির মত গভীর চুম্বনে বুঝি গত এক যুগের ভালোবাসা ঢেলে দিয়ে যায় ওর ঠোঁটে। নীলা কাঁপতে থাকে। ঘোরগ্রস্থা হরিনীর মত। অর্নব বলে,

-নীলা আমি চলে যাচ্ছি। আর কোনোদিন তোর সামনে আসবো না। তুই তো এটাই চেয়েছিলি তাই না? শুধু মনে রাখিস তোর জন্মই হয়েছিলো আমার জন্যই। তুই আর কখনই কাউকে ভালোবাসতে পারবিনা। সেই অধিকারেই তোকে আজ ....
থামলো একটু অর্ণব। তবুও এই সংসারে এই সমাজে যে স্থান গড়েছিস তুই সেই সমাজ আর সংসারের নিয়ম নীতি আর বেড়াজালে
বিসর্জন দিয়ে গেলাম তোকে। তুই অন্তত ভালো থাক।

অর্ণব চলে গেলো .......

নীলার বলা হলো না নীলা ভালো নেই, ছিলো না কোনোদিন আর থাকবেও না কখনও।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম।

৩০ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:২৮

ইন্দ্রনীলা বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

না পড়লেও চলবে এই আবোল তাবোল ডায়েরী।

২| ৩০ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৮:১৬

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: নিলা আর অর্ণব দুজনেই দূরে থাকুক কিন্তু ভালো থাকুক ১২ বছর আগের সৃতি বুকে নিয়ে। গল্প ভালো লাগলো।

৩০ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:১০

ইন্দ্রনীলা বলেছেন: ইহা গল্প নয় গল্পের খসড়া

৩| ৩০ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৪৯

জহিরুল ইসলাম কক্স বলেছেন: এরা কাউকে ভালো থাকতে দেয় না।না নিজে,না সন্তান, না ঘর না পর।

৩০ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:১০

ইন্দ্রনীলা বলেছেন: হ্যাঁ কি যে বিপদ এদেরকে নিয়ে।

৪| ৩০ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:২৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: নীলা আর অর্ণবের প্রণয় পূর্ণতা পেল না, দুঃখজনক। কিন্তু কোন দুঃখই চিরস্থায়ী নয়।

৩০ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৪৭

ইন্দ্রনীলা বলেছেন: দুঃখ চিরস্থায়ী। মনকে প্রবোধ দিতে চিরস্থায়ী হয় না।

৫| ৩০ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:২৬

নাজনীন১ বলেছেন: সমাজ মানবে না, কিন্তু অনুভূতিগুলো বাস্তব এবং জটিল!

৩১ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১২:১৩

ইন্দ্রনীলা বলেছেন: এই বাস্তব অনুভূতির প্রকাশ ভাষায় সম্ভব না। ধন্যবাদ আপনাকে।

৬| ০১ লা আগস্ট, ২০২১ রাত ১:১৯

ঢুকিচেপা বলেছেন: “নীলার বলা হলো না নীলা ভালো নেই”
নীলা তো সবার কোয়ালে সয় না, তবে নীলারা সবসময় ভালো থাকে।

গল্প পড়ে ভালো লেগেছে।

০১ লা আগস্ট, ২০২১ রাত ২:৩৯

ইন্দ্রনীলা বলেছেন: কোয়াল কি ভাই?

৭| ০১ লা আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০২

মিরোরডডল বলেছেন:



তুই অন্তত ভালো থাক।

সেটাই, দুজন একসাথে ভালো না থাকলেও সে অন্তত ভালো থাক ।
কিন্তু দূর থেকে এটা মনে হলেও, সেকি আসলে ভালো আছে ?
নাহ ! আমি জানি সেও ভালো নেই ।
একজনকে কষ্ট দিয়ে আরেকজন ভালো থাকতে পারে না ।

আপুটা, এই গল্পটাও চমৎকার হয়েছে :)




০১ লা আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:১৭

ইন্দ্রনীলা বলেছেন: এই গল্পটাও?

আর দুইটাও পড়ছেন নাকি আপা?

পরের দুইটাও পড়েন।

লাস্টেরটা পড়লে আপনি অনেক হাসবেন।

৮| ১০ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:৫১

একলব্য২১ বলেছেন: ইন্দ্রনীলা নামটা বেশ। গুগল করে এর অর্থ বের করলাম। সব রত্ন-পাথরের মধ্যে ইন্দ্রনীলা (Blue Sapphire) বা নীলকান্তমণি সবচেয়ে মারাত্মক এবং দুষ্প্রাপ্য। লেখিকার নিশ্চয়ই জানা আছে।

সব প্রেমিকা নিশ্চয় তার প্রথম প্রেমিকার জন্য এরকম ছটফট করে না। নাকি নীলা অনেক বেশী সংবেদনশীল। বা এমনটা কি তার বর্তমান স্বামী তার সংবেদশীল মনের সূক্ষ্ম অপূর্ণতাকে পূরণ করতে পারেন নি বা তার সংবেদনশীল মনের আদৌও কোন খোঁজই নেয় নি। তাই প্রথম প্রেমিকে জন্য নীলার এই আকুলতা। নাকি শাস্ত্রে বলে মেয়েরা প্রথম প্রেম ভুলতে পারে না। লেখিকা এই সার্বিক ব্যাপারে কি বলেন।

১২ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:১১

ইন্দ্রনীলা বলেছেন: হ্যাঁ এটা আমার ব্যবহার্য্য নীলা। জ্যোতিষী পরতে বলেছিলো। সকল অঘটন কাটাতে। কিন্তু আরেকটা কথা আছে অঘটন ঘটন পটিয়সী। জ্যোতিষী কি সেটা জানতো?

পরেের অংশটুকু উত্তর দিতে গেলে গবেষনার প্রয়োজন হবে।
এত সহজে এত অল্প সময়ে সে কি আর হবে?

তার থেকে তুমি শুনিতে চেও না আমার মনের কথা। কবির ভাষায় বললাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.