নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তত্ত্ব, তথ্য ও অনুভূতি ভাগাভাগি করা আমার অভিপ্রায়। কারও যদি ইচ্ছে হয় তবে যে কেউ আমার এই ব্লগের যে কোন কিছু নিজের সংগ্রহে রাখতে পারে।
যারা কক্সবাজার বা কুয়াকাটায় সমূদ্র দেখতে দেখতে হতাশ, তারা হয়ত ভিন্নতা আনতে পাহাড়ী এলাকায় যান। তবে যোগাযোগের সুবিধার্থে বেশিরভাগ সাধারন মানুষ সিলেটেই আসে। পাহাড় দেখা আর ঝরণা স্নান দুটোই এক সাথে চলে। উপরি পাওনা চা বাগানের সবুজের আলিঙ্গন।
কিন্তু এই ভরা ট্যুরিস্ট সিজনে ছিনতাই আর ঠগবাজির কারনে ভ্রমনকারীরা খুবই বিরক্ত এবং আতঙ্কিত। গত দেড় মাসে সিলেট সদরে জিডির সংখ্যা প্রায় ৮০০। তারমধ্যে প্রায় ৩৫০টি শুধু ছিনতাই বা চুরি বা পকেটমার। এর মধ্যে বেশ কয়টি ভিডিও ভাইরাল। পুলিশের কোন দৃশ্যমান তৎপরতা নেই।
আমি নিজেও একজন ভুক্তভোগী। আমার যে স্থানে পকেটমার হয়েছে, তার ১০০হাতের মধ্যে ৩ টি সিসি ক্যামেরা ছিল। যে সময়ে ঘটেছে সে সময়টিও জিডিতে উল্লেখ করেছি। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। হবেও না। তদন্তকারীর ৫ মিনিট লাগবে ভিডিও ফুটেজ দেখে চোর কে বের করতে। অথবা চোর সর্দারদের সাথেও তাদের যোগাযোগ থাকে। জিনিসটা খুজে পাওয়া কোন ব্যাপার না। কিন্তু উনারা মহাব্যস্ত। তারওপর স্পিড মানি আমি দেইনি। ৬ দিন ঘোরাঘুরির পর হাল ছেড়ে দিয়েছি। তাই ভ্রমনকারীদের সর্তক করতে পোস্ট লিখছি।
কেউ হোটেল মোটেলের পার্কিং এরিয়া ছাড়া পার্ক করবেন না। কেউ গাইড ছাড়া চা বাগানে ঢুকবেন না। ঢুকলেও ৫-৬জনের টিম নিয়ে যাবেন। ২-১জন হলে দরকার নেই।
কেউ শপিং করতে রাস্তায় হেটে যাবার সময় মোবাইলে কথা বলবেন না, কাধের ব্যাগ বুকের সামনে রাখবেন। যেখানে জটলা তার ধারকাছ দিয়ে যাবেন না।
পর্যটন স্পটের কোন দোকান থেকে চকলেট বা চা কিনবেন না। কসমেটিক্সের তো প্রশ্নই আসে না। সবই এপার বা ওপারের নকল। চা তৈরী হয় কাঠের গুরা + কাপড়ের রং দিয়ে। ২০০-৩০০টাকা পার কেজি বলবে। সস্তার তিন অবস্থা। চা'র পানি ফুটলেই দেখবেন কাঠের গুড়ার গন্ধ।
হোটেলে খাবার আগে মেনুর দাম শুনে বা প্যাকেজে কি কি থাকবে শুনে খেতে বসবেন। নয়ত ১৫০টাকার মাছ ভাত ৫০০টাকায় খেতে হবে।
নৌকায় ওঠার আগে ভাড়া ঠিক করে মাঝির মোবাইল নাম্বার নিবেন। হয়ত আসা যাওয়া ১০০০টাকা ঠিক করেছেন, স্পটে নামায়ে দিয়ে সে আর ফিরবে না। আপনাকে নতুন করে ভাড়া দিতে হবে। ট্যুরিস্টদের কাছে গাড়ি ভাড়া অনেক চায়। যাচাই করে নিবেন।
যাই হোক লাইনে ফিরে আসি। সিলেটে পুলিশের গা-ছাড়া ভাব আগে এতটা ছিল না। থানায় এখন সাধারন সেবা পাওয়া যায় না বললেই চলে। হয় রেফারেন্স থাকতে হবে , না হয় আপনার ভাল স্ট্যাটাস থাকতে হবে। আমজনতার ভাত নেই।
স্কুলে যখন বাচ্চাকে ভর্তি করাতে গেলাম, তাকে ব্যাসিক কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে ভর্তি নিয়েছিল। আবার যখন বছর শেষে পরীক্ষা দিয়ে উপর ক্লাসে উঠে তখনও বাচ্চাদের যোগ্যতার প্রমান দিতে হয়। কিন্তু সে পুলিশ বাহিনী সাধারন মানুষের সাধারন সমস্যায় নিজেদের সক্ষমতার পরিচয় দিতে পারে না, কি করে ভাবব তারা আরও জটিল ব্যাপারে জনগনের সাহায্য করবে?
পুরো শহরে প্রত্যেকটা ফুটপাতে চাঁদা তোলা হয়। প্রত্যেকটা ট্রাক থেকে চাঁদা তোলা হয়। প্রত্যেকটা পয়েন্টে সিএনজি / অটোরিক্সা থেকে মাসোহারা তোলা হয়। টোকেন নিয়ে নাম্বার ছাড়া গাড়ি চলে। সবই সিন্ডিকেট, বিশেষ ব্যবস্থা। ২০০টাকার ভাড়া যদি ৪০০টাকা একদাম বলে। অবাক হবেননা। আপনি যদি বলেন, থানায় অভিযোগ করবেন। উল্টো ঝাড়ি খেতে হবে, তারা হাসতে হাসতে বলবে। থানায় ম্যানেজ করা আছে। কিচ্ছু করতে পারবেন না। শুনলে আশ্চর্য হবেন। বাসা বাড়িতে যে ড্রিঙ্কিং ওয়াটার সাপলায় দেয়, থানা সেখানেও থাবা দেয়। ৫টাকার পানি গ্রাহকের হাতে পৌছাতে ৫০টাকা পরে।
সিলেটে অনেক ট্যুরিস্ট স্পট। নানা জায়গায় দেখবেন ট্যুরিস্ট পুলিশের সাইন বোর্ড। ট্যুরিস্ট পুলিশ আপনার সাহায্যে সদা প্রস্তুত। বাস্তবে যাহা লাউ তাহাই কদু। কোন ফায়দা নেই যদি আমজনতা হন। তবে কেউ পানিতে তলিয়ে গেলে বা রোড এক্সিডেন্টে মারা গেলে দেখবেন, সাংবাদিকদের বয়ান দিতে কয়েক ঘন্টা পর সব শেষ হলে হাজিরা দিয়েছেন ওনারা।
এখন মানুষ জিডি করে যাতে জিডির কাগজ দেখিয়ে প্রতিলিপি তুলতে পারে বা সত্যতা প্রমান করতে পারে অথবা অন্য ফায়দা পেতে পারে। আর কিছু না।
কিন্তু কথা হল, এই যে আমি মূল্যবান কিছু জিনিস হারালাম, যেগুলো নতুন করে তুলতে কম করে হলেও ২০ হাজার টাকা খরচ হবে, সাথে হয়রানি আর দিনের দিনের পর দিন অফিস আদালতে ঘোরা এর শেষ কোথায়। রাস্তায় রাস্তায় এত এত সিসি ক্যামেরা, ৫ কি.মি. এর মধ্যেই আর একটি থানার অবস্থান, আইটি বিশেষজ্ঞ। তাতে ফায়দা কি? আমরা সাধারন মানুষ কি পাই? সব জায়গায় অদৃশ্য লেনদেন চলে। মাফ নাই।
একদিকে ট্রাফিক পুলিশ বলে অর্জিনাল পেপার দেখান, স্মার্ট কার্ড দেখান, ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখান, ব্যাঙ্কে NID দেখান... । ফপোকপি ওনাদের দেখলে চলে না। আবার হারালে জিডি করো, ক্লিয়ারেন্স তোল ইত্যাদি ইত্যাদি। ভিআইপিরা দেশ ঠোসা বানায়ে ফেলল, তাতে কিছু হয় না, আর মা কে ৫ হাজার টাকা পাঠাবো ওষুধ খাওয়ার, ক্যাস ডেস্ক কে NID দেখাতে হয়। টানা গাড়ি অক্সশন নাম্বার বা থানা জিডি নাম্বার দিয়ে চলে, কিচ্ছু হয় না। কিন্তু যে অর্জিনাল পেপারস এর ফটোকপি নিয়ে ঘোরে তার ৩০০০টাকা ফাইন হয়। দারুন না?
এই যে আমি লেখাটা লিখলাম। দেখবেন আমার আই পি এড্রেস বের করে একশান নিবে আমারই উপর। অথবা পোস্টটি মুছে ফেলা হবে। আপনারা কেউ কেউ হয়ত ভয়ে কমেন্টও করবেন না ... এটাই বাস্তব।
০৩ রা অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৫:২৯
অপলক বলেছেন: সিলেটে তো ভাল খাবার খেতে কেউ আসেনা ভাই। খবরে দেখলাম, সস্তায় মদ-বিয়ার খেতে বেশিরভাগ মানুষ সীমান্ত এলাকার ট্যুরিস্ট স্পটে আসছে। যেখানে সেখানে বোতল ফেলছে, পরিবেশ দূষণ হওয়ায় এলাকাবাসি আন্দোলন করেছে।
২| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ২:২২
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: সেই লাস্ট ২০১৩ সালে গিয়েছিলাম সিলেটে। তখন পরিবেশ বেশ ভালো ছিল। আপনার স্ট্যাটাস পড়ে আমারতো এখন রীতিমত ভয় লাগছে। এটাতো পর্যটকদের জন্য বড় একটা বাধা। বিস্তারিত জানানোর জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
০৩ রা অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৫:৪০
অপলক বলেছেন: ২০১৯ সালের পর থেকে সিলেটের অবস্থা খারাপ হতে শুরু করেছে। আগেও চুরি ছিনতাই হত, এখনকার মত এতটা না। লোকাল লোকজন অবরাধ করলে আপনি প্রতিবাদ করতে পারবেন না, তার খুব সোচ্চার, সংঘবদ্ধ। ট্যুরিস্টরাও ঝামেলায় জড়াতে চায় না। চেপে যায়। তবে এই না যে, সবাই ও রকম। বেশির ভাগ মানুষই ভাল।
২০১৩ আর ২০২৩ এর সিলেট অনেক পার্থক্য। কিছুটা ভাল হয়েছে, কিছুটা খারাপও হয়েছে...
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ২:০০
বাকপ্রবাস বলেছেন: সিলেটে খাবার মান ভালনা কিন্তু দাম ভাল, দারুণ দাম রাখে
দেশ উন্নয়ণ এর জোয়ার কিন্তু নিরাপত্তায় ভাটা