![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তত্ত্ব, তথ্য ও অনুভূতি ভাগাভাগি করা আমার অভিপ্রায়। কারও যদি ইচ্ছে হয় তবে যে কেউ আমার এই ব্লগের যে কোন কিছু নিজের সংগ্রহে রাখতে পারে।
উত্তারাঞ্চল: উত্তারাঞ্চলের ছেলে আমি। আমাদের এদিকে খাবারের তেমন কোন আহামরি বৈচিত্র নেই। কিন্তু অন্য অঞ্চলের যারা খায়, তারা মনে রাখে রান্নার স্বাদ। একই মেনু একেক রাধুনীর হাতের রান্না একেক রকম। মশলা হিসেবে, কমন কিছু গরম মশলা যেমন ডারচিনি, সাদা এলাচ, কাল এলাচ, লং, আদা রসুন পেয়াজ... ব্যবহার করে সবাই।
তবে পুরপুরি বা চচ্চরিতে বিশেষ কোন পার্থক্য নেই। অন্য অঞ্চলে আমি অবশ্য এই মেনুটা কমই দেখিছি। এক ঘেয়েমি খাবার উত্তারাঞ্চলের মানুষ তেমন একটা পছন্দ করে না। প্রচুর শাক সবজি তাদের পছন্দ। আসলে কত জাত বেজাতের শাক পাতা, এরা যে খায় তার শেষ নেই।
বাসা বাড়িতে কমন খাবার রেসিপি হল, গরুর ঘন ভুনা, গরুর কসানি, আলু ঘাটি, মাঝারি মাছের সবজির ঝোল, আলুর নানা পদ। রংপুরের মানুষ অবশ্য আদা গাছের মত অন্য একটি মশলা জাতীয় গাছ ব্যবহার করে, সেটা দিলে গরম মশলা দেয়া লাগে না। সাবধান: রংপুর কুড়িগ্রামের মানুষদের দাওয়াত দিলে মনে রাখবেন একজন আসলে একজন না, ২ থেকে ৩জনের খাবার খাবে।
হাঁসের ভুনা মাংস খেতে গেছি ভাবির হোটেলে। আহামরি কিছু না, তার চেয়ে আমার ঘরনী বা মাউই মা হাসের মাংস অসম্ভব ভাল রান্না করে।
দক্ষিনাঞ্চল: চুই ঝাল চুই ঝাল শুনতে শুনতে অস্থির। কয়েক হোটেল এবং আত্মীয়ের বাসায় (বৈবাহিক সূূত্রে) খেলাম। আহামরি কিছু না। তবে নারকেলের বহু আইটেম খাবার বানাতে পারে তারা। তালের গুর বা গোল পাতার গুড় অন্য রকম স্বাদের। আমার দেখা মতে, খুলনা ডিভিশনের মানুষরা সবচেয়ে বেশি প্রকারের পিঠা বানাতে পারে। এত এত বৈচিত্রময়, যে পিঠা মেলাতেও দেখা যায় না। অনেক মাছও খায় তারা। তবে বরিশাল পটুয়াখালির মাছের পদ বেশির ভাগ সময় আমি ট্যাল ট্যালা টাইপের ঝোল পেয়েছি। চিংরিও ভাল রান্না করে। আর যাই হোক উত্তর বঙ্গের মত হয় না। খাবারের স্বাদে সেরা উত্তর বঙ্গের খাবার।
পূর্বাঞ্চল: পূর্বাঞ্চল তো সিলেট ডিভিশনও বুঝায় আবার চিটাগং ডিভিশনও ভাবতে হয়। সিলেটের কথা বলতে পারি। তারা শুটকি আর সিদল পাগল। প্রচুর মাছ খায়। দু:খের বিষয় এরা মাছ বা শুটকি উত্তারাঞ্চলের মত স্বাদের বানাতে পারে না। আমি উত্তরবঙ্গের ছেলে বলে বলছি না। আসলেও তাই। আর একটা ব্যাপার। চায়ের দেশ সিলেট হলেও, ওরা ভাল চা বানাতে পারে না। শাক পাতা খুব কমই খায়। প্রচুর পান খায়। আপনি কোথাও স্বজনে গাছ খুজে পাবেন না, খেজুর বা তাল গাছ খুবই রেয়ার। এ গুলো থেকে যেকোন খাবার, তাদের খাবার মেনুতে অনুপস্থিত। বলা ভাল খুবই কম। তবে আখনি, সাতকরা দিয়ে গরুর গোসত বা বিফ রেসিপি খুব খায়। সত্য বলতে সাতকরা দিয়ে খাবার আইটেম গুলা খুব একটা স্বাদের কিছু না। হিন্দুদের মেনুতে মশলার অনেক বৈচিত্র আছে। তাদের সবজির পদ গুলো চমৎকার হয়। চা শ্রমিকদের বা মনিপুরিদের খাবার সম্বন্ধে তেমন ধারনা নেই।
চিটাগং এর কালো ভুনা খেয়েছি। এক কথায় দারুন। তবে পার্বত্য চট্রগ্রাম অঞ্চলের খাবার দাবার ব্যাপারে আমার তেমন একটা ধারনা নেই। তবে আপনারা যারা পড়ছেন, দয়াকরে কমেন্টে জানাবেন।
ঢাকা ডিভিশন বা মধ্যাঞ্চলের কথা আর নাই বলি। এরা কি যে খায় আর না খায়। এদের এখানে সব চলে। তবে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা শ্রেণীর মানুষ ঢাকায় আসে। তাদের ক্রিয়েটিভিটির অভাব নাই। আসলে জীবন যেখানে যেমন। প্রতিযোগিতা মানুষকে বদলে দেয়।
খাবার খেতে খুব যে পছন্দ করি তা না। তবে ভাল হলে, প্রশংসা না করে পারি না। বগুড়ার দই কম বেশি প্রতি মাসেই খাওয়া হয়। মহস্থান গরের কটকটি, কুমিল্লার মাতৃভান্ডারের রসমালাই, সাতক্ষীরার মিষ্টি, নাটোরের কাঁচা গোল্লা, বগুড়ার এশিয়ার মিষ্টি, দিনাজপুরের তিলের জিলাপি, পুরান ঢাকার হালিম, বাগমারার গোপালভোগ, রংপুরের হাড়িভাঙ্গা, চাপায়ের হিমসাগর, বরিশালের আমড়া, বগুড়ার আলুঘাটি, সিলেটের হাওরের বোয়াল/রুই/কালি বাউস মাছ, খুলনার ভাগান/ভেটকি মাছ, পদ্মার ইলিশ, শ্রীমঙ্গলের লাড্ডু আনারস, খুলনার সফেদা, চিরিরবন্দরের লিচু, আর অন্যদিকে মা + ঘরনীর হাতের রান্নার ভক্ত আমি।
০৮ ই মে, ২০২৫ রাত ১১:৩২
অপলক বলেছেন: নিমচি নামের কিছু চিনি না আপু। নিমকি বা নেমকি একটা তেলে ভাজা আইটেম আছে বিভিন্ন আকারের। পান্তুয়া বা মিষ্টি বরা হল অনেকটা তেল পিঠার মত খাবার। অন্যদিকে লবঙ্গ লতিকা বা লবঙ্গ চিনির সিরায় ডুবানো অসাধারন পদ, আমাদের স্কুলের একটা নিয়মিত টিফিন ছিল। খুব ছোট বেলায় আমরা চিনির সিরায় বেঞ্চ মাখা মাখি করে ফেলতাম।
০৮ ই মে, ২০২৫ রাত ১১:৩৪
অপলক বলেছেন:
২| ০৯ ই মে, ২০২৫ সকাল ১০:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: যত যা-ই বলেন, বিক্রমপুরের রান্না বেস্ট।
০৯ ই মে, ২০২৫ সকাল ১০:৩৯
অপলক বলেছেন: প্রমান দেন। না হলে আমাদের সব ব্লগাদের দাওয়াত দেন... সার্টিফাই করে দিবো, বিক্রমপুর ইজ দ্যা বেস্ট...
৩| ১০ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:২৬
মুক্তা নীল বলেছেন:
সিলেটের মানুষ অতিথি পরায়ণ । আপনি তো ভাই জন্মসূত্রে সিলেটি না এছাড়াও জানিনা কত বছর সিলেটে কাটিয়েছেন কথাটি এ কারণে বললাম সিলেটে যেকোনো বয়সের মানুষ সকালবেলা চা ছাড়া দিন শুরু করেন না অবশ্য এর মধ্যে ছোট বাচ্চারা ব্যতিক্রম।
আর ওই যে বললেন সাতকড়া দিয়ে গরুর মাংসের কথা এটা সবাই রান্না করতে পারে না । বিশেষ করে নন সিলেটি এটা রান্না করা ও খাওয়া একদমই চেনে না । সঠিকভাবে রান্না করলে এটা কখনোই তিতা হয় না এবং এটার টেস্ট বেড়ে যায় দ্বিগুণ।
১১ ই মে, ২০২৫ সকাল ৯:২৫
অপলক বলেছেন: সিলেটের মানুষ অতিথি পরায়ণ ----
সিলেটিরা সিলেটিদের জন্যে খুবই অতিথি পরায়ন। নিজ স্বজাতির জন্যে এরা জান কুরবার করে দেয়, এটা সত্য। ব্যাপারটা আমার খুব ভালো লাগে। কিন্তু এই সিলেটিরা নন-সিলেটিদের আবাদী বলে জ্ঞান করে, অবমূল্যায়ন করে, আচার আচরন বা আতিথীয়তায় পার্থক্য দেখা যায়।
আপনি তো ভাই জন্মসূত্রে সিলেটি না এছাড়াও জানিনা কত বছর সিলেটে কাটিয়েছেন কথাটি এ কারণে বললাম সিলেটে যেকোনো বয়সের মানুষ সকালবেলা চা ছাড়া দিন শুরু করেন না...
--- আমি ২০০১ থেকে এখন পর্যন্ত আছি, মাত্র ২৪বছর। যে সময়ে একটা শিশু জন্ম নিলেও অনার্স লেভেলে পড়ে। চা দিয়ে দিন শুরু করা আর স্বাদের চা বানানোর কথা দুটো দুই জিনিস। ব্যতিক্রম যে হবে না, তা নয়। হয়ত আমি যে, বহু সিলেটি বন্ধু বান্ধব কলিগদের বাসায় খেয়েছি, আমার অবজারভেশন এখন প্রশ্নবিদ্ধ।
সাতকড়া দিয়ে গরুর মাংসের কথা এটা সবাই রান্না করতে পারে না । বিশেষ করে নন সিলেটি এটা রান্না করা ও খাওয়া একদমই চেনে না ।
--- আপনি একদম ঠিক। সবাই রান্না করতে পারে না। আমি যখন সিলেট নিয়ে কথা বলছি মানে, সিলেটিদের রান্না করা খাবারের কথাই বলছি। আসলে আমি স্বাদের কথা বলেছি, তেতো বা কষ্টা সেসবের কথা বলিনি। এমন একজন সিলেটি পাইনি, যাদের কাছে সাতকড়া অপছন্দ। এমনকি সাতকড়া ছাড়া কোন কোন রেসিপি অসম্পূর্ন। এটা হতেই পারে। আমি অনেক দাওয়াত খেয়েছি, তবে বোধায় আমার সৌভগ্য হয়নি, স্বাদের সাতকড়া খাবার খাওয়ার। কিংবা, ওটাই স্বাদের সাতকড়ার সংজ্ঞা। স্বাদটা তেমনিই হয় !
কমেন্টের জন্যে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আশাকরছি, এমন একটি খবার মেন্যুর কথা বলবেন , যেমনটা উপরে শায়মা আপু বলেছেন।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই মে, ২০২৫ রাত ১১:০১
শায়মা বলেছেন: উত্তরাঞ্চলের রান্নার মধ্যে লুচির মত একটা জিনিস খেয়েছিলাম। নিমচি নাকি যেন নাম। আর মিষ্টির মধ্যে পান্তুয়া আর লবঙ্গ লতিকা তেমন আর কোথাও দেখিনি।