নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শহুরে জীবনে অর্বাচীন আমি । ব্লগে এটাই আমার পরিচয় ।

অর্বাচীন শহর

অর্বাচীন শহর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছাত্রলীগ এর নতুন টার্গেট : বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ; বর্তমান অবস্থা এবং কিছু কথা ।

০৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৫৪

দেশব্যাপী ছাত্রলীগ এর দাপটে অস্থির ছাত্র সমাজ । কারও রয়েছে দেশ গড়ার ইচ্ছা , কারও রয়েছে ক্ষমতার স্বাদে তিক্ত হবার বাসনা , কেউবা যেভাবেই পারুক পকেট ভারী করুক অথবা কারও রয়েছে ভিন্ন অন্যরকম বাসনা , বাসনার কথা বলছিলাম ছাত্রলীগের । কিন্তু সময় বদলেছে , দেশের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংঘটন নিয়ে মানুষ একটু অন্যভাবে চিন্তা করে ।

বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিতে সময় এখন ছাত্রলীগ এর । সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ এর দাপট । সর্বত্র ক্ষমতা তাদের । কিন্তু মুদ্রার ওপিঠ বড়ই ভয়ঙ্কর । ছাত্রলীগের নামে রয়েছে টেন্ডারবাজী , হানাহানি , নিজেদের মধ্যে মারামারি এমনকি খুনাখুনি । এই পোস্ট লেখার কয়েকদিন আগে তাদের অত্যাচারে বন্ধ হয়ে গেলো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় । গত সাত-আট বছরে তাদের সংঘাতে মারা গিয়েছে ৫৫ জন ।

বাংলাদেশে গত ২৫ বছরে কোন ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয় না । ছাত্রলীগ , ছাত্রদল কেউই নির্বাচিত কমিটি গঠন করে নায় । প্রভু গোষ্ঠীর সিলেক্টেড কমিটি দিয়ে চলছে ছাত্রসংঘটন । তাদের গত বিশ-ত্রিশ বছরের কর্মকাণ্ড সবায় জানে ।

ছাত্র সংঘটনের অত্যাচারের ফলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যেমন : খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় , বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস এবং মিলিটারি ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি তেও ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ । সেখানে কিনা তারা এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এ তাদের কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে । তাদের এই সিদ্ধান্তে অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকরা যে উদ্বিগ্ন , তা সহজেই অনুমেয় ।

ছাত্রলীগ এর দাবি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এ হটাত জঙ্গি গোষ্ঠীর উত্থানে , তাদের এই প্রয়াস । তাদের মতে , যেখানে ছাত্রলীগ থাকবে সেখানে জঙ্গীবাদ থাকবে না । কিন্তু কথা জঙ্গি শুধু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এই নয় , সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এও পাওয়া গিয়েছে । কিছু মিডিয়ার মেনুপুলেটেড এর ফলে সাধারণ মানুষের ধারনা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এর জন্য বহুলাংশে দায়ী । সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এও জঙ্গি পাওয়া গিয়েছে কিন্তু সেখানেতো ছাত্রলীগ এর রাজত্ব । ব্যাপার হচ্ছে জঙ্গিবাদের বিষয়টিকে পুঁজি করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এও তাদের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আনতে চাচ্ছে ছাত্রলীগ ।
যাই হোক , ছাত্রলীগ তাদের ক্ষমতা আরও বাড়ানোর জন্য ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তাদের কমিটি ঘটন করেছে । কিন্তু যেখানে আছেন বর্তমান জুগের ছাত্রলীগ । কমিটি করতে না করতেই তা নিতে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গিয়েছে । বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এর কমিটি রতে না করতেই তাদের গৃহবিবাদ ।

ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র না মেনেই ধানমণ্ডি এলাকার সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে কমিটি ঘোষণা করেছে ধানমণ্ডি থানা ছাত্রলীগ। গত ২৭ জুলাই এই কমিটি এমন ঘোষণা দিলেও সংগঠনটির গঠনতন্ত্রে অর্পিত ক্ষমতা অনুযায়ী এই এখতিয়ার রয়েছে কেবলমাত্র সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটির। ফলে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ধানমণ্ডি থানা ছাত্রলীগের আগের দেওয়া কমিটিকে বাতিল ঘোষণা করে বৃহস্পতিবার জরুরি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে অবস্থিত সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি গঠনের দায়িত্ব বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, সম্মিলত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার। সম্মিলত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অন্তর্গত ইউনিটগুলোর কমিটি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অন্য কোনও ইউনিট ঘোষণা দিলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে।

ধানমণ্ডি থানা ছাত্রলীগ সভাপতি সুজাউদ্দিন তুহিন গতকাল বুধবার সভাপতি তানভীর রহমান জয়ের বক্তব্যের সমালোচনা করে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছিলেন, দীর্ঘদিন ধরে সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটি কাজ করছে কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কোনও কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি। তারা ব্যর্থ হয়েছে, আর তাদের এই ব্যর্থতার কারণেই কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমতি সাপেক্ষে আমরা এই কমিটি ঘোষণা করেছি।

এর আগে কমিটি ঘোষণার পর গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছিলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আগেও কমিটি ছিল। তবে হয়ত সেটা নীরবভাবে। এখন আমরা সরব রাজনীতিতে আসছি।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরব রাজনীতির বিষয়ে তিনি বলেন, যেখানে ছাত্রলীগ থাকবে সেখানে জঙ্গিবাদের স্থান নেই। ছাত্রলীগ নেই বলেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন জঙ্গিবাদের উত্থান হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরেই এই কমিটি গঠনের কাজ চলছে। কিছু কমিটি দেওয়া হয়েছে। একে একে সবকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। তবে অপর অংশটির চাপের মুখে ঘোষিত এসব কমিটিকে বাতিল করতে বাধ্য হন তারা।


কিন্তু বাস্তবটা হচ্ছে , কোন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ই ছাত্রলীগ এর কমিটি অনুমোদন করে নি । ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় এ প্রকাশে্য না হলেও , আড়ালে কিছু ছাত্র ছাত্রলীগ এর নামে ১-২ বছর ধরে রাজনীতি চালাতে চাচ্ছে । তারা এখন প্রকাশে্য রাজনীতি চালাতে চায় । কিন্তু ইস্ট ওয়েস্ট এ ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ । নর্থ সাউথ এর অভ্যন্তরে কিছু ছাত্র ছাত্রলীগ এর নামে শক্তি সঞ্ছার করতে চাচ্ছে কয়েক মাস ধরে , কিন্তু তারা এখন সফল হতে পারে নায় । নর্থ সাউথ এও ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ।

ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রিজওয়ান খান বলেন, আমি শুনেছি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রলীগ কমিটি দিয়েছে। কিন্তু আমাদের আগে থেকেই এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তারা কমিটি দিলেও আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কোনও কিছুতে তাদের অ্যালাউ (অনুমোদন) করবো না। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেতরে কোনও মিছিল-মিটিং করতে পারবে না। বাইরে যা ইচ্ছা তা করুক।


এই হচ্ছে বর্তমানের অবস্থা । ছাত্র রাজনীতি ভালো , কিন্তু বর্তমানে এই ঘুনে ধরা , হানাহানির রাজনীতি না হউয়াই ভালো । সবার কাছে , প্রশ্ন রইল , আমেরিকা সহ ইউরোপ এর অনেক উন্নত দেশে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ । তারাতো উন্নতির শিখরে , তাদের নেতৃত্বের কাছে আমাদের নেতৃত্ব কিছুই না । তারা পারলে আমরা কেন পারবোনা ? ধ্বংসাত্নক রাজনীতি নিপাত যাক , সুস্থ ধারার রাজনীতির পুনর্জন্ম হোক ।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:১১

চাঁদগাজী বলেছেন:




বাংলাদেশে ছাত্র রাজনীতির অবসান ঘটাতে হবে সাধারণ জনতাকে; মানুষ যখন ভাবতে পারবে যে, ছাত্র রাজনীতি আমাদের জাতিকে ভয়ংকরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, তখন মানুষ এ্যাকশন নেবে।

যাক, আপনি কোনটাতে আছেন, শেষ আপনার ল্যাজও কাটা যায় কিনা?

০৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৩৩

অর্বাচীন শহর বলেছেন: আমার মতে পরিস্থিতি ঠিক না হউয়া পর্যন্ত অনিরদিষ্ট কালের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা প্রয়োজন ।

২| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:০২

মাথা নষ্ট একজন বলেছেন: এখন তো তাহলে এরশাদ চাচার কথায়-ই ফিরে যেতে হয়। কারণ ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলো বলেই তাকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছিল। যা হোক অবশেষে বাঙালি একটু দেরিতে হলেও বুঝতে পারছে।

০৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৩৪

অর্বাচীন শহর বলেছেন: এরশাদ চাচার আমলেইতো ছাত্র সংসদ নির্বাচন হত । আর এখন ?

৩| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫২

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: কীভাবে আর কোন মুখে ছাত্র রাজনীতির কথা বলে এই ছেলেগুলো? অভিভাবকদেরও দায়িত্ব আছে ছাত্র রাজনীতিতে নিজেদের সন্তানদের নিরুৎসাহী করার ব্যপারে...

০৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৩৮

অর্বাচীন শহর বলেছেন: ক্ষমতা ! অল্প বয়সে ক্ষমতা পাবার বাসনা ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.