নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হিমুর অন্য নাম

তিসান

১২৩৪

তিসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসা চোখের জল।।

২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১০:৫৭

সাহেদ ঝিম ধরে বসে আছে। এই ঝিম ধরে বসে থাকার কারণ তিসা। কারণ তিসার বিয়ে ঠিক হয়েছে। তিসা আর সাহেদ ছোট বেলা থেকে এক সাথে বড় হয়েছে। তিসা সাহেদের চাচাত বোন। তারা দুজনে একসাথেই পড়ত তবে আলাদা স্কুলে। তিসা পড়ত একটি বালিকা স্কুলে আর সাহেদ বালক স্কুলে। কিন্তু যাওয়া আসার সময় যেন কেউ কাউকে ছড়া যেতেই পারত না। কখনো যদি সাহেদের আগে ছুটি হয়ে যেত তবে সাহেদ তিসার জন্য অপেক্ষা করত আর যদি তিসার আগে ছুটি হত তবে তিসা অপেক্ষা করত, তবে যেদিন তিসা অপেক্ষা করত সেদিন সাহেদ আসার পর সে অনে রাগ দেখাত, কখনো বা কান্নাকাটি করত। যেদিন স্কুল বন্ধ সেদিন সাহেদ তিসার বাসায় গিয়ে দেখা করত। তাদের এই বন্ধুত্বের কথা কারো অজানা নয়। একদিন সাহেদের মা সাহেদকে বললেন, কি রে তিসা কে না দেখে কি তোর ঘুম আসেনা? ওর যখন বিয়ে হবে তখন কি করবি? ওর সাথে চলে যাবি নাকি?
কিছু না বুঝেই সাহেদ বলেছি্‌ ওকে যেতে দিলে তো যাবে।
তাদের সম্পর্ক শুধু মাত্র বন্ধুত্বের ছিল। এর চেয়ে বেশি কিছু কেউ কোন দিন বলতে পারেনি। তবে সাহেদ জানত তিসা তাকে ভালবাসে আর সাহেদ তো তিসাকে ভীশন ভালবাসে। তাদের এই না বলা ভালবাসাটার ইতি হতে চলেছে।
সাহেদের ফোন বাজছে। মোবাইল হাতে নিয়ে দেখল তিসার মা ফোন করেছেন। ফোন রিসিভ করতেই অপাশ থেকে বাজখাই কণ্ঠে, কিরে ফোন ধরছিস না কেন? তুই হারামি হয়ে গেছিস। জানিস শুক্রবারে তিসার বিয়ে অথচ একটিবারও খবর নিতে এলিনা। তোর চাচা কি সব একা একা সামলাতে পারবেন?
সাহেদ কিছু বলতে পারছেনা। ভালবাসা বড়ই পাষাণ শুধু নীরবে কাদায়। যারা ভালবাসাকে মূল্য দেয়না তারা হয়ত পৃথীবির সব চেয়ে সুখী লোক।
কি কথা বছিস না কেন? এখন চুপচাপ থাকার সময় না। চটজলদি একটু বাসায় আয় তিসা শপিং এ যাবে। বিয়ের আগে মেয়েকে একা ছাড়া ঠিক হবেনা।
সাহেদ ফোন রেখে দিল। সে কিভাবে গিয়ে তিসার সামনে দাঁড়াবে বুঝতে পারছেনা। যদি সে উলট পালট কিছু করে তবে তিসারও খারাপ লাগবে। অথচ তিসাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। দোষটা তার নিজেরই কারণ সময় থাকতে সে বলতে পারেনি। ভালবাসা অলস মানুষকে পাত্তা দেয়না, ভালবাসা শুধু মাত্র সবলদের জন্য।
দুপুরের দিকে সাহেদ তিসার বাসায় উপস্থিত হল, তিসাকে খুব একটা খুশি খুশি লাগছেনা। তবে কেন লাগছেনা তা সাহেদ বুঝতে পারছেনা।
তিসা আজ একটি নীল শাড়ি পরে বেরিয়েছে। নীল শাড়িতে তিসাকে খুব ভাল লাগে আজো খুব ভাল লাগছে। গাড়িতে বসে তাদের কোন কথা হলনা। সাহেদ কথা বলার চেষ্টা করেছে কিন্তু তিসার মুড অফ থাকার কারণে কিছু বলেনি।
দোকানে গিয়ে তিসা কয়েকটা শাড়ি কিনল। অন্যান্য দিন কিছু কিনতে গেলে এটা না ওটা এসব করে কিন্তু আজ কিছু করল না। দোকানদার যা দেখিয়েছে তা পছন্দ করেছে। কেনা কাটা শেষে তিসা বলল, কিছু খাবে?
সাহেদ বলল, খাওয়া যেতে পারে।
তিসা সাহেদের সামনে চুপচাপ বসে আছে। তিসার মুখে যেন কাল বৈশাখী ঝড় নেমে এসেছে। তিসার এ অবস্থা দেখে সাহেদ কি করবে বুঝতে পারছেনা।
হঠাত কিরে তিসা ফুপিয়ে কেদে উঠল। তিসার কান্নার আওয়াজে চারপাশ যেন ভারি হয়ে উঠেছে। সাহেদ কি করবে বুঝতে পারছেনা। কান্না থামিয়ে তিসা রাগি কণ্ঠে বলল, তুই জানিস না তোকে আমি ভালবাসি। আমি তো ভেবেছিলাম তুই আমার বিয়ে খবর শুনে অন্তত একটা কিছু করবি কিন্তু তোর মাঝে আমি কোন পরিবর্তনই দেখিনি। তুই বরং খুশি হয়েছিস, আপদ বিদেয় হল।
সাহেদ কিছু বলতে পারছেনা। নিজেকে খুব অপরাধি মনে হচ্ছে।
তিসা বলল, এই কিছু বলবিনা? বলবি কিভাবে তোর তো কিছু বলার নাই। তুই থাক আমি চললাম।
তিসা ঝড়ের মত বেরিয়ে গেল। সাহেদ জায়গায় বসে রইল। হঠাত করে টুপ করে এক ফোটা চোখের পানি গড়িয়ে পড়ল।

(বাস্তব কাহিনি অবলম্বনে)
লেখকঃ চৌধুরী মোহাম্মদ ইমরান,
এম সি কলেজ, সিলেট।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.