নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ছন্নছাড়া, মুক্ত ও বাস্তববাদী একজন মানুষ...

অতঃপর বাউন্ডুলে

অতঃপর বাউন্ডুলে › বিস্তারিত পোস্টঃ

আবার ন্যায় প্রতিষ্ঠার দাবীতে আন্দোলন, আবার দাবী আদায়ের প্রতীক সেই শাহবাগ!

১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৫২

*পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) ৩৪ তম বিসিএস এর ফলাফল প্রকাশ করেছে গত সোমবার। ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে বর্তমানে প্রচলিত ৪৫ শতাংশ কোটার অধীনে যারা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলো তারা মাত্র আটান্ন নম্বর পেয়ে লিখিত পরীক্ষার জন্য মনোনীত হয়েছে। পক্ষান্তরে অবশিষ্ট ৫৫ শতাংশ মেধা কোটায় যারা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলো তারা এর চেয়েও ২০ নম্বর বেশী অর্থাত আটাত্তর নম্বর পেয়েও উত্তীর্ণ হয়নি।

এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের যুক্তিঃ যাদের জন্য এই কোটা ব্যবস্থা, তারা নাকি মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান এবং মেধাবীদের সাথে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়া অংশ!! তাই তাদেরকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এটা রাখা হয়েছে।



এর পরিপ্রেক্ষিতে আমার বাউন্ডুলে ভাবনাঃ

(ক) কিছুদিন আগে জাতীয় সংসদের স্পিকার আব্দুল হামিদ রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায় সাতবারের সংসদ সদস্য ডেপুটি স্পিকার শওকাত আলীকে ডিঙিয়ে সংরক্ষীত আসনের সাংসদ ড. শিরিন শারমিনকে স্পিকার নির্বাচন করা হলো। তার পক্ষে যুক্তি দেখানো হলো; তিনি খুব মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। যার কারণে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকাত আলী তার সমতুল্য নয়।



এখানে আমরা মেধার বিপরীতে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে তুচ্ছ হিসেবে স্বীকতি দিয়েছি,

আবার বিসিএস এর ফলাফলে সেই মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের বিপরীতে মেধাকে পদতলিত করেছি।



(খ) আমরা জানি দেশের জন্য যারা জীবন দেয় তারা শহীদ, আর যারা জয় নিয়ে জীবিত অবস্থায় ফিরে আসে তারা গাজী। আমাদের ধর্ম ও রাষ্ট্রীয় নীতি অনুযায়ী গাজীদের চেয়ে শহীদের মর্যাদা বেশী এবং এই নীতিকেই আমরা আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রে মৌখিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছি। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ্য মানুষ শহীদ হয়েছিলো এবং দুই লক্ষ্য মুক্তিযোদ্ধা গাজীর বেশে বিজয় নিয়ে ফিরে এসেছিলো।



মুক্তিযুদ্ধে যে ত্রিশ লাখ লোক শহীদ হয়েছিলো তাদের পরিবার ও সন্তানদের রাষ্ট্রীয়ভাবে আমরা কোন সুযোগ-সুবিধার অবকাশ রাখিনি।

আবার দুই লাখ গাজীর জন্য অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশী বিসিএস-এ ৩০ শতাংশ কোটা রেখে দিয়েছি।



(গ) আমাদের দেশে সবার অধিকার সমান, এখানে সবার সমান সুযোগ- সুবিধা নিশ্চিত করতে নাকি রাষ্ট্র বদ্ধপরিকর। আমাদের দেশে তিন কোটি সাধারণ পরিবারের বিপরীতে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সংখ্যা দুই লাখ।



দুই লাখ মুক্তিযোদ্ধার পরিবার ১/২ শতাংশ সুযোগ সুবিধার দাবীদার হলেও তাদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৩০ শতাংশ,

আবার বাকি তিন কোটি পরিবার ৯৯ শতাংশের দাবীদার হলেও তাদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে মাত্র ৫৫ শতাংশ সুযোগ-সুবিধা।



(ঘ) নারীরা আমাদের সমাজে অবহেলিত, তারা পুরুষদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে! তাই নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করার জন্য সকল ক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। ঠিক আছে, নারী-পুরুষ এর সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তাদের সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হোক, আমার কোন আপত্তি নেই। কিন্তু তাদেরকে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে পুরুষদের সাথে বৈষম্য করা কোনভাবেই কাম্য নয়।



প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতার ক্ষেত্রে একজন নারীর যোগ্যতা লাগে এসএসসি/এইচএসসি পাস,

আবার ঐ এক-ই ক্ষেত্রে পুরুষদের যোগ্যতা চাওয়া হয় কমপক্ষে স্নাতক।



শেষকথাঃ আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রেই দ্বিমুখী আচরণ করছি। এক্ষেত্রে যে যেই যায়গায় সুবিধা গ্রহন করছি সে সেখানে নীরব থেকেই যাচ্ছি, আর যেখানে নিজের সুবিধা নেওয়ার অবকাশ নেই সেখানে বিরোধীতা করছি। এই দ্বিমুখী নীতিগুলো ত্যাগ করে সকল ক্ষেত্রে সবাইকে সমানভাবে মূল্যায়ন করা হোক এবং সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হোক এই আশাবাদ-ই ব্যক্ত করি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.