![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বর্তমানে আমাদের দেশে কতিপয় বরেণ্য ব্যক্তির আগমন ঘটেছে। যাদের কেউ মুখে(কথায়), আবার কেউ কর্মে আমাদের থেকে উচ্চ পর্যায়ের। তাদের সমালোচনা করা, কিংবা ভূলের প্রতিবাদ করা সুশীল সমাজের দৃষ্টিতে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধের সামিল। ড. ইউনুস, অনন্ত জলিল, সাকিব আল হাসান, অধ্যাপক আসিফ নজরুল এদের মধ্যে অন্যতম। তবুও তাদের কর্ম তাদের বিপক্ষে লিখার জন্য আমাকে উস্কানি দেয়। কিন্তু গত ২ মাস থেকে আমার ব্যবহৃত ল্যাপটপটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ইচ্ছে থাকা স্বত্তেও লিখতে পারছি না! অবশেষে আজ এই ছুটির দিনের দুপুরে অফিসে বসে অফিসের কম্পিউটারে লিখছি। আজ লিখলাম ড. ইউনুসকে নিয়ে। সময় থাকলে পড়ে দেখতে পারেন…
(১) ড. মোহাঃ ইউনুস- নোবেল বিজয়ী প্রথম বাংলাদেশী এবং তৃতীয় বাঙ্গালী। তৃ্তীয় বাঙ্গালী হিসেবে নোবেল বিজয় করলেও স্বাধীন বাংলার তথা বাংলাদেশের প্রথম নোবেল বিজয়ী হওয়ায় আমাদের কাছে তার অবস্থান অনেক উপরে।তিনি যে প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে নোবেল পেয়েছেন (গ্রামীণ ব্যাংক), সেটা তার-ই গড়া। আবার তিনিই সেই প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য বিধিমালা তৈরি করেছিলেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের পর সেই বিধিমালা অনুযায়ীই চলতে থাকে গ্রামীণ ব্যাংক এর কার্যক্রম। এরপর স্বাভাবিক নিয়মেই একদিন ফুরিয়ে আসে ড. ইউনুসের সেই প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদে থাকার বয়সসীমা। বয়সসীমা পার হওয়ার পর কয়েক বছর চলে গেলেও তিনি পদ ছাড়েননি। অবশেষে সরকার হস্তক্ষেপ করে তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয় । ফলশ্রুতিতে ফুসে উঠল আমাদের তথাকথিত সুশীল সমাজের সুবিধাবাদীরা…। সরকার এবং এক্ষেত্রে ইউনুস বিরোধী সকল বক্তা ও তাদের বক্তব্যকে তুলোধুনা করার জন্য তারা নিয়মিতভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়ল টক-শো গুলোতে! তাদের বক্তব্যগুলোর মূলকথায় ছিল; ড. ইউনুস গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছেন, তাহলে সরকার কেন গ্রামীণ ব্যাংক ও তার ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছে…?
এ আর মন্দ কি…? একসাথে রথ দেখা, কলা বিক্রি করা… দুটোই তো হচ্ছে! মুখে ফেনা তুলার মাধ্যমে ইউনুসের প্রিয় পাত্র হওয়ার পাশাপাশি দু-পয়সা কামাইও তো হচ্ছে নাকি!!?
এখানে একটা বিষয় আমি খোলাসা করি; ড. ইউনুস সরকারের বিরাগভাজন হয়েছিলেন বলেই কিন্তু সরকার তার ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ নিয়ে তার ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেছে। তিনি যদি সরকারের বিরাগভাজন না হতেন, তাহলে হয়ত সরকার তার ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করত না! এক্ষেত্রে সরকারের উদ্দেশ্য যাই হোক না কেন, আমাদের দেখা দরকার কাজটা কি ঠিক নাকি ভূল…?
নোবেল প্রাপ্তির জন্য তার ও তার প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমাদের সম্মান, শ্রদ্ধা ও ভালবাসা থাকা এবং তাকে নিয়ে গর্ব করার মাত্রাটা একটু বেশী হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে কি তিনি নিয়মের বাইরে…? তার জন্য কি আইন আলাদা…? নোবেল জয় ও গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছেন বলেই কি অন্যান্য নাগরিকদের মত তার আচারণ, কথা-বার্তা ও কর্মজীবনে লাগাম দেওয়ার এখতিয়ার কি রাষ্ট্রের নেই…?
তার পক্ষে মুখে ফেনা তুলা সুশীল সমাজ ও সম্মানিত ইউনুস-বাদীদের নিকট আমার প্রশ্ন;
আওয়ামীলীগ এর হাত ধরে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তাই বলে কি যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন-ই আমরা আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় রেখে দিব…?
আকরাম খানের হাত ধরে আমরা ক্রিকেটের নতুন জগতে পৌঁছেছি, টেস্ট স্টাটাস পেয়েছি। তাই বলে কি তাকেই আমৃত্যু অধিনায়ক রেখে দিব…?
আইসিসি’র সভাপতি হয়ে ক্রিকেটের প্রথম বাণিজ্যিকীকরণ করে আইসিসিকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করেছিলেন জগমোহন ডালমিয়া। তাই বলে কি ক্রিকেট বিশ্ব আমৃত্যু তাকেই আইসিসি’র সভাপতি রেখে দিয়েছে…?
ভারতীয় ক্রিকেটকে সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে যিনি নিয়ে গেছেন তিনি হলেন শচীন টেন্ডুলকার।বিশ্ব ক্রিকেটে ব্যাটসমানদের যত রেকর্ড আছে তার দুই-তৃ্তীয়াংশই তার।তাই বলে কি তিনি সারাজীবন খেলেই যাবেন…?
উদাহরণ পড়তে পড়তে সকলে হয়তো বা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন! তাই আমার শেষ কথা, আমরা কেন দু-মুখো আচরণ করি ভাই। যে মুখ ন্যায় সম্মত দাবী তুলে আওয়ামীলীগকে বলতে পারে; পাঁচ বছর তো দেশ চালাইলা, এইবার ভোটটা দিয়ে একটু জনমতটা যাচাই করো। আকরাম খানকে বলতে পারে; ঢের হয়েছে, এইবার ছাড়া উচিৎ। শচীন টেন্ডুলকারকে বলতে; বয়স তো অনেক হলো, এইবার তরুণদেরও একটু সুযোগ দাও।
সেই বাস্তববাদী মুখটাই আবার কি করে মেয়াদউতীর্ণ ইউনুসের স্বপদে থাকার পক্ষে দাবী তুলতে পারে…!!!???
আজকের মত শেষ করি… কথা হবে অন্য কোন দিনে, অন্য কোন মহামান্যকে নিয়ে। ভাল থাকবেন সবাই।
©somewhere in net ltd.