নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধুর!

বিকট

হাসান মাহবুব

আমার অপদার্থতাকে মাহাত্ম্য ভেবোনা...

হাসান মাহবুব › বিস্তারিত পোস্টঃ

নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন বাদ দেয়ার পরিকল্পনা কতটুকু যৌক্তিক?

৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:২২



(১)
ধরুন, আপনাকে আমি প্রশ্ন করলাম, মঙ্গল গ্রহ থেকে পৃথিবীর দূরত্ব কত। উত্তর হিসেবে চারটি অপশন দিলাম। চারটি সংখ্যাই খুব কাছাকাছি। আপনি চোখ বন্ধ করে একটি উত্তর দিয়ে দিলেন। সেটা সঠিক হয়েও গেলো। ধরুন এরকম মোট ৫০টি প্রশ্ন আপনাকে দেয়া হলো, যার কোনটারই সঠিক উত্তর আপনার জানা নেই। এভাবে অনুমানের ওপর দিয়ে আপনি কয়টি উত্তর সঠিক করতে পারবেন? সম্ভাব্যতার সূত্র অনুযায়ী আপনার প্রতি চারটি প্রশ্নের একটি সঠিক হবার কথা। সেক্ষেত্রে আপনার স্কোর হবে ১২ বা ১৩। ভাগ্য খারাপ থাকলে এর চেয়ে কম হবে, ভাগ্য ভালো থাকলে এর চেয়ে বেশি হবে। কিন্তু সেটা কত বেশি? ১৫? হতে পারে। ২০? অনুমানের ওপরে ৫০ এ ২০ পাওয়া বেশ কঠিন। সেখানে ২৫ বা ৩০ পাওয়া প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। আচ্ছা ধরলাম আপনি একটি বিষয়ে ৫০ এ ২৫ পেলেন ভাগ্যের জোরে। আপনাকে এখন ১০টি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। ১০টির মধ্যে প্রতিটিতেই আন্দাজের ওপর উত্তর করলে আপনি একবার ৫০ এ ২৫ পেলে পরেরবার পাবেন ১০। শেষতক দেখবেন সম্ভাব্যতার অংকই জয়ী হবে। অর্থাৎ প্রতি চারটিতে একটি। হেরে যাবেন আপনি।

(২)
ওপরের প্রশ্নটির ক্ষেত্রে যে উদাহরণ দিয়েছি সেটা হলো তথ্যমূলক। মানে আপনি তথ্য জানলেই পার পেয়ে যাবেন। কিন্ত বহুনির্বাচনী প্রশ্ন কিন্তু শুধুমাত্র তথ্যমূলক প্রশ্ন দিয়ে সাজানো যাবে এমন না। কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তরে মাথাও খাটাতে প্রয়োজন হতে পারে, বিশ্লেষণের প্রয়োজন হতে পারে। যেমন-
পৃথিবী থেকে মঙ্গল গ্রহের দূরত্ব জানা কেন প্রয়োজনীয়?
১/ তাহলে আমরা মঙ্গল গ্রহের কক্ষপথে স্যাটেলাইট পাঠানোর ন্যায্যতা অনুধাবন করতে পারবো
২/ মঙ্গল গ্রহে প্রাণ আছে কি না সে ব্যাপারে গবেষণা জোরদার করতে সুবিধা হবে
৩/ সৌরজগৎ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে
৪/ মঙ্গল গ্রহে রেডিও সিগন্যাল পাঠানোর জন্যে
আমি স্বীকার করে নিচ্ছি আমার উল্লেখ করা বিকল্পগুলি ভালো নয়, তবে চাইলে এ ধরণের প্রশ্ন তৈরি করা যায় যেগুলো শুধু মুখস্থ করে এসে উত্তর করা সম্ভব হবে না।
আবার এমন প্রশ্নও হতে পারে, যেগুলির উত্তর করতে হলে সূত্র জানতে হবে, মান সঠিকভাবে বসাতে হবে, এবং হিসেব করতে হবে। যেমন, 600 kg ভরের একখানি গাড়ি 20 m/sec বেগে সরল পথে চলতে চলতে 1400 kg ভরের একখানি স্থির ট্রাকের সাথে ধাক্কা খেয়ে আটকে গেল। মিলিত গাড়ি দুটি একই সরলরেখা বরাবর একটি নির্দিষ্ট বেগে চলতে থাকল। মিলিত গাড়ি দু’টির শেষবেগ কত হবে তাহলে?
ক) 6m/sec
খ) 12m/sec
গ) 18m/sec
ঘ) 21m/sec
সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে বহুনির্বাচনী প্রশ্নের ক্ষেত্রে অনেক রকম বৈচিত্র আনা সম্ভব, এটি মোটেও অনুমানে দিলাম,আর হয়ে গেলো, এত সহজ না।
তবে ১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ এর এস এস সি পরীক্ষায় যে পদ্ধতিতে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন করা হয়েছে তেমন কিছু হলে কিছু বলার নেই। সেখানে ছিলো ৫০০ প্রশ্নের প্রশ্নব্যাংক। ৫০০ উত্তর মুখস্থ করে পাস করার সেই মহোৎসবের কথা মনে পড়লে হাসিই পায়।
(৩)
এখন কথা হচ্ছে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন কেন জরুরী? অনেক কারণ আছে। লিখিত প্রশ্নের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাত থেকে দশটি প্রশ্ন করা যায়। আর সেগুলির উত্তর কী হলে সর্বোত্তম হবে, তার সংবিধান একেক শিক্ষকের কাছে একেকরকম। খাতা দেখা বিষয়ক বিভিন্ন অনিয়মের কথাও শোনা যায়। খাতা চ্যালেঞ্জ করে রেজাল্ট চেঞ্জ হয়েছে এমন ঘটনা বহু। এদিকে লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখা শিক্ষকদের জন্যে অনেক সময়সাপেক্ষ। অবজেকটিভ প্রশ্ন এমন ঘটনা বহুলাংশে কমিয়ে দেবে, সাম্য আনবে এ কথা বলা যায়।
লিখিত পরীক্ষার আরেকটি অসুবিধা হলো, এখানে বইয়ের সব জায়গা থেকে প্রশ্ন করা সম্ভব হয় না। চাইলেই একজন শিক্ষার্থী বইয়ের কিছু চ্যাপ্টার বাদ দিতে পারে। এভাবে বেছে বেছে অধ্যায় পড়ে, বাছাবাছা কিছু প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করে যে সনদ তারা পাচ্ছে, সেটা আসলে কতটা অর্থবহ? ছেলে-মেয়েগুলো বিপাকে পড়ে যায় এ্যাডমিশন টেস্টের সময়। এ কারণে দেখা যায়, ভালো রেজাল্ট করা অনেক ছেলেমেয়ে ভালো জায়গায় পড়ার সুযোগ পাচ্ছে না।
(৪)
এবার একটি অপ্রিয় প্রসঙ্গে কথা বলবো। বলা হচ্ছে সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতিতে এই অসুবিধাগুলি দূর হয়েছে। আসলেই কি তাই? আমাদের শিক্ষকেরা কজন প্রশিক্ষিত? কজন সৃজনশীল প্রশ্ন সঠিকভাবে তৈরি করতে এবং মূল্যায়ন করতে পারেন?
Directorate of Secondary and Higher Education (DSHE) পরিচালিত একটি জরীপে পাওয়া গেছে পিলে চমকানো তথ্য। ২০১৭ সালে মোট ৬,৫৯৪টি স্কুলে জরীপ চালিয়ে দেখা যায় যে প্রায় ৪০% শিক্ষকেরই নিজ থেকে সৃজনশীল প্রশ্ন তৈরি করার দক্ষতা নেই। ১৬% শিক্ষক বাইরে থেকে প্রশ্ন তৈরি করে আনেন, এবং ২৩% শিক্ষক কে অন্যদের সাহায্য নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করতে হয়।

(সূত্র- Click This Link)
এখন তবে বলুন, আমরা কি নৈর্ব্যক্তিককে বাদ দিয়ে পুরোপুরি সৃজনশীল প্রশ্নপত্রের দিকে যেতে প্রস্তুত হয়েছি এখনও?
(৫)
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা যদি ফিনল্যান্ডের মত হতো, তাহলে আমরা সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতির ওপর পুরোপুরি নির্ভর করতে পারতাম। কিন্তু ফিনল্যান্ডে একজন শিক্ষক তৈরি করার জন্যে যে সময় এবং শ্রম খরচ করা হয়, আমাদের ক্ষেত্রে কি তা হয়? ফিনল্যান্ডের শিক্ষাব্যবস্থা এখন পুরোবিশ্বে অনুকরণীয় স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে ধরা হচ্ছে। ফিনল্যান্ড একদিনে এই অবস্থায় আসে নি। তারা সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনা করেছে, শিক্ষক এবং শিক্ষাকাঠামো গড়েছে, এখন তার ফল পাচ্ছে।
কিন্তু এখন প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে যদি আমরা আমাদের শিক্ষাকাঠামো উন্নয়ন না করে শুধুমাত্র সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেই, এবং নৈর্ব্যক্তিক পুরোপুরি বাদ দিয়ে দেই, তাহলে যে বিশৃঙ্খলা এবং সিস্টেম লস তৈরি হবে, সেটা আমরা সামলাতে পারবো তো?

মন্তব্য ৩০ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (৩০) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:১১

তাশমিন নূর বলেছেন: সময়োপযোগী বিষয়। যে কোনো সিস্টেমেরই সুবিধা-অসুবিধা আছে। কিন্তু পাল্লা কোন দিকে ভারী হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আসে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যাপারটি। এমসিকিউ-এর বিপক্ষে যে অভিযোগ বা অসুবিধাগুলো আছে সেগুলো দূর করা সম্ভব। তাহলে দূর করার চেষ্টা না করে আমরা সিস্টেম বাতিল করব কেন, যেখানে সুবিধাগুলোই পাল্লায় ভারী হয়?

অনেকে বলেন, এমসিকিউ-এর মাধ্যমে চিন্তা ক্ষমতা আর বিশ্লেষণী দক্ষতা পরিমাপ সম্ভব নয়। এটাও ভিত্তিহীন অভিযোগ। শুধুমাত্র নতুন কিছু সৃষ্টি করা ছাড়া বাকী সব দক্ষতাই এমসিকিউ-এর মাধ্যমে পরিমাপ সম্ভব। নির্ভর করছে, আমরা কিরকম প্রশ্ন করতে পারছি তার ওপর। ফিনল্যান্ড আর চীন এ ধরণের প্রশ্ন করে দেখিয়েছে ইতোমধ্যেই। তারপরও বিষয়টি নিয়ে আমাদের আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে হয়তো।

কিন্তু মাথা ব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলা সমর্থন করব না। অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি বিষয়ে লেখার জন্য।

৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার মন্তব্য তাশমমিন। আপনার এ ব্যাপারে ভালো জ্ঞান আছে মনে হচ্ছে। আপনিও লিখুন না!

২| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:১৮

সাাজ্জাাদ বলেছেন: খুব জরুরী বিষয় অসাধারনভাবে তুলে ধরেছেন।
প্রশ্নব্যাংক ব্যাপারটা আসলেই হাস্যকর। এর কোনও উপকারিতা-ই খুজে পাই না।


৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৫০

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ। এইসব উদ্ভট জিনিস কেন যে করে!

৩| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: হাসান মাহবুব ,




বর্তমানের বহুল বিতর্কিত অথচ অতি প্রয়োজনীয় একটি বিষয় তুলে ধরেছেন ।
বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা পদ্ধতির সাথে তেমন জানাশোনা নেই বলে, কিছু বলা গেলনা তবে উপরের দু'দুটো মন্তব্যে মনে হয় সহমত জানাতে পারি ।
তবে আপনার এই কথাগুলোর প্রতিধ্বনি করতে দোষ নেই এবং সম্ভবত এটাই আসল চ্যালেঞ্জ -
" আমাদের শিক্ষকেরা কজন প্রশিক্ষিত? কজন সৃজনশীল প্রশ্ন সঠিকভাবে তৈরি করতে এবং মূল্যায়ন করতে পারেন?
Directorate of Secondary and Higher Education (DSHE) পরিচালিত একটি জরীপে পাওয়া গেছে পিলে চমকানো তথ্য। ২০১৭ সালে মোট ৬,৫৯৪টি স্কুলে জরীপ চালিয়ে দেখা যায় যে প্রায় ৪০% শিক্ষকেরই নিজ থেকে সৃজনশীল প্রশ্ন তৈরি করার দক্ষতা নেই। ১৬% শিক্ষক বাইরে থেকে প্রশ্ন তৈরি করে আনেন, এবং ২৩% শিক্ষক কে অন্যদের সাহায্য নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করতে হয়। "


৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৫১

হাসান মাহবুব বলেছেন: জ্বী ভাই, অবস্থা খুবই শোচনীয়। কী হওয়ার কথা ছিলো আর কী হইছে!

৪| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:৪৮

আর্ফ জামান সুজন বলেছেন: আসলে ব্রিজ, ফ্লাইওভার করে উন্নয়ন করা যায় তবে মৌলিক চাহিদা পূরণ নয়। কেননা এগুলো চাহিদা পূরণে সহায়ক কিন্তু প্রধান মৌলিক চাহিদা এটি নয়।
আর শিক্ষা কে তো সার্টিফিকেটের চাকায় পিষে মারা হয়েছে। সেখানে শিক্ষা পদ্ধতি যাই হোক না কেন দূনীর্তিগ্রস্থ সমাজব্যবস্থায় সবই ব্যর্থ হবে দিনশেষে।

৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৫২

হাসান মাহবুব বলেছেন: আমাদের দেশে শিক্ষকতাকে একটি লো প্রোফাইল প্রফেশন বানিয়ে রাখা হয়েছে। এখানে মেধাবীরা আসতে চায় না। দুঃখজনক।

৫| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:৪৯

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
মন দিয়ে পড়াশোনা করার কোন বিকল্প নে্ই।
অন্ধকারে ঢিল মারার কোন যুক্তি নেই।

৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: অন্ধকারে ঢিল মাইরে সুবিধে হবিনানে।

৬| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



হাসান ভাই, খুব সুন্দর করে গুছিয়ে বিষয়টি লিখেছেন৷আপনার (৫) নং আলোচ্য বিষয়ের সাথে আমি ১০০% একমত৷(৪) নং আলোচনায় তো সত্যটি উদঘাটন হয়েছে৷(৩) নং মন্তব্যে @ আহমেদ জী এস এবং (৪) নং মন্তব্যে @ আর্ফ জামান সুজন এ বিষয়ে চমৎকার মন্তব্য করেছেন৷উভয়ের সাথে সহমত৷

ছেলে মেয়েরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যদি স্কুলের পাঠ্যবই নিয়ে স্কুল আর শিক্ষকদের বাসায় বাসায় দৌড়ায় তাহলে তার সৃজনশীল মন মানষিকতা সৃষ্টি হবে কখন? সবাইকে বুঝতে হবে মানুষের জন্ম হয়নি শুধু পড়াশুনা করা জন্য। সরকার ও অভিবাবকদের দায়িত্ব ছাত্র/ছাত্রীদের প্রয়োজনীয় বিনোদন ও খেলাধুলার পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা; তাদের শারিরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য যা অত্যাবশ্যক। সৃজনশীল মননের জন্য প্রয়োজন স্বাধীনভাবে চিন্তা শক্তিকে বিকশিত করার পর্যাপ্ত সময় ও পরিবেশ। কিন্তু পাগলাটে এ শিক্ষা ব্যবস্থা ছাত্র ছাত্রীদের সৃজনশীল ও স্বাধীন সত্তাকে বিকশিত হতে দিচ্ছে না। ছাত্র ছাত্রীদের পাশাপাশি বাবা মায়েরা সারা বছর ব্যস্থ থাকেন সন্তানদের পরীক্ষায় ভাল ফলাফলের নেশায়। যত টাকা লাগুক এ+ যে পেতেই হবে।

এক সময় দেশের পাবলিক পরীক্ষাগুলোতে নকলের মহাউৎসব চলতো; এখন নকল অনেকটা বন্ধ হলেও শুরু হয়েছে নতুন উপদ্রব! ডিজিটাল সিস্টেমে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা; অনেকটা ঘোষণা দিয়েই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে চলে চড়া দামে প্রশ্ন বেঁচা কেনা! এ প্রশ্নের ক্রেতা কিন্তু ছাত্র/ছাত্রীরা নয়; সন্তানের গোল্ডেন পেলাসের ফ্যন্টাসিতে ভোগতে থাকা বাবা-মায়েরা। এমনও শুনা যায় পরীক্ষার পর বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারির যোগসাজোশে বড় অঙ্কের সেলামির বিনিময়ে পেলাসের (+) সুব্যবস্তা করা যায়; অভিযোগ আছে এতে কোন কোন স্কুল/কলেজের হেড মাস্টার/অধ্যক্ষ জড়িত!!

আর সৃজনশীলতার নামে আমাদের দেশে যা হচ্ছে তা প্রহসন ছাড়া কিছুই নয়। এই শিক্ষা প্রকৃত শিক্ষাও নয়, আবার সৃজননশীলও নয়। আর কোচিং বাণিজ্য নিয়ে কী আর লেখবো। শিক্ষাকে ক্লাসরুমে ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ, যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যাবস্থার প্রচলন, প্রয়োজনীয় কিন্তু ছোট আকারের সিলেবাস তৈরী করা, চাকরি ও রিজাল্ট নির্ভর মেন্টালিটি পরিহার করে জ্ঞান নির্ভর ও গবেষনাধর্মী শিক্ষা ব্যাবস্থা শুরু করা। সর্বাপরি অভিবাবকদের সচেতন হওয়া, যাতে বাচ্চাদের প্রকৃত শিক্ষা অর্জন বাদ দিয়ে কত ব্যয়বহুল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ছে এবং কতজন শিক্ষক/কোচিং সেন্টারে যাচ্ছে তা মুখ্য না হয়।

৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:০০

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্যে। শিক্ষকরা প্রশিক্ষিত হবার না কারণে কোচিং সেন্টারগুলোর দ্বারস্থ হতে হচ্ছে সবার। শিক্ষাও একটা সার্ভিস, এখন গ্রামের একটা ছেলে এই সার্ভিস না পেলে কী করবে? সে এগুবে কীভাবে? এজন্যেই তাকে ভালো সার্ভিসের জন্যে কোচিংয়ের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে। এদিকে কোচিংয়ের কোনো নীতিমালা না থাকায় যে যেভাবে পারছে আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে। প্রকৃত সেবা সবখানে পাওয়া যাচ্ছে না। এ নিয়েও লেখার আশা রাখি।

৭| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:০১

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার পোষ্ট একবার পড়লাম। বুঝতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। অবশ্য এখন আমার মাথা গরম আছে। পরে আরেকবার এসে পড়ে যাব। তখন মন্তব্য করবো।

৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:০১

হাসান মাহবুব বলেছেন: আচ্ছা, মাথা ঠান্ডা হইলে আইসেন কিন্তু!

৮| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:০৭

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: mcq এর সবচেয়ে বড় সফলতা হলো, এর জন্য পুরো বই পড়তে হয় সব ছাত্রকে। এটা জরুরী। কারণ লিখিত প্রশ্নগুলো সব বাঁধাধরা অধ্যায়গুলো থেকেই হয়।
আর শিক্ষকেরা খাতা কাটার এত কম সময় পান যে, সব খাতার মূল্যায়ন তাদের ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। আমাদের এক শিক্ষক সৃজনশীল পদ্ধতিতেও পরিমান মেপে নম্বর দিতেন। যাই লিখি না কেন, পৃষ্ঠা ভরালেই নম্বর।
আর আমরা এখনও সত্যিই ফিনল্যান্ডের ধারে কাছেও যাইনি। তাদের মত হতে চাওয়াও বাতুলতা।

৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: এম সি কিউ খুবই ভালো সিস্টেম। আমাদের এখানে এর অপপ্রয়োগ ঘটতেছে। সেটা আমাদের দোষ, এম সি কিউ এর না।

৯| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:০৮

আখেনাটেন বলেছেন: মেধা যাচাইয়ের বিশ্বব্যাপী অন্যতম উৎকৃষ্ট পদ্ধতিটি বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা আত্মঘাতী হতে বাধ্য। এবং তা কার্যকর হলে অতি অল্প সময়ের ব্যবধানেই আবার ফেরত আনতে হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে নিশ্চিত থাকেন। মাঝখানে কিছু সরকারী অর্থের মৌ মৌ গন্ধ নিবে কিছু অসাধু মানুষ।

কিছু মাথামোটা লোক এর গুরুত্ব অনুধাবণ না করেই সরকারকে হয়ত পরামর্শ দিচ্ছে বাদ দেওয়ার। পায়ের গিরার রোগে মাথা কাটার পরামর্শ। অদ্ভুত সব ব্যাপার ঘটছে এ দেশে।

৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁঁ, খুবই দুঃখজনক ব্যাপার :(

১০| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: পোস্টের বক্তব্যের সাথে একমত। তবে আমি মনে করি, সব কিছুরই ভালো মন্দ দুটি দিক আছে। প্রথম মন্তব্যকারী তাশমিন নূরের সাথে সহমত হয়ে বলছি, ভালোর পাল্লা ভারি হলে সেটা গ্রহন করা উচিৎ।

৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২২

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ হেনা ভাই।

১১| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৯

নতুন বলেছেন: দেশে যদি ভালো ছাত্ররা শিক্ষক না হয় তবে তার পরের প্রজন্ম ভালো শিক্ষা পাবেনা।

দেশের শিক্ষরা ভালো প্রশিক্ষিত নয়... তাদের উপরে নজরদারী কম...আর সবাই সট`কাট করলে চায়।

অবশ্যই এমসিকিউ ভালো এবং সারা বই সমপ্কেই ভালো জানা না থাকলে ভালো করা যায় না।

শিক্ষক প্রশ্ন করার সময় যত্নবান হলে ছাত্রদের সারা বইয়ের জ্ঞান পরিক্ষা সম্ভব।

৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:১০

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ পাঠ ও মন্তব্যের জন্যে।

১২| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:১৭

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এতগুলো বছর চলে গেল একটা সুন্দর ব্যবস্থা এখনো বের করতে পারলো না কেউ। বার বার এক্সপেরিম্যান্ট। তবে আমার মনে হয় সৃজনশীল ও নৈর্ব্যত্তিক দুইটারই সমন্বয় দরকার। আর একটা কথা বিষয় অবশ্যই কম করা উচিত। এতগুলো বিষয় একটা ক্লাসে থাকার কোন মানেই হয় না এই যুগে...

৩১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:১১

হাসান মাহবুব বলেছেন: খুবই উচিত কথা।

১৩| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৩৩

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: চমৎকার একটি বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। +++

নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন সবচাইতে উত্তম পদ্ধতি যে কোন বিষয়ে মূল্যায়ন করার জন্য। আসলে প্রশ্ন তৈরী করতে পারাটা মূখ্য ব্যাপার। আমাদের দেশের প্রায় সকল লেভেলের সকল পরীক্ষায় নতুন নতুন প্রশ্ন তৈরী হয় না। পুরাতন কিছু প্রশ্ন হতে ঘুরে ফিরে প্রশ্ন করা হয়। আসলে প্রতি এক্সামের জন্য যদি নতুন নতুন প্রশ্ন তৈরী করা হয়, তাহলে সকল সমস্যার সমাধান হত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর আইবিএ এর একটি লেভেলে অর্থনীতি সাবজেক্টের একটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের পাঁচটি অপশন ছিল; যেখানে সব কয়টি রেখাচিত্র। তবে তা ভিন্ন ভিন্ন পাঁচটি থিওরি হতে যার মধ্যে একটি ভুল। প্রশ্ন ছিল ভুল কোনটি? এরকম যদি সৃজনশীলতা দেখানো যেত প্রশ্ন প্রণয়নে; তাহলে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন উঠিয়ে তথাকথিত সৃজনশীল প্রশ্ন প্রবর্তনের প্রয়োজন হত না।

আমি তো ওপেন বুক এক্সামের পক্ষে। স্টুডেন্ট'রা সেই লেভেলের প্রিপারেশন নিবে, শিক্ষকও সেই লেভেলের প্রশ্ন করবে। গুরু-শিষ্যে মেধার খেলা হবে। আহ! যদি কোন একদিন এমন শিক্ষা ব্যবস্থা হয় আমাদের দেশে।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৫৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্যের জন্যে।

সেরকম কবে যে হবে!

১৪| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:২২

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: আমার তো মনে হয় সৃজনশীল চালু করার আগে এই ক্ষেত্রে জড়িত সবারই স্কিলসেট তৈরীর জন্যে প্রপার ট্রেইনিং দেয়া প্রয়োজন ছিলো। সঠিকভাবে সেরকম কিছু হয়নি বলেই মনে হয়। আমাদের শিক্ষকরা যে পদ্ধতিতে পড়িয়ে আসছেন তাতে মুখস্থবিদ্যের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো। সৃজনশীল পদ্ধতিটা অনেক ক্ষেত্রেই সেই বেড়াজাল ভাংতে চেয়েছে। কিন্তু কতটা করা গিয়েছে আমরা দেখতেই পাচ্ছি। সৃজনশীল পদ্ধতির স্কিলসেট আমাদের শিক্ষকদের তৈরী হয়নি। আমি নিজের স্কুলের প্রশ্নপত্র দেখেছি। হাস্যকর এবং উদ্ভট রকমের। সৃজনশীল পদ্ধতিকে কার্যকর করতে গেলে অনেক কাজ করবার আছে।

এমসিকিউ এর ব্যপারে আমি একমত। খুব চমৎকার বিশ্লেষণ করেছেন। এম সি কু তুলে দেবার সিদ্ধান্ত উন্নত শিক্ষাব্যবস্থার প্রয়ণয়নের সাথে সাংঘর্ষিক। আশাকরি সংশিলষ্ট কর্তাব্যক্তিরা সেটা অনুধাবন করবেন।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: থ্যাংকিউ ইমরান।

১৫| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৪

কালীদাস বলেছেন: উড়ন্ত ওলন্দাজের সাথে একমত। এর বাইরে নিচের কথাটা যোগ করতে পারেন আমার বক্তব্য হিসাবে:
নিচের লেভেলের পড়াশোনার মান নিয়ে আরও চিন্তাভাবনার দরকার ছিল অনেক বছর ধরেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যে কোথাও কোন চাকরি পায় না সে যায় একটা কিছু করে খেতে। অথচ ঐ লেভেলটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা মানুষের সারাজীবনের বেস গড়ে দেয়ার জন্য, বেসিক, আদব কায়দা, নীতি, সামাজিক জীব হিসাবে রেডি করা, ..... সব।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:১৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: আমাদের এখানে স্কুলে পড়া গেলানো ছাড়া আর কিছুই শেখানোর প্রয়োজন মনে করা হয় না। কী দুঃখজনক! :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.