নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মিরপুরের সবচেয়ে পশ জায়গা সম্ভবত এখন সনির আশপাশটা। ওখানে এখন সিনেপ্লেক্স, পিজ্জা হাট, কেএফসি, বার্গার কিং, ওপাশে আড়ং, সুপ্রিম ডাইনার্স!
সিনেপ্লেক্সে এখনও যাওয়া হয় নি। এই সপ্তাহেই হয়তো যাবো রেহানা-মরিয়ম-নূর দেখতে। এর আগে সনি সিনেমা হল ছিলো যখন, তখন সেখানে সিনেমা দেখেছিলাম তিনটি। শাবনূর, ওমর সানির প্রেমের অহংকার, সূবর্ণা মোস্তফার রাক্ষস, আর মান্না-মুনমুনের রাজা নাম্বার ওয়ান। প্রেমের অহংকার দেখার কাহিনীটা মজার। তখন আমি নয় ক্লাসে পড়ি। দুপুরবেলায় সবাই মিলে নিয়ম করে রেডিওতে গানের অনুষ্ঠান শুনি। তো সেদিন দুপুরে রেডিওতে সিনেমার গান শুনতে শুনতে হঠাৎ সবার ইচ্ছা হলো একটা বাংলা সিনেমা হলে গিয়ে দেখে আসলে কেমন হয়! তখন আমরা, মানে কাজিনরা আর দুলাভাই মিলে গেলাম সিনেমা দেখতে। জাহিদ ভাই (দুলাভাই) সবাইকে দেখালেন সিনেমা। সিনেমার কাহিনী তেমন কিছু মনে নাই, তবে মনে আছে শাবনূরকে অসম্ভব সুন্দর লেগেছিলো ওখানে। তখন থেকেই শাবনূর আমার প্রিয় নায়িকা। আর বেচারা ওমর সানি, তাকে লাস্টে কী কারণে যেন এক বোতল সায়ানাইড খাইয়ে দেয়া হয় হত্যা করার জন্যে। কিন্তু তাও সে বেঁচে যায়। দৃশ্যটা আমাদের মধ্যে বেশ আলোড়ন তৈরি করেছিলো।
'রাক্ষস' রানা ভাইয়ার সাথে এক সন্ধ্যায় হুট করে দেখতে যাওয়া। আমার নানুবাড়ি থেকে একটু হাঁটলেই সনি হল। সেখান থেকে গিয়েছিলাম ম্যাটিনি শো দেখতে। রাক্ষসী ছিলো গ্রাম থেকে শহরে আসা সূবর্ণা মোস্তফার সংগ্রামের গল্প। সেখানে একটা সিনে সুবর্ণাকে যখন শহুরে ভাবীরা অপমান করছিলো, তখন সে শুদ্ধ ইংরেজিতে জবাব দিয়ে সবাইকে হতবাক করে দিয়েছিলো। সেই সময় দর্শকের সে কি তুমুল করতালি!
রাজা নাম্বার ওয়ান যখন দেখতে যাই তখন আমি লায়েক হয়েছি। খুলনায় পড়ালেখা করতে গেছি তখন। ছুটিতে ঢাকায় এসেছি। শুনলাম মুনমুন অভিনীত রাজা নাম্বার ওয়ান সিনেমাতে নাকি বিশেষ কিছু দৃশ্য আছে। তাই একাই চলে গেলাম দেখতে। নাহ, তেমন কিছু ছিলো না। তবে মুনমুনকে খুব ভালো লেগেছিলো। কাটপিস যুগের নায়িকাদের মধ্যে মুনমুন আমার ফেভারিট ছিলো। তার সাথে মেহেদী নামক এক নায়কের নাচগুলির জন্যে অপেক্ষা করতাম।
সনি হলের পাশেই ছিলো সনি মার্কেট। সেখানে কিছু ক্যাসেটের দোকান ছিলো, আর ছিলো প্রচুর ভিডিও গেমস খেলার দোকান। দুই টাকা কয়েন। তিন কয়েন পাঁচ টাকা। দশ টাকা দিলে পুরা গেম। আমাকে স্কুলে যাওয়ার জন্যে দেয়া হত ত্রিশ টাকা রিকশা ভাড়া। আমি মাঝেমধ্যে হেঁটে সনিতে গিয়ে পুরো টাকা দিয়ে সারাদিন ভিডিও গেম খেলে চলে আসতাম। যারা ভিডিও গেমগুলি বানিয়েছে,তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতাবনত হয়ে যেতাম।মাত্র দুই টাকা দিয়ে এই অসাধারণ আনন্দের অনুভূতি পাওয়া যাচ্ছে, মনে হত যে আমার প্রতি তারা দয়া করছে!
দুই টাকার দিন শেষ। এখন চড়া দামে আনন্দ কিনতে হয়। সনি হল এখন অতীত। তারপরেও যখন রিকশাওলাকে বলবেন আপনার গন্তব্য, সনি হলই বলতে হবে। তারা কেএফসি অথবা সিনেপ্লেক্স চিনবে না। এই যেমন এখন শ্যামলী হল ভেঙে শ্যামলী স্কয়ার হয়ে গেছে, কিন্তু বাস থেকে নামার সময় আপনাকে "হল শ্যামলী"তেই নামতে হবে! এশিয়া হলে বহুদিন ধরে সিনেমা আসে না। ওটা নিয়েও নিশ্চয়ই মালিক ডিপজল ভায়ার কোন পরিকল্পনা আছে। সিনেমা হলের আসলে কোথাও কোন ভবিষ্যত নেই। বিশেষ করে ঢাকা শহরে তো একদমই নেই।
ঢাকার সিনেমা হল নিয়ে আমার তেমন কোন স্মৃতি নেই, কাতরতাও নেই। তারপরেও কোন একটা যুগের অবসান ঘটছে, নতুন এসে সব দখল করে নিচ্ছে, এই পালাবদলের মধ্যে যে বিষণ্ণতার সুর বাজে, সেটায় আমি নিজেকে কিছুটা নিমজ্জিত হতে দিতে আপত্তি করবো না একদম!
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:১০
হাসান মাহবুব বলেছেন: আসলেই, হারিয়ে যাওয়া জিনিসের একটা সৌন্দর্য থাকে। সিনেমা হল তো তাও দীর্ঘ সময় টিকে ছিলো। সিনেপ্লেক্স কতদিন থাকে দেখেন। আর দশ বছর পর তো সব ভার্চুয়ালে চলে যাবে, মেটাভার্সের দুনিয়ায়।
২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:২০
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আমি আমার প্রথ সিনেমা দেখেছি সিনেমা হলে সম্ভবতঃ ৬ টাকায় (ময়নামতি সেনামিলনায়তনে)। আর এখন কত ??
তা জানিনা এবং সিনেমা দেখার জন্য এখন আর যাওয়াও হয়না সিনেমা হলেও। এইতো পালাবদল ? তাইনা ভাইজান।
সভ্যতা এগিয়ে যাচছে আমরাও এগিয়ে যাচছি সাথে সাথে বেড়ে যাচছে সবকিছুর দাম । আর হলে এখন কে যায় ? মোবাইলের এক ক্লিকেই যেখানে সব কিছু দেকা যায়।
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৮:২৮
হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁ, সিনেপ্লেক্সেও আর কেউ যাবে না কিছুদিন পর।
৩| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:২১
রাজীব নুর বলেছেন: সনির সামনে সুরভির সাথে জীবনের প্রথম দেখা হয়। সুরভি তার বাসা থেকে সনি আসতো, আমি আমার বাসা থেকে সনি আসতাম।
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৮:২৯
হাসান মাহবুব বলেছেন: বাহ! আমার লেখার সুবাদে চমৎকার একটা গল্প জানা গেলো।
আপনাদের জন্যে শুভকামনা।
৪| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৩০
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: সনিতে কখনো সিনেমা দেখা হয় নাই, তাই কোনো স্মৃতিও নাই!!
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৮:৪১
হাসান মাহবুব বলেছেন: ওহ। ধন্যবাদ পাঠের জন্যে।
৫| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:২১
ইসিয়াক বলেছেন: স্কুল পালিয়ে সনি সিনেমা হলে ছবি দেখেছি বেশ কয়েকটা। প্রথম দেখেছি অবুঝ হৃদয়। ববিতা, জাফর ইকবাল আর চম্পার দারুণ প্রেমের ছবি। সম্ভবত সনি চিত্রকথার প্রযোজনা ছিল ছবিটি। সেই ছবির " তুমি আমার জীবন " এখন ভালো লাগে আমার।
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৮:৪৩
হাসান মাহবুব বলেছেন: আহা, সেই দিন আর আসবে না!
৬| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:১৯
জুল ভার্ন বলেছেন: কম পক্ষে ২৫ বছর আগে দেশের কোনো সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখেছি। তবে স্টার সিনেপ্লেক্সে দুটো মুভি দেখেছিলাম তাও বছর পাঁচ আগে।
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৮:৪৩
হাসান মাহবুব বলেছেন: এখন সবাই সিনেপ্লেক্সেই যায়।
৭| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:২৫
প্রত্যাবর্তন@ বলেছেন: পালাবদলের গল্প ভাল লাগল ।
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৮:৪৩
হাসান মাহবুব বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ পাঠের জন্যে।
৮| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:০২
ঢাবিয়ান বলেছেন: সিনেমা হল থেকে সিনেপ্লেক্স পালাবদল আমার মতে খুবই ভাল হয়েছে।আগেকার সিনেমা হলগুলোর পরিবেশ জঘন্য ছিল। কিন্ত এখন সিনেপ্লেক্সগুলো একেবারে বিদেশি কায়দায় তৈরী। পবিবেশ অতুলনীয়।
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৮:৪৪
হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁ, এই কথা অস্বীকারের উপায় নেই।
৯| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:১৩
ঈশান মাহমুদ বলেছেন: সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর সিনেমা হল গুলো সব বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। সে সঙ্গে বিলীন হয়ে যাচ্ছে আমাদের উঠতি তারুণ্যের কিছু স্মৃতিময় অতীত। একেকটা সিনেমা হল যেন একেকটি ইতিহাস।
কেমন আছেন হামা ভাই?
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:২৫
হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁ, ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?
বহুদিন পর দেখা !
১০| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১১:২৮
রাজীব নুর বলেছেন: ইচ্ছা আছে সুরভি আর আমি একদিন গিয়ে একটা মুভি দেখে আসবো।
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:০৩
হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার ইচ্ছা। পূরণ করে ফেলেন।
১১| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১:৪৭
নেওয়াজ আলি বলেছেন: ইস ছোট বেলায় সিনেমা হঢ়ে ছবি দেখার আনন্দ বলে শেষ করা যাবে না। বিশেষ করে ঈদের সময় । আর এখন সেইসব হল মার্কেট গিয়েছে।
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:১৫
হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁ, আমাদের সিনেমা খুব একটু উচ্চস্তরের না হলেও এ নিয়ে স্মৃতিগুলি সুন্দর।
১২| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১:৪৭
স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: নটরডেম কলেজে পড়ার সময় আমাদের রিচুয়াল ছিল প্রতি শুক্রবার দল বেঁধে মধুমিতায় ইংরেজি সিনেমা দেখা - কখনো কখনো ৫০/৬০ জনের টিকেট পর্যন্ত কেটেছি। আর মাঝে মাঝে পরীক্ষা শেষে গুলিস্তান বা নাজে যেতাম ইবনে মিজান মার্কা বাংলা ছবি দেখতে, উদ্দেশ্য একটাই - সিনেমার মাঝে দল বেঁধে মাঝেমধ্যে শীষ বা সিটি দেয়া ! কি যে আনন্দে কাটতো সেই দিনগুলো। সিনেমা ভালো না লাগলে ছয় নম্বর বাসের কন্ডাক্টরকে আমরা দল বেঁধে বলতাম "পুরা ভাড়া দিবার পারুম না আজ - বই ভালো হয় নাই" !
দেশে হলে গিয়ে শেষ সিনেমা দেখেছি পদ্মা নদীর মাঝি - বড়ো পর্দায় সে এক অন্যরকম অনুভূতি !
সেইদিনগুলো আর ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই।
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:১৬
হাসান মাহবুব বলেছেন: বাহ, চমৎকার স্মৃতি!
১৩| ১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ২:৩৪
প্রামানিক বলেছেন: সিনেমা দেখার সেই আনন্দ মনে হয় এখন নাই। সেই সময় সিনেমা দেখা একটা নেশার মত ছিল। তবে গার্জিয়ানকে ফাঁকি দিয়েই দেখতে হতো।
১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:১৬
হাসান মাহবুব বলেছেন: অনেকদিন পর আমার ব্লগে আসার জন্যে ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৪৬
শায়মা বলেছেন: আহা কত সুন্দর করে লিখলে হামা বেবিভাইয়ু।
আমি সব সময় সব নতুন কিছু মেনে নিতে রাজী কিন্তু হারানো দিন হারানো ভালোলাগাগুলো ফিরে পাওয়া যায় না যদিও তবুও কত সুন্দর!
সেই ভাবনা আমাকে আনন্দে ভাসায়।
তোমার এই লেখা পড়ে মনে হয় হয়ত নতুন দিনের মানুষেরা ঢাকা শহরে ৩/৪ টা সিনেপে্ক্সের বেশি দেখবে না।
আগের দিনের সেই সব সিনেমাহল অনেক অনেক অনুন্নত তবুও সেটা কত আনন্দের ছিলো জানবেনা কখনও।