নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এ বছরে হয়তো আমি আরো অনেক বই পড়বো, এর মধ্যে অনেক ভালো লেখকের অনেক মাস্টারপিস বইও থাকবে, তবে বাবর আলীর "পায়ে পায়ে ৬৪ জেলা"র মত বই মনে হয় না আর পাবো। বাবর আলী কোন পেশাদার লেখক নন। তিনি মূলত চিকিৎসক এবং একজন অভিযানপিয়াসী মানুষ। তিনি ঘুরে বেড়ান পাহাড়ে পাহাড়ে, কায়াকিং করেন, সাইকেলে করে দেশ ভ্রমণ করেন। তবে তার সবচেয়ে কঠিন মিশন ছিলো নিঃসন্দেহে ৬৪ দিনে পায়ে হেঁটে ৬৪ জেলা ভ্রমণ করা। প্রতিদিন তাকে হাঁটতে হয়েছে ৪০ থেকে ৫৫ কিলোমিটার। একটা দিন একটু অসুস্থ হলে বা কোন দুর্ঘটনা অথবা ঝামেলায় জড়িয়ে গেলেই তার এই মিশন সম্পন্ন হতো না। তিনি এটি সম্পন্ন করেছেন সাফল্যের সাথেই।
পায়ে পায়ে দেশ ভ্রমণের সুবিধা হলো দেশটাকে খুব ভালোমত দেখা যায়। কথা বলা যায় ভ্যানচালক, স্কুলের শিক্ষার্থী, তালা সারাইকারী অথবা জাদুটোনার সাথে। বিচিত্র এই দেশের বিচিত্ররকম পেশাজীবীদের সাথে পরিচিত হওয়াটা একটা অভিজ্ঞতা বটে। এই যেমন আপনি কি জানেন বাংলাদেশের কোন অঞ্চলে রাস্তায় প্রচুর 'ডুবুরী'র বিজ্ঞাপন দেখা যায়? আচ্ছা বলেন তো, ধামাঘষা পেশাটা কোন অঞ্চলে প্রচলিত?
উত্তরবঙ্গের "বাড়ি কোঠে" থেকে শুরু হয়ে পশ্চিমাঞ্চলে এসে তা হয়ে যায় "বাড়ি কনে" আর দক্ষিণের শেষ প্রান্তে যেন কী বলে, এ মুহূর্তে মনে পড়ছে না, তবে ভাষার এই ভেসে যাওয়া দেখাটা খুবই উপভোগ্য। বিশেষ করে যখন নিজের পরিচিত এলাকাগুলির সাথে মিলে যায়।
এই দেশের মানুষ সাধারণত পরিব্রাজক দেখে অভ্যস্ত না। তাই বাবর আলীকে তারা কৌতূহলী চোখে দেখেছে। অনেকের কাছেই তাকে মনে হয়েছে সে পাগল। কেউ কেউ আবার তার সাথে হেঁটেছে কিছু পথ। গুগল ম্যাপকে টেক্কা দিয়ে কখনও তারা তাকে চিনিয়ে দিয়েছে গোপণ পথ।
পথ চলতে গিয়ে ছটফটে পাখি, কৌতূহলী মানুষ, ভুল বানানের পোস্টার, দানবাকৃতির ট্রাক অথবা টং দোকানের আড্ডা এই অতি পরিচিত দৃশ্যগুলিই ঐকান্তিক নিবিড়তা দিয়ে বারবার আবির্ভূত হবে আপনার কাছে।
পথ থেকে ফিরতে হয় ঘরে। ৬৪ দিনের মধ্যে দুইদিন তিনি থেকেছেন হোটেলে, বাকি ৬২ দিন কারো না কারো বাসায়। বাঙালির আন্তরিকতা আর অতিথিপরায়নতার কথা তো বলাই বাহুল্য! প্রতিটি বাড়িতে এই সমাদর দেখে মনে হয়েছে আমরা আসলে মানুষ হিসেবে সূর্যালোকের মতই উজ্জ্বল আর উষ্ণ। একটা ফিল গুড আর ইতিবাচক অনুভূতি সবসময় ঘিরে থেকেছে।
লেখকের রসবোধ বেশ ভালো। উদাহরণ দেই। তিনি নোয়াখালিতে এসে কোথাও নোয়াখালি বিভাগ চাওয়ার আন্দোলন দেখেন নি, কিন্তু সিলেটের বা অন্য কোন এক জেলার যেন জারুয়া বাজার উপজেলা চেয়ে পোস্টারে পোস্টারে সয়লাব দেখেছেন রাস্তাঘাট। নোয়াখালিতে এসে আন্দোলনের দূরাবস্থা না কি তাকে হতাশ করেছে। এদিকে পথ চলতে কোন এক জায়গায় দুজনের মধ্যে বচসা আগ্রহ নিয়ে শুনতে গিয়ে সেটা হঠাৎ থেমে যাওয়ায় তার হতাশা প্রকাশও মিটিমিটি হাসি এনে দেবে আপনার মুখে।
তার এই অভিযানের সময়ে তিনি প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা চালিয়ে গেছেন। বিভিন্ন প্রসঙ্গে নানা বই, নানা চরিত্রের কথা উল্লেখ করেছেন। তার পড়ার পরিধি বেশ ভালো। আর এই পাঠাভ্যাস তাকে দিয়েছে প্রাঞ্জলভাবে লেখার সক্ষমতা।
তাই বিষয়বস্তু এবং লেখার মান দুই মিলিয়ে এটি একটি অবশ্যপাঠ্য বই। অর্ডার করুন চন্দ্রবিন্দু থেকে।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৪৩
হাসান মাহবুব বলেছেন: সাইকেলে করে গেলেও চমৎকার হবে। বইটা পড়ে ফেলো। শুভকামনা রইলো।
২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৩:৫৪
নেওয়াজ আলি বলেছেন: অনেক পরিশ্রম করেছেন উনি। বিভিন্ন ধরনের মানুষের সাথে মিশে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা সাহিত্যে রূপ দিয়েছেন । শুভ কামনা।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৪৩
হাসান মাহবুব বলেছেন: আপনার জন্যেও শুভকামনা।
৩| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:১৪
মনিরা সুলতানা বলেছেন: চমৎকার পাঠ প্রতিক্রিয়া !
সংগ্রহে রাখার আগ্রহ থাকলো।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৪৪
হাসান মাহবুব বলেছেন: শুভেচ্ছা মনিরা।
৪| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:০৭
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো একটা বইয়ের সন্ধান দিলেন। ধন্যবাদ।
১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৪৪
হাসান মাহবুব বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ রাজীব।
৫| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:২০
দেশী পোলা বলেছেন: হাই হামা
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:১৪
হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যালো! কিছু কন। কিছু একটা কন।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ২:৪৯
অপু তানভীর বলেছেন: বারর আলীর মত আমারও এইভাবে ৬৪ টা জেলা ঘোরার শখ। তবে ঠিক পায়ে হেটে নয়। আমার শখ সাইকেল কিংবা স্কুটিতে করে। ধরুন একদিন সকালে বের হয়ে গেলাম।
বইটি পড়ার আগ্রহ প্রকাশ করলাম। লিস্টে যুক্ত করে নিলাম।
চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনি থেকে হলে মেলা থেকেই কিনবো। না হলে অনলাইনে।