![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমরা অনেক কিছু করতে পারি না, অনেক কিছু শেখা বাকি, অনেককিছুতে দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন। কিন্তু একটা বিষয় আমরা খুব ভালো পারি। সেটা আমাদের মতো আর কেউ পারে না। অন্য কাউকে যদি সেই দক্ষতাটা অর্জন করতে হয় তাহলে বছরের পর বছর অক্লান্ত পরিশ্রম ও চর্চা করতে হবে, তারপরেও সেটা আমাদের পর্যায়ে যাবে না।
সেটা কী?
আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারি। বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারা নিয়ে অবশ্য কাউকে গর্বিত মনে হয় না। অত্যন্ত কম প্রভাবশালী একটা ভাষা। কিন্তু বাঙালিত্ব থেকে বের হবার কোনো উপায় আমাদের নেই। হয়ত বা ময়মনসিংহে একদল লোক আরবি লেখা কালো পতাকা নিয়ে মিছিল করতে পারে, কিন্তু ব্যথা পেলে তাদের বাংলাতেই চিৎকার করতে হবে “বাবা গো!” বলে , কিংবা পার্শ্ববর্তী জেলার মিষ্টির তুলনায় নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করতে হলে বলতে হবে “আমরার মন্ডার উপ্রে কিছু নাই”।
উত্তরের দিকে গেলে “আমরার” হয়ে যাবে ‘হামার’ আর দক্ষিণে “আংগো”। কিন্তু কুড়িগ্রামের একজন মানুষ কুমিল্লার চায়ের দোকানে বসে গুলতানি চালিয়ে যেতে কখনই দ্বিধায় ভুগবে না, মাছের যেমন আছে জল, তাদের দুজনের মধ্যে আছে ভাষার সেতু। তখন হয়ত ঢাকা থেকে ভালো ইংরেজি জানা একজন তরুণ এসে বসেছে, কানে হেডফোন লাগিয়ে মগ্ন, শুনছে গানস এন রোজেস। বাংলা গান, সিনেমা, ভাষা কোনোকিছুই তার ভালো লাগে না। সেও কিন্তু মনের ভেতর বাংলা ভাষাতেই শব্দ বুনে চলেছে “এই বালের জায়গাটা থেকে কবে যে ফিরব ঢাকায়, ভাল্লাগে না!”।
তার সাথে কোনো একদিন দেখা হবে একজন আমেরিকান মধ্যবয়স্ক মহিলার। ভদ্রমহিলা চমৎকার বাংলা শিখেছেন। বাংলাকে ভালোবাসেন। কিন্তু বাংলার প্রতি উদাসীন, ইংরেজিকে ভালোবাসা সেই যুবকের কানে ঠিকই বাজবে মহিলার বাচনভঙ্গির খুঁতগুলি। বাঙালির বাংলা বলা আর বিদেশীর বাংলা বলা কি কখনও একরকম হতে পারে? বাংলাকে ভালোবাসা , ভালোবেসে বাংলা শেখা কোনো ভীনদেশীই একজন বাংলাভাষীর সমতুল্য না, এবং হতে পারবেও না কখনও।
বাংলা ভাষা আমাদের কসরত করে শিখতে হয় না। শ্বাস নিতে যেমন শিখতে হয় না, যেমন শিখতে হয় না পানি পান করার নিয়ম। আমাদের কসরত করে শিখতে হয় ইংরেজি এবং অন্যান্য ভাষা। সেই যে কেজি ক্লাস থেকে শিখছি, শেখা শেষ হয় না! নতুন ভাষিক দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে আমরা পৃথিবীকে চিনছি। উপভোগ করছি উন্নত চলচ্চিত্র, গান, বই, কার্টুন, মিম। এসবের মধ্য থেকেও মনে হয় বাংলার সূক্ষ্ণ থেকে সূক্ষ্ণতর কারুকার্য জানার, বোঝার ও প্রয়োগ করার আনন্দের মতো আর কিছু নেই, এই দক্ষতাটা বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অগুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হলে হোক!
বাস্তবতা হচ্ছে, আপনি, কিশোরগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকার মুদী দোকানদার অথবা ঝালকাঠির বিকাশ এজেন্ট এবং আমি-আমরা কেউ বাংলা ভাষা জানার দক্ষতাটাকে আর কোনো দক্ষতা দিয়েই প্রতিস্থাপিত করতে পারব না। বাস্তবতা হচ্ছে, আরবি লেখা কালো পতাকা উত্তোলন করা অথবা ইংরেজি টি-শার্ট পরা আপনার স্বপ্নের মধ্যে যখন প্রাক্তন প্রেমিকা বিলকিসকে মনে পড়বে, তখন আপনি বাংলাতেই ডুকরে কেঁদে উঠবেন “কই গেলা তুমি বিলকিস! ফিরা আসো”- বলে।
বাংলা ভাষায় কথা বলার চেয়ে আর কোনো কিছু আপনি ভালো পারেন না, আমিও না।
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১০
হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁ, ধন্যবাদ পাঠের জন্যে।
২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৫:৪৬
কু-ক-রা বলেছেন: উহা (হাসান মাহবুব) বাংলা ভাষার কারুকার্য প্রয়োগ করিয়া আনন্দিত হইতে চায়। ইহাতে সমস্যা নাই। তবে, ভাষা একপ্রকারের সীমাবদ্ধতা। উহা অতিক্রম করিতে হইলে উহার (ভাষার) উর্ধে উঠিয়া চিন্তা করার বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন।
৩| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫০
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: আমার ভাষা আমার প্রাণ।
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৩
হাসান মাহবুব বলেছেন: ভাষার প্রতি ভালোবাসা অনেকেই উপলদ্ধ্বি করতে পারে না। ভালো থাকবেন।
৪| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:৩৯
কামাল১৮ বলেছেন: ভাষা একটা চলমান বিষয়।প্রতিনিয়ত নতুন নতুন শব্দ যুক্ত হয় পুরনো কিছু শব্দ হারিয়ে যায়।আমরা বর্মানের সাথে থাকি বলে বুঝতে পারি না।৫০০বছর আগের বাংলা ভাষা আর আজকের বাংলা ভাষা এক না।
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৪
হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁ, বদলায়। তবে মানুষ তো আর ৫০০ বছর বেঁচে থাকে না। সে মাতৃভাষাকে যেভাবে দেখে, সেভাবেই ভালোবাসে।
৫| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:৫২
জুল ভার্ন বলেছেন: মাতৃভাষা।
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৪
হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁ, এখানে আমি নির্দিষ্ট করে মাতৃভাষার কথা বলেছি। আসলে সবাই তার মায়ের ভাষার প্রতি একইরকম অনুভব করে।
৬| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৩:২৮
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৫
হাসান মাহবুব বলেছেন: বাংলাকে ভালোবাসি।
৭| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:৫৭
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৫
হাসান মাহবুব বলেছেন: ধন্যবাদ।
৮| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১২:৫০
জনারণ্যে একজন বলেছেন: বাংলায় কথা বলা আর বাংলা ভাষা জানা - পার্থক্য আছে দু'ক্ষেত্রে। বাংলা ব্যাকরণ খুবই কঠিন মনে হয় আমার কাছে।
বাংলাদেশে জন্মেছি, সুতরাং এটা খুবই স্বাভাবিক যে আমি বাংলায় কথা বলতে পারবো। কিন্তু যখন জানার প্রসঙ্গ আসে, তখন সেটা বোঝা যাবে কাউকে বাংলা ব্যাকরণবিধি মেনে, শুদ্ধ বানানে কয়েকটা বাক্য গঠন করতে বলা হয়।
আমেরিকাতে জন্ম, এমন কয়েকজনকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি, যারা সাবলীলভাবে বাংলা এবং ইংরেজি - দু'ভাষাতেই অনর্গল কথা বলতে পারে। কোনো অ্যাকসেন্ট নেই। বাংলা শুনলে বোঝারও উপায় নেই যে তার জন্ম এখানে। আবার কিছু স্টুডেন্টসকেও দেখেছি, এখানে আসার কিছুদিন পর বাংলা শব্দ উচ্চারণ করে ইংরেজির মতো করে।
যাই হোক, একটু স্পষ্ট করে বলি। বাংলাদেশের বাইরে বাংলা ভাষার আসলে বিন্দুমাত্র মূল্য নেই। ইংরেজি জানাটা খুবই প্রয়োজন। এখানে জানা মানে বুঝিয়েছি - বলতে এবং লিখতে পারা।
নিজের ভাষা নিয়ে গর্ব করা যেতেই পারে, তবে এই গ্লোবালাইজেশনের যুগে তা মূল্যহীন। আর এই বাংলাও যে কতজন ঠিক মতো বলতে বা লিখতে পারে তা নিয়েও আমার ঘোরতর সন্দেহ আছে।
বাংলায় অশুদ্ধ উচ্চারণে কথা বলতে পারা কিংবা দুই পাতার গরু রচনা লিখতে পারাকে বাংলা ভাষা জানা বলে না।
৯| ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৫২
ছন্দ্বহীন বলেছেন: বাংলায় করি খাওয়া দাওয়া আর বাংলায় মুই হাসি ।
ইংরেজিতে আটকে গেলে, বাংলাতেই মুই কাঁশি।।
অনেকদিন পর আপনার লেখা পড়া হলো, ভাল লেগেছে হামা ভাই ।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৫:৩২
নতুন বলেছেন: ভাই নিজের ভাষা হইলো পানির মতন।
আপনি যতই ককটেইল, মকটেইল, শরবত পান করেন।
তৃষ্না শুধুই পানিতেই মেটে।