নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সহজ কথা কইতে আমায় কহ যে, সহজ কথা যায়না বলা সহজে ...

পেলব চক্রবর্তী

ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম...

পেলব চক্রবর্তী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বকাপ ফুটবল; আকাশে-বাতাসে বিদেশি পতাকা ও সাথে অল্প কিছু কথা

১১ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৫৫

ব্যাপারটি নিয়ে আসলে লেখার কোন দরকার আছে কি না সেটাই একটা বেশ বড় প্রশ্ন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এর মধ্যেই দুটি ঘটনা ঘটে গেছে এ নিয়ে। এগুলো হল:

১। গত পরশু যশোরে জেলা প্রশাসক একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ২৪ ঘন্টার মধ্যে সব বিদেশি পতাকা নামিয়ে ফেলতে বলেছিলেন। যশোরে নাকি পতাকা নামানো হয়েও গেছে।

২। গতকাল আমাদের একজন মন্ত্রী সকল বিদেশি পতাকা নামিয়ে ফেলার অনুরোধ করেছেন।

তাই ব্যাপারটি নিয়ে একটু আলোচনার প্রাসঙ্গিকতা যে নেই, তা ঠিক বলা যাচ্ছে না।









বাংলাদেশের সংবিধান যদি ঘাটাঘাটি করি, তাহলে আমারা দেখব, সেখানে বলা আছে, বাংলাদেশ পতাকা বিধিমালা ১৯৭২-এর বিধি ৯(৪) অনুযায়ী দেশের অভ্যন্তরে কোনো ভবনে বা যানবাহনে কোনো বিদেশি পতাকা উত্তোলন করা যাবে না।



আমাদের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের নিয়ম-কানুন ব্যাপক। এতগুলো নিয়ম-কানুন একটানা পড়তে পড়তে আমার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছিল(আামার চোখের সমস্যা আছে, সে কারণে)। সেগুলো এখানে উল্লেখ করে আমি পাঠককে একেবারেই বিরক্ত করতে চাই না। খুব্ স্বাভাবিক, আমরা অধিকাংশই এসব নিয়ম-কানুন সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানি না। জানার খুব বেশি দরকারও হয় না। কিন্তু এবার যেন দরকারটা বেড়ে গেল।



সংবিধানে বিজাতীয় পতাকা উত্তোলনের ব্যাপারেও কিছু নিয়ম-কানুন আছে। কিন্তু আমরা বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় যেভাবে বিজাতীয় পতাকার ছড়াছড়ি করি, সেটা সংবিধান সম্মত নয়। মানে, স্পষ্টতই আমরা পতাকা আইন অমান্য করছি।



কিন্তু এই অমান্য করার ব্যাপারটাতো আজ বা এবার নতুন নয়। প্রতিটিবার বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় দেশের প্রায় প্রতিটি প্রান্ত বিজাতীয় পতাকাতে ছেয়ে যায়। আমি মোটামুটি নিশ্চিত, আমাদের জাতীয় দিবসগুলোতে, যে দিনগুলোতে আমাদের নিজেদের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবার কথা, সেসব দিনেও এত জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হয় না।



শুধু কি এই বিশ্বকাপ ফুটবল? বিজয় দিবসে বা তার দু-একদিন আগে পরে কি জাতীয় পতাকা আইন অমান্য হয় না? অনেক সময়ই তো পতাকা রাস্তা-ঘাটে পড়ে থাকতে দেখি। মানুষ সে পতাকা আনমনে পাড়িয়ে চলে যায়। এমন আরও হাজারটা উদাহরণ হয়ত দেয়া যাবে।



তো এসব কোন কিছুর দিকে না তাকিয়ে, যেখানে কোনবার কোন কথাই বলা হয় না, সেখানে কেন এবার বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় বিজাতীয় পতাকা নামানোর জন্য এত তোড়জোড়?









এটা সত্যি। পতাকা আইন অমান্য করা অনুচিত। সেদিক থেকে ভাবলে, আমাদের কারোরই বিজাতীয় পতাকা উত্তোলিত করে উল্লাস করা উচিত না। কিন্তু, বিশ্বকাপ ফুটবল এবং এসময়টাকে ঘিরে বাঙ্গালীর উচ্ছ্বাস আমাদের প্রায় রক্তের সাথেই মিশে গেছে। বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় এলেই ঘরে ঘরে প্রিয় ফুটবল দলের দেশটির পতাটা টাঙ্গানোও আমাদের ঐতিহ্যের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর ফুটবল খেলা নিয়ে আমরা এতটাই উন্মত্ত থাকি যে, প্রিয় দলকে সমর্থন করা না করা নিয়ে হাতাহাতি/মারামারি পর্যন্ত করে ফেলি। তাই, এখন যদি সরকারীভাবে নিষেধাক্কা দিয়ে আমাদেরকে আমাদের প্রিয় দলের দেশটির পতাকা নামিয়ে নিতে বলা হয়, তাহলে আমাদের মন কষ্ট পাবে। জোর করে করানো হলে হয়ত সবাই চাপে পড়ে বিজাতীয় পতাকা নামিয়ে ফেলবে। কিন্তু মন থেকে নামাতে পারবে না। তাই, কর্তৃপক্ষের উচিত হবে আগে ব্যাপারটি সবাইকে বোঝানো। মানুষের খেলা পাগল অনুভূতিকে আঘাত দিয়ে নিষেধাক্কা জারি করাটা হয়ত ঠিক হবে না।









পতাকা আইন লঙ্ঘনের শাস্তি আছে। কি শাস্তি? বলছি। ১ বছরের কারাদন্ড বা ৫,০০০ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড। আজ পর্যন্ত কেউ এ শাস্তি পেয়েছে বলে শুনিনি।



আসলে ব্যাপারটি এতটাও জটিল নয়। এটা শুধুই একটা উপলগ্ধির ব্যাপার। বাংলাদেশী হিসেবে আমাদের সবারই উচিত এদেশের আইন-কানুন মেনে চলা। যে ভুল অতীতে হয়েছে, সে ভুল সারাজীবন ধরে হতেই থাকবে, তার কোন মানে থাকতে পারে না। মানুষ ভুল বুঝে ভুল শুধরাতেই পারে। আর যদি আজ আমরা ভুল না শুধরাই, তাহলে আমাদের পরে যারা আসবে তারাও কিন্তু একই ভুল করতে থাকবে। কারণ, আমরাও আমাদের অনেক ভুলই আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে পেয়েছি।



আর পতাকা উত্তোলিত না করলে যে সমর্থন করা কম হয়ে যাবে, এমন চিন্তা-ভাবনাও নিঃসন্দেহে ভুল। তাই অনুরোধ, একটু ঠান্ডা মাথায় ব্যাপারটি ভাবার। এতে করে বিশ্বকাপের আনন্দ মাটি হয়ে যাবে না, আমি নিশ্চিত।।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.