নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সহজ কথা কইতে আমায় কহ যে, সহজ কথা যায়না বলা সহজে ...

পেলব চক্রবর্তী

ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম...

পেলব চক্রবর্তী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্লাইন্ডফোল্ডেড থেমিস, বৈশাখী কালচার, উগ্রবাদ: কে কার দুশমন

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৪১



গ্রীক রূপকথার কাছে শুধু আমাদের মজার শৈশবটাই ঋণী তা নয়, গ্রীক সভ্যতা ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের কাছেও আধুনিক সভ্যতার দায় অনেক। আধুনিক চিন্তা-ভাবনা বা দর্শনের উৎস সেই গ্রীস। স্থাপত্যবিদ্যার ক্ষেত্রেও পথ দেখিয়েছে তারাই। পৃথিবীর নামকরা সব বিশ্ববিদ্যালয় আজকের দিনে স্থাপত্যবিদ্যায় পাঠ দান করা হয়। ভাস্করগণ মনের সকল সৃজনীশক্তি একসাথে করে জড়ের মধ্যে ফুটিয়ে তোলেন প্রাণ, তুলে ধরেন জীবন-জীবিকার গল্প, আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস। পৃথিবীর প্রায় প্রত্যেকটি দেশ তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে প্রাণ দান করেছে ভাস্কর্যের মাধ্যমে। পৃথিবীর প্রত্যেকটি বড় বড় শহরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে অপরূপ সুন্দর সব জড়ভাস্কর্য। না জানলে অবাক হওয়া স্বাভাবিক- মধ্যপ্রাচ্যে ভাস্কর্যের যেন ছড়াছড়ি, অর্থাৎ মুসলিম দেশগুলোতে ভাস্কর্য হারাম- এইসব ছলচাতুরি পৃথিবীর কোথাও চলে না। আমরা আজকের দিনেও অবাক হয়ে দেখি, সেই ছলচাতুরিগুলো চলে বাংলাদেশে। আর সেদেশের প্রধানমন্ত্রী সমর্থন জানান কিছু বুদ্ধিহীনের অন্যায় আবদারে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘এটা কেন করা হলো, কারা করল, কীভাবে—আমি জানি না। ইতিমধ্যেই আমাদের প্রধান বিচারপতিকে আমি এই খবরটা দিয়েছি এবং খুব শিগগির আমি ওনার সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে বসব। আলোচনা করব এবং আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটা এখানে থাকা উচিত নয়।’(সূত্র: প্রথম আলো)

হাইকোর্টে থেমিসের ভাস্কর্য কারা কবে করেছে তা আমি জানিনা। তবে কেন করেছে তার উত্তর খোঁজার চেষ্টা আমি করেছি। থেমিস গ্রীক দেবী, যিনি ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারতেন। মৃত্যুর পর মানুষ স্বর্গ পাবে না নরকে যাবে- তার বিচার করতেন। প্রতিটি মানুষকে যেন তিনি সমান ভেবে এই বিচারটুকু করতে পারেন- সেই জন্যই চোখে কালোকাপড় বাঁধা, যেন মুখ না চিনে বিচার করা। তাঁর ডান হাতে তলোয়াড়- যা শক্তির প্রতীক। বাম হাতে নিক্তি। সেই দৃঢ়চেতা দেবীর প্রতিমূর্তিটি আমাদের সর্বোচ্চ বিচারালয়ে স্থাপিত- যা বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার পক্ষপাতহীনতা ও শক্তিমত্তার প্রকাশক। এখন প্রশ্ন হল- কেন গ্রীক দেবী। অন্য কিছু ছিল না? হ্যা ছিল। তবে জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রায় প্রত্যেকটি শাখায় গ্রীকদের এতবেশি অবদান যে তাঁদের সম্মানার্থেই আমরা অনেক স্থানেই তাঁদেরকে তুলে ধরি- জেনে অথবা না জেনে। এই থেমিসের মূর্তি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে স্থাপিত আছে ন্যায়ের প্রতীক হিসাবে। সুইজারল্যান্ডের বার্নে, ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টে, ইটালির রোমের ‘প্যালেস অব জাস্টিস’ এ, জর্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে, কানাডার সুপ্রিম কোর্টে, লন্ডনের ’সেন্ট্রাল ক্রিমিনাল কোর্ট’ এ, জাপানের শিবুয়া-কু তে, চেকরিপাব্লিকে, জাপানের চৌ ইউনিভার্সিটিতে, যুক্তরাষ্ট্রের টেনিসি তে, ইরানের তেহরানে, অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড সহ আরও অনেক দেশের গুরুত্বপূর্ণ সব ভবনে থেমিসের ভাস্কর্য চোখে পড়ে। তাই, এই লেখাটি পড়ার পর এই ভাস্কর্যের গুরুত্ব বা তাৎপর্য নিয়ে কথা বলার আগে অনেকবার করে ভাবতে বসুন। এবার বোঝা সহজ- কেন আমাদের হাইকোর্টের সামনে এই ভাস্কর্যটি স্থাপিত হয়েছে।


ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলার বর্বরতাগুলোও বেশ পুরোনো। কোন অন্যায় ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলা নন্দিত ব্যাপার। সত্যজিৎ রায়ের ‘হিরক রাজার দেশে’ তে একেবারে শেষে সবাই দড়ি ধরে টেনে হিরক রাজার মূর্তি ভেঙ্গে ফেলে- এমনকি সে দলে ছিলেন মগজভ্রষ্ট হিরকরাজা নিজেও। পাকিস্তানি সৈন্যরাও পূণ্যকাজ মনে করে শহীদমিনারটা গুড়িয়ে দিয়েছিল। আমাদের কাছে সেটা অন্যায়, পাপকাজ। তাই আমরা আবারও সেটাকে স্বমহিমায় স্থাপন করেছিলাম। আজকের দিনে আবারও সেগুলো গুড়িয়ে দেয়ার মানসিকতার চাষ হচ্ছে- একেবারে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায়! ২০০৮ এ বিমানবন্দর সড়কের লালন ভাস্কর্যের উপর প্রথমে হামলা চালানো হয়। পরে প্রশাসন নিজে থেকেই সেটা সরিয়ে নেয়! উস্কানি পাওয়া উগ্রতা হয়ে যায় অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। ওই বছরই নির্বোধেরা আক্রমন করে মতিঝিলের বলাকা ভাস্কর্য। সেই নির্বোধরা বেশ কিছুদিন চুপ ছিল। আবার মাথাচারা দিচ্ছে। এই নির্বোধরা যদি এরপরে বলে যে- শহীদ মিনার কেন, রাজু ভাস্কর্য কেন- ওগুলোও ভাঙতে হবে- তখনও কি প্রিয় প্রধানমন্ত্রী সেগুলো মেনে নেবেন? এরা এই দাবী করবেই, আজ অথবা কাল- থেমিসের মত ভবিষ্যৎদ্রষ্টা হয়ে বলে দিলাম!

১৯৯৬ তে আফগানিস্থানে তালেবানরা ক্ষমতা পায়। ক্ষমতা পাওয়ার পর থেকেই তারা সেদেশের গুরুত্বপূর্ণ সব ভাস্কর্য ধর্মের দোহাই দিয়ে ভেঙ্গে ফেলা শুরু করে। ২০০১ সালে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বৌদ্ধমূর্তি ‘বামিয়ান ভাস্কর্য’ তারা ভেঙ্গে ফেলে। ইরানের মসুল শহরে জঙ্গীগোষ্ঠী আইএস একটি যাদুঘরের সব ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলে। আজকের দিনে বাংলাদেশে সেই একই মানসিকতার চাষ হচ্ছে। অতএব, যারা মনে করেন এইসব ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলা উচিত- তারা কাদের মন-মানসিকতায় ডাল-ভাত খাচ্ছেন, বুঝে নেন। ভাস্কর্য একটি জাতির সভ্যতা ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। আামদের দেশের ভাস্কর্যগুলো কোনটা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ধারন করে, কোনটা দেশের জল-মাটি-কৃষির চিত্র বয়ে বেড়ায়। এগুলো ধ্বংস মানে দেশের সংস্কৃতির একটি ডানা কেটে ফেলা। দেশে ভাস্কর্য ধ্বংসলীলা শুরু হতে পারে ন্যায়ের দেবী থেমিসকে দিয়েই। আমরা প্রস্তুত তো?

কিছু উদ্ভট তথ্য যোগ করি। পৃথিবীর সবথেকে বড় মুসলিম অধ্যুষিত দেশ ইন্দোনেশিয়া। সেখানে রয়েছে অসংখ্য বৌদ্ধমূর্তি, ভাস্কর্য। ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় আকাশ পরিবহন সংস্থার নাম Garuda Indonesia. এই গরুড় পাখিটির বর্ণনা পাওয়া যায় রামায়ণে। তিনি বিষ্ণুদেবের বাহন এবং সেখানে থেকেই এর নামকরণ। কবিগুরু লিখেছিলেন- “গরুড়ের পাখা রক্ত রবির রাগে যেন গো অস্ত-আকাশে/ সুন্দরবটে তব অঙ্গদখানি তারায় তারায় খচিত”। অবাক লাগছে কি? আর পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণ র‌্যালী হিন্দুয়ানী কালচার- এমন মতবাদের চাষ এ বাংলায় একেবারেই নতুন নয়। বাঙালি বর্ষবরণ করবেই- এটাই সত্য। সম্রাট আকবর খাজনা আদায়ের জন্য যে নতুন বাংলাসাল গণনাপদ্ধতি শুরু করেন- কালের ব্যাবধানে সেটাই হয়ে গেছে বিধর্মী কালচার! এই চেতনার গোড়া এক, অভিন্ন নয় কোনভাবেই। যে চেতনা বর্ষবরণ বানচাল করে, সেই একই চেতনা ভাস্কর্য ধ্বংস করে। মমতা ব্যাণার্জী পানি দেবেন কি দেবেন না- সেটা ভবিষ্যতের হাতে। তবে প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টা এবং প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে তাঁকে সংবর্ধনা না জানানোর সিদ্ধান্ত- দুটোই আমার মন ছুঁয়ে গেছে। হঠাৎ মনে পড়ে নব্বই-এর দশকের একটা ভয়ার্ত কথা। সেসময় আওয়ামীলীগ একটি দেশদ্রোহী দলের সাথে এক টেবিলে বসেছিল। ভুল করেছিল। ভয় হয়, আজকের দিনে এসেও সেই একই ভুলটা আবারও হচ্ছে না তো? ভয়গুলো তোলা থাক। সময়ের কাঁধে অনেক ভার। সে ভার নামলেই সব উত্তর ফিরে ফিরে ঠেকবে। শাস্তি হবে পাপের ও পাপীর।।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:১০

জোয়ান অব আর্ক বলেছেন: ইন্দোনেশিয়ান মুসলিমদের সম্পর্কে নজরুলের এই কথাটি খাটেঃ
"ভেতরে ভেতরে যত মরিয়াছি, বাহিরের দিকে তত
গুণতিতে মোরা বাড়িয়া চলেছি গরু ছাগলের মত"

ইন্দোনেশিয়ানদেরকে বলদ পেয়ে এডিবি তাদেরকে চিরস্থায়ী দারিদ্র্য উপহার দিয়েছে। সাংস্কৃতিক ভাবে দুর্বল ইন্দোনেশিয়াকে এক্ষেত্রে বশ করেছে আধিপত্যবাদী ভারত। কিন্তু মালয়েশিয়াও মুসলিম রাষ্ট্র - তাদের দেশে তো মূর্তি সংস্কৃতি এভাবে আসন গেড়ে বসেনি!

২| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ২:৪৮

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: মধ্যপ্রাচ্যের কোন দেশে?? তবে ছবি আছে।। যেমনটা গান্ধি, মুজিব, জিয়ার থাকে।।

৩| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৩:৫২

সৌমিক আহমেদ খান বলেছেন: কোর্টের সামনে কুরানের ভাস্কর্য হলে মন্দ হবেনা।

৪| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৬:৩৭

জয়ন্ত সরকার তন্মর্য়ৃ বলেছেন: অনেক ভাল লাগল অাপনার লিখা পড়ে....

৫| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৭:২৪

রিফাত হোসেন বলেছেন: এমনই একটা ভাস্কর্য আছে, যার স্থপতিরই খোজ খবর নাই! যাই হোক।
এটা থাকলে আর না থাকলে আইন প্রয়োগ এ প্রলংকারী ব্যাপার নিশ্চয়ই ঘটবে না। শুধু সেখানে নয় যা আপনি বলেছেন। আরও অনেক জায়গায় এই ভাস্কর্য বা মূর্তি আছে। মানুষের ঘরে ঘরেই শোভা পায়, মুসলিম ঘরেও বুঝাচ্ছি কিন্তু পূজা করছে না।

আমার দৃষ্টি ভিন্ন। শাড়ি দিয়ে গ্রীক দেবীর ব্যাপারটা আসলেই অসম্ভব হাস্যকর। এটা মানানসই নয়। আর আমাদের সংস্কৃতির সাথে যাচ্ছে না। দেবী বিদেশী, পরেছে শাড়ি! ব্যাপারটা ব্যক্তিগত সৌন্দর্য নয় বরং একটা দেশের আইনের প্রতীকিও বটে।
-----------------

আসলে আমি নিজেও বেশ কয়েকবার মূর্তিটা দেখেছি। কিন্তু হাতের তরবারিটা দেখে সাথে শাড়ি পরা অবস্থায় বোধগম্য হয়নি গ্রীক দেবীর ব্যাপারটা। যদিও গেমস খেলার সুবাদে গ্রীক,রোমান,ঈজিপ্শিয়ান গড/গডেস সম্বন্ধে ধারনা থাকা সত্বেও ব্যাপরটা ধরতে পারি নাই।

ভাস্কর্য যদি বলেন গ্রীক দেবী তাহলে আমার কাছে যথেষ্ট অদ্ভুত মনে হবে। /:)

৬| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৮:৩৯

অদ্ভূত ফেরিওয়ালা বলেছেন: গ্রীক সভ্যতার কাছে পৃথিবীর দায় অনেক । দেবী থেমিসের ভাষ্কর্য দিয়ে সে দায় শোধ করবার জন্য আমরা উঠে পড়ে লেগেছি , তাই তাকে শাড়ি পড়িয়ে রাধা বানিয়ে ঘরে তুলেছি । যে দেশের অধিকাংশ মানুষ এরিস্টটল-প্লেটো'র নাম শুনে নি, সেখানে থেমিসের ভাস্কর্য দাড় করিয়ে দেয়াটা আসলে কততা যৌক্তিক কিংবা প্রাসঙ্গিক এটা একটা বড় প্রশ্ন । নাকি এটার পেছনেও আছে কোন রাজা-মহারাজার নীতি !!
আমাদের কাছে পৃথিবীর দায় নিয়ে তখন কি ভাবছি ? রামানুজন কে সারা দুনিয়া চেনে গণিতের এক দেবতা হিসেবেই । কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকায় তার মূর্তির পুজো নেই । ইউরোপ আমেরিকা ভারত বর্ষের কাছে কি তাদের ঋণ অস্বীকার করতে পারে ? কই তাদের পথে ঘাটে তো কোন নমুনা খুজে পাওয়া যায় না । ওরা আমাদের থেকে নিয়েছে কিন্তু নিজেদের মত করে ব্যভার করছে । আর আমরা দাসত্বের মানসিকতায় নিজের যা কিছু বিসর্জন দিয়ে অতীত প্রভুদের সব কিছু দু'হাত পেতে নিয়ে তাদের প্রভুত্বের ঋণ শোধ করছি ।

বড় অদ্ভুত জাতি আমরা ।

৭| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৯

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: গ্রীক দেবীকে গ্রীকেরা যে ভাবে হাজার বছর ধরে দেখে ও রেখে এসেছে সেভাবে রাখলেই অনেক শুভন ও শিল্প সন্মত হতো ও সেই দেবীর প্রতি উপযুক্ত সস্মান প্রদর্শন হতো । কিন্তু তাঁকে শাড়ী পড়িয়ে এই হাস্যকর রূপটি না দিলেই কি হতোনা । বাংগালী সঠিক জিনিষকে শ্রদ্ধা করতে জানে । মহাভারতে অনেক হিন্দু দেবদেবী আছেন যাদের ভাস্কর্য দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ স্থানে আছে, তাঁদেরকে তো তাদের আবহমান রুপেই এবং পোষাকেই রাখা হয় , কৈ শ্রীকৃঞ্চকে তো লুঙগী পড়িয়ে ভাস্কর্য গড়েনা কেও , গৌতম বুগ্ধকে তো কেও লুংগী বা পাথায় পাগরী পড়িয়ে তাঁর ভাস্কর্য গড়েনা , গনেশকেতো পেন্ট সার্ট পড়িয়ে ইংল্যান্ড আমিরিকার মন্দিরে স্থাপন করেনা , মহাত্মা গান্ধীকে কেও তো কোর্ট টাই পড়িয়ে মাদাম তুশোতে স্থাপন করেনা । বুঝলাম গ্রীক পৌরানিক কাহিণীতে থেমেসিসকে বিচারের দেবী হিসাবে গন্য ও মান্য করা হয় , কিন্তু কথা হল, গ্রীসে কোর্টে কি বিচারকগন থেমেসিসের অনুকরণে চোখে পট্টি বেধে কোর্টে বসেন!! হিয়ারিং শুনেন ও বিচার কার্য পরিচালনা করেন!!! , বিচারককে চোখ কান খোলা রেখেই বিচার করতে হয় । হাতে তরবারী রেখে শক্তি প্রদর্শনের হুমকী দিয়ে কি নিরপেক্ষ বিচার করা যায়!!! , তরবারীকে প্রয়োজন অনুযায়ী দুদিকেই ব্যবহার করা যায়, তাইতো কোর্টে দেখা যায় পক্ষের বিপক্ষের উকিল ব্যরিষ্টার বেশ ধমকের সুরেই অনেক সময় সাক্ষিকে সত্য কিংবা মিথ্যা বলতে বাধ্য করেন যা প্রকারান্তরে শুধু স্বাভাবিক বিচার কার্যকেই ব্যহত করে । তাই পৌরানিক কল্প কাহিণীকে বিচারের মত এমন একটি গুরুত্বপুর্ণ কাজে যেখানে মানুষের জীবন মৃত্যু জড়িত সেখানে পৌরানিক কোন কল্প কাহিনীকে টেনে আনা কতটা যুক্তি যুক্ত, তাকিকেও কখনো ভেবে দেখেছেন । হোক সে কল্প কাহিণী যতই সমৃদ্ধ, সে তো শুধুই কল্প কাহিনী , এই কাহিনী তাই থাকনা শুধু গল্পের বই এর ভিতরেই , জানবে সবাই এটা একটি প্রসিদ্ধ গল্প কাহিনী , আমরা সকলেই মঝা করে পড়ব সে কাহিনী গল্পে মত করেই ।

কোন দেব দেবীর ছবি দেখে দেশের বিচার বিভাগের লোকজন ( বিচারপতি ও আইনজ্ঞগন ) কোন ভাবে প্রভাবিত হোক তাকি চাইতে পারে কেও । মানুষ চায় আইনের বিচার , চোখ কান বন্ধ করে পৌরানিক কল্প কাহিনীর দেবদেবীর ভাবনান চিন্তার প্রতিফলন ঘটিয়ে কোন বিচার কেও চায়না । সত্য ও প্রত্ক্ষ সাক্ষীর উপর ভিত্তি করে নিরপেক্ষ বিচার কাম্য । তাই কের্টের সামনে থাকা উচিত সেরকম্ই কোন প্রতিক চিহ্ন । আর সেটা হতে পারে দেশের প্রচলিত সংবিধান ও সাথে প্রধান প্রধান ধর্মগ্রন্থ যেখানে বলা আছে বিচার কেমন হতে পারে । ধর্গ্রগ্রন্থ কিংবা সংবিধানে কোথাও বলা নাই বিচার হতে হবে গ্রীক পৌরানিক দেবী থেমেসিসের কল্পিত ধ্যানধারনায় । তাহলে আর এত লম্বা সময় ধরে ব্য়বহুল হিয়ারিং এর দরকার কি , থেমেসিসের মত পট্টি বেধে চোখ বন্ধ করে বিচারক নিমিশেইতো বিচার কার্যটি সমাধা করে দিতে পারেন!!!!

থেমেসিসকে নিয়ে শিল্প চর্চা যারা করতে চান তারা তা করুন যতভাবে পারুন । রাখুননা কেন তাকে শিল্প কলা একাডেমী চত্তর কিংবা মিউজিয়ামে , জানা নাই দেশের কোন মিউজিয়ামে থেমেসিসের কোন মুর্তী আছে কিনা, বাংলাদেশের কোন আর্ট গ্যলারীতেও তো এই থেমেসিসের কোন মুর্তীর ছবি কিংবা পেইনটিং দেখা যায়না এখনো । জ্ঞান বিজ্ঞানের এই যুগে সকল দেশের সকল পৌরানিক দেবদেবীকে আমরা শ্রদ্ধা জানাই , কোন ভাবেই তারা অশ্রদ্ধার পাত্র হোন তা চা্নই কোন মতেই । তাই একল গৌরবান্বিত পৌরানিক দেবদেবীকে তাদের আবহমানকালের বেশভুষাকে পরিবর্তন করে বিতর্কিত করার মানসিকতা ও তার প্রয়োগকে সমর্থন জানাই কি করে !!!।

ধন্যবাদ এ বিষয়ে সুন্দর একটি আলোচনার সুত্রপাত করার জন্য ।

৮| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ২:৩৮

মরফিয়াস আ্যাকলিস বলেছেন: ভালো লাগলো

৯| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:৩৭

হাফিজ রাহমান বলেছেন: পেলব চক্রবর্তী মহাশয় ! আপনি সুনির্দিষ্ট একটি আদর্শ লালন করেন বলে আমরা জানি। সে আদর্শের প্রতি আপনার অসীম ঝোঁক ও আদিখ্যেতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সে দৃষ্টিকোণ থেকে আপনার মাঝে মূর্তিপ্রেমের এক মহান দেবতা বাস করবে এতে সংশয় সৃষ্টি হওয়ার কিছু নেই। আপনার এ মূর্তিবিলাসের ব্যাপারে এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষগুলোর কোনো খেদ নেই। কারণ আপনার আদর্শিক সংস্কৃতি আপনার হৃদয় রাজ্যে দেবরাজ হয়ে বেঁচে থাকবে অনন্তকাল এতে কার কি বলার থাকবে ? তবে আপনি আপনার আদর্শ চর্চার ক্ষেত্রকে আপনার সীমানার মাঝেই সীমিত রাখুন। আপনার এ দর্শন চর্চা যদি অন্যের আদর্শিক সীমানায় পুশইন করে তবে সেটা আর অধিকার চর্চার সংজ্ঞায় পড়বে না। আপনি আপনার জায়গায় বসে আপনার মূর্তি সংস্কৃতির চর্চা করুন কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু অন্যের জায়গায় যদি সে সংস্কৃতি চর্চার হস্ত প্রসারিত করুন তবে সেটা ভাল দেখাবে না। ভাল থাকুন। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.