![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঠকঠক ঠকঠক......
ঘড়ির কাটায় তিনটা। জলতেষ্টা পেয়ে আরো আগেই ঘুম ভেঙে গেছে পিদিমের। আলসেমিতে উঠা হচ্ছিল না। দরজার কড়া শুনে পিপাসাটা হুট করে বেড়ে গেলো। ঝটপট করে উঠে দরজার দিকে এগিয়ে গেলো ভয়ে ভয়ে। মেইনগেইট বন্ধ। দারোয়ানও ছুটিতে। ওটা খোলার মানুষ নেই। কেউ আসতে হলে পিদিমকেই সদর দরজা খুলে দিতে হবে। বাকিরা সবাই গেছে মাছুমপুর বেড়াতে। সাহস নিয়ে দরজার ফুটা দিয়ে তাকালো পিদিম। নাহ, কেউ নেই। ভুল শুনেছে বোধহয়। একা একা হেসে উঠলো ও বোকামীর জন্য। তারপর চট করে দরজাটা খুলে ফেললো কেবল কৌতুহলবশত। এদিক ওদিক তাকালো। কেউ নেই। ও বেশ উচ্চস্বরে চেচিয়ে উঠলো, হে আমার মধ্যরাতের অতিথি ভূত, তোমাকে স্বাগতম। বলেই আবারও খিলখিল করে হেসে উঠলো। হাসিটা থামতে না থামতেই একটা অদৃশ্য মোটা কন্ঠ বলে উঠল, তোমাকেও স্বাগতম। চিঠিটা মাটিতে পড়ে আছে। উঠাও। পিদিমের মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেলো। ভয়ে ভয়ে মাটির দিকে তাকিয়ে দেখলো আসলেই একটা চিঠি। সাদা খামেভর্তি একটা চিঠি। পিদিম চিঠিটা ধরার আগে এদিক সেদিক তাকিয়ে বললো, তুমি কে? কোন জবাব এলোনা। কিছুক্ষণ উত্তরের অপেক্ষা করার পর কোন জবাব না পেয়ে চিঠিটা ভয়ে ভয়ে তুলে দৌড়ে ঘরে চলে গেলো। গিয়েই চিঠিটা খুললো। কেবল একটা চার লাইনের কবিতা লেখা,
আজও ঘেরা শুন্য দিয়ে
শুন্য রথেই চলা,
শুন্য থেকেই জন্ম নেবে
মোদের পথও চলা।
বড় একটা ধাক্কা খেলো পিদিম। এটা বাবার লেখা। মাকে যখন বাবা প্রথম প্রপোজ করে তখন এটাই লেখা ছিল চিঠিতে। আজও চিঠিটা মার কাছে আছে। বাবা তো বিদেশ। মা ও তো মাছুমপুর। এই লাইন মা, বাবা আর আমি ছাড়া দুনিয়ার কেউ জানেনা। তাহলে? তেষ্টাটা বাড়তে থাকলো ক্রমশ। দৌড়ে গিয়ে আলমারী খুলে মার কাগজপত্রের মাঝখান থেকে চিঠিটা খুজেও পাওয়া গেলো। দুটো মিলিয়ে দেখা গেলো হুবুহু একই হাতের লেখা। একি কাগজ। পুরানো চিঠিটার বাম কোণায় একটু মশলার দাগ ছিল। এটাতেও তাই। পুরানো চিঠিটার তিন ভাজ, এটারও। নাকের কাছে নিয়ে শুকে দেখলো যে যে ঘ্রানও হুবুহু একই। এবার পিদিমের মাথাটা ঘুরতে থাকলো ভনভন করে। কিছুই মাথায় ডুকছে না। জানলার পর্দার ফাক দিয়ে বাইরে তাকালো ও। মুল ফটক দিয়ে একটা লোক বেরিয়ে যাচ্ছে। কাধে চিঠির ঝোলা। পরনের পোশাকের রঙ বোঝা না গেলেও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে ওটা ডাকপিয়নের পোশাক।
©somewhere in net ltd.