নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিরোনামহীন....

আমার স্বপ্নের কথা বলতে চাই

পথেরদাবী

সাংস্কৃতিক কর্মী শিল্প তৈরি করতে পারেন আবার নাও করতে পারেন..... তবে শিল্পীর শিল্প তৈরি হওয়া চাই-ই-চাই.......সাংস্কৃতিক কর্মীর মূল কাজ শিল্পীর তৈরি শিল্পকর্ম এবং জনগনের মধ্যে মেল বন্ধন অর্থাৎ সহজ ভাষায় বললে, সেতু তৈরি করা..... আর এই সেতু তৈরির কাজ সাংস্কৃতিক কর্মীর করা চাই ই-চাই....এখানে ফাঁকিবাজির সুযোগ নাই.....সুযোগ নাই শিল্পীর মতো ব্যক্তি কেন্দ্রিক চিন্তা করার..... সাংস্কৃতিক কর্মীকে তাই মাঝে মাঝে শিল্পীর চাইতে সংগঠকের ভুমিকায় বেশি অবতীর্ণ হন...... এতে দোষের কিছু দেখি না....সব ঠিকঠাক থাকলে সাংস্কৃতিক কর্মী নামক শব্দের উৎপত্তি ঘটতো না..... সবাই শিল্প চর্চাই করতো.....শিল্প চর্চা করতে এসে কেউ বিপ্লবের কথা বলতো না..... যেহেতু বিপ্লব একটি কঠিন সত্য...... বিপ্লব দীর্ঘজিবী হোক.....\\\\\\\\\\\\\\\\n(১৪ মার্চ ২০১৫, পল্টন ...........)

পথেরদাবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কে চেয়ারম্যানের চামচা আর কে শিল্পী?

০৬ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:৪৯

আমার দৃষ্টিতে রাষ্ট্র পরিচালনাকারীদের বাইরে আরেকটা গ্রুপ আছে যারা চাইলেই অশিক্ষিত জাতিকে দিক নির্দেশনা দিতে পারে। সচেতন করে তুলতে পারে। পারে নাগরিক হিসেবে তার কি কি দায়িত্ব তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে। প্রশ্ন আসে কারা তারা? এক কথায়, সাংস্কৃতিক কর্মীরা। রাষ্ট্র পরিচালনাকারীদের ব্যর্থতা জাতির সামনে তুলে ধরার কাজ এই লোকগুলোরই করার কথা। কিন্তু আমাদের দেশে তা না হয়ে, হয় উল্টোটা।



ফিরে যাই ২৬ মার্চ ২০১৪। সেদিন সন্ধ্যায় কোন এক সেলিব্রেটি গায়কের ফেইসবুক ওয়ালে দেখলাম জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে তোলা কিছু ছবি। অনুষ্ঠানের গ্রীন রুমে ছবিগুলো তোলা হয়েছিলো বলে মনে হয়। দেশের সব নামিদামি শিল্পী ছিলেন সেখানে। ছবিতে তাদের হাসি দেখে আমি অবাক হলাম। কি নির্লজ্জ সেই হাসি। সিনেমায় দেখানো গ্রামের চেয়ারম্যানের ছাতা ধরা চামচাটার মতোই যেনো এই হাসি।



আমি জেনেছি শিল্পীর চিন্তা সবসময় স্বাধীন হয়। ন্যায়কে ন্যায় আর অন্যায়কে অন্যায় বলে। কিন্তু আমাদের শিল্পীরা সেদিন কি করলো। ইসলামি ব্যাংকের টাকা যদি বাদও দেই তারপরও কি এই রেকর্ড করার জন্য জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হালাল হয়ে যায়? মোটেও না। কারণ এটা ছিলো মানুষকে ধোঁকা দেয়ার একটা অনুষ্ঠান। মানুষকে ‘মেকি দেশপ্রেম’ নামক আফিমে আসক্ত করে রাখার অনুষ্ঠান ছিলো এটি। তাই এদের আমি চেয়ারম্যানের চামচার সাথেই তুলনা করবো।



খেয়াল করে দেখেছি, এই শিল্পীগুলোই দেশপ্রেম নিয়ে কিছু বলতে গেলে সবচেয়ে বেশি বলে। শুধু বলে না রানা প্লাজা নিয়ে, মানুষ গুম-খুন হলে, বিদ্যুতের দাম বাড়লে, সুন্দরবন ধ্বংস হলে অথবা তিস্তা ইত্যাদি ইত্যাদি। এদেরকেই আমরা দেখি, ফাইভস্টার হাসপাতালের বিজ্ঞাপনে জিঞ্জেল করতে শুধু দেখিনা ঢাকা মেডিক্যালের বারান্দায় কেমন করে মানুষ দিন কাটায় তা নিয়ে কিছু একটা বলতে। বোধহয় রাষ্ট্রের প্রকৃত চামচা এদেরই বলে।



আফ্রিকায় যখন দুই রাজনৈতিক দল ‘জেএলপি’ আর পিএনপি’ আমাদের দেশের বড় দুই দলের মতো সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করতো, দেশকে একদম রসাতলে নিয়ে যাচ্ছিলো ঠিক সেই সময় গানে গানে প্রতিবাদ করার জন্য “রেগে” গানের সুত্রপাত হয়। বব মার্লে, জন লেনন, পিট সিগার, বব ডিলান, জর্জ হ্যারিসন, কবির সুমন এদের প্রত্যেকের গানের ঢং আলাদা আলাদা। কিন্তু ভাষা একটাই মনে হয়েছে। প্রো পিপোল ছিলেন তারা। অথচ নারী পুরুষের একান্ত ব্যাক্তিগত ভাবনা নিয়ে তাদের গান নেহায়েত কমও ছিলো না।



আমাদের দেশেও যে এমন শিল্পী ছিলো না তা নয়। সবাই সবার জায়গা থেকে সর্বোচ্চটুকু করেছিলেন সেসময়, অর্থাৎ ১৯৭১’এ। আর তার একটা সম্মেলিত প্রয়াস দেখি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে এমনকি ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনেও শিল্পিদের ভুমিকা কম ছিলো না বলে ইতিহাস থেকে জানা যায়। শেষ মনে হয় বাংলার মানুষ দেখেছেন মাকসুদ ভাইকে আর সঞ্জীবদাকে। আর এলো না কেউ। সাহসী গায়ক আর পেলাম না।



সংস্কৃতির অন্যসবগুলো ক্ষেত্র থেকে গান একটু আধটু বুঝি বলে গান দিয়েই রাজনীতিটাকে দেখার এই চেষ্টা, এই লেখা। কিছু একটা বলার চেষ্টা করা। চিত্রকলা, চলচ্চিত্র, নাচ, অভিনয় এগুলোরও একটা কমিটমেন্টর যায়গা আছে। আমার কাছে মনে হয় শিল্পের সবগুলো মাধ্যমেরই উদ্দেশ্য মানুষকে ঘিরেই হওয়া উচিত। যুগে যুগে তাই হয়েছে। মানুষ যখনই খাদে পড়েছে, তখনই সংস্কৃতি চর্চা তাকে তুলে এনেছে খাদ থেকে।



মজার বিষয় হলো ‘আর্ট ফর আর্ট শেক’ দাবিদারদের মতে, এধরনের চিন্তা করলে শিল্প তৈরী হবে না তা আমি বিশ্বাস করি না। উপরে যাদের নাম বললাম তাদের সৃষ্ট গান কতটুকু শিল্প হয়ে ওঠেনি তা আমার জানতে মন চায়। শিল্পী খুবই ব্যাক্তিক চিন্তা করে। নিজেকে নিয়েই থাকে। তার ব্যাক্তিক চিন্তার ভেতর যতদিন না মানুষের কথা আসবে ততদিন আমরা তাকে কি করে শিল্পী বলি? শিল্পীর চিন্তাতো ইউনিভার্সাল হবার কথা। অনেক বিশাল হবার কথা। হবার কথা বৃত্তের বাইরে। হয়তো ভালো গায়ক, নায়ক বা পরিচালক হতে পারেন তিনি কিন্তু যিনি বৃত্তের বাইরে চিন্তা করতে পারেননা তিনি কি করে একজন শিল্পী দাবিদার হতে পারেন?



(৬ মে ২০১৪, পল্টন)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.