![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাংস্কৃতিক কর্মী শিল্প তৈরি করতে পারেন আবার নাও করতে পারেন..... তবে শিল্পীর শিল্প তৈরি হওয়া চাই-ই-চাই.......সাংস্কৃতিক কর্মীর মূল কাজ শিল্পীর তৈরি শিল্পকর্ম এবং জনগনের মধ্যে মেল বন্ধন অর্থাৎ সহজ ভাষায় বললে, সেতু তৈরি করা..... আর এই সেতু তৈরির কাজ সাংস্কৃতিক কর্মীর করা চাই ই-চাই....এখানে ফাঁকিবাজির সুযোগ নাই.....সুযোগ নাই শিল্পীর মতো ব্যক্তি কেন্দ্রিক চিন্তা করার..... সাংস্কৃতিক কর্মীকে তাই মাঝে মাঝে শিল্পীর চাইতে সংগঠকের ভুমিকায় বেশি অবতীর্ণ হন...... এতে দোষের কিছু দেখি না....সব ঠিকঠাক থাকলে সাংস্কৃতিক কর্মী নামক শব্দের উৎপত্তি ঘটতো না..... সবাই শিল্প চর্চাই করতো.....শিল্প চর্চা করতে এসে কেউ বিপ্লবের কথা বলতো না..... যেহেতু বিপ্লব একটি কঠিন সত্য...... বিপ্লব দীর্ঘজিবী হোক.....\\\\\\\\\\\\\\\\n(১৪ মার্চ ২০১৫, পল্টন ...........)
সত্যিই প্রত্যেকে মনে করছি যেদিন তৈরি হবো ওইদিনই সব পাল্টে দিবো। কিন্তু সমস্যাট হয় অন্য যায়গায়। আমরা অস্ত্র চালনা শিখেছিলাম পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে। কিন্তু লক্ষ যেহেতু পরিষ্কার ছিলো না তাই এই অস্ত্র লুটপাটে ব্যবহার হয়েছে দেশ স্বাধীনের পর। আবার চরম সততা নিয়ে নকশাল বাড়ি আন্দোলন গড়ে উঠলেও লক্ষ পরিস্কার না থাকায় তারাও মুখ থুবড়ে পড়েছিলো। তেমনি আমাদের তরুন কবি, সাহিত্যিক, চলচ্চিত্র পরিচালক এবং সঙ্গীত শিল্পিরা যারা অন্তত দেশ ও দশ নিয়ে ভাবেন তারা বলছেন আগে নিজেকে তৈরি করি, তারপর।
তৈরি হয় বটে। তবে ততদিনে প্রযোজক, স্পন্সর, বিজ্ঞাপন দাতা, টিভি চ্যানেল, রেডিও, সংবাদ মাধ্যম এতো সকলের শেকলে বন্দি হয়ে যায়। সেই সময় আসলে করারও কিছুই থাকে না। কারণ ভিত্তিহীন অবস্থানে থাকা কারো পক্ষে তখন আর নিজ পায়ে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট কথা বলা সম্ভব হয় না। সব কিছুর পেছনে একটা ফিলোসফিকাল আসপেক্ট থাকতে হয়। আমি বললাম আমি কোন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের দারস্ত হবো না আমার শিল্পকর্ম নিয়ে। বললাম আর হয়ে গেলো? এতো সহজ এসময়ে এই কথা বলা? প্রশ্নতো এসেই যায় কেনো যাবেন না? উত্তর কি? আমি ফারুকিদের মতো সিনেমা বানাবো না। মৃনাল সেন বা জহির রায়হানদেরও ছাড়িয়ে যাবো। যান, মানা করে নাই কেউ। কিন্তু এতো মানুষ থাকতে এরা কেনো? মানুষ নিয়েই আপনাকে কাজ করতে হবে কেনো? গরীবের কি এতোই ঠেকা আপনার কাছে?
অনেককেই বন্দি করা যায়নি শেকলে। কারণ তারা তাদের অস্ত্রের পাশাপাশি চেতনাতেও শান দিয়েছিলেন প্রত্যেকদিন। ছিলেন যুথোবদ্ধ। আন্দোলন যারা করেন তার কি বিচ্ছিন্ন হয়ে তা করেন? কখনোই নয়। অনেকগুলো মানুষ মিলে একটা চিন্তা। তারা কি তাদের চেতনায় শান দিতে গিয়ে নিজেদের অস্ত্র চালনা শেখেননি? অবশ্যই শিখেছেন। অস্ত্রের সঠিক ব্যবহার করেছেন বলেই তাদের নিয়ে আজ এতো কথা হয়।
এতোই সহজ একটা চলচ্চিত্রে গণ মানুষের কথা বলা। গানে গানে প্রতিবাদ করা? কবিতা লিখেই হুলিয়া মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়ানো? আমি তাদের কথা বলছি যারা বলতে চান। যারা শুধু এটা দিয়েই রাষ্ট্রের ভিত নাড়াতে চান। যদি নাই নাড়াতে চান তাহলে অল্টারনেটিভ অল্টারনেটিভ বলে গলা ফাটানোর কি আছে? চর্চাটা কি শুধু ভালো শট, ভালো স্ক্রিপ্ট, গ্রামার মানা এবং ভাঙা; গানে নতুন নতুন নোটের খেলা, কবিতায় সবচেয়ে কঠিনতম শব্দের ব্যবহার, অনুপ্রাস মেনে মেনে ছন্দ তৈরি ইত্যাদিতে বন্দি থাকবে? আমার প্রশ্ন তাদের কাছে যারা অন্য দশজনের মতো গতানোগতিক চিন্তার দিক থেকে আলাদা কিন্তু সমাজের দশজন নিয়েই চিন্তা করেন।
যাদের ঘিরে স্বপ্ন দেখেছিলাম রাজনীতি আর সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের একটি সেতু তৈরির। তাদের প্রত্যেকেই দুই আলাদা জগতের বাসিন্দা। যেসব শিল্পি এসবের মধ্যে নেই তাদের কথা বাদই দিলাম। নিজেকে বেচে বেচে খাওয়াটাকে সে স্বীকার করে। তাদের চেনা যায়। কিন্তু কালচারাল এক্টিভিস্ট অথবা পলিটিকাল কনসাস আর্টিস্ট অথবা পলিটিশিয়ান এরা প্রত্যেকেই বিচ্ছিন্ন দ্বীপের অধিবাসি। কেউ কাউকে চেনে না। আর পলিটিকাল লিডারদের ভন্ডামি চোখে পড়ে। কিন্তু ভাব ধরে থাকা গণ মানুষের শিল্পীদের চোখে দেখা যায় না। এক ধরনের সেলিব্রেটি লাইফ লিড করে বলেই এদের ভন্ডামী থাকে ধরা ছোয়ার বাইরে।
লাল বই মুখোস্ত থাকার দরকার নাই। কিন্তু কিছু বিষয় পরিষ্কার থেকে প্রতিনিয়তো একটিভিজমের মধ্যে না থাকলে কখনোই শক্ত আঘাতটা দেয়া সম্ভব হবে না। তবে একটা জিনিস মাইরি বেশ হয়। তা হলো নিজের লাভ। যে যত গালিগালাজই করুক না কেনো, প্রত্যেকেই কিন্তু বেশ ভালো অবস্থানে যায় একটা পর্যায় পর। মাননীয় সংস্কৃতি মন্ত্রীর অতীত আর বর্তমান দেখলেই বিষয়টা স্পষ্ট হয়। আমরা আসলে এটাই চাই। যোয়ান কালে ঋত্বিক ঘটক, মৃনাল সেন, চার্লি চ্যাপলিন, বব মার্লে, জন লেনন, রেজ এগ্যানিস্ট দ্যা মেশিন, মহীনের ঘোড়াগুলি, ভেনগগ, জয়নুল আবেদিন, হাংরি মুভমেন্ট, থার্ড সিনেমা মুভমেন্ট, নকশাল বাড়ি, কমিউনিস্ট পার্টি, নাস্তিকতা এইসব আমাদিগোকে টানলেও পরবর্তি জীবনে স্পিলবার্গ, ফারুকী, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, চিরকুট ব্যান্ড, আনিসুল হক, প্রথম আলো, লাক্স চ্যানেল আই এই সবই আমাদের আপন হয়। পক্ষ কিন্তু দুইটা। বেছে নেয়াটাই মুল কথা।
ঋত্বিক ঘটকের জন্মদিনে তার সুবর্ণ রেখা চলচ্চিত্রের কয়েকটা সংলাপ বারবার ভিতরে বাজছে। কৃষ্ণকে হরোপ্রসাদ বলেছিলো "....দোকানে, হোটেলে, রেসের মাঠে সে যে কি বিভৎস মজা। তুমি দাঁড়াইয়ে দেখবা আর অবাক হইয়া যাবা। মাইনষে কেমন স্রোতে গা এলাইয়া দেয়। গড্ডালিকা প্রবাহই সত্য। এটাই খাটি। ভোগই মুক্তির পথ।..."। আসলেইতো ভোগেই মুক্তি। দিনশেষে তাই দাঁড়ায়। কারও দিকে আঙ্গুল তুলছি না। আঙ্গুলটা নিজের দিকেই দিলাম। কারণ শিরোনামে ‘আপনার’ বলতে আমার আমিকেই বুঝিয়েছি।
(০৪ নভেম্বর ২০১৪, পল্টন)
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০১
খেলাঘর বলেছেন:
মাথামুন্ড