![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাংস্কৃতিক কর্মী শিল্প তৈরি করতে পারেন আবার নাও করতে পারেন..... তবে শিল্পীর শিল্প তৈরি হওয়া চাই-ই-চাই.......সাংস্কৃতিক কর্মীর মূল কাজ শিল্পীর তৈরি শিল্পকর্ম এবং জনগনের মধ্যে মেল বন্ধন অর্থাৎ সহজ ভাষায় বললে, সেতু তৈরি করা..... আর এই সেতু তৈরির কাজ সাংস্কৃতিক কর্মীর করা চাই ই-চাই....এখানে ফাঁকিবাজির সুযোগ নাই.....সুযোগ নাই শিল্পীর মতো ব্যক্তি কেন্দ্রিক চিন্তা করার..... সাংস্কৃতিক কর্মীকে তাই মাঝে মাঝে শিল্পীর চাইতে সংগঠকের ভুমিকায় বেশি অবতীর্ণ হন...... এতে দোষের কিছু দেখি না....সব ঠিকঠাক থাকলে সাংস্কৃতিক কর্মী নামক শব্দের উৎপত্তি ঘটতো না..... সবাই শিল্প চর্চাই করতো.....শিল্প চর্চা করতে এসে কেউ বিপ্লবের কথা বলতো না..... যেহেতু বিপ্লব একটি কঠিন সত্য...... বিপ্লব দীর্ঘজিবী হোক.....\\\\\\\\\\\\\\\\n(১৪ মার্চ ২০১৫, পল্টন ...........)
বঙ্গীয় পুরুষ জাতি নারীর মনের সাথে আকাশের রঙকে দীর্ঘদিন ধরে উপমা হিসেবে ব্যবহার করে আসলেও শামীম, সজিব আর সঞ্চয় সেদিন একটি সিদ্ধান্তে উপনিতো হলো এই মর্মে যে, নারীর মনের অবস্থা বোঝাতে আকাশের পাশাপাশি পুরুষকুলের উচিৎ হবে এদেশের আবহাওয়াকেও আরেকটি উপমা হিসেবে ব্যবহার করা। কারণ হিসেবে তারা দাঁড় করিয়েছে, মাঘের শীত যদি পৌষে পড়ে, তার উপর বিনা নোটিশে যদি বৃষ্টি হয় তবে কেনো শুধু আকাশকেই দোষারোপ করা হবে?
তারা মনে করে, ছলনা আবহাওয়াও করছে গত কয়েক বছর ধরে তাদের সাথে। এই যেমন, এরকম উদ্ভট সিদ্ধান্তে তারা পৌছায় যে বছর, সে বছর শীত অনেক আগেই চলে এসেছিলো। অথচ তখন বাংলা মাস হিসেবে চলছিলো অগ্রহায়ন মাস। এর আগের বছরও ঠিক এমনটাই হয়েছে। সে যাই হোক, এমন একটি সিদ্ধান্তে পৌছানোর পর পরিবাগের আড্ডা শেষ করে সেদিনের কনকনে শীতের বিকেলে পর্যাপ্ত সংখ্যক শীতের কাপড় গায়ে জড়িয়ে প্রতিদিনের মতো উদ্যানে এসে গুটিসুটি হয়ে বসলো তারা তিনজন। এবং আড্ডার বিকেল পর্বের শুরূ।
চারপাশের পরিচিত জনদের সাথে কুশল বিনিময় শেষে একে একে তিনটি সিগারেট বের হলো শামীমের পকেট থেকে। শামীমই প্রথমে লাইটারে আগুনটা ধরালো। তারপর ধরালো তার সিগারেট। তারপর সঞ্চয়। তারপর বাকিজন। সিগারেট টানতে টানতে শামীমের হুট করে মনে হলো শীত তাড়াতে উদ্যানে পড়ে থাকা শুকনো পাতাগুলো জ্বালীয়ে দিলেই এমন সন্ত্রাসী শীত পালাবে। এবং এ কথা সে জানায় বাকিদের, প্রচন্ড আগ্রহের সাথে। কিন্তু শামীমের এমন প্রস্তাবে সঞ্চয় নিশ্চুপ থাকে। আবার, সজিব বেশ উৎসাহ দেয় আগুন জ্বালাতে।
অবশেষে একজন সঙ্গি সাথে পেয়ে শামীম একাগ্র চিত্তে একটা একটা করে পাতা জোগাড় করতে থাকে এবং কিছু পাতা জোগাড় হলে লাইটার জ্বালিয়ে পাতাগুলোতে আগুন জ্বালাতে চেষ্টা করতে থাকলো সে। কিন্তু আগুন জ্বলে না পাতায়। তারপরও শামীম চেষ্টা চালিয়ে যায়। শামীমের এমন পন্ডশ্রম দেখে সঞ্চয় এবার কথা বলে ওঠে। সে বলে ওঠে, বাদ দে তো। শুধু শুধু আগুন জ্বালিয়ে কাপড়ে ধোয়ার গন্ধ লাগিয়ে রাখার কি দরকার? আর পাতাগুলো শিশিরে ভেজা, জ্বলবে না। সজিব শুরুতে বেশ উৎসাহ দিলেও আগুন জ্বালাতে শামীমের বারংবার ব্যর্থতা দেখে সে এবার নিঃশ্চুপ থাকে। এবং সিগারেট টানে আর দেখে শামীম কি করে।
শামীম অবশেষে আগুন জ্বালাতে সক্ষম হয়। দাউ দাউ করে একটি অতিক্ষুদ্র বিসুভিয়াস জ্বলে ওঠে তাদের সামনে। সঞ্চয় ইতোস্তত ভঙ্গিতে মুচকি হাসি দেয়। তারপর উদ্যানে পড়ে থাকা সবচেয়ে ছোট ছোট পাতাগুলো আগুনের মধ্যে ছুঁড়ে দিতে থাকে। আগুন জ্বলতে থাকে তাদের সামনে। এবার একটু উষ্ণ তাপ তাদের শরীরে অনুভুত হতে থাকলো। তারা আড্ডা এগিয়ে নেয়। কিন্তু সজিব আরো বেশি আগুন পোহাবার লোভে বড় বড় আর শিশিরে ভেজা পাতা, কাগজ, প্লাস্টিক সব এনে আগুনের মধ্যে ঢেলে দিতে থাকলো। এবং আগুন যথারীতি নিভে গেলো।
আগুন নিভে গেলে তারা প্রত্যেকে প্রত্যেকের দিকে তাকায় এক অসহায় ভঙিতে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে অনেকটা ক্ষিপ্ত হয়েই সজিবকে বেশি লোভ করার কুফল সম্পর্কে বিস্তারিত বয়ান দেয় সঞ্চয়। এবং বয়ান শেষ করে সঞ্চয় শামীমকে বলে আগুন আর জ্বলবে না এবং স্থান ত্যাগ করে বাসায় ফেরা উচিত। কিন্তু শামীম সঞ্চয়ের কথায় কর্ণপাত না করে আবারো শুকনো পাতা খুঁজতে থাকে। আসে পাশে ঘুরে ঘুরে অনেকগুলো পাতা জোগাড় করে আগের স্থানটাতেই পাতাগুলো রাখে এবং সঞ্চয়ের উদ্দেশ্যে বলে ওঠে, বৎস আগুন জ্বালানো এতো সহজ কাজ না। ধৈর্য থাকা বাঞ্চনিয়। তারপর শামীম আগের বারের মতোই আবার এবং অজস্রবার চেষ্টা করে শেষে আগুন ধরাতে পুনরায় সক্ষম হয়। আগুন জ্বালাতে পেরে সঞ্চয় এবং সজিব শামীমের চোখে মুখে এক ধরনের বিজয়ীর ছাপ দেখতে পায়।
এবার তারা প্রত্যেকেই খুব বেছে বেছে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পাতা দিচ্ছে আগুনের শিখার উপর। অতিক্ষুদ্র বিসুভিয়াস ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। এবং আগুনের তাপ পোহাতে পরিচিত অপরিচিত অনেকেই শামীম, সঞ্চয় আর সজিবকে ঘিরে দাঁড়িয়ে বা বসে পড়ে। এবং তারাও পাতা জোগাড়ের কাজে লেগে যায়। কেন্দ্র থেকে মানুষের বৃত্ত বড় হতে থাকে। আগুনের তাপ ছড়িয়ে পরে সবার গায়ে। এরই মধ্যে কে যেনো সঞ্জিব চৌধুরীর একটা গান ধরে, "কে দেবে হায় ঝুলিয়ে বিড়ালের ঘন্টা গলায়। দিন রাত কান্না হাসি, কেঁদে রোজ মনটা গলায়। "
(২৩ ডিসেম্বর ২০১৪, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান; পল্টন)
২| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৩
নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: অনেকটা শিক্ষনীয় গঠনা বটে
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:০২
নিলু বলেছেন: গলায় না দিলেও বাজবে একদিন