![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাংস্কৃতিক কর্মী শিল্প তৈরি করতে পারেন আবার নাও করতে পারেন..... তবে শিল্পীর শিল্প তৈরি হওয়া চাই-ই-চাই.......সাংস্কৃতিক কর্মীর মূল কাজ শিল্পীর তৈরি শিল্পকর্ম এবং জনগনের মধ্যে মেল বন্ধন অর্থাৎ সহজ ভাষায় বললে, সেতু তৈরি করা..... আর এই সেতু তৈরির কাজ সাংস্কৃতিক কর্মীর করা চাই ই-চাই....এখানে ফাঁকিবাজির সুযোগ নাই.....সুযোগ নাই শিল্পীর মতো ব্যক্তি কেন্দ্রিক চিন্তা করার..... সাংস্কৃতিক কর্মীকে তাই মাঝে মাঝে শিল্পীর চাইতে সংগঠকের ভুমিকায় বেশি অবতীর্ণ হন...... এতে দোষের কিছু দেখি না....সব ঠিকঠাক থাকলে সাংস্কৃতিক কর্মী নামক শব্দের উৎপত্তি ঘটতো না..... সবাই শিল্প চর্চাই করতো.....শিল্প চর্চা করতে এসে কেউ বিপ্লবের কথা বলতো না..... যেহেতু বিপ্লব একটি কঠিন সত্য...... বিপ্লব দীর্ঘজিবী হোক.....\\\\\\\\\\\\\\\\n(১৪ মার্চ ২০১৫, পল্টন ...........)
প্রতি রাতে কোলকাতার টিভি চ্যানেলে যৌন শক্তি বৃদ্ধির বিজ্ঞাপন দেখতে গিয়ে পথিকের অনেক দেরি হয়ে যায় ঘুমতে যেতে। তার এই অনিয়মটা চলছে গত কয়েক মাস ধরে। প্রথম কয়দিন খুব উচ্ছাস নিয়ে দেখলেও আজকাল ভাবছে অন্য কথা। ভাবছে কোলকাতার মানুষ কি অধিকাংশই ধজভঙ্গ রোগে ভুগছে?যদি ভুগেই তবে তাহলে অবস্থাতো ভয়াবহ। এসব চিন্তার চাইতে সবচেয়ে যেটি আরো প্রবল ভাবে তাকে ভাবিযে তুলছে এবং প্রতি রাতে বিজ্ঞাপন দেখতে আরো আগ্রহী করে তুলছে তার অনেকগুলো কারনের মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে দেখা গেছে, বিজ্ঞাপন চলাকালে টিভি স্ক্রিনের নিচে স্ক্রলে দেখা যায় অনেকগুলো দেশের নাস্বার। যেই নম্বারগুলোতে যোগাযোগ করলে একজন অক্ষম পুরুষ অথবা নারী সক্ষমতা অর্জনের জন্য নিজ দেশে বসেই যৌন উদ্দীপক সেই হারবাল ঔষধ পেয়ে যাবেন। না এটাও ঘটনা না। ঘটনা হলো, সেই নাম্বারের তালিকায় বাংলাদেশের নাম আছে। মুলতো বলা যায়, বাংলাদেশের নামটাই তাকে ভাবিয়ে তুলেছে। সে ভাবছে আমাদের দেশেও কি ধজভঙ্গ রোগী বেড়ে গেছে? নারীর এই রোগ হয় কিনা পথিকের তা জানা না থাকলেও এটা মোটামুটি নিশ্চিত পুরুষের এমন রোগ হয়। বন্ধু মহলে এসব বিষয় নিয়ে একসময় ব্যাপক আড্ডা আর হাসি তামাশা হতো এবং সেখান থেকেই তার এ বিষয়ে জানা। পথিক যদিও বিয়ে করেনি কিন্তু এক ধরনের আতংক তার মধ্যে কাজ করা শুরু করেছে এরই মধ্যে। যদিও নিজহস্তে তার সকল প্রকার শারীরিক কসরত এখন পর্যন্ত ঠিক আছে বলেই সে জানে। কিন্তু আতংক তাকে ছাড়ে না। তাই প্রতিদিন রাতে ঐসব চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে শরীর গরম করার চাইতে নাম্বারগুলো জোগাড় করাই তার এখন একমাত্র রাতের কাজ। কারণ কখন দরকার পড়ে কে জান? অবশ্য যেটা দরকার ছিলো না তা হলো, কোন দরকারই ছিলো না পথিকের গল্প বলার জন্য তাকে এই ভাবে সবার সামনে হেনস্তা করার। তবু গোপন করলেই গোপন। যাই হোক এসব নিয়ে কথা না বাড়াই, তারচেয়ে গল্পে ঢোকা যাকা।
এটাকে গল্প বলা ঠিক হবে কিনা জানা নাই। তবে পথিকের মাথায় দিনদিন আরো উদ্ভট চিন্তা ঘুরছে। আর সেই চিন্তার কথা বলাটাই একটা গল্প হতে পারে। মানসিক বিকারগ্রস্থ হোক আর যাই হোক, যখন কেউ এসে বলা ধরে ‘ জানিস রাস্তায় একটা পাগলকে দেখলাম লোক দৌড়ানি দিতাসে। তারপর পাগলতো……”। দেখবেন সবাই বসে গেছে সেই ঘটনা শুনতে। এবং একটু পরপর হা হা হা......... তারপর তারপর.....। কি গল্প হলো না? পথিকের বিষয়টাও তাই। গত সপ্তা দু’য়েক ধরে সে মানুষকে বলে বেড়াচ্ছে, যে মানুষগুলোকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে তারা কেউ আসলে মানুষ নয়। ভিন্নগ্রহ থেকে আসা কোন এলিয়েন। তার সাফ কথা এদের আসলে পৃথিবীতে কোন অস্তিত্ব নেই। পুরো ঘটনাটাই একটা সেট। সকালে পত্রিকায় যেসব ছবি আসে সে ছবিও নাকি একটা সেট করা। প্রতিদিন ঠিক করা কার কার পোড়া ছবি যাবে। তার ভাষ্যমতে পত্রিকায়ও এলিয়েনদের। এই উদ্ভট চিন্তার যুক্তি হিসেবে সে দাঁড় করিয়েছে, যেহেতু নিহত বা পোড়া কেউ আমাদের আত্মীয় না বা আমরা কেউ দেখছি না, আমরা চিনি না। যেহেতু সবকিছু পত্রিকায় বা টিভিতে দেখছি। সেহেতু এরা কারা? সে আরো বলে আমরা যেহেতু নিজে না আঘত প্রাপ্ত হওযা পর্যন্ত কোনো বিষয়ই আঁচ করতে পারিনা। এবং এটাই যেহেতু সমাজে প্রতিষ্ঠিত তাই আমি সমাজের বাইরে কি করে চিন্তা করি? সমাজের এই সমাষ্টিক চিন্তা থেকে আমার মনে হয়েছে যেহেতু পোড়া মানুষ এমনকি সকল মৃত্যু যা মৃতের হাতে ছিলো না, ছিলো অন্য কারো হাতে; সেহেতু আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনিত হতে পারি যে, যা আমাদের স্পর্শ করে না তার অস্তিত্ব আছে কি করে বলি?
এমন উদ্ভট কথায় তার আশেপাশের সবাই এখন ত্যাক্ত বিরক্ত এবং তাকে একপ্রকার পাগল বলে আখ্যায়িত করা শুরু করে দিয়েছে। তবে পাগল ডাকটা তার খারাপ লাগছে না। সে বেশ রোমান্টিক এক অনুভূতি বোধ করছে। বিশেষ করে যখন কোন নারী তাকে ঐ নামে ডাকে। ইদানিং পথিক আরো একটি প্রশ্ন ছুঁড়ে, ‘ যদি তাদের অস্তিত্ব আছে বলে তোমরা স্বীকার করো তবে আমাদের অস্তিত্ব আছে কি? যদি থেকে থাকে তবে ধজভঙ্গ রোগ কি এ দেশে বিস্তার লাভ করেছে কিনা? সে শেষে আরো বলে, ঐসব পোড়া মানুষ-টানুস কিছু না, আমার মুল চিন্তার বিষয় ধজভঙ্গ রোগ নিয়ে। তাই এতো কথা। তবে শেষটুকু সে আস্তেই বলে, যেনো কেউ না শুনে। তাহলে যে পাগল ডাকটা আর শুনতে পারবে না।
গল্প এখানেই শেষ হতে পারতো। তবে আরেকটা ঘটনা না বললেই নয়। ধজভঙ্গ রোগ নিরোধক বিজ্ঞাপন দেখা শেষ করে সে টকশো দেখে মাঝে মধ্যে। তো সেদিনের বিষয়, ‘পরিবেশ বিপর্যয়’। আগত অতিথিকে জিজ্ঞেস করা হয় আমাদের করনীয় কি? খুব নড়ে চড়ে অতিথি অর্থাৎ নামকরা এক অভিনেতা বলতে শুরু করলেন, আমাদের করনীয়….. অমনি পথিক টিভির ভলিওম কমিয়ে বাকিটুকু বলা শুরু করলো এইভাবে, প্রচুর গাছ ‘লাগাতে’ হবে সামনে পিছে, চারপাশে আর আমার মতো পানি ঢালতে হবে বলেই আলোচক বরাবর টিভির উপর মুতে দিলো।
(প্রকাশের তারিখ- ১৭ মার্চ ২০১৫, পল্টন)
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:০৩
জাহিদ হাসান মিঠু বলেছেন: অসাধারন।