নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইতিহাসের পাতা থেকে

জাতিস্মরের জীবনপঞ্জী

ইতিহাসের পাতা থেকে

জাতিস্মরের জীবনপঞ্জী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্যাবিলনের বারবণিতা

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ভোর ৫:১২

সিগারেটে শেষ টান দিয়ে রিভলভিং ডোর ঠেলে পলের অফিসে ঢুকলাম। শরীরের বাম পাশে ঝুলে থাকা স্যাচেল ব্যাগটাতে সযত্নে হাত বুলালাম, এর ভেতর থাকা গত এক বছরের পরিশ্রমের ফসল পলের হাতে বুঝিয়ে দিয়ে আগামী দিনের খরচের জন্য ব্যাংক ড্রাফট বুঝে নিতে হবে। টাইপরাইটারের একঘেয়ে খটখট আর টেলিফোনের বিরক্তিকর রিং রিং শব্দ থেকে দূরে কফি মেশিনের সামনে জেনিফার গুনগুন করছে। নিঃশব্দে তার পিছনে গিয়ে কানের কাছে মুখ নিয়ে বললাম, "আমাকে এক কাপ দেয়া যাবে?" কাজটা ঠিক করিনি, জেনি চমকে উঠে মেঝেতে কফি ফেলে দিল, "ফর গডস সেক, এডি! কতবার বলেছি আমি এটা পছন্দ করিনা?"

"হাজার বার।"

"তাও কেন কর?"

"ইচ্ছে করে, দেখতে ভাল লাগে। কফি দাও, ফ্রি কফির মজাই আলাদা।" আমার হাতে পেপার কাপ ধরিয়ে জেনি জিজ্ঞেস করল, "কবে ফিরলে?"

"তিনদিন হল।"

"তাহলে এ কয়েক দিন আসনি কেন? পল শুনলে রেগে যাবে।"

"তোমরা আমাকে কি ভাবো বলত? আমিও তো মানুষ, আমারও বিশ্রামের প্রয়োজন আছে, নাকি?"

জেনি ঠোঁট উল্টে বলল, "তোমাকে কি নয়টা-ছয়টা অফিস করতে হয়? খালি তো ঘুরেই বেড়াও। তোমার আবার বিশ্রাম কি?" কফিতে চুমুক দিয়ে বললাম, "আমরা সবাই ঈশ্বরের অবসরে খেলার পুতুল, জেনি। তিনি যাকে যেখানে রেখে খেলতে চান সেটাই তার স্থান। তোমার স্থান লন্ডনের ডেস্কে আর আমার খোলা ময়দানে।"

"ঈশ্বরের ব্যাপারে বিরূপ মনোভাব কেন? ঈশ্বর তোমার বাড়া ভাতে ছাই দিলেন কখন?"

"আমি ঈশ্বর বিরোধী নই। ঈশ্বর আমাদের মত ছোট-খাট বান্দাদের গুরুত্ব দেন না, তিনি কল-কাঠি নাড়েন রাজা-বাদশাদের জন্য। আমরা হলাম পৃথিবীর রাজা-বাদশাদের গল্পের মাইনর ক্যারেক্টর। যাই হোক, ভাবছি মাসখানেকের জন্য ছুটি কাটাব। চলো না কোথাও ঘুরে আসি?"

"তোমার সাথে কোথাও যাওয়া মানে তো হয় তৃতীয় বিশ্বের কোন দেশের যুদ্ধক্ষেত্র বা বন্যা কবলিত জায়গায় যাওয়া। না বাবা, আমি এর মধ্যে নেই।"

"তোমার জন্য না হয় এবার ইউরোপেই ঘুরব। তাহলে আজকে কোথাও ডিনার করি চল, খেতে খেতেই সিদ্ধান্ত নিব কোথায় যাওয়া যায়।"

"আজকে না, আরেকদিন।"

"কবে?"

"যেদিন ঈশ্বর আমাদের নিয়ে ডিনারপার্টি খেলবেন," জেনি গটমট করে তার ডেস্কের দিকে গেল। জেনির কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে পলের কেবিনের দিকে পা বাড়ালাম। দরজায় টোকা দিয়ে ভেতরে ঢুকলাম, "কেমন আছ, পল? বিক্রি-বাট্টার কি খবর?" পল বসার ইশারা করে সিগারেট ধরালো, "শ্যাম চাচার কল্যাণে পত্রিকা বিক্রি বাড়ছে। আমেরিকা আরো দুই-একটা দেশে এরকম বিপদে পড়লে ভালই হয়। কিন্তু ফ্লিট স্ট্রিটে প্রতিযোগিতা এখন তুঙ্গে। ছাপার মত নতুন কিছু না পেলে পথে বসে যেতে হবে। তা তোমার ঝোলাতে করে কিছু এনেছ নাকি খালি হাতে এসেছ?" ডোশিয়েরগুলো ব্যাগ থেকে বের করতে করতে বললাম, "তোমার মত ধড়িবাজ লোক আর দেখিনি, পল। কোথায় আমার ভাল-মন্দের খবর নিবে তা না করে আগে নিজের বিক্রি বাড়ানোর চেষ্টা।"

"তুমিও তো কম না, এডি। আমার পকেট থেকে যে মাল-পানি বের করার জন্য এসেছ তা খোদ শয়তানও জানে। কমপ্লিট জিনিস কয়টা এনেছ?"

"ছয়টা, দাম পড়বে বেশি। এগুলো লিখতে যেয়ে প্রাণে মারা পড়তে গিয়েছিলাম।" পল অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল, "তুমি মারা পড়বে? তুমি হচ্ছ এডওয়ার্ড দ্য ব্ল্যাক শিপ, খোদ শয়তান তোমার দোসর।"

"রসিকতা করছি না, পল। ভিয়েতনামের ওপর এরকম ডিটেইলড রিপোর্ট আর কেউ দিতে পারবে না। একদম গেরিলা রেজিস্ট্যান্সের প্রাণকেন্দ্র থেকে এনেছি। পয়সা বেশি ছাড়তে হবে, নতুবা আমি অন্য কোথাও নিয়ে যাই।" পল কয়েক মূহুর্ত চিন্তা করে বলল, "লোকে ভুল বলে না, এডি, তুমি আসলেই ব্ল্যাক শিপ। দাও, তবে মনে রেখ আর কখনো দাবি করতে পারবে না যে এগুলো তোমার।"

"কখনো করেছি?"

"তা অবশ্য কর নি। আমি তোমার এই ব্যাপারটা বুঝি না। গোস্ট রাইটিং এ তোমার এত আগ্রহ কেন? যে কোন সাংবাদিক চায় মানুষ তার কাজের জন্য তাকে জানুক। তোমার অনাগ্রহের কারণ কি?"

পলের দেখাদেখি একটা সিগারেট ধরিয়ে বললাম, "খ্যাতি খরচের যোগান দেয় না, পল। আমার অ্যাসাইনমেন্টগুলো বেশ খরুচে, আমাকে সে ব্যাপারেও ভাবতে হয়। খ্যাতি হল কটন ক্যান্ডির মত, তাছাড়া সেটাকে পকেটে রাখা যায় না।"

"বাজে একটা কালচার তৈরি করছ তুমি, এডি। অকাট-মুর্খ পয়সাওয়ালারা এখন এভাবে খ্যাতির খনিতে হাত বসাবে। মাঝখান থেকে আমার মত মিডলম্যানরা বারবণিতার দালালের মত কাজ করবে। ইন্ড্রাস্ট্রি নষ্ট হয়ে যাবে..."

"কলিযুগ, পল, ঘোর কলিযুগ", সিগারেটের ধোঁয়াকে রিং বানানোর ব্যর্থ চেষ্টা করলাম, "নিজেকে মানিয়ে নিতে শেখ। তাছাড়া কয়েকদিন পর তোমার প্রয়োজন ফুরিয়ে যাবে। খ্যাতি শিকারীরা আর দালাল খুঁজবে না, আমার মত পতিতদের সাথে সরাসরি ধান্দা করবে।"

"সেই ভাল, ধ্বংস রুখতে না পারলে অন্তত নিজের বিবেককে পরিস্কার রাখা প্রয়োজন। এনিওয়ে, এখন কি করবে? এবার কোথায় যাচ্ছ?"

"এখনো ঠিক করিনি। ভাবছি ছুটি কাটাব, জেনিফারকে নিয়ে ইউরোপেই কোথাও ঘুরে আসি।" পল চোখ পিটপিট করে বলল, "কেন মেয়েটাকে জ্বালাও, এডি? নিজের মাথা খারাপ সেটা তোমার ব্যাক্তিগত ব্যাপার, জেনিরটা অন্তত খারাপ কোরো না। তার চেয়ে একটা কাজ কর, পাকিস্তান থেকে ঘুরে আস।"

"পাকিস্তান কেন? কখনো শুনেছ কেউ ছুটি কাটাতে এশিয়া যায়?"

"তোমাকে তো আর যুদ্ধক্ষেত্রে যেতে বলছি না। সামান্য রাজনৈতিক ডামাডোল, পর্যবেক্ষণ করবে আর রিপোর্ট পাঠাবে, সেই সাথে ছুটিও কাটালে। রথ দেখা আর কলা বেচা দুই হয়ে গেল। সেখানে তোমাকে না গেরিলা ক্যাম্প খুঁজতে হবে, না আর্মি প্রটেকশনে ঘুরতে হবে, না গোলাগুলির সময় বাংকারে লুকাতে হবে। I Think it's a sweet deal."

"কিন্তু জেনিকে কি বলব? বেচারি তো মনে হয় মেডিটেরিয়ানের স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে…", পল গম্ভীর স্বরে বলল, "জেনিকে আর ঘাটিও না, এডি। সহজ-সরল মেয়ে, তোমার কোন রসিকতাকে সিরিয়াসলি নিয়ে নিবে তখন জটিলতা সৃষ্টি হবে। কর্মঠ মেয়ে, এরকম কর্মচারী আমি হারাতে চাই না। তার চেয়ে পাকিস্তান যাও, ছুটির খরচটা উঠে যাবে।" সিগারেটটা অ্যাশট্রেতে গুঁজে আরেকটা ধরিয়ে বললাম, "জানো তো পল, আমার মনটা খুব নরম। মেয়েদের মনে কষ্ট দেয়া আমার ধাতে নেই। জেনি তোমারই থাক, এখন বল পাকিস্তানে গেলে টাকা-পয়সার হিসাবটা কেমন হবে।"

পলের কেবিন থেকে বের হয়ে জেনির কাছে গেলাম, "আমাদের বেড়ানোটা হচ্ছে না, জেনি, আমি দুঃখিত। ভেবেছিলাম একসাথে কিছুদিন মেডিটেরিয়ান ঘুরে আসব, তা আর হল না..." জেনি ডেস্কে পড়ে থাকা কাগজ-পত্র থেকে মুখ না তুলে জিজ্ঞেস করল, "এবার কি বাহানা?"

"পল তোমার ছুটি মঞ্জুর করল না। তার চেয়ে চল বিয়ে করে ফেলি, হানিমুনের নাম করে বেশ কয়েকদিন ঘোরাঘুরি করা যাবে…" জেনি এবার মুখ তুলে তার মৃগাক্ষী দিয়ে আমাকে ভস্ম করার ব্যর্থ চেষ্টা করে বলল, "You're bloody gormless, Eddie."

পশ্চিম পাকিস্তানে শেষ এসেছিলাম প্রাক আইয়ুব-শাহী আমলে। তখন পাকিস্তানের রাজধানী ছিল পাকিস্তানের জনক মুহম্মদ আলী জিন্নাহর জন্মস্থান করাচী। করাচীর উত্থান শুরু হয় ব্রিটিশ ভিক্টোরিয়া যুগে সমুদ্র বন্দরের উছিলায়। ধীরে ধীরে তা মুসলিম লীগের প্রধান ঘাঁটি হয়ে ওঠে। দেশ বিভাজনের পর করাচীতে বড় আকারের অভিবাসন ঘটে এর চাকচিক্যের কিছুটা হের-ফের হলেও পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় নগরী হিসেবে তা রাজধানীর মর্যাদা লাভ করে। ১৯৪৭ থেকে করাচী হয়ে ওঠে পাকিস্তানের ক্ষমতার ভিত্তিস্তম্ভ। অপেক্ষাকৃত অধুনা এ নগরী তার রূপের পসরা সাজিয়ে সিন্ধু প্রদেশকে মর্যাদার শীর্ষে স্থান দিয়েছিল। কিন্তু ১৯৫১ সালে পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের হত্যাকাণ্ড করাচীর ক্ষমতাস্তম্ভে প্রথম আঘাতটা হানে। ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন পাকিস্তানের ক্ষমতা দখল করলে করাচী তার অনুগ্রাহকদের কাছে জনপ্রিয়তা হারায়। রোমাঞ্চপ্রিয় জঙ্গী প্রমোদ শিকারীরা যেন ঘর থেকে এক পা ফেলেই স্ফুর্তির অভয়ারণ্যে কামজ মৃগয়ার আনন্দ লাভ করতে পারে সেজন্য রাজধানী রাওয়ালপিন্ডির কাছে ইসলামাবাদে স্থানান্তর করা হয়। স্বল্প সময়ে যৌবনাত্তীর্ণ করাচী তখন শুধু রাওয়ালপিন্ডির লম্পটদের খাজাঞ্জি ও দালাল হয়ে রয়ে যায়। তবুও আমি প্রথমে করাচীতেই পা রাখি। কারণ সামরিক শাসনে হাড়ির খবর চৌহদ্দিতেই ভাল পাওয়া যায়।

সিন্ধ থেকে পাঞ্জাবে রাজধানী স্থানান্তর সিন্ধিরা ভালভাবে নেয়নি। তাদের ধারণা সামরিক শাসনকে দীর্ঘায়িত করার জন্যই রাজধানী রাওয়ালপিন্ডির কাছে নেয়া হয়েছ, অন্তত করাচীর চিটাগং কলোনির বাঙ্গালীদের তাই ধারণা। তাছাড়া সাম্প্রতিক নির্বাচনের পর ক্ষমতা হস্তান্তরে সামরিক জান্তার গড়িমসি দীর্ঘমেয়াদী সামরিক শাসনের ইঙ্গিতই বহন করছে। দৈনিক কওমি বন্ধন -এর স্টাফ রিপোর্টার আলী আব্দুল্লাহ ফাথান আফসোসের সাথে বললেন, "পাকিস্তান কখনো একুশ পরিবার আর আর্মির হাত থেকে স্বাধীনতা পাবে না। আপনাদের কাছ থেকে পাকিস্তান মুক্ত হয়েছে কিন্তু জনগণ এখনো স্বাধীনতা পায়নি।"

"আন্দোলন করেন না কেন? আন্দোলন করে আইয়ুবকে নামালেন, ইয়াহিয়াকেও আশা করি পারবেন।"

"ইয়াহিয়াকে হয়ত নামাতে পারব, কিন্তু ক্ষমতা আবার আরেক জেনারেলের হাতেই যাবে। এ হচ্ছে পাকিস্তানের দুর্ভাগ্যের দুষ্টচক্র। জমিদার, জঙ্গী আর ব্যবসায়ীদের লাভের জন্য পাকিস্তানের সৃষ্টি। পূর্ব পাকিস্তানে এত গণ্ডগোল হচ্ছে এটা অস্বাভাবিক না। কিন্তু লাভ হবে না, রক্ত আর টাকার নেশা ভয়ংকর।"

"পশ্চিমে আপনারা কিছু করছেন না কেন?"

"কার পিছে দাড়াবো? ভুট্টোর? সেও তো জেনারেলদের সাথে পিরিতের বাঁধনে জড়ালো। রোটি, কাপড়া অউর মাকান? ভুলে যান, জনাব, এরা নিজেদের যৌন ক্ষুধা মেটাতে ব্যস্ত, সাথে থাকবে স্বল্পবসনা নারী, আর পিন্ডির দুর্গ হল এদের লীলাখেলার নীড়। এরা কিভাবে মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করবে?"

"কলম যুদ্ধ করেন, সেন্সরশিপ তো তুলে নেয়া হয়েছে…"

"সেটা শেখের জন্য। পশ্চিম পাকিস্তানে এগুলো বলাও নিষেধ, আবার বললে কেউ বুঝবেও না। আসলে পাঞ্জাবিরা দেশ দখল করে নিয়েছে, বাকিদের কেন্দ্রে জায়গা নেই। বুদ্ধিমান সিন্ধিরা লাভের গুড়ের জন্য পাঞ্জাবি বেশ নিচ্ছে, তা না হলে ক্ষমতার খেলার বেস্ট ইলেভেনে থাকা সম্ভব না। আর যারা ভূষণ বদলাতে পারছে না তাদের স্থান স্টেডিয়ামের বাইরে। রেডিওতে লাইভ ব্রডকাস্ট শুনবেন সেই দিন পাকিস্তানে আসেনি।"

হতাশ হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, "তাহলে আমি কার কাছে যাব?" আলী আব্দুল্লাহ ফাথান এক টুকরো কাগজ ধরিয়ে বললেন, "পাপ দেখতে পাপাচারের স্থানেই যেতে হয়, আপনি সেখানেই যাবেন- Arise, go to Islamabad [Ninevah], that great city, and cry against it; for their wickedness is come up before me (Jonah 1: 1,2)."

"ইসলামাবাদকে উপমহাদেশের মুসলিমদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল করে তৈরির পরও এভাবে নিন্দা করলেন?"

"কেন? ইউরোপের খ্রিস্টানরা হলি রোমান এম্পায়ারকে দ্বিতীয় ব্যাবিলন বলতে বাধ্য হয়নি?"

আলী আব্দুল্লাহ ফাতানের দেয়া ঠিকানা ধরে পৌছে গেলাম ইসলামাবাদের নামকরা পাঁচতারা হোটেলে। সেখানে বারবধূরা অন্ধকার রাস্তার টিমটিমে আলোর নিচে দাড়িয়ে খদ্দেরের জন্য অপেক্ষা করছে না ঠিকই, কিন্তু তাদের রমণদূতেরা পেশাদারীত্বের সাথে পথভ্রষ্ট মানুষকে পথ দেখিয়ে জান্নাতের বাগান দর্শনের জন্য ভেতরে নিয়ে যাচ্ছে। মূল দরজার একপাশে সাড়ে প্রায় ছয় ফুটের জান্নাতের বাগানের প্রায় অর্ধনগ্ন একটি পোস্টার দেয়ালে সাটা- প্রিন্সেস জুলফা। আমি জ্ঞানপাপী, ধরণীতে স্বর্গ দর্শনের সুযোগ হারাতে চায় কোন বদনসীব? অভ্যর্থকের তেল মাখা হাসির জবাবে হেসে জান্নাতের চৌকাঠে প্রবেশ করলাম। আঁধো-আলো, আঁধো-অন্ধকার, বারে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কতগুলো টেবিল, একটা মাঝারি কাউন্টার এবং একদিকে বড় একটি মঞ্চ। আমি বোধহয় দুই শো-এর মাঝামাঝি সময় এসেছি। টেবিলগুলো বেশিরভাগই ভরা, কাউন্টারে একটি টুলে বসে এক গ্লাস বিয়ারের অর্ডার দিলাম। স্বল্পবসনা সাকি আবেদনের ডালাতে মদিরা ভর্তি পেয়ালা এনে জিজ্ঞেস করল বিশেষ আর কোন খেদমতের প্রয়োজন হবে কিনা। আমি তার আমন্ত্রণে সাড়া দিলাম, প্রিন্সেস আফিফার সাথে সাক্ষাৎের খায়েশ পেশ করলাম। আমার খায়েশ শুনে সাকি কিছুটা নিরাশ হল, সেবাটা হয়ত সে নিজে দিতে চেয়েছিল। আমাকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলে আবেদনের যে বাণ মেরে সে অন্দরমহলে গেল তাতে নিজেকে জিতেন্দ্রিয় হতে হয়, আমি নমস্য ব্যাক্তি। বিয়ারে চুমুক দিতেই বারের ভেতর বাদ্যযন্ত্র বেজে উঠল, সেই সাথে মাতালদের চিৎকার ও শিষ বাজানোর আওয়াজ- মঞ্চের পর্দা উন্মোচিত হয়েছে। হাফ ব্লাউস ও কোয়ার্টার স্কার্ট পরিহিতা মধ্যভাগ উন্মোচন করে এক নারী মঞ্চে প্রবেশ করেছে- নিশ্চয় প্রিন্সেস জুলফা। মঞ্চের পেছন থেকে পাশ্চাত্য সঙ্গীতের আওয়াজ ভেসে আসছে। মিশরীয় বেলি ড্যান্সের সাথে পাশ্চাত্য সঙ্গীতের অদ্ভুত ফিউশন! মানতে হবে পাকিস্তানিরা কাবিল আদমি, বারভর্তি রসজ্ঞ ব্যাক্তিরা নিঃশব্দে এই দোআঁশলা মোহসঞ্চারী শিল্প দু'চোখ ভরে গিলছে। এই জাদু শিল্পের বিশেষজ্ঞরা হয়ত কারো স্বামী, কারো ভাই বা কোন মেয়ের পিতা। রাতভর বেলেল্লাপনা করে ভোররাতে বাড়ি যেয়ে এরাই রাত্রিজাগা স্ত্রীদের নামাজের গাফিলতির জন্য তিরস্কার বা ক্ষেত্রবিশেষে মারধোর করবে, এবং সকালে ধর্মের ঝান্ডাধারী ইমানদারের পালক গায়ে জড়াবে। মজার ব্যাপার হল, পশ্চিম পাকিস্তানের এই বারের সাথে পূর্ব পাকিস্তানের দৃশ্যত কোন পার্থক্য নেই। গত নভেম্বরে যখন ইন্দোচীন থেকে পূর্ব পাকিস্তান হয়ে ভারত যাচ্ছিলাম তখনও অনেকটা এ রকমের দৃশ্য আমার চোখে পড়েছে। পার্থক্য ছিল পরিস্থিতিতে, সে সময় তরলটা ছিল জ্বলোচ্ছাসের পানি আর নারীরা ছিল তাতে ভাসমান অর্ধনগ্ন মৃতদেহ। পশ্চিম পাকিস্তানে যা স্বতঃপ্রবৃত্ত পূর্বে তা অসহায়ত্ব। পশ্চিমে যে দৃশ্য যৌন সুড়সুড়ি জাগায় পূর্বে তা মানবতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। যে নগরীকে উপমহাদেশের মুসলিমদের অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে সেই নগরীই সূর্য ঝাঁপি ফেলার পর প্যাগান রোমের ফ্লোরেলিয়া উৎসবের ব্যভিচারে মেতে ওঠে। দিনের বেলায় যে নীতি নির্ধারকেরা ইসলামিক ঐক্যের ধ্রমোপদেশ দেয় রাতের আঁধারে তারাই মুজরার প্রতিপোষক। সূর্যের রক্তচক্ষুর নিচে যে মহল থেকে ইসলামের ভজন গাওয়া হয় চাঁদের কোমলতায় তাতে বালসাজারের ভোজ চলে। হয়ত এর জন্য দায়ী ডলার, যা পাঞ্জাবে আসে কন্টেইনার ভর্তি হয়ে, কিন্তু বাকিদের ধরা-ছোয়ার বাইরে। এজন্যই তারা খোঁজে টাকা আর বাকিরা স্বাধিকার।

প্রিন্সেস জুলফার হায়ার লেবাস যতক্ষণে একটু একটু করে অপাবৃত হতে হতে দুই টুকরোয় এসে ঠেকে এবং সঙ্গীতের তাড়ন শীর্ষে পৌছেছে সাকি তখন আমাকে ভেতরে যাবার আমন্ত্রণ জানালো। রূদ্ধশ্বাসে অপেক্ষমান বিকারগ্রস্তদের তদতিরিক্ত বিবসনের তৃষ্ণাকে পেছনে ফেলে সাকির পিছু নিলাম। মিনিটখানেক চলার পর একটি রুমের সামনে এসে দরজা খুলে সাকি বলল, "প্রিন্সেস আফিফা আপনার জন্য অপেক্ষা করছেন।" সাকির হাতে কয়েক রুপি ধরিয়ে দিয়ে মিষ্টি হেসে রুমের ভেতর ঢুকলাম। দরজার কাছে দাড়িয়ে থাকা ভেনাসসদৃশ কালো কেশী নারী অভ্যর্থনা জানিয়ে বলল, "কখনো ভাবিনি আন্তর্জাতিক অতিথির সেবা করার সুযোগ পাবো।"

"এটা হল খ্যাতির বিড়ম্বনা।"

"বিড়ম্বনা! বিড়ম্বনা কেন হবে? এতো সুযোগ…"

"দেশের মানুষের উদ্ভট খেয়াল, বাসনা পূরণ আর কোন বিদেশির চাহিদা পূরণে পার্থক্য নেই?"

"মানুষের উদ্ভট চাহিদা পূরণ করাই আমাদের কাজ, এতে সংকোচ করব কেন?"

"যদি আমার উদ্ভট চাহিদা পছন্দ না হয়?"

"এ ব্যাপারে আমার ঢের অভিজ্ঞতা আছে, আমার উপর ভরসা রাখতে পারেন।"

"পিন্ডির জেনারেলরা কি ধরণের উদ্ভট খেয়াল পোষণ করেন?"

প্রিন্সেস আফিফা হেসে বলল, "তারা দেশের হর্তাকর্তা, তাদের চাহিদা পূরণ করা আমার নাগরিক দায়িত্ব। তবে তাদের সাথে যদি টেক্কা দিতে চান সেক্ষেত্রে আমরা দুইজন সংখ্যায় অপ্রতুল।"

"প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া কি ধরণের মনোরঞ্জন পছন্দ করেন?" এক্ষেত্রে প্রিন্সেস আফিফার হাসি মিলিয়ে গেল, "জেনারেলদের ব্যাপারে আপনার এত আগ্রহী কেন? আপনি কি সাংবাদিক?"

"মানুষ জন্মগতভাবে আগ্রহী প্রাণী। আর আমার আগ্রহের মাত্রাটা একটু বেশি…"

"এই আগ্রহটা অপ্রয়োজনীয়।"

"উহু, খুবই প্রয়োজনীয়, জানলে বুঝতে পারব আমার চাহিদা পূরণ হবে কি না।"

"তোমার চাহিদা কি?"

"তথ্য, ম্যাডাম, তথ্য। উদ্ভট, তাই না?"

"শুধু উদ্ভট না, অমার্জনীয়ও বটে। কিন্তু আমার কাছে কি তথ্য চাও? আমি সামান্য একজন তাওয়ায়েফ..."

"তুমি আমার কাছে সামান্য নও। তোমাদের জাতীয় কবির ভাষায় বলতে হয়- 'পরোয়া করি না ব্যাথা দাও বা রূপ খোলো হেসে-নেচে/ নিরীখ করিব পরামর্ষ মোর জালিম কষ্টিপাথরে যেচে', তুমি সেই কয়েকজন মানুষের একজন যারা দেশের হর্তাকর্তাদের সবচেয়ে দুর্বল মুহূর্তের সঙ্গী।"

"তুমি কি আমাকে দেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে বলছ?"

পকেট থেকে কিছু ডলার বের করে বললাম, "উহু, আমি তোমাকে বিচক্ষণ হতে বলছি…"

"আমাকে রূপির লোভ দেখিয়ে লাভ নেই। আমার উপার্জন এর চেয়ে ঢের বেশি…"

"রূপি না, ডলার। পাকিস্তানে এর কদর আছে বলে জানতাম…"

"রূপি হোক বা ডলার, দেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার কোন মূল্য নেই।"

"আসলে, ডলার সবার চেয়ে আলাদা। এই ডলার দিয়েই সবাইকে একই পাল্লায় মাপা যায়।" সুরটা নরম করে বললাম, "আমি তোমাদের মার্কিন দূতিয়ালির খবর জানতে চাচ্ছি না, যদিও সেটা ঢের বেশি ইন্টারেস্টিং। আমি শুধু জানতে চাই পূর্ব পাকিস্তান পরিস্থিতির ব্যাপারে পিন্ডির বক্তব্য কি। আমার পক্ষে জেনারেলদের কাছে পৌছানো সম্ভব না, তাই তোমার কাছে এসেছি।"

"তুমি এখন যেতে পার…"

"ভুল করলে আফিফা, জেনারেলদের রতিসঙ্গী আরো অনেকেই আছে। তাদের কেউ হয়ত আগামী কয়েকদিনের মধ্যে নতুন হার কিনবে বা যৌবনাত্তীর্ণ সময়ের জন্য সঞ্চয় করে রাখবে। আমি বলব সঞ্চয় করাটা বুদ্ধিমানের কাজ। 'হিরণের হরে রূপ পুরোদস্তুর।" কোটটা তুলে নিয়ে দরজার দিকে পা বাড়াতে আফিফা বলল, "অপারেশন ব্লিটজ, জেনারেলদের এ কথাটা বারবার বলতে শুনেছি।" পকেট থেকে একটা নোট বের করে সাইড টেবিলে রাখলাম, "অপারেশন ব্লিটজ কি?" আফিফা তার লিকার লকার থেকে মার্কিন হুইস্কি ও দু'টো গ্লাস বের করল, "নেবে?" আমার সম্মতি পেয়ে সে দুই গ্লাসে ঢালল। ব্যাপারটা মজার, সামান্য মদও ভূ-রাজনীতির পার্থক্যের মানদণ্ড হতে পারে। একসময় উপমহাদেশের অভিজাতদের ব্যাক্তিগত সরাবখানা ছিল আইরিশ হুইস্কিতে পূর্ণ, আজ সেই বাজার মার্কিনীরা দখল করেছে। বরফ দেয়া গ্লাসটা আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে আফিফা বিষাদগ্রস্তভাবে হেসে বলল, "আমি এসব বলছি জানলে জেনারেলরা কি করবে জানো?"

"কি করবে?"

"এখন যা করে তাই, শুধু তাতে স্ফূর্তির ব্যাপারটা থাকবে না। আমার র‍্যাংকও জেনারেল থেকে সিপাহীতে নেমে আসবে।"

"তাহলে বলছ কেন?"

আফিফা তার গ্লাসে চুমুক দিয়ে বলল, "ওই যে তুমি বললে ভবিষ্যতের সঞ্চয়। কয়েক দিন পর সিন্ধ্রি আমের ছোবড়ার মত ছুড়ে ফেলে দিবে। তাছাড়া পয়সার জন্য নিজের শরীরের সাথে যে গাদ্দারি করেছে পরের ক্ষেত্রে সে ফারাক করবে কোন দুঃখে ? অপারেশন ব্লিটজ হল আওয়ামী লীগের নির্বাচিত নেতাদের রাষ্ট্রদোহীতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করার পরিকল্পনা। প্রথমে ছোট-খাট নেতাদের ধরবে, তারপর তাজউদ্দীন না কি যেন নাম সেই লোককে। এই লোকের উপর সবার কেন জানি খুব রাগ। শেখকে কোণঠাসা করে একদম শেষে ধরবে। আগে ছোট পাখিদের তারপর বড় পাখিকে।"

আরো দুইটা নোট রেখে বললাম, "তারপর?"

প্রিন্সেস আফিফা দম নিয়ে বলল, "ভুট্টো সাহেব প্রধানমন্ত্রীর পদে বসবেন, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া প্রেসিডেন্ট থেকে যাবেন।"

"কবে করবে সেটা?"

"তা আমি জানি না, কিন্তু জেনারেল হামিদ বলেছেন দাবার প্রথম চাল দেয়া হয়ে গেছে। হাতি, ঘোড়া, নৌকা আর মন্ত্রীর পতন এখন নাকি শুধু সময়ের ব্যাপার, রাজাকে শীঘ্রই ঘিরে ফেলা হবে।"

"বোড়েগুলো কি তাহলে শুধু আঙ্গুল চুষবে?"

"বুঝলাম না…"

"কিছু না, জেনারেল হামিদ কি তোমাদের লীলাখেলায় অংশগ্রহণ করে?"

"তার স্বাস্থ্যের অবস্থা ভাল নয়, তিনি আসেন আমরা চলে আসার আগ দিয়ে…"

"আর কিছু জানাতে পারবে?"

"সাম্প্রতিক যদি বল তাহলে এই, নতুন কিছু জানি না। তবে এতটুকু জানি যে পূর্ব পাকিস্তানকে কেন্দ্রে শাসন করতে দেয়া হবে না।"

"সেটাই কি স্বাভাবিক না?" আফিফার হাতে একতাড়া নোট ধরিয়ে কোটটা পরলাম। আফিফা সেগুলো গুণে বলল, "সাংবাদিকের কাছে এত টাকা থাকে জানতাম না।"

"আমি ঠেকায় পড়ে সাংবাদিক, তোমার সাথে আমার অনেক মিল আছে। টাকার সাথে আমাদের সম্পর্কটা অবিচ্ছেদ্য ও কলুষিত।"

"চলে যাচ্ছ?"

"হ্যাঁ।"

"কিন্তু সেবা তো নিলে না?"

"লোভনীয় প্রস্তাব, কিন্তু আমার যা দরকার ছিল পেয়েছি, মাত্রাতিরিক্ত লোভ করার কি দরকার?"

"মাত্রাতিরিক্ত কেন হবে? পাওনাটাই নিয়ে যাও…"

"পাওনাটা যদি আরো উদ্ভট হয়?"

"সেটা আমি বুঝে নিব।"

"নাহ, থাক। ফুল মাটিতে পড়ে থাকলেও তা মাড়ানোর প্রয়োজন কি?" বলে বের হয়ে আসলাম। বাইরে এসে সিগারেট ধরালাম। ইসলামাবাদ তার ধ্বংসের পথে পা বাড়িয়েছে। একটা সময় ছিল যখন সীমা অতিক্রমকারীকে ঈশ্বর সাবধানবানী পাঠাতেন বা আসন্ন বিনাশের ইঙ্গিত দিতেন, যেমনটা ব্যাবিলনের বালসাজারকে দেয়া হয়েছিল- "মেনে মেনে টেকেল উপহারসিন"। বর্তমানে ঈশ্বর মানিবজাতির কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে মানবজাতির পতন প্রাকৃতিক নিয়মে ঘটে। কোন সংকেত বা ইঙ্গিত ছাড়াই পতনটা হয় আকস্মিক কিন্তু অবধারিত।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:১০

রাজীব নুর বলেছেন: ঈশ্বর দুনিয়া সৃষ্টি করেছেন, তাহলে তিনি কেন দুনিয়া থেকে চোখ ফিরিয়ে নিবেন??

২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৫২

নেওয়াজ আলি বলেছেন: অনন্য লিখনী। শুভেচ্ছা সতত।

৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৪১

নীল আকাশ বলেছেন: অনবদ্য লেখনি। মুগ্ধ হয়ে পড়লাম। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে দারুন ভাবে লিখেছেন।
এটা কী কোন সিরিজ লেখার অংশ? আমি তাহলে এর বাকি লেখাগুলিও এক এক করে পড়ে যেতে চাই।
পোস্টে লাইকড। অভিনন্দন রইলো।

৪| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৩৩

জাতিস্মরের জীবনপঞ্জী বলেছেন: ধন্যবাদ। প্রথমে ভেবেছিলাম এক্সপেরিমেন্টটা ব্যর্থ হয়েছে। আপনাদের মন্তব্য দেখে আশার আলো দেখলাম। মুক্তিযুদ্ধের ওপর ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে Episodic Series লেখার চেষ্টা করছি। এখনো ছাড়াছাড়িভাবে লিখছি। তাও chronology টা এখানে উল্লেখ করছি

১ম গল্পঃ ব্যাবিলনের বারবণিতা
২য় গল্পঃ আইডস অফ মার্চ
৩য় গল্পঃ এখনো শুরু করিনি
৪র্থ গল্পঃ রক্ত কথা বলে (এটা প্রথমে লিখেছিলাম, মাথার চেয়ে আবেগের প্রয়োগ বেশি। এডিটিং এর প্রয়োজন আছে। এটা মাসখানেক পরে পড়লে ভাল হয়)
৫ম গল্পঃ ভাবা শুরু করেছি, ইনশাআল্লাহ দেড়-দুই মাসের মধ্যে শেষ হবে

আশা করছি সাথে থাকবেন, ভুল-ত্রুটি চোখে পড়লে দয়া করে মন্তব্য করতে দ্বিধা করবেন না।

৫| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৩৫

জাতিস্মরের জীবনপঞ্জী বলেছেন: "ঈশ্বর মানিবজাতির কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন"- এটা একটা Existential Question. নিৎসে পড়লে উত্তরটা পাবেন "God is Dead"

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.