নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মহা-বিদ্রোহী রণ ক্লান্তআমি সেই দিন হব শান্ত,যবে উত্পীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না –অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না

রাজেল

প্রগতিশীল বিজ্ঞানমনস্ক এবং মুক্তচিন্তার অধিকারী

রাজেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আরেকজনের ধর্ম নিয়ে টান মারার অধিকার আপনারে কে দিসে?

২২ শে জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪৬

বাংলাদেশের ম্যাক্সিমাম মানুষ ইসলামকে একটা জিনিসের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে ফেলে।
সেইটা হলো, পর্দা বা বোরকা বা হিজাব।
অথচ, পর্দা বা হিজাব হলো ধর্মের একটা পার্ট। পুরো ধর্ম না। যেমন নামাজ একটা পার্ট, রোজা একটা পার্ট, ঘুষ না খাওয়া একটা পার্ট, মিথ্যা না বলা একটা পার্ট, এমন।
এখন, এদিক থেকে দেখতে গেলে, আমাদের কেউই আসলে পুরোপুরি ধার্মিক না, পুরোপুরি ধার্মিক হওয়াটা আসলে সম্ভবও না।
যেমন আমি নামাজ পড়ি, আবার মুভি দেখি, গান শুনি। আপনি হয়তো গান শোনেন না, বাট মাস্টারবেট করেন। আরেকজন হয়তো সব ঠিক আছে, বাট মিথ্যা কথা বলেন। কেউ আবার মানুষ হিসেবে খুব ভালো, বাট নামাজটা তার মিস হয়ে যায়।
কাজেই, আমাদের কেউই আসলে পুরোপুরি ধার্মিক না। আমি না, আপনিও না।
বাট বাকি সব কিছু ছেড়ে দিয়ে শুধু পর্দা টেনে ধার্মিকতার যে আলাপ, এই আলাপ নিতান্তই ক্লিশে একটা আলাপ। আমি জিন্স-টিশার্ট পরা বহু মেয়েকে দেখেছি, এরা নামাজ পড়ে, রোজা রাখে। আমার পরিচিত এক ড্যাশিং, ওড়না না পরা ম্যাডামের চেম্বারে গিয়ে একদিন তারে নামাজ পড়তে দেখেছিলাম। টেবিলে ছিলো খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর এর ইসলামী আক্বীদা বইটাও।
আবার, এক বোরকা পরা মেয়েরেও চিনি, যে বিবাহিত অবস্থায় ক্যাম্পাসে এসে বয়ফ্রেন্ড এর লগে বান্দরবান যায়। এমনকি একজন হাত মোজা পা মোজা পরা লেসবিয়ানের কথাও আমি জানি।
কাজেই, পর্দা করা বা না করা দিয়ে কোন মানুষকে জাজ করা যায় না, এমনকি ধর্ম পর্যন্ত জাজ করা যায় না।
এখন নবিজীর বিভিন্ন হাদিস টেনে বলতে পারেন, নবিজী তো বলেছেন, পর্দা না করলে কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
ট্রু। এমন হাদিস আছে। বাট এমন হাদিস কমবেশি সব বিষয়েই আছে। যেমন নবিজী বলসেন, মিথ্যাবাদী আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত না। এই হিসেবে ধরতে গেলে আপনি মিথ্যা বলার সাথে সাথেই মুসলিমের লিস্ট থেকে কাটা পড়সেন।
আরেকজায়গায় আছে, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। আত্মীয়তার সম্পর্ক আমাদের কার ছিন্ন হয় না? তাইলে ঐ হিসাবে আমাদের সবাইরে কি জাহান্নামী বলে দেওয়া যাবে? না। যাবে না।
কারণ আরেক হাদিসেই আছে, উহুদ পরিমাণ পাপ আল্লাহ ক্ষমা করেন। আরেক হাদিসে আছে, কোন ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার উপর ঈমাণ আনলেই সেইটা জান্নাতে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট হবে।
এমনকি কুকুরকে পানি খাওনোর বদৌলতে একজন প্রস্টিটিউটকে পর্যন্ত জান্নাতে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে পরহেজগার এক মহিলা জাস্ট বিড়ালকে খাইতে না দেওয়ার কারণে জাহান্নামে যাবেন।
অথচ প্রস্টিটিউট পর্দা করতো না।পরহেজগার মহিলাটা পর্দা করতো।
কাজেই, আপনারা যে সকল ডাইমেনশন বা স্ট্যান্ডার্ড মিলাইয়া মানুষজনের জান্নাত জাহান্নাম হিসাব করেন,ব্যাপারটা অমন না।
অফকোর্স পর্দার পক্ষে আপনি দাওয়াত দিতে পারেন, তাই বলে আসিফ নজরুলের মতো একজন লিবারেল এবং সেক্যুলার মানুষের কমেন্ট বক্সে যাইয়া পর্দা নিয়ে নোংরামি করার কারণটা কী ভাই?
আসিফ নজরুল আইনের শিক্ষক। উনি লিবারেল ডেমোক্রেট এবং সেক্যুলার। উনার ধর্ম পালন আর আপনাদের মাদ্রাসার ধর্ম পালন এক হবে না। তারমানে এই না যে উনি উনার মতো ধর্ম পালন করতে পারবেন না।
উনার ধর্ম উনারে পালন করতে দেন। আপনাদের এই আচরণ এতোটাই খারাপ, এতোটাই বাজে যে বহু মানুষ আপনাদের এই আচরণে ইভেন ধর্মের প্রতি বিতৃষ্ণ হয়ে যায়।
দরকারটা কী? আপনারা কি আলেম? না তো।
ইভেন, আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর এর মুখে আমি নিজে শুনেছি, বাবারা, যুবক বয়সে সিনেমা হলে সিনেমা দেখতে যাবা, যাও। বাট বের হয়ে অবশ্যই আসরের নামাজটা বা মাগরিবের নামাজটা পড়ে এসো। সিনেমা দেখেছ বলে নামাজ মিস দিও না যেন।
আসিফ নজরুলের বৌ বেটি পর্দা করে না বলে তারা হজ্জ করতে পারবে না, বা তাকে পরিপূর্ণ মুসলিম হতে হয়ে হজ্জে যাইতে হবে, এইসব বালের কথা আর কত বছর আপনারা বলবেন?
এই যে ইসলামের মতো এতো ব্রড একটা ধর্মকে ঐ ঐক পর্দার মধ্যে ভরে ফেলতেসেন, এইটা দিয়ে আপনি শুধু নিজেরে ছোট করতেসেন না, বরং ধর্মটারেও মানুষের কাছে থেকে আলাদা করে ফেলতেসেন।
নেক্সট টাইম কাউরে পর্দার জন্য বুলি করার আগে নিজেরে জিগাইয়া নিয়েন, আপনি নিজে কি সমস্ত ধর্ম ঠিকঠাক পালন করেন? যদি না করেন, তাইলে আরেকজনের ধর্ম নিয়ে টান মারার অধিকার আপনারে কে দিসে?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.