নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিঃশব্দ আকাশের উড়ন্ত মেঘের ভেলা

মোঃ রিজওয়ান সরকার

মোঃ রিজওয়ান সরকার › বিস্তারিত পোস্টঃ

নারী স্বাস্থ্য।। লজ্জা নয়, জানুন, বুঝুন, সমাধান করুন।।

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৮:৪৩

'হে নারী তোমার জন্য লোকে বানায় বাড়ী। আরও করে কতকিছু সাথে লক্ষ কোটি টাকার গাড়ী।। তোমার এককথায় রাজি, ধরতেও পারে হাজার বাজি।।।''
এমন সব অনেক লেখায় ফুটে ওঠে যাদের গুনগান আর তারা যদি বিভিন্ন সমস্যায় অন্ধকারে হাতরিয়ে জীবন বিপন্ন করে তবে তা কি ভালো দেখায়।। এমনি নারীদের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরাহয়েছে সিঙ্গাপুরের একটি সম্মেলনে।। আসুন এ সম্মেলনের কিছু কথা জানার চেষ্টা করি।।
একজন নারী তার জীবনের বিভিন্নস্তরে এমন কিছু অস্বস্তিকর সমস্যায় পড়েন, যা নিয়ে কথাই বলতে চান না। লজ্জা পান, বিব্রত বোধ করেন। আবার হয়তো জিইয়ে থাকা এমন কিছু রেগে ভোগেন যা তার জীবনটাকেই দুর্বিষহ করে তোলে।
সম্প্রতি সিঙ্গাপুরের গ্লেনেগেলস হসপিটাল নারীদের এমন কিছু রোগ ও চিকিৎসা নিয়ে আয়োজন করেছিল প্রতিষ্ঠানটির ১৬ তম সম্মেলন। সম্মেলনের আয়োজকেরা বলছিলেন, জীবনের বিভিন্নধাপে নারীরা কি কি শারীরিক সমস্যার মুখে পড়েন সে বিষয়টি এখানে বিবেচনা করা কয়েছে। আর দেখা গেছে এ রোগগুলোতেই যুগে যুগে নারীরা ভুগছেন। এসব রোগের যে সমাধান আছে, না থাকলে অন্তত ভালো থাকার উপায় আছে তা বোঝানোই ছিল সেমিনারটির উদ্দেশ্য।
সেমিনারে প্রধানত ঋতুস্রাব বন্ধের পর নারীরা যেসব রোগে ভোগেন সেগুলো উঠে এসেছিল। এ রোগগুলোর মধ্যে আছে নারীদের হাড় ক্ষয়ে যাওয়া,মুখে মেছতা সহ নানা রকম দাগ হওয়া, হৃদরোগ, হজমে সমস্যা, বিষণ্ণতা ও স্তন ক্যানসার।
কিন্তু সবচেয়ে ভীতিকর তথ্য দিয়েছেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ জেরেমি চোও ও স্ত্রী -ক্যানসার বিশেষজ্ঞ বার্থা উন। জেরেমি বলেন, অল্পবয়সী ও সুঠামদেহের অধিকারী নারীরা হৃদরোগে আক্রান্ত হন না বলে একটা প্রচার আছে। এটা একদম ভিত্তিহীন। ১৯৮৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত পুরুষের তুলনায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নারীদের মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৩১ জনে একজন স্তনক্যানসারে ভুগলেও হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তিনজনে একজন। সারা বিশ্বে কমপক্ষে ৯০ শতাংশ নারীর হৃদরোগ হতে পারে এমন কারনগুলোর একটি বা অন্যটির ঝুকিতে অাছেন।
অন্যদিকে বার্থাউন বলেছেন, খুব দ্রুত স্তনক্যানসার সিঙ্গাপুরে নির্ণয় করা হলেও গোটা বিশ্বের চিত্র আলাদা। সবচেয়ে ভীতিকর ব্যাপার হচ্ছে, সবরকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরও অল্পবয়সী নারীরা স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। তার কাছে আসা রোগীদের তালিকায় ১৭ বছরের মেয়েও আছে।
সেমিনারের একপর্যায়ে সম্মেলন পরিচালনা কমিটির অন্যতম ও ইউরোগাইনোকোলজি বিভাগের চিকিৎসক ক্রিষ্টোফার চং বলেন, শ্রীলঙ্কার ডাকসাইটে এক মন্ত্রীর স্ত্রী তার কাছে চিকিৎস্যা করাতে এসেছিলেন। বেশ কিছু শারীরিক জটিলতা ছিল তার। কিন্তু একটা বিষয় বারবারই চেপে যাচ্ছিলেন। তার হাঁচি- কাশির সঙ্গে প্রসাব ঝরত। তিনি জানান উন্নয়নশীল দেশগুলোয় যে নারীরা অনেক সন্তানের জন্ম দেন তাঁদের অনেকেই জীবনভর মুখ বুঁজে এই সমস্যা সয়ে যান।
সেমিনারে চং জানান, ১০ মিনিটের ছোট্র একটা অস্ত্রোপচার এই রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে। তিনি অস্ত্রোপচার এর একটি ভিডিও দেখান। যোনিপথের দুপাশে ছোট্র দুটি ছিদ্র করে জরায়ু ও মূত্রথলির কাছে একটি পাতলা ফিতার মতো জাল ঢুকিয়ে এই বিরক্তিকর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তিনি বলেন কখনো সন্তান হয়নি, কিন্তু ভারি কাজ করতে হয়, এমন নারীরাও ভুগতে পারেন এই সমস্যায়।।
গ্লেনেগেলস হসপিটালের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ কেলভিন ফ্লোনস বিস্ময়কর যে তথ্যটিজানান তা হলো, উন্নয়নশীলদেশগুলোয় নারীরা যেসব রোগে ভুগছেন তার মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বিষণ্ণতা। নারীরা প্রতি মাসে ঋতুস্রাবের আগে, গর্ভকালীন সময়ে, সন্তান জন্ম দেওয়ার পর,ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে, ও মেনোপজের সময়ে বিষন্নতায় ভোগেন।
সাইকোথেরাপি বা ওষুধে রোগটি ভালো হয়।

ফ্লোনস বলেন, বিষন্নতায় ভোগা নারীদের এক বা একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক নারীই জানেন না বিষন্নতায় ভোগার কারনে তাদের নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সাইকোথেরাপি ও সামান্য কিছু ওষুধেইরোগটি সারতে পারে। অনেক নারীই ত্বকের সৌন্দর্য নিয়ে অস্বস্থিকর অবস্থায় পড়েন। বয়স বাড়ার সাথে সাথে ত্বক ঔজ্জল্য হারায়, মেছতা বা কালো দাগ পড়ে। গ্লেনেগেলস হসপিটালের চিকিৎসক চ্যান ইয়ন শেষে জানিয়েছেন, ত্বক ফরসা করার ক্রিম বা অ্যান্টি এজিং ক্রিম কতটি কার্যকর তা নিয়ে বিতর্ক আছে। অনেক সময় ত্বক ফরসা করার ক্রিম ব্যবহারে উপকারের চেয়ে অপকার হয় বেশি। তিনি নারীদের রোদ এরিয়ে চলা, ভালো কোন সানস্ক্রিন নির্দিষ্ট পরিমানে ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন। রোগ জটিল হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সেমিনারে উত্থাপিত প্রায় সব রোগেরই চিকিৎসা থাকলেও, হাড় ক্ষয়ে যাওয়া বা অষ্টিওপোরেসিস রোগ পুরোপুরি সারার এখনো কোনো উপায় আবিস্কৃত হয়নি বলে জানান চিকিৎসকেরা। এ রোগে হুটহাট যেমন নারী আছাড় খেয়ে পড়তে পারে, হারগোড় ভেঙ্গে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। একই হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জন রোল্যান্ড চং বলেন, চিকিৎসকের দেখিয়ে দেওয়া কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করলে, আর হাড় ক্ষয়রোধী ওষুধ খেলে রোগটি নিয়ন্ত্রনে থাকে। এতে করে অন্তত হুটহাট পড়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।। ৩৫ বছর বয়সের পর থেকেই নারীদের এ বিষিয়ে মনোযোগী হওয়া দরকার বলে তিনি উল্লেখ করেন।

চিকিৎসকেরা নারীদের স্বাস্থের প্রতি মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য
দেন গ্লেনেগেলস হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী ভিনসেন্ট চিয়া।। উপস্থিত ছিলেন সিঙ্গাপুর সহ বিভিন্ন দেশের চিকিৎসকসহ সাংবাদিকেরা।

আশা করি সম্মেলনের এই দিকনির্দেশনা মূলক কথাগুলি কাজে লাগবে।।

সচেতন হোন, জানুন, সমস্যার সমাধান করুন।। অন্ধকারে নিজেকে না লুকিয়ে আসুন সুন্দর এই পৃথিবীর শুদ্ধ বাতাসে দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে সূর্যের আলোয় জীবনকে আলোকিত করি।।

সম্মেলনের তথ্যসূত্রঃ ওয়েব ও প্রথমআলো পত্রিকা।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:২১

ভাচুয়াল ফন্ট বলেছেন: ভালো শেয়ার করেছেন ।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:১২

মোঃ রিজওয়ান সরকার বলেছেন: ধন্যবাদ...

২| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৩

ধমনী বলেছেন: অন্ধতা বা উগ্রতা নয়, চাই সচেতনতা। ভালো পোস্ট।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:১২

মোঃ রিজওয়ান সরকার বলেছেন: ধন্যবাদ...

৩| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:২০

সুমন কর বলেছেন: চমৎকার শেয়ার। +।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:১৩

মোঃ রিজওয়ান সরকার বলেছেন: ধন্যবাদ...

৪| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০০

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: নারীর লজ্জার চাইতে আজ সচেতনতা প্রয়োজন।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:১৪

মোঃ রিজওয়ান সরকার বলেছেন: হুম চাই সচেতনতা....ধন্যবাদ...

৫| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:২৬

মোঃ রিজওয়ান সরকার বলেছেন: ধন্যবাদ সবাইকে।।
পোষ্টটি গুরুত্বসহকারে পড়ার
জন্য।।। ছড়িয়ে দিন আলো সবার
মাঝে।।

৬| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:০৩

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: চমৎকার তথ্যবহুল একটি পোষ্ট।ধন্যবাদ।




ভালো থাকবেন নিরন্তর।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:১৫

মোঃ রিজওয়ান সরকার বলেছেন: ধন্যবাদ...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.