নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আ‌মি চির-‌বি‌দ্রোহী বীর- বিশ্ব ছাড়া‌য়ে উ‌ঠিয়া‌ছি একা চির উন্নত-‌শির।

‌মোঃ অাশরাফুল ইসলাম শাওন

আমি চির-‌বি‌দ্রোহী বীর- ‌বিশ্ব ছাড়া‌য়ে উ‌ঠিয়া‌ছি একা চির উন্নত-‌শিরফফফঘহজমি চির-‌বি‌দ্রোহী বীর- ‌বিশ্ব ছাড়া‌য়ে উ‌ঠিয়া‌ছি একা চির উন্নত-‌শির

‌মোঃ অাশরাফুল ইসলাম শাওন › বিস্তারিত পোস্টঃ

“স্বার্থবাদী চক্র”

২৮ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২০

"স্বার্থবাদী চক্র"- শব্দটা এক‌দিন অামার একজন ‌শিক্ষ‌কের মু‌খে শু‌নে‌ছিলাম। তার দীর্ঘ বক্ত‌ব্যের ম‌ধ্যে এই শব্দ‌টি শুনে অা‌মি সা‌থে সা‌থেই থম‌কে যাই, ভাব‌তে শুরু ক‌রি। কেন জা‌নিনা শব্দটা অামা‌কে ভা‌বি‌য়ে তু‌লে‌ছিল। বেশ কিছু‌দিন যাবৎ বিভিন্ন চ‌ক্রের মু‌খোমু‌খি হ‌চ্ছি; কিন্তু এসব চক্র‌কে ঠিক কী না‌মে ডাকা যায় তা খুঁ‌জে বের কর‌তে চাই‌ছিলাম। স্যা‌রের মু‌খে "স্বার্থবাদী চ‌ক্র" শব্দ‌টি শুনে ‌বেশ ন‌ড়েচ‌ড়ে ব‌সি। ভাব‌তে শুরু ক‌রি তখনই। অাসুন শুরু‌তেই এই চক্রের সা‌থে প‌রি‌চিত হই।

রাস্তায় চল‌তে, বি‌ভিন্ন প‌রিবহ‌নে, দোকানপা‌টে, বা‌ণি‌জ্যিক প্র‌তিষ্ঠা‌নে, শিক্ষা প্র‌তিষ্ঠা‌নে, এমন‌কি ধর্মীয় উপাসনাল‌য়েও এসব স্বার্থবাদী চ‌ক্র‌দের নানারূ‌পে দেখা যায়। এ‌দের কেউ কেউ অ‌নেক বড় চ‌ক্রের সদস্য হ‌য়ে, অাবার কেউ বি‌শেষ উ‌দ্দেশ্য হা‌সি‌লের জন্য, অাবার অ‌নে‌কে জী‌বিকার তা‌গি‌দেও এসব চ‌ক্রের হ‌য়ে কাজ কর‌ছে।


এরা দেখ‌তে সাধারনত বেশ ভা‌লো মানু‌ষের ম‌তো হয়। এ‌দের অ‌নে‌কে স্পষ্টভাষীও হয়। এরা এ‌দের কথা দ্বারা সাধারন মানু‌ষের ম‌স্তি‌ষ্কের বিকৃ‌তি ক‌রে দি‌য়ে অসাধারন মানু‌ষে রূপান্ত‌রিত কর‌তে পা‌রে। এরা সাধারনতই খুব ঠান্ডা মেজা‌জের হয়। এরা জা‌নে "‌রে‌গে গে‌লেন তো হে‌রে গে‌লেন"। অাবার অ‌নে‌কে রে‌গে গি‌য়ে অ‌নেক চিন্তা-বু‌দ্ধির দ্বারা তা‌দের প্র‌তি‌টি পদ‌ক্ষেপ নির্ধারণ ক‌রে। এরা স্বভাবতই নির্লজ্জ স্বভাবের হ‌য়ে থা‌কে। কারণ, প্রায়ই তা‌দের কা‌জের জন্য তা‌দের‌কে লজ্জা দেওয়া হয়। কিন্তু, ল‌জ্জিত না হ‌য়েও নির্ল‌জ্জের ম‌তো নি‌জের কা‌জে অটুট থাক‌তে তারা বদ্ধ প‌রিকর।

এই চ‌ক্রের শিকা‌রের একটা বড় অংশজু‌ড়ে থা‌কে কি‌শোর-‌কি‌শোরী/তরুণ-তরুণীরা।

ধরুন, অাপ‌নি একজন তরুণ। অ‌নেক ক‌ষ্টে নতুন এক‌টি চাক‌রি পে‌য়ে‌ছেন। অাপনার বস অাপনাকে খুবই স্নেহ ক‌রেন। অাপনা‌কে তি‌নি এক‌টি তার অ‌ফিসরু‌মে নি‌য়ে প্রায় অাধঘন্টা অাদর-অাপ্যায়ন কর‌লেন; অাপনার ব্য‌ক্তিগত খোঁজখবর নি‌লেন। সর্ব‌শে‌ষে যখন অাপ‌নি তার অ‌ফিসরুম ত্যাগ কর‌বেন, এমন সময় তি‌নি অাপনা‌কে অ‌তি উৎসা‌হের সা‌থে এক‌টি লোভনীয় অফার কর‌লো। তি‌নি বল‌লেন, তি‌নি বেশ ক‌য়েকবছর যাবৎ এক‌টি সংস্থার সা‌থে অা‌ছেন। অাপনা‌কে সেই সংস্থার সদস্য হ‌তে বলা হ‌লো। বলা হ‌লো সদস্য হ‌লে প্র‌তিমা‌সে হাজার হাজার টাকা পা‌বেন এবং বছরখা‌নে‌কের ম‌ধ্যে গাড়ী-বা‌ড়িও পা‌বেন। অাপনা‌কে প্রথমে শুধু কষ্ট ক‌রে ৮ হাজার টাকা দি‌য়ে সদস্য হ‌তে হ‌বে। ব্যাস, তাহ‌লেই অাপ‌নি ধীরে ধী‌রে কো‌টিপ‌তি হ‌য়ে যা‌বেন। কী দারুন তাই নাহ?


এমন ব্যবসা বাংলা‌দে‌শে নতুন নয়। হয়‌তো এমন লোভনীয় প্রস্তাব শু‌নে অাপনার-অামার ম‌তো ম‌তো অ‌নেকেই "‌ডেস‌টি‌নি ২০০০ লি‌মি‌টেড"-এর ম‌তো অ‌নেক সংস্থার প‌রিণ‌তি সম্প‌র্কে ভাব‌বে। কিন্ত, ভে‌বে তো উপায় নেই! এমন ক্ষে‌ত্রে সরাস‌রি "না" করাও যায় না।

স্বার্থবাদী চক্ররা মানু‌ষের এ "না" বল‌তে না পারার দূর্বলতা‌কেই কা‌জে লাগায়। তারা এমন এক‌টি বয়‌সকে উ‌দ্দেশ্য ক‌রে কাজ চালায়, যারা "না" বলায় অভ্যস্ত নয়। তাছাড়া এ চক্র‌টি তরুণদের এমন কো‌নো‌কিছুর মাধ্য‌মে তা‌দের থে‌কে "হ্যাঁ" শব্দ‌টি শু‌নে যা সেই তরুণ‌দের কা‌ছে খুবই অাকর্ষনীয় বা লোভনীয়। তরুণরা যা খে‌তে চায়, স্বার্থবাদী চক্রটা তরুণ‌দের ঠিক সে‌টিই খাই‌য়ে দি‌য়ে তরুণ‌দের খুব অাপন হ‌য়ে অা‌সে। তারপর-"অাপন লোক‌রে বিশ্বাস কর‌লে যা হয় অারকি!"


‌ভে‌বে দেখুন, অাজ য‌দি কো‌নো শিক্ষক তার ছাত্র‌দের গোপ‌নে অাপ্যায়ন করা‌নোর পর সামান্য কিছু টাকা দা‌বি ক‌রেন এবং বি‌নিম‌য়ে তার প‌রের দি‌নের পরীক্ষার প্রশ্ন দেবার ম‌তো লোভ দেখায়, তাহ‌লে অা‌মি বোধ ক‌রি বে‌শিরভাগ ছাত্ররাই সে শিক্ষ‌কের লো‌ভের অাগু‌নে হাত দি‌বে।

অ‌বিশ্বাস্য ম‌নে হ‌চ্ছে? এমন শিক্ষক অহরহ অা‌ছে। সে তার স্বার্থ হা‌সি‌লের জন্য সব কর‌তে পা‌রে। সেসব শিক্ষকেরা ভা‌বেন, তি‌নি একজন রাজা, তার কা‌ছে অা‌ছে "প্রশ্ন" নামক অমূল্য সম্পদ। শুধু প্রজারা তার পা‌য়ে অর্থ বিসর্জন দি‌য়ে এ প্রসাদ গ্রহন কর‌বে। এমন শিক্ষকদের জন্য প্রকৃত শিক্ষকরা অাজ নি‌জে‌দের "‌শিক্ষক" প‌রিচয় দি‌তেও লজ্জা‌বোধ ক‌রেন।

ত‌বে, এমন কাজ যারা ক‌রেন, তারা তো শিক্ষক নন। শিক্ষক নামধারী এক‌টি মহল, যারা দে‌শের মেধা‌কে বিক‌শিত করবার দা‌য়িত্ব নি‌য়ে দেশ‌কে পঙ্গু করে দি‌চ্ছে।
না, শুধু এই পন্থায় নয়; এ চক্র‌টি বি‌ভিন্ন পন্থাূ তা‌দের স্বার্থ হা‌সিল ক‌রে নি‌চ্ছে। চক্র‌টি নি‌জে‌দের স্বার্থ হা‌সি‌লের পাশাপা‌শি সে যার সা‌থে প্রতারনা করে, তার মগজ ধোলাই ক‌রে তা‌কে অাজীব‌নের জন্য প্র‌তিবন্ধী বা‌নি‌য়ে ছে‌ড়ে দেয়। ত‌বে একটা সময় হয়‌তো সে তার প্র‌তিবন্ধকতা বুঝ‌তে পা‌রে, তখন অার তার শেষরক্ষা হয় না।

এই প্রতারক চক্র অামাকে, অাপনাকে এবং স‌র্বোপ‌রি অামা‌দের দেশ‌কে অন্ধকা‌রে ছুঁড়ে দি‌চ্ছে। হয়‌তো অামরা অ‌নে‌কেই জা‌নি এসব প্রতারক চক্র সম্প‌র্কে। প্র‌তি‌নিয়তই অামরা এ‌দের থে‌কে দূ‌রে থাক‌তে এবং ভা‌লো মানুষ‌দের সা‌থে সঙ্গ দি‌তে চেষ্টা ক‌রি। কিন্তু, সমা‌জে এই প্রতারক চ‌ক্রের বাই‌রের 'ভা‌লো মানুষ' অাস‌লে কারা? অাপনার অামার বন্ধু? ভাই? চাচা? মামা? শিক্ষক? এ‌দের‌কেই তো অামরা সাধারনত বিশ্বাস ক‌রি! কিন্তু, এসব ব্য‌ক্তি‌দের মাধ্য‌মেই য‌দি অাপ‌নি লোভনীয় প্রস্তাবের মু‌খোমু‌খি হন, তাহ‌লে ‌তো "না" শব্দটাই মুখ দি‌য়ে অাস‌বেই না।

সামাজিকভা‌বেও অামরা এক‌টি সীমাবদ্ধতায় অা‌ছি। কি‌শোর বয়সী সকল‌কে অবশ্যই বড়‌দের সাম‌নে "হ্যাঁ, হ্যাঁ" কর‌তে হয়; নতুবা সে বেয়াদব, পারিবা‌রিকভা‌বে কিছুই শে‌খে‌নি।


স্বার্থবাদী চক্র‌দের অাবার বেশ ক্ষমতাও র‌য়ে‌ছে। তারা ক্ষমতাধর কা‌রো সা‌ন্নি‌ধ্যে থা‌কে। অার, নি‌জের কা‌ছে ক্ষমতা থাক‌লে যে‌কো‌নো ভা‌লো/ম‌ন্দের সা‌র্টি‌ফি‌কেট নি‌জেই নি‌জে‌কে দেওয়া যায়।

‌দেশ এ‌গি‌য়ে যা‌চ্ছে। প্রায় সব‌দি‌কেই এ‌গি‌য়ে যা‌চ্ছে। উন্নয়ন হ‌চ্ছে, মাথা‌পিছু অায় বাড়‌ছে, খুন বাড়‌ছে, প্র‌তি‌নিয়তই ধর্ষ‌নের সংখ্যা বাড়‌ছে, ক্ষমতার দাপ‌টে চাঁদাবাজীও বাড়‌ছে। বাড়বেই বা না কেন? স্বার্থবাদী চক্র পুরো দেশকে জুস বানিয়ে খাচ্ছে। অপরদিকে, সাধারন মানুষেরা নর্দমার ময়লা খেয়ে বেঁচে আছে। নর্দমার ময়লা খেয়ে তো রাস্তার কুকুরও বেঁচে থাকে, তাই বলে কি সেটাকেও বেঁচে থাকা বলা যায়?

যখনই এদেশের সার্টিফিকেটধারী শিক্ষিতের সংখ্যা বাড়ছে, পাশাপাশি বেকারত্ব সমস্যাও বেড়ে চলেছে, ঠিক তখনই একটি চক্র এ সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের করতে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তবে তারা অসাধারন পন্থায় এ সমস্যা থেকে জাতিকে বের করবার চেষ্টা করছে। শিক্ষাখাতের দিকে দৃষ্টি দিয়ে তারা বুঝতে পারলো এ খাত থেকেই তারা তাদের স্বার্থ হাসিল করতে পারবে।

শুরু হয়ে গেল তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম। তারা ছাত্রদের পরিচর্যার নাম করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। তাদের সূত্র খুবই সহজ, “টাকা দিবে>বড় হবে>মানুষ হয়ে যাবে>টাকা আসবে”। বর্তমানে শিক্ষকদের অনেকেই তাই এ সূত্র প্রয়োগ করে ছাত্রদের থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তারা ছাত্রদের ‘মানুষ’ করবার নাম করে তৈরি করছে বুদ্ধিহীন, মেধাহীন, চেতনাবোধহীন জড় পদার্ধ। হোক দেশ মেধাশূন্য! তাতে তাদের কী আসে যায়? সে তো নিজের রাজ্যকে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতেই এমন পরিশ্রম করে যাচ্ছে!

এসব শিক্ষক নামধারী দূর্নীতিবাজ চক্রগুলো স্কুল কলেজেই তাদের ব্যবসাকে সীমাবদ্ধ রাখছে না। তারা কলেজ পর্যায়েই মেধাহীনদের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন দেখিয়ে নিচ্ছে। স্বপ্ন দেখা বা স্বপ্ন দেখানোর মধ্যে দোষের কিছু নেই। কিন্তু, এসব শিক্ষকরা ছাত্রদের উৎসাহিত করছে মেধার বিকাশের মাধ্যমে নয়। আর্থিকভাবে পরিশ্রম করে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে উৎসাহিত করে চলেছে এরা। এদের ভাষ্যমতে টাকা-ই একমাত্র স্বপ্ন পূরণের হাতিয়ার। সেসব শিক্ষকরা এ কাজটি করে থাকেন নাকি তাদের ক্ষমতার বলে! বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষকরা, প্রশ্নকর্তারা নাকি সেসব শিক্ষকের চাচা, মামা, খালু, ক্লাসমেট, রুমমেট এমনকি বাপও লাগে! লাগতেই পারে। তারমানে এই নয় যে এই ক্ষমতাবলে তিনি তার ছাত্রকে টাকার বিনিময়ে তার স্বপ্ন পূরণ করিয়ে দিতে পারবেন।

সর্বোপরি বলতে চাই, “স্বপ্নকে যারা টাকা দিয়ে কিনতে চায় তাদের স্বপ্ন কখনোই পূরণ হতে পারেনা।"

নিজের স্বপ্নকে কষ্ট করে অর্জন করুন, তা না পারলে থেমে যান। তবুও নিজের স্বপ্নকে টাকা দিয়ে কিনে অন্যের স্বপ্নকে নষ্ট করবেন না।
.
[মনের মধ্যে জমে থাকা কথাগুলো এমন অগোছালোভাবে বলার জন্য দুঃখিত]
.
২৮/০৩/২০১৮
#ThePutiFish. #TheRJShaoN. :)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৪

নাঈম মুছা বলেছেন: অগোছালো নয়। খুবই গোছালো ভাবে স্টেপ বাই স্টেপ আলোচনা করেছেন। পুরো পোস্টটা অামার কাছে বেশ সাজালো ও গোছালো মনে হয়েছে। ভালো লিখেছেন। আপনার লেখার হাত আরও প্রশস্ত হোক সেই কামনা করি।

২| ২৮ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:৪৬

‌মোঃ অাশরাফুল ইসলাম শাওন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ : )

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.