নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবনকে সাজাতে চাই সুন্দর বাগিচায়... তাই করি যা মনে চায়... live it love it ENJOY it!!
জুপিটার গ্রহের চতুর্থতম বড় উপগ্রহ ইউরোপা। এর আরেকটি বৈশিষ্ট্যও লক্ষ করার মত। সোলার সিস্টেমে পৃথিবীর পরে যেকোন গ্রহ উপগ্রহের চেয়ে সবচেয়ে বেশি পানির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে এই উপগ্রহটাতে। আর এখন উৎকর্ষতার এই শীর্ষে এসে মানবজাতি ইন্টারস্টেলার অভিযাত্রার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছে ইউরোপা। সব বড় বড় বেস স্টেশনগুলো এখানেই অপেক্ষা করছে শত শত মহাকাশযানের সোলার সিস্টেমের আসা যাওয়ার জন্যে। সাতটা বিশালাকার বেস স্টেশন নিয়ে সেভেন সিস্টারস নামের একটা কন্সটেলেশন গঠন করা হয়েছে এখানে। প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষের এখানেই বসবাস। পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা করা হয় ইউরোপা থেকে। প্রতিদিন শত শত এসেন্ডিং শীপ ইউরোপার নিরিগিস স্টেশনে নামে। নিরিগিস স্টেশন ইউরোপার বিখ্যাত ওয়াটার রিফিলিং সিস্টেমের একটি। এখানে হাজার হাজার বরফের আস্তরণ কেটে জমা করে রাখা হয়। সেই বরফ বিশুদ্ধ করে তরল আকারে কন্টেইনারে ভরে এসেন্ডিং শীপগুলোতে লোড করা হয়। এই পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে উপরের সেভেস সিস্টারসের ইকো সিস্টেম বেচে আছে। গাছপালা, ফসল উৎপাদন আর সাধারণ ব্যবহারের জন্যে ইউরোপার বরফে আচ্ছাদিত পৃষ্ঠটাই ব্যবহারের জন্যে বেছে নিয়েছে বিজ্ঞান একাডেমি।
নিরিগিস স্টেশনের সুপ্রিম কমান্ডার কর্নেলিয়াস আহটামাস তার দৈনন্দিন পেট্রোলে বের হয়েছেন। তার হাতের মনোপডটিতে একবার চোখ বুলিয়ে দেখে নিলেন এখন পর্যন্ত সাতাইশটি এসেন্ডিং শীপ ডক করেছে নিরিগিসে। সারা দিনে প্রায় তিনশোটার বেশি এসেন্ডিং শীপ সাধারণত নামে। এর ধারণ ক্ষমতা প্রায় হাজার খানেক এসেন্ডিং শীপের জন্যে হলেও একালে সেভেন সিস্টারসে লোকের পরিমাণ কম থাকে বিধায় পানির প্রয়োজনও অনেক কমে গেছে। হাটতে হাটতে পেট্রোল স্টেশনের সামনে থামলেন তিনি।
দুজন গার্ড তক্ষুণি দাঁড়িয়ে সেলুট করল তাকে। একজন এডমিরাল এগিয়ে এল তার দিকে।
স্যার ডকিং স্টেশন ১৭ তে হাইড্রোলিক জ্যাক জ্যাম হয়ে গেছে। তাই এই ডকটা ক্লেয়ার করে অন্য ডকে স্থানান্তর করার জন্যে অনুমতি চাইছি।
স্ফিত হাসলেন সুপ্রিম কমান্ডার। এসব কাজের জন্যে আমার পারমিশানের প্রয়োজন নেই এডমিরাল। একজন এডমিরালের অথরাইজেশন থাকে একটা ডকের উপর পুরো কন্ট্রোল রাখা। ১৭ নাম্বারে টেকনিশিয়ানদের নিয়ে আসুন। আজকের মাঝে ঠিক করে ফেলা যায় কিনা দেখুন।
সামান্য নড করে এডমিরাল তড়িৎ গতিতে অদৃশ্য হয়ে গেলেন।
নিজের অফিসে ফিরে এলেন সুপ্রিম কমান্ডার। এই কয়েকদিন অনেক খাটুনি গেছে তার উপর দিয়ে। দূরের বন্ধুদের নিয়ে এসেছেন চুপিসারে সব প্রকারের প্রটোকলের আড়ালে রেখে। আনঅথরাইজড একটা মিশন বিজ্ঞান একাডেমির কোয়ান্টাম সার্ভারে প্রবেশ করিয়েছেন সকল লোকচক্ষুর আড়ালে করে। অনেক কষ্ট করে একটা প্ল্যান দাড় করালেন যা বিফলে যেতে দেয়া যাবে না!
তিনি রূমে ঢুকতেই ম্লান আলোয় অফিসটা ভরে উঠল। পেছনের গ্লাস উইন্ডোদিয়ে ইউরোপার ধুসর বিষণ্য প্রান্তরে চোখ পড়ে যায়। মসৃণ ধুসর মাইলের পর মাইল ইউরোপার প্রান্তর। নেই কোন বৈচিত্র, নেই কোন সুন্দর কোমল সূর্যের রোদ। আছে শুধু তুষার শুভ্র বরফ। আর সীমাহীন নিঃসঙ্গতা…
মহামান্য সুপ্রিম কমান্ডার, আপনার জন্যে একটি গ্রাফিক-মেসেজ এসেছে। চেয়ারে বসতেই তার পার্সোনাল কম্পিউটার যান্ত্রিক স্বরে বলে উঠল।
কে পাঠিয়েছে? আনমনে হয়ে আছেন তিনি, মাথায় অনেক কিছু একসাথে খেলা করছে তার।
বিজ্ঞান একাডেমির ভাইসরয় ভ্লাদিমির সিরোভ মহামান্য।
সোজা হয়ে বসলেন তিনি। যাক এটা তাহলে হবারই ছিল। একসময় না একসময় তারা জানতেই পারত। আরো আগে যে জানে নি এটাই ভাগ্য!
এখন তাদের জন্যে অনেক দেরি হয়ে গেছে।
মেসেজটা পাঠাও।
পরক্ষণে তার সামনের হলোগ্রাফিক স্ক্রীনে বিজ্ঞান একাডেমির সবচেয়ে উচ্চপদের অধিকারি মহান ভ্লাদিমির সিরোভের চেহারা দেখা গেল। তার আময়িক হাসিসুলভ চেহাড়া দেখে যে কেউ বুঝতেই পারবে না তিনি পৃথিবীর অন্যতম ক্ষমতাবান ব্যক্তি। তার কথায় পৃথিবী ও ইন্টারস্টেলার জগতের সকল মানুষ উঠে বসে। কিন্তু তার নম্রতা ও বিনয় দেখে বোঝার সাধ্য নেই এই লোকই সবকিছু নাচায়। একজন ইয়ন!
কিন্তু বর্তমানে তার চেহাড়ায় বিনয়ের লেশমাত্র নেই। বরং রাগে লাল হয়ে গেছে। অনেক কষ্টে নিজেকে স্বাভাবিক রেখেছেন তিনি।
কর্নেলিয়াস! গমগম করে উঠল পুরো ঘরটা। তোমার সাহস কম নয়! কোন সাহসে তুমি আমাকে না জানিয়ে একটা আনঅথরাইজড মিশন পাঠিয়েছ? তুমি আমার আদেশ অমান্য করেছ? আমার!
রাগে তার গাল কাপতে থাকল। তুমি তৃতীয় মাত্রার একটা সংকেত সৃষ্টি করলে! তৃতীয় মাত্রার! এখন পর্যন্ত যে কেউ বুঝতে পারে নি এটাই আমার ভাগ্য! তোমাকে আমি বিশ্বাস করেছিলাম!
এরপর স্বাভাবিক হয়ে এলেন ভাইসরয়। সুপ্রিম কমান্ডার কর্নেলিয়াস আহটামাস, তুমি এখুনি অলিম্পাসে চলে আসবে। তোমার কাজ্রে জবাবদিহি করতে হবে ট্রায়ালের সামনে। যদি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ না করতে পারো তবে তোমার পদচ্যুতি করা হবে।
গ্রাফিক মেসেজটা অদৃশ্য হয়ে গেল সামনে থেকে।
ফোস করে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন সুপ্রিম কমান্ডার। জানা কথা এমনটা হবে। মনে মনে চিন্তাভাবনা গুছিয়ে নিলেন। তারপর পার্সোনাল কম্পিউটারটাকে আদেশ দিলেন একটা স্কাউটশীপ তার জন্যে তৈরি করতে। সেভেন সিস্টারসের সবচেয়ে বড় বেস স্টেশন অলিম্পাসে যাবেন তিনি। এটাই বিজ্ঞান একাডেমির সবচেয়ে বড় প্রশাসনিক দফতর এবং এই বিশ্বের সবকিছু কন্ট্রোল করছে এই বেস স্টেশনটাই। এর সাথে প্রায় আড়াইশো সাবস্টেশন যুক্ত আছে বিভিন্ন কাজ করার জন্যে। এই মহাকাশের দানবটাতে তার বসার ইচ্ছে সবসময় ছিল।
যাক এখনো সময় আছে, মৃদু স্বরে বললেন তিনি। আরেকটা গ্রাফিক-মেসেজ লিখলেন তিনি। তারপর একটা এনক্রিপট ক্যাপসুলে ভরে তার স্কয়ার ইউডিকে ডাকলেন।
লম্বাদেহি ইউডি তার অফিসে প্রবেশ করল। তার একপা আর এক হাত কঠিন সংকর ধাতুর তৈরি। একটা বিটলশীপ হঠাৎ মহাকাশে বিস্ফোরিত হলে ইউডির ডান হাত আর বা পা ছিড়ে চলে যায়। কোনভাবে লাইফ সাপোর্ট তাকে বাচিয়ে আনতে পারলেও তার ব্রেইন ডেমেজ হয়ে যায়। কর্নেলিয়াস তাকে বিজ্ঞান একাডেমির
উন্মাদ এক ডক্টরের কাছে নিয়ে গিয়ে তার এই নতুন রূপ দান করেছে। এরপর থেকে ইউডি তার স্কোয়ার হিসেবেই আছে।
এই ক্যাপসুলটা নিয়ে এখুনি পৃথিবীর উদ্দেশ্যে রউনা দাও। ভাইস চ্যান্সেলর ওরিয়নকে এটা দিবে। কোনভাবেই অন্যের হাতে দিবে না, নিজে দিয়ে আসবে। তাকে বলবে সবকিছু ঠিকভাবেই এগুচ্ছে।
ধাতব হাতটি দিয়ে ক্যাপসুলটা ধরল ইউডি। খসখসে গলায় বলল, অবশ্যই মাস্টার।
কিছুক্ষণ পর ইউরোপার বুক থেকে দুটি মহাকাশযান আকাশের দিকে উড়ে যেতে দেখা গেল।
আগের পর্ব
০৭ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ২:০৬
রাফীদ চৌধুরী বলেছেন: একরাশ ধইন্যা আপনারে
রমজান মুবারক আপ্নাকেও!
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ১২:৫৪
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মাঝখান থেকে হলৈও ভাল লাগল
রমজানের শুভেচ্ছা