নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগিং জগতে প্রথম ঢুকলাম...

জীবনের পথে চলা নবীন এক পথিক...

রাফীদ চৌধুরী

জীবনকে সাজাতে চাই সুন্দর বাগিচায়... তাই করি যা মনে চায়... live it love it ENJOY it!!

রাফীদ চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কসমিক সিম্ফোনি... (সায়েন্স-ফিকশান) পর্ব-৮

১৫ ই জুন, ২০১৬ রাত ১১:০৯



নরম্যান্ডির ককপিটে অপারেটিং চেয়ারে বসে আছে জেনা। তার সামনে দুটি হলোগ্রাফিক স্ক্রীন। একটিতে অভিযাত্রীদের অবস্থান দেখাচ্ছে ট্রিনিটি। আরেকটাতে নরম্যান্ডির যাবতীয় দরকারি ইনফরমেশন বিশ্লেষণ করা আছে। চেয়ারটা পেছনে বাকিয়ে হেলান দিয়ে পা দুটো লম্বা করে আধশোয়া হয়ে বসে আছে জেনা। সামনে ককপিটের উইন্ডশীল্ড দিয়ে সোলারেক্সের ভৌতিক গঠনটা নিজের অক্ষের চার দিকে ঘুরছে। সেদিক থেকে জোর করে চোখ ফেরালো সে।

সবকিছু তাকে বিশেষভাবে চিন্তিত করে তুলছে। বিশেষ করে লিও তাকে যে মিশনটা দিয়ে গেল। লিওও তার মতো ভাবছে তাহলে। নিশ্চতভাবে কোথাও কোন ঘাপলা আছে।

নিচের ঠোটে হালকা চিমটি কাটছে সে। বিজ্ঞান একাডেমির কোয়ান্টাম সার্ভারে প্রবেশ করল। যথারীতি তার এক্সেস ডিনাইড করে দিল সার্ভার। মুচকি হেসে সে ওভাররাইড করে নিল অথরাইজেশন। এটা তার কাছে কোন ব্যপারই না। সার্চ করতে থাকলো সার্ভারের ফাইলগুলো। বিজ্ঞান একাডেমির সব মিশনের যাবতীয় তথ্য এখানে স্টোর করা থাকে। চলমান মিশনগুলো খুজতে গিয়ে বড়সর ধাক্কা খেল যেন সে! কোনমতে সোজা হয়ে বসল।

বিজ্ঞান একাডেমির সার্ভারে কারেন্ট মিশনের মাঝে তাদের মিশনের কোন নাম নেই! সবকিছু প্রচন্ড গড়বড়ে মনে হলো তার কাছে। এখানে তাদের মিশন লিস্টেড না থাকার মানে হলো তাদের মিশনের কোন অস্তিত্ব নেই।

লিওকে জানাতে হবে… কাপা কাপা হাতে কমম লিংকটা তুলে নিল সে…

*****

ধীরে ধীরে জিম আর কিরু২ পাওয়ার ইউনিটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই অংশটুকুতে ট্রিনিটি পাওয়ার কভারেজ দিতে পারে নি। তাই জিম তার স্যুটের লাইট ব্যবহার করছে। তার কব্জির দুপাশ দিয়ে দুটো লাইট রাস্তাটাকে আলোকিত করে দিচ্ছে। হাটার তালে তালে লাইটও কাপছে। ভুতূড়ে এক আলো আধারি পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে তার চারপাশে…

তো আর কতদূর কিরু? এই অসহ্য নিরবতা ভালো লাগছে না জিমের। তাড়াতাড়ি মিশন শেষ করে ফিরতে পারলে বাচে। লিওর মতো তারও মিশন শেষ করে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে। কিন্তু সেটা লিওর মত নয়।

এইতো বেশি না। প্রায় চলে এসেছি। কিরুর গলা ভাবলেশহীন। সামনে থেকে পথ বাতলে দিচ্ছে। বায়ের মোটা তারগুলো দেখতে পাচ্ছো? অপটিক তারগুলো ফলো করতে করতে পৌছে যাবো আমরা।

ও… আন্যমনষ্ক হয়ে রইল জিম। আচ্ছা অন্যদের মতো তোমার প্ল্যান কি? মিশন শেষে কি করবে তুমি?

আমি… কাষ্ঠ হাসল কিরু। আমার পরিকল্পনা শুনে কি করবে তুমি?

বলে দেখ… হয়তো পরের মিশনে আমাদের দুইজনের দেখা হয়ে যেতে পারে। ঠোট বাকিয়ে হাসল জিম।

হুম তা হতেই পারে! কিরুও হেসে প্রতিউত্তর দিল। একটা ধাতব দরজার সামনে দাড়ালো তারা। পুরু পাতের দরজাটা তার কব্জির থেকে আসা আলোতে চকচক করছে। কিরু২ কাছে যেতেই একটা নাম্বার প্যাড জ্বলে উঠল। গোপন সংখ্যা প্রবেশ করাতে ধাতব ভারি আওয়াজ করে দরজাটা খুলে গেল।

ভেতরে ঢুকল জিম। চারদিকে অসংখ্য ব্যারেল আকৃতির সিলিন্ডারে ভর্তি এই রুমটা। তাকে তাকে প্রায় বিশফুট উচু করে সাজানো আছে ব্যারেলগুলো। এটা আদিম আমলের পাওয়ার স্টোরেজ হিসেবে কাজ করত। প্রত্যেকটা ব্যারেল থেকে একগুচ্ছ তার সামনের দিকে চলে গেছে। সেদিকে আলো ফেলে দেখল অনেক দূরে তারগুলো হারিয়ে গেছে।

সামনে এগিয়ে তারগুলোকে অনুসরণ করতে থাকল জিম। শেষ মাথায় এসে দেখতে পেলো পাওয়ার কন্ট্রোল মডিউলটা। এর ভেতরে সব তার ঢুকে গেছে।

তো বললে না তুমি কোথায় যাবে কিরু? পেছন ফিরে তাকালো জিম। অন্য হাতে তারগুলো স্পর্শ করছে। হঠাৎ হাতের স্পর্শে ফাকা কিছু বুঝতে পারলো জিম, সেদিকে তাকালো।

আবার ফিরে যাবো পৃথিবীতে… ঠান্ডা গলায় কিরু২ জবাব দিল তাকে।

জিমের পিঠ বেয়ে ঠান্ডা একটা স্রোত বয়ে গেল… আলোতে সে দেখতে পেল কন্ট্রোল ইউনিটের পাওয়ার কর্ডগুলো সুন্দর করে কেটে একপাশে ফেলে রাখা হয়েছে…

কিরু… বলতে বলতে ঘুরে দাড়ালো জিম। সে ভেবেছিল কিরু২ তাকে অনুসরণ করতে করতে তার সাথে এখানে এসে দাড়িয়েছে। কিন্তু সে দেখতে পেল ধাতব দরজার বাইরে সে এখনো দাঁড়িয়ে আছে। তার চোখদুটোর লাল আলো অন্ধকারে জ্বলছে।

দুঃখিত জিম, তুমি বুঝে ফেলেছো কি ঘটতে যাচ্ছে…

না! চিৎকার করে উঠল জিম। দৌড় দিল ধাতব দরজাটার দিকে। কিন্তু বুঝতে পারল অনেক দেরি হয়ে গেছে। পাওয়ার কর্ডের একটার সাথে পা বেধে আছড়ে পরল সে মেঝেতে। ক্রায়োব্লাস্টারটা পিঠ থেকে ছুটে একদিকে জঞ্জালের মাঝে হারিয়ে গেল। প্যাসেজের তারের জঞ্জালের মাঝে দিয়ে সে দেখতে পেল ধাতব দরজাটা ওপাশ থেকে আটকে যাচ্ছে…

*****
ডেস্কের উপর বসে আছে ইরা। বারবার সময় দেখছে। এতক্ষণ লাগছে কেন পাওয়ার সাপ্লাই দিতে! লিওর দিকে উত্তরের আশায় তাকালো।

লিও তখন ডিসপ্লে স্ক্রীনগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে আছে। দেয়ালের সাথে থরে থরে ডিসপ্লে বোর্ড সাজানো আছে। তার মাঝের একটা বোর্ড প্রায় অর্ধেক দেয়াল জুরে অবস্থান করছে। এটিই হয়তো এই স্পেসস্টেশনটার প্রাইমারি ডিসপ্লে ছিল। হয়তো অনেক বিজ্ঞানী সারাক্ষণ এটায় প্রদর্শনকৃত ডেটা মনিটর করতো। এখন হয়তো তাদের অনেকেই মারা গেছে…

দীর্ঘশ্বাঃস ছাড়ল লিও। জীবনটা কত নঃস্বর…

হঠাৎ কমম লিঙ্কে জেনার কাপা কাপা গলা শুনতে পারল তারা দুইজন। ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজে তার গলা প্রায় অস্পষ্ট হয়ে আসছে।

খসখসে শব্দের মাঝে জেনা বলে উঠল, লিও, কি বের করেছি কল্পনাও করতে পারবে না… অস্পষ্ট হয়ে গেল জেনার গলা। এই মিশনটা স্যাবাটোজ করা… তোমরা জলদি… আর কিছু শোনার আগেই কমম লিঙ্কটা নিষ্ক্রিয় হয়ে গেল। নরম্যান্ডির সাথে সোলারেক্সের যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল।

ডেস্কের উপর থেকে উঠে লিওর সামনে দাড়ালো ইরা। বিহবল দেখাচ্ছে তাকে। কি হচ্ছে লিও? চেহাড়া সাদা হয়ে গেছে ইরার। নরম্যান্ডির সাথে কিভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলাম আমরা?

জানি না, বিড়বিড় করল লিও। জেনা শুনতে পাচ্ছো? তখনো চেষ্টা করছে লিও। ট্রিনিটি! কমম লিঙ্কের চ্যানেল পরিবর্তন করে আরেক ফ্রিকোয়েন্সিতে পাঠাও…

ট্রিনিটির কাছ থেকেও কোন জবাব আসলো না। পুরো স্পেসস্টেশনটা বধ্যভূমির মত শান্ত নিস্তব্ধ হয়ে রইল।

লিও! আতঙ্কে চোখ বিষ্ফোরিত হয়ে যাবার দশা ইরার। প্রোবগুলো… ওগুলো ভাইরাস সিগনেচার ধরতে পারছে। গলা কাপছে ইরার। সেগুলো আসছে পাওয়ার ইউনিট থেকে… অনেক অনেক গুন বেশি… হাজারগুন…

জিম! হাহাকার বের হয়ে এল লিওর গলা দিয়ে।

আগের পর্ব

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জুন, ২০১৬ ভোর ৪:৫৭

শান্তির দেবদূত বলেছেন: বেশ জমে উঠেছে, গল্পটা।
শুভেচ্ছা রইল।

১৬ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৮

রাফীদ চৌধুরী বলেছেন: নিয়মিত পড়ার জন্যে ধন্যবাদ! :)

২| ১৭ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:২৪

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: এটার আগের পর্বও ছিল! তাই তো বলি, বুঝছি না কেন!!!
গল্পটা একসাথে দিতে পারতেন। সাস্পেন্সের একটা ব্যাপার আছে। ওটা তো পাঠকের একদুইদিন পর নাও থাকতে পারে!!

১৭ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ২:০০

রাফীদ চৌধুরী বলেছেন: অনেক বড় গল্প তো! একসাথে দিলে এত বড় লেখা কেউ পড়বে না!
হুম একসাথে ২ -৩ পর্ব দেয়া যায়, এটাই পরবর্তীতে করবো।
মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ! :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.