নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবনকে সাজাতে চাই সুন্দর বাগিচায়... তাই করি যা মনে চায়... live it love it ENJOY it!!
বেশ কিছুদিন কেটে গেল ঝামেলা ছাড়াই। ট্রান্সপোর্ট শীপটা ছুটে চলছে এরিস কন্সটেলেশনের দিকে। আরো দু সপ্তাহের মাঝে পৌছে যেতে পারবে আশা করলো ফ্লেন। অবশ্য হাইপার ডাইভ দিলে কয়েক দিনের মাঝেই পৌছে যেতে পারতো সেখানে, কিন্তু ভাগ্যন্বেশী তরুণ বনিকেরা হাইপার ডাইভ সংবলিত মহাকাশযানে চড়া দুরের কথা কখনো দেখতে পায় বলেও মনে হয় না।
নিজের নোংরা ছোট্র সেলটাতে বসে এসব কথাই ভাবছিল ফ্লেন, এমন সময় খাবারের বেলটা মাথার উপর জ্বলতে লাগল। দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে দাড়ালো সে। এই মহাকাশযানের বেশির ভাগ যাত্রীই আউট ল, আর বণিক, যারা কখনোই নিয়ম মেনে কাজ করতে শিখে নি। তাড়াতাড়ি খাবার ঘরের লাইনে দাড়াতে না পারলে আজকে রাতের জন্যে তার ভাগ্যে খাবার জুটবে না।
অন্ধকারছন্ন খাবার ঘরে ঢুকল সে। মুখ কুচকে দেখলো ততক্ষণে ষাটজনের মত দাঁড়িয়ে গেছে লাইনে। মেজাজ খারাপ করে লাইনে দাড়ালো ফ্লেন। দুইদিন আগে কোথায় ছিল আর এখন কোথায় যাচ্ছে! জীবনটা যে কত তাড়াতাড়ি বাক নেয়! ভাইসরয় ভ্লাদিমির সিরোভের জন্যে সংকাবোধ করলো, হাজার হাজার গুপ্তচর তার জন্যে অপেক্ষা করছে অলিম্পাসে…
চোখ তুলে তাকাতে দেখতে পেলো তিনজনের একটা গ্রুপ একপাশে বসে আছে। চেহাড়ায় বেয়াড়া ভাব। অপরিষ্কার ছেড়া পোশাক পরে আছে। তার চোখ পরতে মাঝের জন ত্রুরভাবে হাসল। তার হলুদ দাতের মাঝে বেশ কয়েকটা নকল পাথরের দাত লাগানো, হাতের আম্বার শিখার ছুড়িটা মেঝেতে ধার দিচ্ছে।
ভাইসরয়ের সাবধাণবাণী মনে পরে গেল তার। সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। যে কোন সময় শত্রুরা তার উপর আক্রমণ করতে পারে। অন্যদিকে তাকিয়ে লাইনে সামনে বাড়ল সে।
****
গ্যাস জায়ান্টটার একবারে কাছেই ছোট্র একটা উপগ্রহ। গাঢ় নীল বর্ণের গ্রহটার পাশেই যে একটা উপগ্রহের কক্ষপথ থাকতে পারে আপাতদৃষ্টিতে কেউ চিন্তা করবে না। গ্যাস জায়ান্টটার আউটার লেয়ারের পাতলা গ্যাস উপগ্রহটার গ্রেভিটিতে বাধা পরে তার দুইপাশে ডিস্কের মত ঘিরে আছে। তাই উপগ্রহটার দুইপাশে দুর্লভ গ্যাসের স্পাইরাল বাহু তৈরি হয়েছে। এই উপগ্রহের আরেকটা বৈশিষ্ট অফ দ্য রেকর্ড এটি বিজ্ঞান একাডেমির একটা বায়োটেক লেবরেটরি। এমনকি বিজ্ঞান একাডেমির বিখ্যাত অনেকেই এই লেবরেটরির অস্তিত্ব জানে না।
জ্বলন্ত স্বর্গে আপনাকে স্বাগতম কাউন্সিলম্যান জশোনি, মাথা নুইয়ে তাকে সম্মান দেখালো উপগ্রহের কেয়ারটেকার আম্ব্রিন কেন। আপনাকে এই দুর্গম এলাকেতে দেখতে পাবো কখনো ভাবতে পারি নি।
হাহ জ্বলন্ত স্বর্গ, মনে মনে ভাবল জশোনি। কিংবা জ্বলন্ত নরক! কি বা আসে যায়! আকাশের দিকে তাকালেন তিনি, গ্যাসজায়ান্টটার নীল রঙ্গে পুরো আকাশ আলোকিত হয়ে আছে। এক প্রান্তরে দেখা যাচ্ছে উপগ্রহের স্পাইরাল ডিস্ক।
চলুন ল্যাবে যাওয়া যাক! হন্তদন্ত হয়ে তাকে মহাকাশ যান থেকে ল্যাবের পথ দেখালো আম্ব্রিন।
ল্যাবটা জ্বলন্ত স্বর্গের মাটির অনেক নিচে। কিত্রিমভাবে অক্সিজেনের সর্বরাহ করা হয় এখানে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভাইরাসের গবেষণা এখানে করা হয়। এমনকি সিন্ড্রা গ্রহে এককালে বিজ্ঞান একাডেমি যে ভাইরাস এক্সপেরিমেন্ট করেছিল সেটাও হয়তো এখানেই সৃষ্টি করা হয়েছিল।
এলিভেটর দিয়ে অনেকদূর মাটির নিচে নামলো তারা। আশে পাশে প্রচন্ড ঠান্ডা একটা আবহাওয়া বিরাজ করছে এখানে। এলিভেটরের দরজা খুলতে উষ্ণতা অনুভব করল, বিশাল একটা হলওয়ে সামনে মিলিয়ে গেছে। উজ্জ্বলভাবে আলোকিত করা আছে পুরো এলাকাটা।
কাউন্সিলম্যান জশোনি! হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এল একজন। আপনার আগমনের সংবাদ পেয়ে আমরা অনেক খুশি হয়েছি! আমি ভারপ্রাপ্ত চিফ একাডেমিক ডক্টর ডিনগান। চীফের অনুপস্থিতিতে আমি আপনাকে এখানে স্বাগত জানাচ্ছি!
তোমার চীফ কোথায় গেল?
বিব্রত দেখালো ভারপ্রাপ্ত চীফকে। আসলে জরুরী কাজে হঠাৎ করেই পৃথিবীর উদ্দেশ্যে রউনা দিয়েছেন চীফ। আসুন আপনাকে আমাদের গবেষণা দেখাই। এই বিশ্বগুলো কখনো বুঝতে পারে না এখানকার টেকনলজি গুলো তাদের জীবন কত সহজ করে দিচ্ছে! সামনে পথ দেখাতে থাকল ডিনগান। তাকে অনুসরণ করতে লাগল জশোনি। আশেপাশের ল্যাবগুলোতে ঢুকে কোনটাতে কি গবেষণা হচ্ছে কিংবা কি কি ফল পাওয়া গেছে বিস্তারিত বোঝাচ্ছে ডিনগান, কিন্তু সেদিকে মন নেই জশোনির। সবাই ভাবছে বিজ্ঞান একাডেমির রুটিন ভিজিটে এসেছে সে। কিন্তু তার ইচ্ছে পুরোপুরি ভিন্ন।
বলুন চীফ ডিনগান, বিজ্ঞান একাডেমির আইসোলেটেড একটা ল্যাব আপনাদের এটি, হয়তো একশো বছর আগে এই ল্যাবের অনেক প্রয়োজনিয়তা ছিল, এখন তো বিজ্ঞান একাডেমি আপনাদের অর্থায়ন করাও বন্ধ করে দিয়েছে। তো এখন পর্যন্ত কিভাবে আপনাদের জ্বলন্ত স্বর্গ টিকে আছে?
মুচকি হাসল ভারপ্রাপ্ত চীফ, বিজ্ঞান একাডেমি যাবতীয় অর্থায়ন বন্ধ করে দিলেও বেসরকারি সংস্থার কোন অভাব নেই! অসংখ্য সংস্থা বিভিন্ন গবেষণার জন্যে আমাদের অর্থায়ন করছে… বলতে গেলে বিজ্ঞান একাডেমির অধিনে থাকার চেয়ে এখন আমাদের সু্যোগ সুবিধা বেশি। প্রটোকলের অধীনে থাকতে হয় না। গবেষণার জন্যে তাদের জবাবদিহী করতে হুয় না।
হুম, আনমনে গ্লাস উইন্ডো দিয়ে একটা ল্যাবের ভেতরকার দৃশ্য দেখতে থাকল জশোনি। একটা ধাতব বাহু একটা মাংশপিন্ডের উপর সবুজ তরল স্প্রে করছে… দেখতে দেখতে মাংশপিন্ডটা গলে মেঝেতে পরে গেল। বোঝার কোন উপায় নেই যে একটু আগে এটা কোন অর্গানিক ফ্লেশ ছিল।
গুজব ভাসে আপনাদের এখানেই নাকি সিন্ড্রা মিশনের ভাইরাস তৈরি করা হয়েছিল? মুচকি হাসল জশোনি। সেখানকার মর্মান্তিক পরীক্ষার জন্যে টেস্ট সাবজেক্ট হতে হয়েছিল হাজারো যুদ্ধবন্দিকে? তখনকার বিজ্ঞান পরিষদ ফলপ্রসু এক ভাইরাস মানব দেহে কিরকম বিক্রিয়া করে পরীক্ষা করার জন্যে ভয়ঙ্কর এক অভিযান চালায় সিন্ড্রায়… আনমনা হয়ে আবার ঐ ল্যাবে তাকাল সে। আরেক ধরণের মাংসপিন্ড আবারো দেয়া হয়েছে টেস্ট করার জন্যে…
হ্যা আমরাই ভাইরাসের জিনোম ডিজাইন করি। গর্বের চোটে কাধ চিতিয়ে দাড়ালো ডিনগান। tx-9 হচ্ছে ভাইরাসটার নাম। সেটাই প্রায় একশো বছর আগে সিন্ড্রাতে এক্সপেরিমেন্টে ব্যবহার করা হয়…
এবং প্রচন্ডভাবে ব্যার্থ হয় বিজ্ঞান একাডেমি। ব্যাঙ্গাত্বকভাবে হাসলো জশোনি।
হ্যা তখন আমরা ব্যার্থ হয়েছিলাম, দৃঢ় কণ্ঠে বলল ডিনগান। সেটা একশো বছর আগের কথা… কিন্তু এখন আমরা ব্যার্থ হবো না।
চমকে উঠল জশোনি, এখন আবার এই ভাইরাস বানাচ্ছেন নাকি!
হ্যা, মুচকি হাসলো ডিনগান। এবং এবার এই ভাইরাস অবশ্যই কাজ করবে!
বিজ্ঞান একাডেমির নাগালের বাইরে আবারো সেই ভাইরাস তৈরি করা হচ্ছে! চিন্তিত হয়ে পরল জশোনি। তার মনে পরে গেল কাউন্সিল থেকে আইন করা হয়েছিল যেন মানব ধ্বংসকারী ভাইরাস আর কেউ বিজ্ঞান একাডেমির অনুমতি ব্যাতিত সৃষ্টি করতে পারবে না। এখানে ঠিকই তৈরি করা হচ্ছে…
কে অর্থায়ন করছে এই প্রজেক্টটা?
সুপ্রিম কমান্ডার কর্নেলিয়াস আহটামাস। সরল মনে বলল ডিনগান।
চোখ সরু হয়ে গেল জশোনির। আহটামাস? এই লোক কি পরিকল্পনা করছে তার মাথায় আটলো না। নিরিগিস স্টেশনের কমান্ডার একে তো বিজ্ঞান একাডেমির মিশনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন এখন দেখা যাচ্ছে তিনি নিষিদ্ধ ভাইরাস নতুন করে বানাচ্ছেন! প্রচন্ড গড়বড়ে মনে হলো সবকিছু জশোনির কাছে।
সুপ্রিম কমান্ডার আহটামাস? উনি এই প্রোজেক্টটা নতুন করে শুরু করেছেন? এটি দিয়ে তিনি কি করবেন?
তিনি মনে হয় একা নন এই প্রজেক্টের অর্থায়নকারি হিসেবে, অনিশ্চিত শোনা গেল তার গলা। কিন্তু প্রজেক্ট সফল হয়েছে এবং তিনি এটার প্রথম ব্যাচ কিনে নিয়েছেন আমাদের কাছ থেকে…
কিনে নিয়েছেন? ভ্রু কপালে উঠল জশোনির। কর্নেলিয়াস tx-9 ভাইরাস কিনে কি করেছেন?? উত্তেজিত হয়ে উঠল সে।
কেন আপনি জানেন না? অবাক মনে হলো ডিনগানকে। বিজ্ঞান একাডেমির আরেকটি সিন্ড্রা মিশনে এই ভাইরাস এক্সপেরিমেন্ট করার চেষ্টা করেন সুপ্রিম কমান্ডার… এটা তো বিজ্ঞান একাডেমির অথরাইজড মিশন ছিল…
অথরাইজড মিশন ছিল… বিড়বিড় করছে জশোনি, কিন্তু কাউন্সিল তো জানতো না কর্নেলিয়াসের ভাইরাস টেস্ট করা হবে সেখানে… কেউ ই জানতো না। কাউন্সিল মিশনটা এপ্রুভ করেছিল রুটিন চেকআপের জন্যে, জীবনের অস্তিত্ব একশো বছর পর সেখানে আবারো ফিরে এসেছে কিনা খোজার জন্যে… সবকিছু একসূত্রে বাধার চেষ্টা করছে সে, কর্নেলিয়াস যে কি খেলা খেলছেন তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে সেটা।
হঠাৎ তার মনে হলো সবকিছু একসূত্রে গেথে ফেলতে পেরেছে সে। সিন্ড্রা মিশন, লিও জিমের মাথায় কিত্রিম একটা মেমোরি বসানো হয়েছে, সেটা কর্নেলিয়াসই বুঝল… কিভাবে? তাদের মাথায় যে স্মৃতি আছে সেটা সেটা নকল ছিল! এটাই তো ট্রায়ালের সময় বলেছিল কর্নেলিয়াস, কেন? কিভাবে জানল সে, যখন বিজ্ঞান একাডেমির অন্যান্য ডক্টররা বুঝতেই পারলো না…
ডিনগান! উত্তেজিত হয়ে গেল জশোনি, আপনি কি বলতে পারেন পরের সিন্ড্রা মিশনটা সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়েছিল কি না?
অবশ্যই! অবাক দেখালো ডিনগানকে। তার চিন্তা পরতে পারলো জশোনি, ভাবছে বিজ্ঞান একাডেমির কাউন্সিলর কিভাবে বিজ্ঞান একাডেমির মিশন সম্পর্কে কিছু জানে না! দ্বিতীয় মিশনটাও ব্যার্থ হয়েছে, কিন্তু ভাইরাসটা নয়, মিশনটা ঠিকভাবে পরিচালিত করা হয় নি, কিভাবে আমি ঠিক জানি না…
ঠিক আছে চীফ ডিনগান, ভেতরে ভেতরে প্রচন্ড উত্তেজিত হয়ে আছে জশোনি। কিন্তু বাইরে তার অমায়িক হাসিটা হাসল, আমার তাহলে এখন ফিরতে হবে অলিম্পাসে, আপনাদের কাজের প্রশংসা অবশ্যই আমি করবো ভাইসরয়ের কাছে, হালকা নড করে ফেরার পথ ধরল সে।
******
ছোট্র সেলটার ভেতর ঘুমিয়ে আছে ফ্লেন। রাতদিনের হিসেব এখানে বোঝা যায় না, শুধুমাত্র হালকা লাল আলো সেন্ট্রাল স্টেশন থেকে তার রুমের মাঝে ভেসে আসে রাতের বেলা। একটা নির্দিষ্ট সময় পরে লাইট নিভে যায়। তখন সবাই বুঝে নেয় দিনের শুরু হয়ে গেছে।
হঠাৎ ঘুমের মাঝে দম বন্ধ হয়ে এলো ফ্লেনের। চারপাশ যেন তাকে জাপটে ধরেছে। চোখ খোলার চেষ্টা করলো কিন্তু অন্ধকার ছাড়া কিছুই দেখলো না। বিকট একটা দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে তার বা পাশ থেকে। আশেপাশে হাতরাতে লাগল, কিন্তু কিছুই তার ধারের পাশে নেই।
হেই তুই ওখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? হেড়ে গলায় বলে উঠল কে যেন, দড়জাটা লাগিয়ে পাহাড়া দে! বলতে বলতে তার চোখের উপর থেকে হাত সরালো লোকটা। হঠাৎ উজ্জ্বল আলোতে কিছু বুঝতে পারলো না ফ্লেন। তাকিয়ে দেখলো গোলগাল চেহাড়ার বিদঘুটে এক বেন্ডিট তার গলায় আম্বার শিখার একটা ছুড়ি ধরে রেখেছে।
হুশ! ইশারায় বুঝিয়ে দিল চিৎকার দিলে তার ফল ভালো হবে না।বুঝতে পারলো ফ্লেন, আলতো মাথা ঝাকালো। তখনো মাথা ঠিকভাবে কাজ করছে না তার। বুঝতে পারছে না কি ঘটছে। ছুড়ি ধরা হাতের দিকে তাকালো। এটাকেই দেখেছিল সে খাবারের লাইনে দাড়াবার সময়। নিশ্চয় খারাপ কিছুই ঘটতে যাচ্ছে।
ঘুম শেষ হয়েছে কচি খোকা? বলে উঠলো বেন্ডিটটা। ফ্লেন খেয়াল করলো কথা বলার সময় তার পাথরের নকল দাত চকচক করছে আলোতে।
এবার বল কোথায় যাচ্ছিস তুই!
এরিস কন্সটেলেশনে। শার্ন গ্রহে খনিজ গ্যাসের সন্ধানে, দুর্গন্ধটা কোনমতে সহ্য করে বলল ফ্লেন।
মিথ্যা! তার ঘাড়ের পেছন থেকে চিকন চাকন একটা ছেলে বলে উঠল। তার হাতেও ধরা আরেকটা ছুড়ি। হলুদ আলো জ্বলছে সেটা থেকে। চোয়ালের হাড্ডি বেড়িয়ে পরেছে তার, এক চোখে তৃকোণাকার একটা গগলস পরনে। ভাবছিস আমরা কিছু বুঝি না! তার দিকে ছুড়িটা বাড়ালো, ভাবছিস আমরা চিনি না কে বণিক আর কে উচ্চবর্ণের মানুষ! যা আছে সব বেড় কর!
কোন জবাব দেবার প্রয়োজন বোধ করলো না ফ্লেন, ঝড়ের গতিতে তার মাথায় চিন্তা চলছে।
চিকন বেন্ডেটটা উঠে তার কাপড়চোপড় উলটে পালটে দেখলো, তার ব্যাগ উলটে জিনিস পত্র খুজে দেখলো! কিছু পেল না।
কই রেখেছিস বল! হেকে উঠল সে। হঠাৎ দেখতে পেল দড়জার সামনের জন আগ্রহের চোটে দরজা ফেলে তাদের দিকে এগিয়ে এসেছে, চোখ বড় বড় করে তার ব্যাগের উলটানো কাপড়চোপড় দেখছে।
তুই আবার এদিকে এসেছিস ক্লব! বলতে বলতে ফ্লেন এর জুতো তুলে ছুড়ে মারল ক্লবের দিকে। বললাম না দরজা পাহাড়া দে তুই!
উড়ন্ত জুতার বারি খেয়ে নিজের দায়িত্বে আবারো ফিরে গেল ক্লব।
যথেষ্ঠ হয়েছে, বিরক্তিতে তার ছুড়িটা গলার কাছে ঘেষে ধরল মোটা বেন্ডিট। কোথায় টাকা পয়সা লুকিয়েছিস বল! তুই ফিলিপ লেন নোস, তুই কোন গ্যাসের খোজেও আসিস নি! এখন গ্যাস উত্তোলনের সময় না, তোকে কেউ বলে দেয় নি? তোকে দেখতে মোটেও খনিজ আকরিক সংগ্রাহক বলে মনে হয় নি! এত চর্বি কেনো তোর শরীরে? গ্যাস সন্ধানি কেউ তো ভরপেট খেয়ে বেড়ায় না? তোর তো তাদের মত গন্ধও শরীরে নেই!
যাক এতক্ষণে বুঝল শরীরে এই বিচ্ছিরি গন্ধ থাকা মানে সে একজন আউটারওয়ার্ল্ডের লোক। আমি এখনো খনিজ সংগ্রাহক নই! জোর দিয়ে বলল সে। আমার বাড়ি হোম এ! বাবা মারা যাওয়ার পর ভাগ্যের সন্ধানে বেরিয়েছি, মনে হলো আকরিক খোজার মাঝে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো…
মিথ্যা! চিকনজন তখনো পায়াচারি করছে আগে পিছে, কোথায় তোর সব টাকা?
দেখো এখান থেকে ভালয় ভালয় বেরিয়ে যাও! রেঞ্জাররা দেখতে পেলে…
রেঞ্জাররা কচু করবে, বলতে বলতে তার পাশের পকেট থেকে কিউকার্ডটা বেড় করলো মোটা বেন্ডিটটা। খুশিতে আসল নকল সব দাত বেড় হয়ে গেছে। এবার কি বলবি তুই? এটাও আকরিক সন্ধানী ভাগ্যান্বেসী যুবকেরা রাখে?
প্রমোদ গুনলো ফ্লেন, কিছু একটা বলতে যাবে, তখুনি প্রচন্ড ঝাকিতে ছিটকে পরল একপাশের দেয়ালে। কেন্দ্রীয় আলো সব কাপতে কাপতে নিভে গেল। একপাশে তার ছুড়ি ধরা বেন্ডেটটা গালমন্দ করছে কাউকে।
কি হলো প্রচন্ড ভয় পেয়েছে ক্লব। রুনিন আমার মনে হয়… কথাটা শেষ করার আগেই আরেকটা ধাক্কায় কেপে উঠল পুরো শীপটা। উপরের সাইরেনটা তীক্ষ্ণ আওয়াজ তুলে বাজতে শুরু করল।
ওহ ইশ্বর! প্রচন্ড ভয়ে মাথার ঘাম মুছল মোটা বেন্ডিট রুনিন। স্পেস আর্মাডা!
আগের পর্ব
০২ রা জুলাই, ২০১৭ রাত ২:৩৪
রাফীদ চৌধুরী বলেছেন: আরো ১০-১৫ টা পর্ব থাকছে। এখনো গল্পের মাঝামাঝি পর্যায়ে আমরা।
২| ০২ রা জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১:৩০
বাকোশপোলের কালাম বলেছেন: ধন্যবাদ। দয়া করে চালিয়ে যান।
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা জুলাই, ২০১৭ রাত ১:৫৪
বাকোশপোলের কালাম বলেছেন: ভাই, আর কয়টি পর্ব আছে? দয়া করে জানাবেন?